সারাদেশ
নোয়াখালীতে চর দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নিহত ৫
নোয়াখালীর হাতিয়ায় চর দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে জাগলার চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাতিয়ার কোষ্টগার্ডের মিডিয়া লে. কমান্ডার আবুল কাশেম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাগলার চরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী জাগলার চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর দুটি গ্রুপ আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়।
অভিযোগ রয়েছে, চর দখলে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার, বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ। তারা কোপা সামছু বানিহীকে চর থেকে বিতাড়িত করে চরের জমি দখলে নিতে ডাকাত আলাউদ্দিনের বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপ একাধিকবার বিরোধে জড়ায়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে অপর পক্ষের ছোড়া গুলিতে আলাউদ্দিনসহ ৪জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। ৪ জনের মরদেহ ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মুঠোফোনে একাধিক কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, একটি মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
এমকে
সারাদেশ
সাংবাদিকসহ পাঁচ জুলাই যোদ্ধাকে হত্যার হুমকি
মৌলভীবাজারে একজন সাংবাদিকসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচজন জুলাই যোদ্ধাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হত্যার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি মো. এহসানুল হক।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপরাধচক্রের বিরুদ্ধে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশ করে আসছি।
এর জেরেই ফ্যাসিবাদী ও অপরাধচক্রের সদস্যরা আমাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি দিচ্ছে। এর আগেও আমাকে সড়কে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে এবং মাদকবিরোধী প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে আমার পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। নতুন করে হত্যার হুমকিতে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
হুমকির শিকারদের মধ্যে রয়েছেন শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি মো. এহসানুল হক, ইসলামী ছাত্র ঐক্য পরিষদ শ্রীমঙ্গলের আহ্বায়ক মো. মুজাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা এনসিপির সাংগঠনিক সম্পাদক নিলয় রশিদ, ইসলামী ছাত্র ঐক্য পরিষদ শ্রীমঙ্গলের আহ্বায়ক নাঈম হাসান, এনসিপির জেলা কমিটির সদস্য হায়দার আলী ও নাঈম।
ঘটনার প্রেক্ষিতে রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মো. মুজাহিদুল ইসলাম।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১টা ২৯ মিনিটে ‘নো ক্যাপশন’ নামের একটি ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জার থেকে মো. মুজাহিদুল ইসলামের ফেসবুক আইডিতে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। বার্তায় তাকে হত্যা ও লাশ গুম করার হুমকিসহ অশালীন ও ভয়ংকর ভাষা ব্যবহার করা হয়। একই বার্তায় আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তাদেরও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
জুলাই যোদ্ধা মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাকে এবং আমার সহযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত ফেসবুক আইডি, মেসেঞ্জার ও কমেন্টে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাই।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, একটি সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।
আদালতের অনুমতি নিয়ে প্রাপ্ত তথ্য ও স্ক্রিনশট যাচাই করে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সারাদেশ
৯ ঘণ্টা যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না আজ
ট্রান্সফরমারের জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণ কাজের জন্য সিলেট নগরীতে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) টানা ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, জরুরি মেরামত ও সংরক্ষণ এবং উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মোট ৯ ঘণ্টা ১১ কেভি ফিডারের আওতাধীনের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
সিলেটের যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না: ১১ কেভি সেনপাড়া ফিডারের আওতাধীন সেনপাড়া, শিবগঞ্জ, ভাটাটিকর, সাদিপুর, টিলাগড়, গোপালটিলা, এমসি কলেজ ও আশপাশের এলাকা; ১১ কেভি শিবগঞ্জ ফিডারের আওতাধীন শিবগঞ্জ, টিলাগড়, সবুজবাগ, বোরহানবাগ, হাতিমবাগ, লামাপাড়া, রাজপাড়া ও আশপাশের এলাকা; ১১ রায়নগর ফিডারের আওতাধীন সোনারপাড়া, মজুমদারপাড়া, দর্জিপাড়া, পূর্ব মিরাবাজার, খারপাড়া ও আশপাশের এলাকা; ১১ কেভি কুমারপাড়া ফিডারের আওতাধীন যতরপুর, মিরাবাজার, উদ্দীপন, আগপাড়া, মৌসুমি আগপাড়া, ঝেরঝেরিপাড়া ও আশপাশের এলাকা এবং ১১ কেভি উপশহর ফিডারের আওতাধীন উপশহর ব্লক এ, বি, সি, ডি, এবিসি পয়েন্ট, তেররতন, সৈয়দানীবাগ, সাদারপাড়া এবং আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না।
তবে নির্ধারিত সময়ের আগে কাজ শেষ হয়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে বলেও জানান তিনি। সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সিলেট-২ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
সারাদেশ
শোকের দিনে ক্রীড়া অনুষ্ঠান: প্রশ্ন করায় ফের বিতর্কে চাঁদপুরের ডিসি
রাষ্ট্রীয় শোকের দিনে যখন সারাদেশে আনন্দ-উৎসবসহ সব ধরনের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক আনুষ্ঠানিকতা স্থগিত ছিল, তখন চাঁদপুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) শহীদ শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে সরকার ঘোষিত শোক দিবস চলাকালেই চাঁদপুর স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় মাদকবিরোধী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান। অথচ এদিন ঢাকায় শহীদ শরীফ ওসমান হাদির জানাজা ও দাফন চলছিল। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলার মতো চাঁদপুরেও চলছিল গায়েবানা জানাজা ও শোক মিছিল সহ নানাবিধ কার্যক্রম। এনিয়ে প্রশ্ন করায় বিরূপ মন্তব্য করে ফের বিতর্কে জড়িয়েছে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. নাজমুল ইসলাম সরকার। এ ঘটনাকে ঘিরে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
শহীদ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে যখন সারা দেশে শোকের আবহ বিরাজ করছিল, তখন চাঁদপুরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি বাতিল করা হয়। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ফ্যামিলি ডে-সহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান স্থগিত থাকলেও ব্যতিক্রম হিসেবে অনুষ্ঠিত হয় এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
স্থানীয়দের দাবি, শোকের দিনে খেলাধুলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান স্থগিত রাখলেও প্রশাসনের কোনো সম্মানহানি হতো না। বরং অনুষ্ঠানটি পরবর্তীতে আয়োজন করা হলে বিপুল সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে আয়োজনটি আরও সফল হতে পারত। যেহেতু এটি একটি মাদকবিরোধী প্রচারণামূলক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, তাই অন্য যেকোনো সময় ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করলে দর্শকদের উপস্থিতি আয়োজনকে সার্থক করে তুলত। বিভিন্ন মহলের দাবি; শহীদের মৃত্যুতে যখন রাষ্ট্র নিজেই গুরুত্ব দিয়ে শোক পালন করছে, তখন একজন জেলা প্রশাসকের এমন সিদ্ধান্ত জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে।
বিষয়টি অনুষ্ঠানস্থলে জেলা প্রশাসককে ব্যক্তিগতভাবে অবহিত করেন এক সাংবাদিক। তিনি জেলা প্রশাসককে জানান, শোকাবহ এই দিনে খেলাধুলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান কতটা প্রয়োজনীয় ছিল-এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
এর জবাবে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকের প্রতি সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, আপনার এই প্রশ্নটা করা ঠিক হয়নি। এ সময় ওই সাংবাদিক তাকে জানান, এটি তার ব্যক্তিগত প্রশ্ন নয়, বরং জনমনের প্রশ্ন হিসেবেই তিনি বিষয়টি অবগত করেছেন।
পরে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি কোথায় কী করেন, এগুলো বের করতে আমার সময় লাগবে না। এক সপ্তাহের মধ্যেই সব বের করে আনব।
এ ধরনের বক্তব্যকে সাংবাদিকের প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে কি না-সে প্রশ্নও উঠেছে।
একাধিক গণমাধ্যমকর্মীর সামনে জেলা প্রশাসক দাবি করেন, তাকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, তিনি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন এবং কে কোথায় কী করেন-সবই তিনি জানেন।
একপর্যায়ে তিনি ওই সাংবাদিককে উদ্দেশ করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন- আপনি একজন সাংবাদিক, আপনার কি মিছিলে যাওয়া ঠিক হয়েছে?
এছাড়া আগের দিন প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ‘জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাও’ শব্দচয়ন নিয়েও আপত্তি তুলে তিনি বলেন, ৭০/৮০ জন মানুষ হলে কি সেটাকে ঘেরাও বলা যায়?
উল্লেখ্য, গত ১৯ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর শহীদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে চাঁদপুরে ছাত্র-জনতার একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি শহরের বাইতুল আমীন চত্বর থেকে শহর প্রদক্ষিণ শেষে বাস স্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান করে। পরে সেখান থেকে জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়ে মিছিলটি জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। সে সময় জেলা প্রশাসক নিজে বাইরে এসে আন্দোলনকারীদের দাবি শোনেন এবং তা পূরণের আশ্বাস দেন।
এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই জেলা প্রশাসকের মন্তব্য ও আচরণ নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
এদিকে, খেলার বিষয়টি প্রশাসনকে আগেই অবহিত করার জন্য জেলা প্রশাসকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টি চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) এবং জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালককে (ডিডি) অবহিত করা হয়।
পরে জেলা প্রশাসক অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে জানাতে চাইলে তিনি প্রকাশ্যে জানাতে বলেন। এরপরই গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে তার বক্তব্যগুলো উঠে আসে।
এসময় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মাদকবিরোধী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন এবং খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। তবে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন থেকেই যায়-রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে এমন আয়োজন কি প্রশাসনিক সংবেদনশীলতার অভাবেরই বহিঃপ্রকাশ নয়?
এর আগে গত বৃহস্পতিবার হাজীগঞ্জ উপজেলায় অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসকের দেওয়া কয়েকটি বক্তব্য নিয়েও বিভিন্ন মহলে আলোচনা ও সমালোচনা হয়।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরে যোগদানের আগে মো. নাজমুল ইসলাম সরকার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সারাদেশ
শীতের দাপট আরও তীব্র, কাঁপছে তেঁতুলিয়া
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় টানা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর শনিবার কিছুটা তাপমাত্রা বেড়েছিল। তবে রবিবার (২১ ডিসেম্বর) ফের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পাশাপাশি আর্দ্রতা বৃদ্ধি ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের দাপট আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত পুরো এলাকা ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল। কুয়াশার কারণে সড়ক, মাঠ ও ঘাটে দৃষ্টিসীমা কমে যায়। এ সময় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
ঘন কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। চাকলাহাট এলাকার দিনমজুর করিম মিয়া জানান, গত দুই দিন ধরে সকালে প্রচণ্ড ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। কাজে বের হলে শীতের তীব্রতায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে, ফলে স্বাভাবিকভাবে কাজ করাও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
একই কথা জানান স্থানীয় ভ্যানচালক তরিকুল। তিনি বলেন, ভোরবেলা ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় কিছুই স্পষ্ট দেখা যায় না। কুয়াশার জন্য ধীরে ভ্যান চালাতে হয়, যাত্রীও কমে গেছে।
এদিকে ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কে চলাচলকারী ট্রাকচালক রুবেল হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়েও সামনে ঠিকভাবে দেখা যায় না। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়, তাই অত্যন্ত সতর্ক হয়ে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
এর আগের দিন শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ। কুয়াশা না থাকলেও সকাল ১০টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। আর্দ্রতা বেশি থাকায় তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি হলেও ঠান্ডার অনুভূতি কমেনি। শনিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ১১ ডিসেম্বর, যেদিন পারদ নেমে আসে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে-যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ উপজেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও রোববার ফের কমেছে। আর্দ্রতা বেশি থাকায় শীতের অনুভূতি তীব্র হচ্ছে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
সারাদেশ
আজ টানা ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
ট্রান্সফরমার সংরক্ষণ ও মেরামত, সঞ্চালন লাইন উন্নয়ন এবং গাছপালার শাখা-প্রশাখা কাটার কাজের জন্য শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সিলেট নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় টানা ৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩৩/১১ কেভি শেখঘাট উপকেন্দ্রের আওতাধীন জল্লারপাড়, কিনব্রিজ, নবাব রোড, লালাদিঘীরপাড়, ঘাসিটুলা, পুলিশ লাইন, সার্কিট হাউজ, কলাপাড়া এবং ভাতালিয়া ফিডারের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
এ সময় সিজিএম কোর্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক, সিলেট বেতার, সাগর দিঘীরপাড়, দাড়িয়াপাড়া, জামতলা, মির্জাজাঙ্গাল, ছায়ানীড়, ছায়াতরু, সরষপুর গলি, মদনমোহন কলেজ, লামাবাজার, মাছুদিঘীরপাড়, রামেরদিঘীরপাড়, তালতলা, তেলিহাওর, শেখঘাট, শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকা, পশ্চিম কাজিরবাজার, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, কুয়ারপাড়, বিলপাড়, ইঙ্গুলাল রোড, নবীন আবাসিক এলাকা, ভাঙাটিকর, শামীমাবাদসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে না।
শাটডাউন চলাকালে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ লাইন সচল রয়েছে বলে ধরে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
সাময়িক এই ভোগান্তির জন্য গ্রাহকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ সবার সহযোগিতা কামনা করেছে। একই সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ হলে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।




