অর্থনীতি
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের সয়াবিন আমদানি করবে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ আগামী এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের সয়াবিন আমদানি করবে। দেশের তিন শীর্ষ সয়াবিন প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান—মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ এবং ডেল্টা অ্যাগ্রো—এই আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিলের (USSEC) সঙ্গে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি দুই দেশের কৃষি বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসন বলেন, “বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজারে পরিণত হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এই চুক্তির ফলে আগামী বছরে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন রপ্তানি তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করবে।
যুক্তরাষ্ট্র মিশনের মুখপাত্র পূর্ণিমা রায় বলেন, “এই চুক্তি বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র কৃষি বাণিজ্য ও কৌশলগত অংশীদারত্বে একটি নতুন মাইলফলক যুক্ত করেছে।”
অর্থনীতি
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সোনার সর্বোচ্চ দাম
দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। সোনার দাম প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৯৬৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে ভালো মানের সোনার দাম বেড়ে দুই লাখ ২২ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। এটি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সোনার দাম।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বাজুসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন দাম মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হবে। সংগঠনটি জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার দাম (পিওর গোল্ড) বাড়ায় বৈশ্বিক বাজারে সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে।
তবে মূল কারণ হচ্ছে, বৈশ্বিক বাজারে সোনার দাম বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছাড়িয়েছে ৪ হাজার ৪০০ ডলার।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ২২ হাজার ৮৩ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি দুই লাখ ১১ হাজার ৯৯৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি এক লাখ ৮১ হাজার ৭২৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৫১ হাজার ৩৯৯ টাকা।
সোনার দামের সঙ্গে রুপার দামও বাড়ানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ৯৫৭ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপা ৪ হাজার ৭২৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৪ হাজার ৮২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপার দাম ৩ হাজার ৩৩ টাকা।
এমকে
অর্থনীতি
কৃষি ও সিএমএসএমই ঋণ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও ছাড়
কৃষি এবং কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) ঋণ বাড়াতে আরও ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবার ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণের হার আরও কমানো হয়েছে। অর্থাৎ আগের চেয়ে আরও কম নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ফলে ব্যাংকগুলো এই দুটি খাতে ঋণ দিতে আগ্রহী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির কর্মকর্তারা।
ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা থেকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়। ফলে এই ছাড় ব্যাংকগুলোর মুনাফা বাড়াতে সহায়তা করবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে স্ট্যান্ডার্ড ও স্পেশাল মেনশন হিসেবে (এসএমএ) থাকা বকেয়া ঋণের বিপরীতে যথাক্রমে ১ শতাংশ ও ৫ শতাংশ হারে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হয়।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিএমএসএমই খাতের আওতায় সব অশ্রেণিকৃত (স্ট্যান্ডার্ড ও এসএমএ) স্বল্পমেয়াদি কৃষিঋণ এবং সিএমএসএমই শিল্প উদ্যোগের ঋণের বিপরীতে ১ শতাংশের পরিবর্তে দশমিক ৫০ শতাংশ হারে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে পারবে। অর্থাৎ নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের হার কমিয়ে অর্ধেকে নামানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকগুলোকে স্বল্পমেয়াদি কৃষিঋণ বিতরণ এবং সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণে উৎসাহিত করতে নতুন সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় শিল্পগোষ্ঠীগুলোর ঋণ কমে এসেছে। আবার এ দুটি খাতেও ঋণ দিতে ব্যাংকগুলো আগ্রহী হচ্ছে না। এ জন্য এই ছাড় দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) এ দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছিল। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায়ও দাবিটি তোলা হয়। এরপরই বাংলাদেশ ব্যাংক এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিল।
চলতি বছরের মধ্যে ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের অন্তত ২৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে বিতরণে সরকার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জুন পর্যন্ত হিসাবে সামগ্রিকভাবে সিএমএসএমই খাতে রয়েছে মোট ঋণের ১৭ শতাংশ, যা আগের দুই বছরের চেয়ে কম। জাতীয় এসএমই নীতির আলোকে ২০২৯ সালের মধ্যে মোট ঋণের ২৭ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। চলতি ২০২৫ সালের মধ্যে এই হার ২৫ শতাংশ করার লক্ষ্য দেওয়া হয়। অধিকহারে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এ খাতে ঋণ বাড়ানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
অর্থনীতি
দেশের ইতিহাসে সব রেকর্ড ভাঙল স্বর্ণের দাম
টানা তৃতীয় দফায় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ১১৭ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে এক ভরি স্বর্ণের সর্বোচ্চ দর।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বাজুসের এক বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর বিষয়টি জানানো হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) থেকেই স্বর্ণের নতুন দাম কার্যকর হবে।
এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর দেশের বাজারে টানা দ্বিতীয় দফায় স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। ওইদিন ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৭ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস।
নতুন দাম অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম পড়বে ২ লাখ ১৮ হাজার ১১৭ টাকা। পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ৮ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭৮ হাজার ৪৫৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৯৯ টাকা।
সবমিলিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট ৮৭ বার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করল বাজুস। যেখানে ৬০ বারই দাম বাড়ানো হয়েছে, আর দাম কমেছে মাত্র ২৭ বার। অন্যদিকে গত বছর দেশের বাজারে মোট ৬২ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল। যেখানে ৩৫ বার দাম বাড়ানো হয়েছিল। এছাড়া গত বছরে ২৭ বার কমানো হয়েছিল স্বর্ণের দাম।
এমকে
অর্থনীতি
ডিসেম্বরের ২০ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৭ কোটি ডলার
চলতি ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৭ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ১০ কোটি ৮৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, চলতি ডিসেম্বরের প্রথম ২০ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৭ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৭ কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২১ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৫৮ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, ১৪ থেকে ২০ ডিসেম্বর দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৬৬ কোটি ৪৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ডিসেম্বরের ৭ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত দেশে এসেছে ৮৭ কোটি ৫০ লাখ ৯০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। আর ডিসেম্বরের প্রথম ৬ দিনে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ৬৩ কোটি ২৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
এর আগে, গত নভেম্বরে এসেছে চলতি অর্থবছরের সর্বোচ্চ ২৮৮ কোটি ৯৫ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। আর গত অক্টোবর ও সেপ্টেম্বরে দেশে এসেছিল যথাক্রমে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ও ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত আগস্ট ও জুলাইয়ে যথাক্রমে দেশে এসেছিল ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার ও ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
গত ২০২৪-২৫ অর্থবছর জুড়ে দেশে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড।
এমকে
অর্থনীতি
ই-রিটার্ন ব্যবস্থায় যুক্ত হবে ব্যাংক-পুঁজিবাজারের তথ্য: এনবিআর চেয়ারম্যান
ভবিষ্যতে ব্যাংক হিসাব, সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস, এফডিআর ও শেয়ারবাজারের ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্নে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে ডিআরইউ সদস্যদের জন্য ‘ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল সাপোর্টিং বুথের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এতে করদাতাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহের ঝামেলা কমবে। এতে কর্মকর্তারাও করদাতার ব্যক্তিগত লেনদেন দেখতে পারবেন না। শুধু করদাতাই লগইন করে নিজের তথ্য দেখতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। স্বাগত বক্তৃতা রাখেন অর্থ সম্পাদক নিয়াজ মাহমুদ সোহেল।
মো. আবদুর রহমান খান বলেন, আয়করের পাশাপাশি আগামী বছর থেকে ভ্যাট রিটার্নও বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে। কাগজের রিটার্নে জটিলতা ও অনিয়ম বেশি হয়। অনলাইনে রিটার্ন দিলে সময়, খরচ সবই সাশ্রয়ী হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশটা আমাদের সবার। পরিবারের মতো রাষ্ট্রও চলে সবার অবদানে। যাদের আয় বেশি তারা বেশি কর দেবেন, যাদের কম তারা কম দেবেন-কিন্তু সবাইকেই দিতে হবে।
এমকে




