ব্যাংক
ব্যাংকগুলোর সিএসআর খাতে ব্যয় কমেছে ১৮ শতাংশ
সামাজিক দায়বদ্ধতা (করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি বা সিএসআর) খাতে ২০২৩ সালে ৯২৪ কোটি ৩২ লাখ ব্যয় করেছে ব্যাংকগুলো। যা আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বা ২০৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা কম। ২০২২ সালে এ খাতে ব্যয় করেছিল ১ হাজার ১২৯ কোটি টাকা।
বুধবার (২৭ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের সিএসআর সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আলোচিত সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে স্বাস্থ্য এরপর শিক্ষা এবং পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট সিএসআর ব্যয়ের ৩০ শতাংশ শিক্ষা খাতে, স্বাস্থ্য খাতে ৩০ শতাংশ, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রশমন ও অভিযোজন খাতে ২০ শতাংশ ব্যয় করতে হবে। বাকি ২০ শতাংশ আয়-উৎসারী কাজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি এবং অন্যান্য খাতের আওতায় ব্যয় করার নির্দেশনা রয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ৬১টি তফসিলি ব্যাংক ২০২৩ সালে ৯২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করেছে মোট খরচের ৩১ দশমিক ২৬ শতাংশ বা ২৮৯ কোটি টাকা। শিক্ষা খাতে ব্যয় ১৬৩ কোটি ১০ লাখ বা ১৭.৬৫ শতাংশ, পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে ব্যয় ৬৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা মোট খরচের ৭.৩৮ শতাংশ এছাড়া অন্যান্য খাতে ব্যয় ৪০৪ কোটি টাকা যা মোট ব্যয়ের ৪৩.৭২ শতাংশ।
প্রতিবেদন বলছে, দেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ২০২৩ সালে ৫টি ব্যাংক এক টাকাও সিএসআরে ব্যয় করেনি। এগুলো হলো, বেসিক ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক।
অন্যদিকে, ২০২২ সালে ৯টি ব্যাংক নিট মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। সেগুলো হলো, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান।
তবে এ ৯ ব্যাংকের মধ্যে ৫টি নিট মুনাফা অর্জন না করা সত্ত্বেও ২০২৩ সালে সিএসআরে ব্যয় করেছে। ব্যাংকগুলো হলো, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।
২০১৩ সালের পর লাইসেন্স পাওয়া ১৩টি ব্যাংকে আগের বছরের নিট মুনাফার অন্তত ১০ শতাংশ পরবর্তী বছরে সিএসআর খাতে ব্যয়ের শর্ত রয়েছে। কোনো ব্যাংক নিট মুনাফা করতে না পারলে তারা সিএসআরে ব্যয় করতে পারবে না। নতুন ব্যাংকের বাইরে অন্য ব্যাংক সিএসআরে খরচ করবে কি না, তাদের নিজস্ব বিষয়।
পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চতুর্থ প্রজন্মের ৬টি ব্যাংক (সাউথ-বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড, মধুমতী ব্যাংক লিমিটেড, সীমান্ত ব্যাংক পিএলসি, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি) আলোচিত সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যাংকগুলোর মধ্যে বরাবরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি সিএসআর ব্যয় করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি এ খাতে ব্যয় করেছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৪ কোটি টাকা ব্যয় করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। যমুনা ব্যাংক ৫৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয় করে তৃতীয় অবস্থানে আছে। পর্যায়ক্রমে মার্কেন্টাইল ৫৫ কোটি ৯২ লাখ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৫৩ কোটি ৬২ লাখ, আল-আরাফাহ ৫১ কোটি ৩২ লাখ, এক্সিম ৪৩ কোটি ৯৩ লাখ, সাউথইস্ট ব্যাংক ৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ইউসিবি ৩৮ কোটি ৪০ লাখ এবং ব্যাংক এশিয়া ৩২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো নিট মুনাফার একটি অংশ ছাড়াও সন্দেহজনক আয়, জাকাতসহ অন্যান্য তহবিল সিএসআর থাতে ব্যয় করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আলোচ্য সময়ে সিএসআর খাতে নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিএসআর খাতে ব্যয়ে করেছে ৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে ৩৮ শতাংশ শিক্ষায় ৩০ শতাংশ এবং পরিবেশ ও জলবায়ুতে ২১ শতাংশ ব্যয় করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ি
সাধারণত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকরা অবাধে প্রবেশ করে থাকেন। তবে গত এক মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারছেন না সাংবাদিকরা। এ নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ জন্ম নেয়। এতে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেন।
অন্যদিকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বেলা ১১টার দিকে অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত মতে এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছেই আসতে পারবেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সে ক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন, অন্য কোনো ফ্লোরে যেতে পারবেন না।
তবে আগের মতো তারা (সাংবাদিক) অবাধে কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
যেসব এলাকায় ব্যাংক বন্ধ থাকবে রবিবার
দেশের ২৫টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ ও উপনির্বাচন এবং ২টি পৌরসভার উপনির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তফসিলি ব্যাংক এবং এর শাখা ও উপশাখা আগামী রবিবার (২৮ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন (ডিওএস) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৩ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক আগামী ২৮ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পটুয়াখালী, বরগুনা, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজার জেলার ১৯ ইউনিয়নে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া রংপুর, বাগেরহাট, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মুন্সিগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলার ৬ ইউনিয়নের শূন্য চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও নীলফামারী জেলার জলঢাকা ও রাজশাহী জেলার কাটাখালী পৌরসভার মেয়রের শূন্যপদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত তফসিলি ব্যাংকগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয়সহ সব শাখা বা উপশাখা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এছাড়া এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে দেশে কার্যত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ডিজিটাল পেমেন্ট বাড়াতে সহায়তা করবে আইএফসি
বাংলাদেশে ডিজিটাল পেমেন্ট বা পরিশোধ ব্যবস্থা এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন-আইএফসি। সম্প্রতি এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএফসির মধ্যে চুক্তি হয়েছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএফসি জানায়, অস্ট্রেলিয়া সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসারে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে তারা সহায়তা দেবে। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আইএফসি-বাংলাদেশ ব্যাংক অংশীদারিত্ব বাংলাদেশে এ খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং অধিকতর নির্বিঘ্ন ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবস্থা করতে চায়।
এতে বলা হয়, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবাদানের মাধ্যমে ডিজিটাল অর্থায়ন এবং ব্যাংকিং সেবার ডিজিটালাইজেশন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিবর্তন এনেছে। বিশেষত ক্ষুদ্র ব্যবসায় ডিজিটাল পেমেন্ট এবং এর গ্রহণযোগ্যতা বাংলাদেশকে একটি ‘ক্যাশলেস’ অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নেওয়ার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এ প্রকল্প ডিজিটাল পেমেন্ট এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নতুন নীতি জারি করতে, দেশব্যাপী প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে ডিজিটাল পেমেন্টের হার ২৫ শতাংশে উন্নীত করতে সহায়তা দেবে।
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানে নিযুক্ত আইএফসির কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টম্যান বলেন, ‘উদ্ভাবনী, কার্যকর, সাশ্রয়ী এবং টেকসই আর্থিক পণ্যের সহজলভ্যতা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রকল্প বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করতে ডিজিটালাইজেশনের ক্ষমতাকে সাফল্যের সঙ্গে কাজে লাগাবে এবং সঞ্চয়, ঋণ, বিনিয়োগ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ডিজিটাল আর্থিক পণ্যের প্রসারে ভিত্তি তৈরি করবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাহুল হক বলেন, ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশে পরিণত হতে আমাদের জাতীয় আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতি রেখে আমরা যে কোনো পেমেন্টকে ডিজিটাল করার একটি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে চাই। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা অবশ্যই ডিজিটাল পেমেন্ট বিশেষত ‘বাংলা কিউআর’ এবং ‘টাকা পে’ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। আইএফসির সঙ্গে কাজ করার বাংলাদেশ ব্যাংকের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং এ প্রকল্প আমাদের সহযোগিতার ধারাবাহিকতা।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
পদ্মা ব্যাংকের এমডির পদত্যাগ
শরীয়াহভিত্তিক পরিচালিত বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাওয়া চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক রিয়াজ খান পদত্যাগ করেছেন। শিগগিরই তিনি এনআরবি ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে এনআরবি ব্যাংকের এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করেন মামুন মাহমুদ শাহ। এরপর থেকে ব্যাংকটি ভারপ্রাপ্ত এমডি দিয়ে চলছিল।
তারেক রিয়াজ খান ২০২২ সালের মার্চ মাসে পদ্মা ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একটি পক্ষের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় গতবছরের সেপ্টেম্বরে তারেক রিয়াজ এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে পরে আবার ব্যাংকে ফেরেন। এখন একীভূত হতে যাওয়া কোনো দুর্বল ব্যাংকের এমডি, ডিএমডি বিদ্যমান চাকরিতে থাকতে পারবেন না। এরকম অবস্থায় তিনি আবার পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত মাসে অনিয়ম-জালিয়াতিতে সংকটে পড়া পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) শরীয়াহভিত্তিক বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিষয় ঘোষণা দেওয়া হয়। এটা একীভূত করা প্রথম সিদ্ধান্ত। এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে গত ২৫ মার্চ বেসরকারি খাতের এ দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) সই করে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক এই দুটি ব্যাংকের নিরীক্ষার জন্য নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে।
এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০টি ব্যাংকের একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলো-এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংক, সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক, ইউসিবির সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ৯ এপ্রিল জানানো হয়, বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সঙ্গে একীভূত হচ্ছে সংকটে থাকা বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক। ওই দিন ইউসিবি ব্যাংকের একজন পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ডেকে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈঠক করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বৈঠকে ইউসিবির কর্তৃপক্ষকে একীভূত করার বিষয় উদ্যোগ নেওয়া কথা জানানো হয়। ওই বৈঠকে ন্যাশনাল ব্যাংকের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তার একদিন আগে ৮ এপ্রিল বেসরকারি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই দিন সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিকে ডেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ওই বৈঠকেও বেসিক ব্যাংকের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও ন্যাশনাল ব্যাংকের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। গভর্নর এককভাবে এসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এসব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বেসিকসহ কয়েকটি ব্যাংকের কর্মীরা বিরোধিতা করে অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ব্যাংক একীভূত হলেও আমানত নিরাপদ থাকবে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে জনমনে নানারকমের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে যেসব প্রকাশিত হয়েছে, তা অনেকাংশে প্রকৃত তথ্যনির্ভর নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, মূলত দুটি উদ্দেশ্য নিয়ে ‘ব্যাংক একীভূতকরণ’ নিয়ে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একটি হলো, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে কার্যকর ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য দেশে অধিক সক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হবে, যাতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনোরূপ বাধার সৃষ্টি না হয়।
দ্বিতীয় উদ্দেশ্যটি হলো, অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যাংকের বিদ্যমান সমস্যা সমাধান এবং একই সঙ্গে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের কার্যক্রম উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করা, যাতে করে জনস্বার্থে একীভূত ব্যাংক আরও সেবা প্রদান করতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, একীভূতকরণের প্রক্রিয়াধীন ব্যাংকগুলোয় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের জমাকৃত আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি একীভূতকরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরও ব্যাংকের হিসাবধারীদের বর্তমান হিসাব আগের মতো চলমান থাকবে। এ ছাড়া একীভূতকরণের আওতাভুক্ত ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা পরিচালক, বর্তমান পর্ষদ ও সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতির ভিত্তিতেই একীভূতকরণের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
এসএম