স্বাস্থ্য
৯ মেডিকেল কলেজে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ
ময়মনসিংহ, জামালপুর, কিশোরগঞ্জসহ দেশের ৯টি মেডিকেল কলেজে নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপসচিব দূর-রে-শাহ্ওয়াজ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন নিয়োগ পাওয়া অধ্যক্ষরা হলেন- রংপুর মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. শাহ্ মো. সরওয়ার জাহানকে একই মেডিকেলে, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ ইজাজুল হককে একই মেডিকেলে, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের ডা. দিলরুবা জেবাকে একই মেডিকেলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. অমল চন্দ্র পালকে গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. আশুতোষ সাহা রায়কে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ করা হয়েছে।
এছাড়া চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. সাহেলা নাজনীন একই মেডিকেলে, রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. আবু রায়হান মো. সুজা-উদ-দৌলা নীলফামারী মেডিকেল কলেজে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা.পীযুষ কুমার কুন্ডুকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তাদেরকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের নামের পার্শ্বে বর্ণিত পদে ও কর্মস্থলে পদায়ন করা হলো।
‘রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ও জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে’, বলা হয় প্রজ্ঞাপনে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
করোনা টিকা কোভিশিল্ডে ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
করোনাভাইরাস এখন স্বাভাবিক পর্যায়ে এলেও শুরুতে একে মহামারি বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। করোনার সংক্রমণে থমকে গিয়েছিল সারা বিশ্ব। তবে সময় পাল্টেছে। করোনা এখন আর মহামারিরূপে নয়। তবে এবার সামনে এসেছে করোনার টিকা কোভিশিল্ডের ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, করোনার টিকা কোভিশিল্ডের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, এ টিকার ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এ টিকার কারণে ‘থ্রম্বোসিস থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ (টিটিএস) হতে পারে।
টিটএস বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার একটি রোগ। যার ফলে রক্তে জমাট বাঁধতে পারে। কর্তৃপক্ষের এমন স্বীকারোক্তির পর টিকা গ্রহণকারীরা কতটা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেননা বাংলাদেশ ও ভারতের অনেকে এ টিকা গ্রহণ করেছেন।
ভারতের সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঈশ্বর গিলাদা জানিয়েছেন, থ্রোম্বোটিক থ্রম্বোসাইটোপেনিক সিনড্রোম হলো বিরল। কিন্তু এর প্রভাব গুরুতর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মাত্র ০.০০২ শতাংশ ক্ষেত্রেই এই ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অর্থাৎ প্রতি ৫০ হাজার লোকের মধ্যে একজনেরও কম মানুষ এমন ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
ভারতের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ন্যাশনাল কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের কো-চেয়ারম্যান ডা. রাজীব জয়দেব জানান, এ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুধু প্রথম ডোজ নেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে দেখা গেছে। এরপর আর দেখা যায়নি। এ ছাড়া ভারতে ‘থ্রম্বোসিস থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’ হওয়ার কোনো খবর নেই বলেও জানান তিনি।
হায়দরাবাদের একটি স্বনামধন্য বেসরকারি হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট চিকিৎসক সুধীর কুমার বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।
তিনি জানান, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকলে টিকা দেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তা দেখা দিতে পারে। সাধারণত টিকা নেওয়ার এক থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার কথা। তবে এরপর দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ায় চিন্তার কোনো কারণ নেই।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মাসিউটিক্যালের যৌথ প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা কোভিশিল্ডে ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে।
তারা জানান, এ টিকার পাশ্বপ্রতিক্রিয়া হলো ‘থ্রম্বোসিস থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম’। যার ফলে মানুষের রক্তে জমাট বাঁধে। টিটিএসের কারণে মানুষের মস্তিষ্কসহ শরীরের জটিল কিছু জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে।
এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। করোনার এ টিকা উৎপাদন করেছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশকে এটি প্রয়োগ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলেন ৫৮ চিকিৎসক
দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল-মেডিকেল কলেজসহ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৫৮ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের (পার-১) উপ-সচিব সারমিন সুলতানা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পদোন্নতি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে কর্মরত নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তাদের জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এর ৪র্থ গ্রেডে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রদান করা হলো।
পদোন্নতি পাওয়া চিকিৎসকদের মধ্যে ইউরোলজি বিভাগের ৫ জন, গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের ৩ জন, সার্জারি বিভাগের ৪৯ জন ও পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের একজন রয়েছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ৮ জন
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। একই সময় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও আটজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আটজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের বাইরে পাঁচজন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে একজন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দুজন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১০ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এক হাজার ৯৭৩ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।
চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ১১১ জন। এর মধ্যে এক হাজার ৩০২ জন পুরুষ ও ৮৯০ জন নারী রয়েছেন। চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২৪ জন। মৃতদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ ও ১৩ জন নারী রয়েছেন।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
করোনা শনাক্ত আরও ১৬ জনের
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাসে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৯৪ জনের।
এদিন নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৬ জন। সবমিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩১ জনে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৭ হাজার ৩৬৫ জন। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৯১টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ৩৩৫টি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার চার দশমিক ০৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজন আইসোলেশনে এসেছেন এবং আইসোলেশন থেকে কেউ ছাড়পত্র পায়নি। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ৯৭২ জন এবং আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৭১৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ২৫৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
স্বাস্থ্য
তাপপ্রবাহে অতি উচ্চঝুঁকিতে বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
দেশে মাসজুড়ে চলা টানা তাপপ্রবাহের কারণে স্বাস্থ্যগত উচ্চঝুঁকিতে আছে শিশুরা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট। একইসঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্তানদের পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা ও নিরাপদ রাখার জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের জন্য অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান এই তাপপ্রবাহসহ জলবায়ু পরিবর্তনের আরও ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়। অস্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় আমাদের আগে শিশু ও সবচেয়ে অসহায় জনগোষ্ঠীকে নিরাপদে রাখার প্রতি নজর দিতে হবে।
ইউনিসেফ বলছে, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ‘অতি উচ্চঝুঁকিতে’ রয়েছে শিশুরা। অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করে শিশুদের জন্য। বিশেষ করে নবজাতক, সদ্যোজাত ও অল্পবয়সী শিশুদের জন্য। হিটস্ট্রোক ও পানি শূন্যতাজনিত ডায়রিয়ার মতো, উচ্চতাপমাত্রার প্রভাবে সৃষ্ট অসুস্থতায় শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শুরু থেকেই দেশব্যাপী বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। শুরুতে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ থাকলেও ক্রমে তা তীব্র থেকে অতি তীব্র হয়ে উঠেছে। এমনিতে এপ্রিল বছরের উষ্ণতম মাস। তবে অন্যান্য যে কোনো বছরের চেয়ে অনেক বেশি উত্তাপ ছড়াচ্ছে এবারের মাসটি। অসহনীয় গরমে এক পশলা বৃষ্টির জন্য হাঁসফাঁস করছে জনজীবন।
মাসের এখনও বাকি সপ্তাহখানেক, এরই মধ্যে কয়েক দফায় হিট অ্যালার্ট জারি হয়েছে দেশে। মাসের মাঝামাঝি এসে প্রতিদিন মরুর দেশগুলোর তাপমাত্রাকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে দেশের কোনো কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা।
টানা এই তাপপ্রবাহকে অস্বাভাবিক বলছেন দেশের আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেছেন, গত এক দশক থেকেই এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকছে তাপমাত্রা। এপ্রিল মাসের গড় স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.২। তবে এবার এপ্রিলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। অধিকাংশ জায়গায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির ওপরে থাকছে।
এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের ওপর অসহনীয় গরমের নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে সারা দেশে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি সব প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। জলবায়ুর ক্রমবর্ধমান বিরূপ পরিবর্তনে শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিসেফও।
তাপপ্রবাহ থেকে শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের সুরক্ষার জন্য সম্মুখসারির কর্মী, বাবা-মা, পরিবার, পরিচর্যাকারী ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে ইউনিসেফের পক্ষ থেকে।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
শিশুরা যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের বসা ও খেলার জন্য ঠান্ডা জায়গার ব্যবস্থা করুন। তপ্ত দুপুর ও বিকেলের কয়েক ঘণ্টা তাদের বাড়ির বাইরে বেরোনো থেকে বিরত রাখুন। শিশুরা যেন হালকা ও বাতাস চলাচলের উপযোগী পোশাক পরে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে সারা দিন তারা যেন প্রচুর পানি পান করে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
প্রাথমিক চিকিৎসা
যদি কোনো শিশু বা অন্তঃসত্ত্বা নারীর মধ্যে ‘হিট স্ট্রেস’ বা তাপমাত্রাজনিত সমস্যার উপসর্গ দেখা দেয় (যেমন, মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, বমি বমি ভাব, হালকা জ্বর, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মাংসপেশিতে টান, ডায়াপার পরার জায়গাগুলোতে ফুসকুড়ি) তাহলে তাকে একটি ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে যান, যেখানে ছায়া এবং পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের সুযোগ আছে। এরপর ভেজা তোয়ালে দিয়ে তার শরীর মুছিয়ে দিন বা গায়ে ঠান্ডা পানি দিন। তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি বা খাবার স্যালাইন পান করতে দিন। হিট স্ট্রেসের (তাপমাত্রাজনিত অসুস্থতার) উপসর্গ তীব্র হলে (যেমন কোনকিছুতে সাড়া না দিলে, অজ্ঞান হয়ে পড়লে, তীব্র জ্বর, হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেলে, খিঁচুনি দেখা দিলে এবং অচেতন হয়ে পড়লে) তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নিতে হবে।
প্রতিবেশীদের প্রতিও খেয়াল রাখার পরামর্শ
তাপপ্রবাহ চলাকালে অসহায় পরিবার, প্রতিবন্ধী শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও প্রবীণ ব্যক্তিরাই সবার আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন, এমনকি মৃত্যুর উচ্চঝুঁকিতেও তারাই বেশি থাকেন। আপনার প্রতিবেশী, বিশেষ করে যারা একা থাকেন, তাদের খোঁজ নিন ও খেয়াল রাখুন।