লাইফস্টাইল
রোজায় সুস্থ থাকতে যে ১০ বিষয় এড়িয়ে চলা উচিত
শুধু ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার প্রশিক্ষণ দিতে নয়, রমজানের আগমন ঘটে একটি সুস্থ জীবন পরিচালনার বার্তা নিয়ে। এক মাসের এই কর্মপদ্ধতিতে থাকে সারা বছরের রোগমুক্তির পাথেয়। এরপরেও পুরনো অভ্যাস ও সঠিক জ্ঞানের অভাবে অনেকেই বঞ্চিত হন রোজা রাখার পূর্ণ উপযোগিতা থেকে।
দৈনন্দিন জীবনের বেশ কিছু অস্বাস্থ্যকর কার্যকলাপে বছরের সাধারণ দিনগুলোতেই দেহ অরক্ষিত হয়ে থাকে। সেখানে টানা এক মাস দিনের একটা বিরাট সময় অনাহারে থাকা আরও কঠিন। আর এখানেই রোজা পালনে শারীরিক যোগ্যতার প্রশ্ন আসে। তাই চলুন, রোজা রাখার সময় শারীরিক সুস্থতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ১০টি বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
সেহরি বা ইফতারে অতিরিক্ত খাওয়া
সারাদিন অনাহারে থাকার পর সন্ধ্যায় রোজা ভাঙার মুহুর্তে স্বভাবতই পেট পূর্তির প্রতি একটু বেশিই আকুলতা কাজ করে। এই সহজাত প্রবৃত্তির তাড়ণায় সাড়া দিয়ে অনেকেই ইফতারে মাত্রাতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন। এরকম অনিয়ন্ত্রিত আহার বদহজম এবং ওজন বৃদ্ধির দিকে ঠেলে দেয়।
এ সময় অনেকের মধ্যে এক বসাতেই সব খাবার গোগ্রাসে গেলার প্রবণতা দেখা যায়, যা আরও বেশি ক্ষতিকর। এর ফলে খাবার হজমে দেরি হয় এবং বিপাক ক্রিয়ার কার্যক্ষমতা কমে যায়।
এর বদলে পানি দিয়ে রোজা ভেঙে মাগরিব নামাজ পড়ে তারপর আবার খেতে বসা উত্তম। এতে করে পরিপাক তন্ত্রের খাবার হজমকারী এনজাইমগুলো প্রস্তুত হওয়ার সময় পায়।
পেট পূর্তির এই সমস্যাটি সেহরির ক্ষেত্রেও দেখা যায়। অনেকেই ভেবে থাকেন যে রোজা শুরুর ঠিক আগ মুহুর্তে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে পরবর্তীতে দিনের বেলায় আর তৃষ্ণা লাগবে না। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ এর ফলে পানি থেকে মুক্তি পেতে কিডনি দ্রুত সক্রিয় হয়ে যায়। ফলে প্রস্রাব হয়ে যাওয়াতে এই অতিরিক্ত পানি পান কোনও কাজেই লাগে না। বরং দিনের বেলায় তৃষ্ণা লাগার ব্যাপারটি অব্যাহত থাকে।
ইফতারে তৈলাক্ত, চিনি ও লবণযুক্ত খাবার
সবচেয়ে আশঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে সেই মাত্রাতিরিক্ত খাবারের অধিকাংশই থাকে ভাজা-পোড়া কিংবা অধিক চিনি বা লবণযুক্ত। এছাড়া এগুলোতে ক্যালোরির পরিমাণও থাকে বেশি। সারাদিন উপবাসের পর এই খাবারগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই এক ভালো লাগা অনুভূতি দেয়। কিন্তু অন্যদিকে পরের দিনের রোজা পালনটা কঠিন হয়ে ওঠে।
মশলাদার এবং অধিক লবণযুক্ত খাবার শরীরের পানির চাহিদা বৃদ্ধি করে। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে শরীরে অলসতা ও ক্লান্তির উদ্রেক ঘটে। নিয়মিত এ ধরনের খাদ্য গ্রহণে রক্তে শর্করার মাত্রায় ভারসাম্যহীনতা এবং কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়।
সেহরির বিষয়ে উদাসীনতা
বেশি রাত করে ঘুমাতে যেয়ে অনেকেরই সেহরির সময়টা বাদ পড়ে যায়। কেউ কেউ অগত্যা সেহরি ছাড়াই পরের দিনের রোজা অব্যাহত রাখেন। অনেকে আবার এই ঝামেলা এড়াতে ভোর রাতের বদলে রাত ১ টার মধ্যে সেহরি করে শুয়ে পড়েন। এই কার্যকলাপ শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে পরের দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা পালনের জন্য শরীর যথেষ্ট পুষ্টি এবং শক্তি থেকে বঞ্চিত হয়।
দিনের বেলা বিরামহীন পানিশূন্যতার মধ্য দিয়ে ক্লান্তি বোধ হয়। তদুপরি, সেহরি ও ইফতারে সল্পাহারের পরিবর্তে শুধু ইফতারে দুই বেলার খাবার একসঙ্গে খেলে গ্যাস্ট্রিক ও ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকে।
ক্যাফেইন গ্রহণ
কফি এবং চা-এ থাকা উত্তেজক পদার্থ ক্যাফেইনের মধ্যে রয়েছে মূত্রবর্ধক বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ প্রচুর পরিমাণে কফি বা চা পান মানেই প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। আর এভাবে ঘন ঘন প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর পানিশূন্যতার দিকে এগিয়ে যায়। তাই রমজানের আগে থেকে কফি বা চা পানের অভ্যাসটি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
ঠান্ডা পানি বা কোমল পানীয় গ্রহণ
সেহরিতে সরাসরি ঠান্ডা পানি পান করলে পাকস্থলী ও অন্ত্রে রক্ত চলাচল কম হয়। এতে করে হজমের সমস্যা, স্থূলতা এবং ঘন ঘন অ্যাসিডিটি হতে পারে। প্রক্রিয়াজাত কোমল পানীয় এমনিতেই অস্বাস্থ্যকর। সেখানে অত্যধিক ঠান্ডা হলে তা রোজার ক্ষেত্রে শরীরকে অত্যন্ত দুর্বল করে তোলে।
অনিয়মিত দাঁত ব্রাশ
দাঁত ব্রাশ করলে রোজা নষ্ট হয় না, যতক্ষণ না টুথপেস্ট গিলে ফেলা হয়। প্রায় সময় ব্রাশ করার পরে দাঁতের ফাঁকে অল্প টুথপেস্ট লেগে থাকে। এ কারণে সকালে ব্রাশ করা নিয়ে রোজা হওয়া না হওয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। কিন্তু তাই বলে রমজানে দাঁত ব্রাশ করা থেকে বিরত থাকার কোনও মানে হয় না।
বরং ব্রাশ না করার ফলে দাঁতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, ইফতার পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ে এগুলো বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। ফলে মুখ গহ্বরে সৃষ্টি হওয়া অম্লত্ব দাঁতের ক্ষয় ঘটায়।
তাই সেহরির খাবার খাওয়ার পরে কিছু সময় রেখে ফজরের আযানের আগেই দাঁত ব্রাশ করে ফেলা যেতে পারে। এছাড়া ইফতারের পরের সময়টাও দাঁত পরিষ্কারের জন্য উৎকৃষ্ট।
অনিয়মিত গোসল
গোসলের সময় নাক, কান বা মুখ দিয়ে শরীরের ভেতরে পানি ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে অনেকেই রমজান মাসে গোসল করা কমিয়ে দেন। কিন্তু এটি কোনও সঠিক সমাধান নয়, বরং তা সর্বাঙ্গীন ভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অন্তরায়।
দিনের বেলা রোদের উষ্ণতার কারণে ত্বকের ছিদ্র দিয়ে তরল নিঃসরণ বেড়ে মুখ আর্দ্র হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে শরীরের ভেতর থেকে প্রয়োজনীয় পানির এক বিরাট অংশ বাইরে বেরিয়ে আসে। প্রতিদিন গোসল করলে ত্বক এই তরল নিঃসরণ থেকে বিরত থাকে। এছাড়া হাল্কা গরম পানিতে গোসল করা রক্তনালীগুলোকে প্রসারিত করে শরীরকে শিথিলতা দান করে।
প্রসারিত রক্তনালী দিয়ে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সারা দেহে রক্তের পরিচলন ঘটে। একই সময় ত্বকের ছিদ্রপথগুলোতে গোসলের পানি সহজে ঢুকে গিয়ে ময়লা পরিষ্কার করতে পারে। এতে করে শরীরের চামড়া ভালো থাকে, একই সঙ্গে শরীরের ব্যথা এবং ফোলাভাব দূর হয়।
এছাড়া নিয়মিত গোসল শরীরের বিভিন্ন অংশে জমে থাকা লবণ ধুয়ে ফেলে শরীরকে দুর্গন্ধ মুক্ত করে।
সেহরির আগে কুসুম গরম পানিতে গোসল করা শরীরের পেশী এবং জয়েন্টের ব্যথা উপশমে বেশ উপকারি। এই উষ্ণ স্নান শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাধ্যমে শরীরের বিপাককে সক্রিয় করে তোলে। এ সময় ক্যালোরি শোষিত হয়ে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পায়। আর এই শক্তি উপবাসের সময় দীর্ঘ সময়ের জন্য পাকস্থলি পূর্ণ থাকার অনুভূতি দেয়।
দিনের বেলা অতিরিক্ত পরিশ্রম
পরিবেশ দূষণের কারণে উৎপন্ন তাপ সূর্যের তাপকে শরীরের জন্য অধিক বিপজ্জনক করে তোলে। এই অবস্থায় অনেককেই জীবিকার তাগিদে অধিকাংশ সময় রোদের মধ্যে ঘুরতে হয়। বিশেষ করে দুপুরের সূর্যের তাপ মাত্রাতিরিক্ত পানিশূন্যতাই সৃষ্টির মাধ্যমে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ধ্বংস করে।
এ অবস্থায় আহার নিদেনপক্ষে পানি থেকে বিরত থাকা বেশ কষ্টকর। তাই রোজা পালনের জন্য যতটুকু সম্ভব সূর্যের তাপ থেকে শরীরকে বাঁচিয়ে চলা উচিৎ। যাদের সকালে ব্যায়ামের অভ্যাস আছে তারা সময়টা বদলে ইফতারের পরে ব্যায়াম করতে পারেন।
দীর্ঘ সময় ধরে শুয়ে বা বসে থাকা
রমজান মাসে রোজা রাখার অজুহাতে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ যাবৎ অযথা অলস সময় কাটান। এটি শুধু সময় অপচয় নয়, বরং শরীরের উপরও এর ক্ষতিকর প্রভাব আছে। এমনকি যারা অফিসে বা বাসায় দীর্ঘক্ষণ ধরে বসে কাজ করেন বিষয়টি তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
অনেকক্ষণ ধরে বসে থাকার ফলে পা এবং নিতম্বের পেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এই পেশীগুলো মুলত হাঁটা ও স্থির হয়ে দাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিরামহীন বসে থাকা কোমড়ের ফ্লেক্সর পেশীগুলোকে ছোট করে দেয়। ফলে এগুলোর সঙ্গে নিতম্বের জয়েন্টগুলোর অসঙ্গতি তৈরি হয়।
এই পেশীগুলো দুর্বল হয়ে গেলে সামান্য হোচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার পরেও গুরুতর আহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বসে বসে অনেক সময় পার করলে হজম প্রক্রিয়া কার্যকর থাকে না। ফলে খাওয়ার সময় শরীরে প্রবেশকৃত চর্বি ও শর্করা শুধুমাত্র চর্বি হিসাবেই জমা হতে থাকে। এই বিষয়টি এমনকি বসে বসে অনেক ক্ষণ ধরে ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকার ফলে পিঠের সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে বসার ভঙ্গিটা যদি দুর্বল হয়। দুর্বল অঙ্গবিন্যাস মেরুদণ্ডের চাকতিগুলোকে সংকুচিত করে দিতে পারে। চরম অবস্থায় এটি মেরুদণ্ড বেঁকে যাওয়া ভাঙনের দিকে পরিচালিত করে, যা খুবই যন্ত্রণাদায়ক।
দীর্ঘ সময় ধরে শুয়ে থাকার ফলে শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেড়ে যায়।
খুব বেশিক্ষণ বসে থাকার ফলে পায়ের শিরাগুলোতে রক্ত প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। মেডিকেলের পরিভাষায় এই সমস্যার নাম ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (ডিভিটি)। এর ফলে ফুসফুসসহ শরীরের অন্যান্য অংশে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ঘুমের বেলায় অনিয়ম
প্রতিদিন ঘুমে কমবেশি হওয়া রোজা রাখার ক্ষেত্রে শারীরিক যোগ্যতা নষ্ট করে। ঘুম কম হলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। ফলে স্থূলতা, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি থাকে।
ক্লান্তি ও দুর্বলতার একটি বড় কারণ হচ্ছে ঘুমের ধরনে পরিবর্তন। বিশেষ করে ইফতারের পর ভরা পেট নিয়ে ঘুমানো স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। এটি পরিপাকতন্ত্রের কাজকে বাধাগ্রস্ত করে, যার ফলে শরীরে চর্বি জমে ওজন বৃদ্ধি পায়।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফস্টাইল
যেসব গাছ রাখলে ঘর ঠান্ডা থাকে
তীব্র গরমে কোনো স্বস্তিই মিলছে না। সিলিং ফ্যান অবিরাম ঘুরছে ঠিকই কিন্তু বাতাস যেন শীতল হচ্ছে না। অনেক বাড়িতেই তাই জায়গা করে নিয়েছে এসি। কিন্তু সবার পক্ষে তো আর এসি কেনা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে বন্ধু হতে পারে গাছ।
এমন কিছু গাছ রয়েছে যা ঘরের ভেতরের আবহাওয়াকে শীতল রাখতে সাহায্য করে। কীভাবে গাছ ঘর ঠান্ডা করে? সমীক্ষা অনুযায়ী, গাছ স্বেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গরম বাতাস শোষণ করে এবং পরিবেশে অক্সিজেন ও শীতল আর্দ্রতা ছড়িয়ে দেয়।
ঘরের পরিবেশকে শীতল রাখতে কোন গাছগুলো সাহায্য করে চলুন জেনে নিই-
অ্যালোভেরা
ত্বকের যেকোনো সমস্যা দূর করতে উপকারি ভূমিকা রাখে অ্যালোভেরা। এই পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জলীয় পদার্থ। এই জলীয় পদার্থ বাষ্পাকারে বের হয়ে পরিবেশ ঠান্ডা থাকে। অন্যদিকে অ্যালোভেরা বাতাসে উপস্থিত ফরমালডিহাইড এবং বেনজিন শোষণ করে নেয়।
ব্যাম্বু প্লাম
এই গাছের লম্বা পাতা এয়ার হিউমিডিফায়ার এবং পিউরিফায়ার হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি পরিবেশ থেকে বেনজিন ও ট্রাইক্লোরো ইথাইলিন দূর করতে সাহায্য করে।
উইপিং ফিগ
ঘরের আবহাওয়ায় খুব সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে এই গাছ। এতে প্রচুর পাতা থাকায় স্বেদনও বেশি হয়। বাতাসে থাকা ভারী ধাতুর উপস্থিতি দূর করে উইপিং ফিগ।
স্নেক প্ল্যান্ট
‘মাদার ইন লস টাঙ’ নামেও পরিচিত এটি। এই গাছ অনেক রসালো এবং রাতে অক্সিজেন নিঃসরণ করে। এতে শীতল থাকে ঘরের বাতাস। অ্যালোভেরার মতো এই গাছও বাতাসে উপস্থিত ফরমালডিহাইড এবং বেনজিন শোষণ করে নেয়।
পিস লিলি
যে গাছে যত পাতা, সেই গাছ পরিবেশকে তত বেশি শীতল রাখে। আর এই গাছের পাতাগুলোও বেশ বড় বড়। পরিবেশ থেকে বিভিন্ন রকম বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ কমিয়ে আনে।
বোস্টন ফার্ন
ব্যাম্বু প্লামের মতো এই গাছও এয়ার হিউমিডিফায়ার এবং পিউরিফায়ার হিসেবে কাজ করে। বায়ুতে উপস্থিত নানা রকম উদ্বায়ী জৈব যৌগসমূহকে দূর করে এটি।
মানি প্লান্ট
পরিচিত এই গাছটি রাখতে পারেন ঘরে। এটি চমৎকার এয়ার হিউমিডিফায়ার হিসেবে কাজ করে। এখানেই শেষ নয়, ঘরে ভেতরে থাকা নানা রকম দূষিত পদার্থ, যেমন-ফরমালডিহাইড, বেনজিন, জাইলিন এবং কার্বন মনোক্সাইড দূর করে।
স্পাইডার প্লান্ট
গাছপ্রেমীদের কাছে পছন্দের একটি গাছ এটি। খুব অল্প পরিশ্রমে আর সহজেই ঘরের ভেতর এই গাছ রাখতে পারেন। ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি বাতাসে উপস্থিত ক্ষতিকর দূষিত পদার্থ শোষণ করে নেয় এটি।
রাবার প্ল্যান্ট
বড় বড় পাতার এই গাছের পাতার ঘর ঠান্ডা রাখার ক্ষমতা বেশি। বাতাসে উপস্থিত ফরমালডিহাইডকে শোষণ করে পরিবেশকে বিশুদ্ধ রাখতেও সাহায্য করে এটি।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফস্টাইল
শসা খেলে মিলবে যেসব উপকারিতা
শসা আমাদের সবার বাড়িতেই কম বেশি থাকে। আমরা সালাদেই বেশি খেয়ে থাকি। তবে রোজকার রুটিনে শসা রাখলে পেতে পারেন অনেক উপকার।
ভিটামিন এ, বি ও সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি বাড়ায়। এসবের সবটাই শসায় রয়েছে। আরও অনেক গুণ লুকিয়ে আছে এতে। জেনে নিন শসা খেলে কী হয়-
১. যারা ওজন কমাতে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। তারা নিয়মিত শসা খান। তারা স্যুপ ও সালাদে বেশি বেশি শসা ব্যবহার করবেন। কাঁচা শসা চিবিয়ে খেলে তা হজমে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সম্ভব।
২. চোখের জ্যোতি বাড়াতে এটি কাজ করে। সৌন্দর্যচর্চার অংশ হিসেবে অনেকে শসা গোল করে কেটে চোখের পাতায় বসিয়ে রাখেন। এতে চোখের পাতায় জমে থাকা ময়লা যেমন অপসারিত হয়, তেমনি চোখের জ্যোতি বাড়াতেও কাজ করে।
৩. এতে থাকা খনিজ সিলিকা যা আমাদের চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে তোলে। এ ছাড়া শসার সালফার ও সিলিকা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
৪. শসায় প্রচুর পরিমাণে সিলিকা আছে। গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেলে দেহের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নেমে আসে। এতে গেঁটেবাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৫. সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকের মাথা ধরে। শরীর ম্যাজম্যাজ করে। শসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সুগার আছে। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে শসা খেলে ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পর এ সমস্যা থাকবে না। সকালটা সতেজ হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফস্টাইল
পটল খেলে মিলবে যেসব উপকারিতা
বাড়িতে পটল রান্না হয়েছে শুনলে অনেকের খাওয়ার রুচিই চলে যায়। বেশির ভাগ মানুষের কাছে এই পটল অনেক অপছন্দের একটা সবজি। কিন্তু এই পটল নিয়মিত খেলে এমন এমন কিছু উপকার পেতে পারি যার জন্য আমরা লাখ টাকা খরচ করতেও রাজি থাকি।
এই পটল খেলে যে যে উপকারিতা পাওয়া যায় সেগুলো হলো-
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে
পটলের মধ্যে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার আছে। এই ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ভুগলে পটল খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমে
পানি কম পান করলে ও ভাজাপোড়া-চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিদিন পটলের তরকারি খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
পটলে ভিটামিন এ, বি ১, বি ২, সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদান আছে, যা ইমিউনিটি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়া এই সবজিতে থাকা ফাইবার হজমের সমস্যা থেকেও মুক্তি মেলে।
কোলেস্টেরল কমায়
রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে। পটল এই কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়ক। পাশাপাশি ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়িয়ে তোলে পটল। এতে সহজেই এড়ানো যায় হার্টের সমস্যাও।
ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে
শাকসবজি সব সময় স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। ওজন কমানোর ডায়েটেও রাখতে পারেন পটলকে। এই সবজির মধ্যে ক্যালোরি নেই বললেই চলে। গরমে নানা ধরনের সবজি খেয়ে যদি ওজন কমাতে চান, পটলকে ডায়েটে রাখুন।
রক্ত পরিষ্কার রাখে
রক্ত পরিষ্কার রাখতে পটলের জুড়ি মেলা ভার। এতে ত্বকের সমস্যা থেকেও মুক্তি মেলে। ত্বকের সংক্রমণ এড়াতে অবশ্যই ডায়েটে রাখুন পটলকে।
ত্বক ভালো রাখে
নিয়মিত পটল খেলে সহজেই ত্বকের বার্ধক্যের লক্ষণগুলো এড়ানো যায়। পটলের মধ্যে ভিটামিন এ ও সি আছে। আর এই দুই পুষ্টি ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফস্টাইল
যেসব খাবার গরম করে খাওয়া ক্ষতিকর
একবেলার খাবার আরেক বেলায় খাওয়া যেতেই পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরে খাওয়া হবে এমন খাবার আমরা ফ্রিজে রেখে দেই। এরপর বের করে চুলায় বা মাইক্রোওভেনে গরম করে খাই। খাবার গরম করে খাওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে কিছু খাবার আছে যেগুলো দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া ক্ষতিকর। সেসব খাবার হয়তো আমরা গরম করে খেয়ে থাকি।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন খাবারগুলো গরম করে খাওয়া ক্ষতিকর-
যেকোনো ধরনের শাক
শাক রান্নার পর সবটা খাওয়া না হলে অনেক সময় থেকে যায়। তবে কোনো শাকই দ্বিতীয়বার গরম করে খাওয়া উচিত নয়। কারণ
এতে থাকা নাইট্রেট থেকে নাইট্রোস্যামাইন নামের যৌগ তৈরি হয় এর ফলে। এটি শরীরের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সেইসঙ্গে নষ্ট হয়ে যেতে পারে শাকের পুষ্টিগুণও।
ভাত
ভাত একাধিকবার গরম করে খাওয়ার অভ্যাস প্রায় সবারই আছে। কিন্তু এটি একদমই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়। ঠান্ডা ভাতে নানা ধরনের জীবাণু বাড়ে। আর সেই ভাত গরম করলেও জীবাণু চলে যায় না। এতে পেটের সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
মাশরুম
বিভিন্ন রান্নায় মাশরুম যোগ করা হয়। কিন্তু এই খাবারও বারবার গরম করা ক্ষতিকর। কারণ এর ফলে নানা রকমের ক্ষতিকারক রাসায়নিক তৈরি হয়। ফলে এটি পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আলু
আলু প্রায় প্রতিদিনই খাওয়া হয়। অনেক সময় খাওয়ার পরে থেকে গেলে সেই আলু ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। এরপর আবার গরম করে খাওয়া হয়। কিন্তু এভাবে গরম করে খেলেই বিপদ। কারণ আলুর তরকারি রান্না করে তা রেখে দিলে তাতে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। আপনি যখন দ্বিতীয়বার গরম করবেন তখনও কিন্তু সেগুলো যাবে না। এর পরিবর্তে সেসব জীবাণুর ক্ষমতা বাড়াতে পারে। সেইসঙ্গে বারবার গরম করার ফলে আলুর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
মুরগির মাংস
মুরগির মাংস রান্না করে ফ্রিজে রেখে খাওয়ার অভ্যাস অনেকের। এটিও সঠিক কাজ নয়। কারণ বারবার গরম করলে মুরগির মাংসের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে দেখা দিতে পারে পেটের সমস্যাও।
ডিম
ডিম দিয়ে তৈরি কোনো খাবার বা রান্না করা ডিম একাধিকবার গরম করা উচিত নয়। কারণ বারবার গরম করার ফলে ডিমের অনেক পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। সেইসঙ্গে এতে তৈরি হয় ক্ষতিকারক রাসায়নিক। সেদ্ধ ডিমও বারবার গরম করবেন না। এতেও ক্ষতি হতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
লাইফস্টাইল
রোদে ত্বক ভালো রাখবেন যেভাবে
রোদের তাপে বেশ অস্থির হয়ে উঠেছি আমরা। ঘর থেকে বাইরে বের হলেই যেন আগুনের হলকা লাগছে পুরো শরীরে। বাইরে বের হওয়ার আগে এবং ফিরে একাধিক বার গোসল করেও একটু আরাম পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ত্বক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোদ এবং তাপ স্বাভাবিক প্রাকৃতিক বিষয়। রোদ কড়া বা হালকা যাই হোক না কেন, মৌসুমটা শীত হোক বা গ্রীষ্ম, সূর্যের তাপ কিংবা অতি বেগুনি রশ্মি সব সময়ই ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তাই নিজেকেই সাবধানে সবদিক রক্ষা করে চলতে হবে। তার জন্য কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।
রোদ যাই থাক, দিনের বেলা ঘর থেকে বের হওয়ার ১০-১৫ মিনিট আগে ত্বকে সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করা উচিত। বাজারে এখন এসপিএফ বা সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর যুক্ত ক্রিম, লোশন, পাউডার, লিপ বাম, স্প্রে ইত্যাদি প্রসাধনী পাওয়া যায়। প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো ব্যবহার করুন।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ম্যাট ধরনের সানস্ক্রিন ও শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। আর স্বাভাবিক কিংবা মিশ্র ত্বকের জন্য ‘অল স্কিন টাইপ’ সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যায়।
ত্বক সব সময় ঠান্ডা ও পরিষ্কার রাখতে হবে। তাই প্রতিদিন ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করতে হবে।
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে পানির বিকল্প নেই। দিনে তিন-চার লিটার পানি আধা গ্লাস করে একটু পর পর পান করতে হবে। এ ছাড়া যেকোনো ফলের রস পান করাও উপকারী।
রোদ থেকে রক্ষা পেতে প্রসাধনী ব্যবহারে এমনকি রোদে পোড়া ভাব দূর করতে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারেও ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন রূপবিশেষজ্ঞরা। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে এবং রোদ থেকে ঘরে এসে ত্বকের যত্ন নিতে হবে।
ঘর থেকে বের হওয়ার আগে স্নান করে নেওয়া ভালো। এ সময় যেহেতু প্রচুর ঘাম হয় তাই ঘাম থেকে দুর্গন্ধ হওয়াটা স্বাভাবিক। এ জন্য পানিতে কয়েক ফোঁটা বেনজয়েন এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে স্নান করলে ঘামের দুর্গন্ধ হবে না এবং রোদে ত্বক কালচেও হবে না। ওষুধের দোকানে বা সুপারশপে এই তেল পাবেন। চার ঘণ্টা পর পর ল্যাভেন্ডার অয়েল সমৃদ্ধ ওয়েট টিস্যু দিয়ে ত্বক মুছে নিতে হবে।
যেকোনো ধরনের ত্বকের জন্যই অ্যালোভেরা পেস্ট উপকারী। রাতে টকদই, ডিমের সাদা অংশ ও ময়দার মিশ্রণ প্যাক হিসেবে ত্বকে ব্যবহার যেতে পারে। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এ ছাড়া সুজি হালকা ভেজে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করা যায়। এটি স্ক্রাবের কাজও করবে। স্ট্রবেরি, টকদই ও ময়দার মিশ্রণ তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ভালো। আর শুষ্ক ত্বকের জন্য ব্যবহার করা যাবে দুধের সর, যেকোনো বাদাম, মধু ও সামান্য চিনির মিশ্রণ।
যাদের ত্বক পাতলা তারা যেন বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত যতটা সম্ভব রোদ এড়িয়ে চলেন। আর রোদে বের হলে অবশ্যই ত্বক বুঝে সানব্লক ব্যবহার করতে হবে এবং সঙ্গে রাখতে হবে ছাতা।
বাইরে থাকলে দুই ঘণ্টা পর পর নতুন করে ত্বকে সানব্লক ব্যবহার করতে হবে। কিছু ফেস পাউডারও সানব্লকের কাজ করে। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা এমন পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। রোদচশমা এবং হ্যাটজাতীয় বড় টুপি ব্যবহার করতে হবে, যেন মুখের চোয়াল ও এর আশপাশের স্থানে রোদ না লাগে। এরপরও যদি ত্বক লাল হয়ে জ্বালা করে, তবে বরফ ঘষতে হবে অথবা ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে।