অর্থনীতি
আপাতত ছাপানো টাকা বাজারে ছাড়বে না বাংলাদেশ ব্যাংক
মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপাতত ছাপানো টাকা বাজারে ছাড়বে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বরং আগে ছাড়া টাকার কিছু অংশ পর্যায়ক্রমে তুলে নেবে। এর অংশ হিসাবে ইতোমধ্যে বেশকিছু টাকা তুলে নিয়েছে। টাকা ছাড়িয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারকে ঋণের জোগানও বন্ধ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব উৎস বা ছাপানো টাকায় যেসব তহবিল গঠন করা হয়েছে, সেগুলোয় নতুন করে অর্থের জোগান বন্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব টাকায় আপাতত আর নতুন তহবিল গঠন করা হবে না।
মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির নিয়ন্ত্রণ করতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। এর প্রভাবে ইতোমধ্যে বাজারে টাকার প্রবাহ কমে গেছে। এতে সরকারি ও বেসরকারি দুই খাতেই ঋণপ্রবাহ কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় তারল্যের জোগানও ব্যয়বহুল করা হয়েছে। ফলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করছে কম। এর মাধ্যমে বাজারে টাকার প্রবাহে লাগাম পড়েছে। ফলে মানুষের চাহিদা কমবে। এতে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতিতে লাগাম পড়বে।
তবে অনেকেই মনে করেন, এককভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। কারণ, ইউরোপ-আমেরিকার মূল্যস্ফীতির সঙ্গে বাংলাদেশের মিল নেই। এদেশে মূল্যস্ফীতি যতটুকু না টাকার প্রবাহ বাড়ার কারণে বৃদ্ধি পায়, এর চেয়ে বেশি বাড়ে ত্রুটিযুক্ত বাজারব্যবস্থার কারণে।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাজারে সবচেয়ে বেশি টাকার জোগান আসে সরকারকে ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারকে যে ঋণ দেয়, এর প্রায় পুরোটাকেই বলা হয় ছাপানো টাকা। এসব টাকা বাজারে এলে মুদ্রার সরবরাহ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এতে চাহিদা বাড়ে। ফলে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যায়।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারকে দেওয়া নতুন ঋণ বন্ধ করা হয়েছে। এর বিপরীতে আগের দেওয়া ঋণ সরকার পরিশোধ করছে। গত অর্থবছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিয়েছিল প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিট কোনো ঋণ নেয়নি। তবে আগের ঋণ বাবদ প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া ঋণের স্থিতি কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব উৎস থেকে টাকার জোগান দিয়ে বিভিন্ন তহবিল গঠন করেছে। এসব তহবিল থেকে ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে বাজারে ছাপানো টাকা প্রবেশ করে। এতে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থায়নে চলমান তহবিলগুলোয় নতুন করে আর কোনো অর্থের জোগান দেবে না। ওইসব তহবিল আগের সীমার মধ্যে থেকে লেনদেন হবে। একই সঙ্গে চাহিদা থাকার পরও নতুন করে কোনো তহবিল গঠন করবে না।
সূত্র জানায়, বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকার ১৯টি তহবিল রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি তহবিলের মেয়াদ শেষ হয়েছে, তবে এগুলোর ঋণ এখনো বাজারে রয়েছে। এর মধ্যে করোনার সময় গঠন করা হয়েছে ১৪টি তহবিল। বাকি তহবিলগুলো বিভিন্ন সময়ে করা হয়েছে। এর মধ্যে বড় শিল্প ও সেবা খাতের উদ্যোক্তাদের চলতি মূলধন জোগান দিতে দুই দফায় ৮০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে চলতি মূলধন দিতে দুই দফায় ৬০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় দিয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা।
রপ্তানি খাতে কম সুদে ঋণ দিতে ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। যার পুরোটাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রায়। প্রিশিপমেন্ট খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছে ৭ হাজার কোটি টাকার তহবিল। পেশাজীবীদের জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা এবং কৃষি খাতে পুনঃঅর্থায়ন করতে দুই দফায় দেওয়া হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। স্বল্প-আয়ের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ৩ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম ও গ্রামীণ কর্মসংস্থানে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার তহবিল রয়েছে। এসএমই খাতের জন্য ২ হাজার কোটি টাকার ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম রয়েছে।
ক্ষুদ্রঋণ খাতে চলতি মূলধন দিতে দুটি তহবিলে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ, গ্রিন অর্থায়ন তহবিল ৩ হাজার কোটি, পরিবেশবান্ধব শিল্পঋণ দিতে ৪০০ কোটি, ডিজিটাল খাতে ঋণ দিতে ৫০০ কোটি, ক্ষুদ্রশিল্পে মেয়াদি ঋণ দিতে ৩ হাজার কোটি; গম-ভুট্টার উৎপাদন বাড়াতে ১ হাজার কোটি; কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমে ২৫ হাজার কোটি; জাহাজ নির্মাণ খাতে ২ হাজার কোটি, আমদানির বিকল্প পণ্য উৎপাদনে ৫ হাজার কোটি এবং সিনেমা হল নির্মাণে ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল রয়েছে। এসব ঋণের সুদহার কম বলে উদ্যোক্তাদের বেশ আগ্রহ রয়েছে।
এ ছাড়া বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে টাকার জোগান দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। ফলে বাজারে টাকার প্রবাহ কমেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে টাকার প্রবাহ কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছিল প্রায় ৯ শতাংশ। গত অর্থবছর থেকে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করছে। এতে টাকার প্রবাহ কমেছে।
টাকার প্রবাহ কমার কারণে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের সক্ষমতা কমেছে। ফলে ঋণপ্রবাহও কমেছে। গত অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বেড়েছিল ১০ শতাংশের বেশি। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছে ৫ শতাংশ। সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ গত অর্থবছরের ওই সময়ে বেড়েছিল প্রায় ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কমেছে ৯ শতাংশ। ঋণপ্রবাহ কমায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি কমেছে। এতে উৎপাদন কমছে, কমবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি। এর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতির হার কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব সময়ই টাকা ছাপানোর কাজটি করে। সেগুলো ভল্টে জমা রাখা হয়। ভল্টে থাকা টাকাকে মৃত বা মূল্যহীন বলা হয়। বাজারে এলে তা জীবন পায় বা মূল্যবান হয়। চাহিদা অনুযায়ী এগুলোকে বাজারে ছাড়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় ছাপানো টাকা বাজারে আসে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব সম্পদ বা আমানতকারীদের অর্থের মাধ্যমে। এতে মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিতে খুব বেশি ভূমিকা রাখে না। তবে সরকারকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অর্থে বিশেষ তহবিল বা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে ঋণ দিলে সেগুলো হয় ছাপানো টাকা। এসব অর্থ বাজারে এসে মুদ্রা সরবরাহ বাড়িয়ে দিয়ে মূল্যস্ফীতি ঘটায়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জিডিপির আকার বাড়ার সঙ্গে টাকার প্রবাহও বাড়িয়ে থাকে। যে কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজস্ব উৎস থেকে টাকার জোগান দেয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এপ্রিলের ২৯ দিনে প্রবাসী আয় ১৯০ কোটি ডলার
সদ্য সমাপ্ত এপ্রিল মাসের প্রথম ২৯ দিনে দেশের ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ১৯০ কোটি ৮০ ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে প্রবাসী আয়ের এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র মতে, এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে এসেছিল ১২৮ কোটি ১৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে পরের ১০ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ৬২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। তাতে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় দেশে এসেছে ছয় কোটি ডলার।
সাধারণত, ঈদের মাসে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ স্বাভাবিক মাসের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। এবার, এপ্রিল মাসে ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়েছে। কিন্তু এ মাসে রেমিট্যান্সের পরিমাণ না বেড়ে বরং সাম্প্রতিক সময়ের অন্য মাসের তুলনায় প্রবাসী আয় শেষ পর্যন্ত খানিকটা কম হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে বাড়তি প্রবাসী আয় আসার প্রবণতা লক্ষ করা গেলেও এবার তেমনটা দেখা যায়নি।
এর আগে মার্চ মাসে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২১০ কোটি ডলার ও ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল।
বেশির ভাগ ব্যাংক এখন ১১৫ থেকে ১১৬ টাকা দরে প্রবাসী আয় কিনছে। তবে সংকটে থাকা কিছু ব্যাংক বেশি দামেও ডলার কিনছে বলে জানা গেছে। যদিও ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১০ টাকা। ফলে আমদানিকারকদেরকে অতিরিক্ত দামে ডলার কিনে আমদানি দায় মেটাতে হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে ভোক্তার ওপর। দেশে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হার এখনো উচ্চ রয়ে গেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
আন্তর্জাতিক মে দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বুধবার (১ মে) সকালে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাহিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুর রহমান লিটন।
তিনি বলেন, আজ আন্তর্জাতিক মহান মে দিবস উদযাপিত হচ্ছে। ফলে সরকারিভাবে ছুটি থাকায় দিবসটি উদযাপনে দুই দেশের পরিবহন শ্রমিক, মালিক ও ব্যবসায়ীরা হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এ কারণে আজ বুধবার সকাল থেকে এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) থেকে ফের আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে বলে জানান তিনি।
এ দিকে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের অফিসার ইনচার্জ শেখ আশরাফুল বলেন, মে দিবস উপলক্ষে বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়াসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রতিদিনের মতো আজও হিলি চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বৈধ পাসপোর্ট-ভিসায় যাত্রীরা চলাচল করছেন।
প্রসঙ্গত, ১৮৮৬ সালের এই দিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ওইদিন তাদের আত্মদানের মধ্যদিয়ে শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য শ্রমিকদের আত্মত্যাগের এই দিনকে তখন থেকেই সারা বিশ্বে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এনার্জিপ্যাকের সাথে চীনের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
চীনের আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁওয়ের এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসির করপোরেট অফিস এনার্জি সেন্টার পরিদর্শন করে। আনহুই প্রাদেশিক গণ-কংগ্রেসের ভাইস চেয়ারম্যান ওয়েই জিয়াওমিংয়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ ও চীনের সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে। পাশাপাশি চীনা প্রতিনিধিদল জাতীয় সংসদ, বিসিসিসিআই (বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি) ও ডিএনসিসি (ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন) পরিদর্শন করে।
উৎপাদন খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এনার্জিপ্যাকের কমিটমেন্ট হিসেবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষায়িত যানবাহন (স্পেশাল পারপাস ভেহিকল) ও বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) অ্যাসেম্বল ও উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করে জ্যাক ও হেলির মতো বৃহৎ চীনা প্রতিষ্ঠানের একমাত্র পরিবেশক হিসেবে এনার্জিপ্যাকের চলমান প্রকল্পগুলোর খুঁটিনাটি প্রতিনিধিদলের সামনে তুলে ধরা হয়।
এ বিষয়ে এনার্জিপ্যাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হুমায়ূন রশিদ বলেন, বাংলাদেশে আমরা জ্যাক ও হেলির একমাত্র পরিবেশক। আমরা গত প্রায় দুই দশক ধরে তাদের সঙ্গে কাজ করছি এবং প্রতিনিয়ত তাদের নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি আমাদের বাজারে নিয়ে আসছি। আমরা ইতোমধ্যে বিশ্বখ্যাত হেলি ব্র্যান্ডের ইলেক্ট্রিক লিফটিং মেশিনারিজ আনতে সক্ষম হয়েছি। আগামীতে আরও নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। শিগগিরই আমরা পরিবেশবান্ধব টেকসই বিদ্যুৎ চালিত (ইলেকট্রিক) বাস ও ট্রাক বাজারে আনতে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ পরিদর্শনের অংশ হিসেবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরিদর্শনে বাংলাদেশে বিশেষ করে বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি, বাণিজ্যিক যানবাহন ও কৃষিপ্রযুক্তির মতো উৎপাদন খাতে আনহুই প্রদেশের বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় ওয়েই জিয়াওমিং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় বাংলাদেশের চীনা দূতাবাস ও বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই) সমন্বয় ও প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ ও আনহুই প্রদেশের মধ্যে ২০২৩ সালে ৩১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয়েছে এবং সামনে এই সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রবল আগ্রহের বিষয়টি আনহুই প্রতিনিধিদলের এনার্জিপ্যাক অফিস পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্রে দুই পক্ষই তাদের আশাবাদ ব্যক্ত করে, আগামীতে যা দুই দেশেরই আর্থিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দাম বাড়ল ডিজেল-পেট্রোল-অকটেনের
বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার৷ মে মাসের জন্য ঘোষিত নতুন দামে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনে এক টাকা বাড়ানো হয়েছে। আর পেট্রল ও অকটেনের দাম বেড়েছে লিটারে আড়াই টাকা। নতুন এই দাম মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে কার্যকর হবে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৭ টাকা। ভেজাল প্রতিরোধে কেরোসিনের দাম ডিজেলের সমান রাখা হয়। পেট্রোলের নতুন দাম প্রতি লিটার ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা ও অকটেনের দাম ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা।
এরআগে, এপ্রিলের জন্য ঘোষিত দামে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ২ টাকা ২৫ পয়সা করে কমানো হয়েছিল। তবে মার্চে অকটেনের দাম ১৩০ টাকা থেকে কমে হয়েছিল ১২৬ টাকা। আর পেট্রোলের দাম ১২৫ টাকা থেকে কমে হয়েছিল ১২২ টাকা।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ মার্চ থেকে চালু করেছে সরকার। এ হিসাবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হচ্ছে। প্রথম দুই দফায় দাম কমলেও তৃতীয় দফায় বেড়েছে।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রোল ব্যক্তিগত যানবাহনে অধিক পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। তাই বাস্তবতার নিরিখে বিলাসদ্রব্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে সব সময় ডিজেলের চেয়ে অকটেন ও পেট্রোলের দাম বেশি রাখা হয়।
এছাড়া অকটেন ও পেট্রোল বিক্রি করে সব সময় মুনাফা করে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিপিসি। মূলত, ডিজেলের ওপর বিপিসির লাভ-লোকসান নির্ভর করে। দেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের ৭৫ শতাংশই ডিজেল।
জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি। আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টানা সাত দফায় কমলো সোনার দাম
এক দিনের ব্যবধানে সোনার দাম আবারও কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এ নিয়ে টানা সপ্তমবার স্বর্ণের দাম কমানো হলো।
সবশেষ আজ ভালো মানের তথা ২২ ক্যারেটের সোনার দাম ভরিতে ৪২০ টাকা কমানো হয়েছে। এখন ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম কমে হচ্ছে ১ লাখ ১১ হাজার ৪১ টাকা। এর আগে দাম ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ৪৬১ টাকা।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ বিকেল ৪টা থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।
নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনা ১ লাখ ১১ হাজার ৪১ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬ হাজার ২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৯০ হাজার ৮৬৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ৭৫ হাজার ৫৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোনার দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটে প্রতি ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের দাম ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা।
গতকালও সোনার দাম কমিয়েছিল বাজুস। ওই দাম অনুযায়ী আজ বিকেল পর্যন্ত সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ১১ হাজার ৪৬১ টাকা, ২১ ক্যারেট এক লাখ ৬ হাজার ৩৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৯১ হাজার ২০১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ৭৫ হাজার ৮৩৯ টাকায় বিক্রি হয়।