ব্যাংক
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে যেসব যোগ্যতা লাগবে
ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান— এনবিএফআইয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সর্বোচ্চ পদ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) পদে নিয়োগ বা পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রে কী যোগ্যতা, দক্ষতা ও উপযুক্ততা থাকতে হবে তা ঠিক করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে জারি করা এক সার্কুলারের মাধ্যমে নীতিমালা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী- এমডি হওয়ার জন্য বেশ কিছু উপযুক্ততা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। ফৌজদারি আদালতে দণ্ডিত কিংবা জাল-জালিয়াতি, আর্থিক অপরাধ বা অন্যবিধ অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডি হতে পারবে না। এছাড়া দেওয়ানী বা ফৌজদারি মামলায় আদালতের রায়ে কোনো বিরূপ পর্যবেক্ষণ বা মন্তব্য করে থাকলেও অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট বা অনসাইট পরিদর্শনে তার বিরুদ্ধে কোনো বিরূপ পর্যবেক্ষণ থাকলে এমডি হিসেবে অযোগ্য হবেন। আগে কোনো প্রতিষ্ঠানে থাকাকালীন ওই প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন অথবা লাইসেন্স বাতিল হয়েছে অথবা কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানটি অবসায়িত হয়েছে কিংবা অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, জাল-জালিয়াতি ও নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে অপসারণ, বরখাস্ত, অবনমিত বা অব্যাহতি পেয়েছেন; এমন ব্যক্তি এমডি হতে পারবেন না।
ঋণখেলাপি, করখেলাপি ও আর্থিক অনিয়মে জড়িত ব্যক্তি এমডি হতে পারবে না।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
এমডি হতে হলে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হতে হবে। অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং, ব্যবস্থাপনা কিংবা ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে উচ্চতর প্রাতিষ্ঠানিক বা পেশাগত শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। শিক্ষাজীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি থাকতে পারবে না। গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রকাশিত ফলাফলের ক্ষেত্রে এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার ক্ষেত্রে জিপিএ ৩-এর কম এবং অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রদত্ত সিজিপিএ-এর ক্ষেত্রে ৪ পয়েন্ট স্কেলে ২.৫০-এর কম ও ৫ পয়েন্ট স্কেলে ৩-এর কম হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
স্বার্থসংশ্লিষ্টতা এবং ব্যবসায় বা পেশাগত যুক্ততা
এমডি কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক-কোম্পানি বা বীমা কোম্পানি অথবা উক্তরূপ কোম্পানির নিয়ন্ত্রিত কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালক থাকতে পারবেন না বা প্রতিষ্ঠানসমূহের কোনো লাভজনক পদে নিযুক্ত থাকতে পারবেন না। এছাড়া অন্য কোনো ব্যবসা বা পেশায় থাকতে পারবেন না।
বয়সসীমা
কোনো ব্যক্তির বয়স ৬৫ বছর অতিক্রান্ত হলে তিনি কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে থাকতে পারবেন না। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৬২ বছর।
পদের নামকরণ
ফাইন্যান্স কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তার পদনাম “ব্যবস্থাপনা পরিচালক” বা “প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা” হিসেবে অভিহিত হবে।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগের মেয়াদ হবে সাধারণভাবে ৩ বছর, তবে তিনি পুনঃনিয়োগের যোগ্য হবেন। পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর বয়স যদি ৬২ বছর অতিক্রান্ত হয়, সেক্ষেত্রে বয়স ৬৫ হতে যতদিন বাকি থাকবে ততদিনের জন্য নিয়োগ পাবেন।
পুরো নীতিমালা দেখতে এখানে ক্লিক করুন—
নির্বাচন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে যোগ্য ব্যক্তিদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক বহুল প্রচারিত কমপক্ষে দুটি বাংলা ও দুটি ইংরেজি পত্রিকা এবং প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে একজন স্বচ্ছ ইমেজের যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে কড়াকড়ি
সাধারণত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকরা অবাধে প্রবেশ করে থাকেন। তবে গত এক মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারছেন না সাংবাদিকরা। এ নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ জন্ম নেয়। এতে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেন।
অন্যদিকে বিষয়টি সমাধানের জন্য বেলা ১১টার দিকে অর্থনীতি বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত মতে এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছেই আসতে পারবেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সে ক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন, অন্য কোনো ফ্লোরে যেতে পারবেন না।
তবে আগের মতো তারা (সাংবাদিক) অবাধে কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
যেসব এলাকায় ব্যাংক বন্ধ থাকবে রবিবার
দেশের ২৫টি ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ ও উপনির্বাচন এবং ২টি পৌরসভার উপনির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তফসিলি ব্যাংক এবং এর শাখা ও উপশাখা আগামী রবিবার (২৮ এপ্রিল) বন্ধ থাকবে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশন (ডিওএস) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৩ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক আগামী ২৮ এপ্রিল লক্ষ্মীপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পটুয়াখালী, বরগুনা, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজার জেলার ১৯ ইউনিয়নে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া রংপুর, বাগেরহাট, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মুন্সিগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলার ৬ ইউনিয়নের শূন্য চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও নীলফামারী জেলার জলঢাকা ও রাজশাহী জেলার কাটাখালী পৌরসভার মেয়রের শূন্যপদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের দিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত তফসিলি ব্যাংকগুলোর আঞ্চলিক কার্যালয়সহ সব শাখা বা উপশাখা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এছাড়া এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে দেশে কার্যত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ডিজিটাল পেমেন্ট বাড়াতে সহায়তা করবে আইএফসি
বাংলাদেশে ডিজিটাল পেমেন্ট বা পরিশোধ ব্যবস্থা এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন-আইএফসি। সম্প্রতি এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএফসির মধ্যে চুক্তি হয়েছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএফসি জানায়, অস্ট্রেলিয়া সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসারে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে তারা সহায়তা দেবে। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আইএফসি-বাংলাদেশ ব্যাংক অংশীদারিত্ব বাংলাদেশে এ খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং অধিকতর নির্বিঘ্ন ডিজিটাল পেমেন্টের ব্যবস্থা করতে চায়।
এতে বলা হয়, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবাদানের মাধ্যমে ডিজিটাল অর্থায়ন এবং ব্যাংকিং সেবার ডিজিটালাইজেশন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিবর্তন এনেছে। বিশেষত ক্ষুদ্র ব্যবসায় ডিজিটাল পেমেন্ট এবং এর গ্রহণযোগ্যতা বাংলাদেশকে একটি ‘ক্যাশলেস’ অর্থনীতির দিকে এগিয়ে নেওয়ার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এ প্রকল্প ডিজিটাল পেমেন্ট এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নতুন নীতি জারি করতে, দেশব্যাপী প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে ডিজিটাল পেমেন্টের হার ২৫ শতাংশে উন্নীত করতে সহায়তা দেবে।
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানে নিযুক্ত আইএফসির কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টম্যান বলেন, ‘উদ্ভাবনী, কার্যকর, সাশ্রয়ী এবং টেকসই আর্থিক পণ্যের সহজলভ্যতা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রকল্প বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করতে ডিজিটালাইজেশনের ক্ষমতাকে সাফল্যের সঙ্গে কাজে লাগাবে এবং সঞ্চয়, ঋণ, বিনিয়োগ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ডিজিটাল আর্থিক পণ্যের প্রসারে ভিত্তি তৈরি করবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাহুল হক বলেন, ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশে পরিণত হতে আমাদের জাতীয় আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতি রেখে আমরা যে কোনো পেমেন্টকে ডিজিটাল করার একটি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে চাই। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা অবশ্যই ডিজিটাল পেমেন্ট বিশেষত ‘বাংলা কিউআর’ এবং ‘টাকা পে’ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চাই। আইএফসির সঙ্গে কাজ করার বাংলাদেশ ব্যাংকের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং এ প্রকল্প আমাদের সহযোগিতার ধারাবাহিকতা।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
পদ্মা ব্যাংকের এমডির পদত্যাগ
শরীয়াহভিত্তিক পরিচালিত বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে যাওয়া চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক রিয়াজ খান পদত্যাগ করেছেন। শিগগিরই তিনি এনআরবি ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে এনআরবি ব্যাংকের এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করেন মামুন মাহমুদ শাহ। এরপর থেকে ব্যাংকটি ভারপ্রাপ্ত এমডি দিয়ে চলছিল।
তারেক রিয়াজ খান ২০২২ সালের মার্চ মাসে পদ্মা ব্যাংকের এমডি হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের একটি পক্ষের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় গতবছরের সেপ্টেম্বরে তারেক রিয়াজ এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে পরে আবার ব্যাংকে ফেরেন। এখন একীভূত হতে যাওয়া কোনো দুর্বল ব্যাংকের এমডি, ডিএমডি বিদ্যমান চাকরিতে থাকতে পারবেন না। এরকম অবস্থায় তিনি আবার পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গত মাসে অনিয়ম-জালিয়াতিতে সংকটে পড়া পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) শরীয়াহভিত্তিক বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিষয় ঘোষণা দেওয়া হয়। এটা একীভূত করা প্রথম সিদ্ধান্ত। এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে গত ২৫ মার্চ বেসরকারি খাতের এ দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) সই করে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক এই দুটি ব্যাংকের নিরীক্ষার জন্য নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়েছে।
এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০টি ব্যাংকের একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলো-এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা ব্যাংক, সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক, ইউসিবির সঙ্গে ন্যাশনাল ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ৯ এপ্রিল জানানো হয়, বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সঙ্গে একীভূত হচ্ছে সংকটে থাকা বেসরকারি ন্যাশনাল ব্যাংক। ওই দিন ইউসিবি ব্যাংকের একজন পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ডেকে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈঠক করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বৈঠকে ইউসিবির কর্তৃপক্ষকে একীভূত করার বিষয় উদ্যোগ নেওয়া কথা জানানো হয়। ওই বৈঠকে ন্যাশনাল ব্যাংকের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তার একদিন আগে ৮ এপ্রিল বেসরকারি সিটি ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি মালিকানাধীন বেসিক ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই দিন সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিকে ডেকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ওই বৈঠকেও বেসিক ব্যাংকের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত করার বিষয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও ন্যাশনাল ব্যাংকের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। গভর্নর এককভাবে এসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এসব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বেসিকসহ কয়েকটি ব্যাংকের কর্মীরা বিরোধিতা করে অর্থ মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ব্যাংক একীভূত হলেও আমানত নিরাপদ থাকবে: কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে জনমনে নানারকমের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে যেসব প্রকাশিত হয়েছে, তা অনেকাংশে প্রকৃত তথ্যনির্ভর নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, মূলত দুটি উদ্দেশ্য নিয়ে ‘ব্যাংক একীভূতকরণ’ নিয়ে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একটি হলো, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে কার্যকর ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য দেশে অধিক সক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন হবে, যাতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনোরূপ বাধার সৃষ্টি না হয়।
দ্বিতীয় উদ্দেশ্যটি হলো, অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যাংকের বিদ্যমান সমস্যা সমাধান এবং একই সঙ্গে অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের কার্যক্রম উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করা, যাতে করে জনস্বার্থে একীভূত ব্যাংক আরও সেবা প্রদান করতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, একীভূতকরণের প্রক্রিয়াধীন ব্যাংকগুলোয় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের জমাকৃত আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি একীভূতকরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরও ব্যাংকের হিসাবধারীদের বর্তমান হিসাব আগের মতো চলমান থাকবে। এ ছাড়া একীভূতকরণের আওতাভুক্ত ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা পরিচালক, বর্তমান পর্ষদ ও সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতির ভিত্তিতেই একীভূতকরণের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
এসএম