রাজনীতি
বগুড়া-৭ আসনে খালেদা জিয়া, ৬-এ তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়ন সংগ্রহ
বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং বগুড়া-৬ (সদর) আসনে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
আজ রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টায় শহরের গোহাইল রোডের নির্বাচন অফিস থেকে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার নির্বাচন সমন্বয়ক সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এ সময় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মনোনয়নপত্র উত্তোলন করে হেলালুজ্জামান তালুকদার বলেন, খালেদা জিয়া এই আসনে টানা তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন। এবার সবচেয়ে বেশি ভোট আমরা তাকে উপহার দিতে চাই। মানুষ তাকে ভোট দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
অন্যদিকে, দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের কাছ থেকে তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র তোলেন জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা। এ সময় জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান, সাবেক আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, সাবেক সভাপতি ভিপি সাইফুল ইললাম, শহর বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহফতুন আহম্মেদ খান রুবেল, কেএম খায়রুল বাশার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী জেলা নির্বাচন অফিস ও প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে জড়ো হলেও নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন হওয়ার আশঙ্কায় তারা ভেতরে যাননি।
মনোনয়নপত্র উত্তোলন শেষে জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা বলেন, তারেক রহমান বগুড়া সদর আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবেন। আজ তার পক্ষে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করা হয়েছে। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। বগুড়ার মানুষ অপেক্ষা করছে তারেক রহমানকে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য।
রাজনীতি
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন রুমিন ফারহানা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই দফায় প্রার্থী ঘোষণা করলেও শুরুতে জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটি আসন (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬) ফাঁকা রেখেছিল বিএনপি। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার আসন সমঝোতায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জোটপ্রার্থী জুনায়েদ আল হাবিবকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। যদিও বহুল আলোচিত এই আসনে বরাবরই আলোচনায় ছিলেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তার সম্ভাবনার কথা থাকলেও জোটের সঙ্গে সমঝোতার কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মনোনয়ন পাননি।
মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন রুমিন ফারহানা।
তিনি জানান, দল থেকে মনোনয়ন না পেলেও তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
সমঝোতায় জোটকে ছেড়ে দেওয়া আসনে নির্বাচন করলে দলীয় কোনো কঠিন সিদ্ধান্তের মুখে পড়তে হবে কিনা- এমনটা জানতে চাইলে প্রত্যুত্তরে রুমিন ফারহানা বলেন, আশা করা যায় সেটা আমার সঙ্গে হবে না। মনোনয়ন কেনার আগেই সম্মানের সঙ্গে দল থেকে পদত্যাগ করবো। দু’একদিনের মধ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবো। স্বতন্ত্র প্রতীক হিসেবে কোনটা পাবো বা দেওয়া হবে সেটা না হয় পরে দেখা যাবে। আরেকটা কথা না বললেই নয়, আশা করি অত্র এলাকার মানুষের ভালোবাসা এখনো আমার সঙ্গে আছে। তারা এর জবাব ভোটের মাধ্যমেই দেবে।
এমকে
রাজনীতি
গণতন্ত্রের উত্তরণে বাধা দিতে ভয়ংকর চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল
গণতন্ত্র উত্তরণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল ‘ভয়ংকরভাবে চক্রান্ত’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ এখন একটা ট্রাজিশন পিরিয়ডে আছে। একটা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শাসন, যে শাসন আমাদের সমস্ত মূল্যবোধগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। সেই ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে বেরিয়ে এসে আমরা এখন একটা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি এবং নির্বাচনের পরে একটা নির্বাচিত সরকার, নির্বাচিত পার্লামেন্ট আমাদের দেশকে আমাদের জাতিকে সঠিক পথ এগিয়ে নিয়ে যাবে এ প্রত্যাশা আমরা সবাই করছি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘এর মধ্যেই দেখা যাচ্ছে যে কিছু সংখ্যক ব্যক্তি, মহল তারা এই ট্রাজিশনাল যে প্রসেস এটাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ভয়ঙ্করভাবে চক্রান্ত করছে।’
ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরীফ ওসমান বিন হাদি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আজকে আবারো এই চক্রান্তের ফলে নিহত শহীদ হয়ে যাওয়া ওসমান বিন হাদির আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং পরম করুনাময় আল্লাহ তালার কাছে এই দোয়া চাইছি যে, আল্লাহতালা তাকে যেন বেহেশতে সর্বশ্রেষ্ঠ স্থানে নিয়ে যান।’
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল জানান, শতবর্ষী রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কাছে চারটি আসন ছেড়ে দিচ্ছে বিএনপি।
যে চারটি আসনে সমঝোতা হয়েছে, সেগুলোতে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী হচ্ছেন— নীলফামারী-১ আসনে দলের মহাসচিব মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনির হোসাইন কাসেমী, সিলেট-৫ আসনে দলের সভাপতি উবায়দুল্লাহ ফারুক এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনে জুনায়েদ আল হাবীব।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাই যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তারা তাদের কথা রেখেছেন যে, ২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দিয়েছেন এবং নির্বাচন কমিশন সেটাই করছেন। নির্বাচনের যে পরিবেশ তৈরি করা এই পরিবেশ তৈরি করার জন্য তাদেরকে আরও সচেতন এবং ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা দরকার, আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করা দরকার এবং এই বিষয়গুলোতে তাদের ফোকাস আরও বেশি দেবেন এবং তারা আরও ভালোভাবে নির্বাচন যেন অত্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সেই বিষয়গুলো দিকে লক্ষ্য রাখবেন এটা আমরা আশা করি।
তিনি বলেন, শরিকদের সঙ্গে ভালোবাসা আরও গভীর হয়েছে। শরিকদের সাথে আমাদের সমঝোতা শেষ হয়ে গেছে। শরিকদের সাথে আমাদের ভালোবাসা আরও গভীর হয়েছে। এ বিষয়ে আপনারা যথাসময় জানতে পারবেন, যথাসময় তা ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মো. মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী, সহসভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা আল হাবীব, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস কাসেমী, মাওলানা শেখ মজিবুর রহমান , মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা লোকমান মাজহারী উপস্থিত ছিলেন।
এমকে
রাজনীতি
দেশের জন্য সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে চাই: জাইমা রহমান
একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের জন্য সর্বস্ব দিয়ে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে চান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমান। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই কথা জানান। তার সেই পোস্ট বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা হয়।
পোস্টে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে জাইমা রহমান বলেন, ‘দাদুকে নিয়ে আমার সবচেয়ে প্রিয় স্মৃতিগুলোর একটি হলো, পরিবারকে আগলে রাখা একজন অভিভাবক হিসেবে তিনি কতটা মমতাময়ী ছিলেন! আমার বয়স তখন এগারো। আমাদের স্কুলের ফুটবল টিম একটা টুর্নামেন্ট জিতেছিল, আর আমি মেডেল পেয়েছিলাম। আম্মু আমাকে সরাসরি দাদুর অফিসে নিয়ে গিয়েছিলেন, আমি যেন নিজেই দাদুকে আমার বিজয়ের গল্পটা বলতে পারি; তাঁকে আমার বিজয়ের মেডেলটা দেখাতে পারি। আমি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে গোলকিপার হিসেবে কী-কী করেছি, সেটা বলছিলাম; আর স্পষ্ট টের পাচ্ছিলাম, দাদু প্রচণ্ড মনোযোগ নিয়ে আমাকে শুনছেন। তিনি এতটাই গর্বিত হয়েছিলেন যে, পরে সেই গল্পটা তিনি অন্যদের কাছেও বলতেন।’
‘আমি সব সময়ই জানতাম, আমার দাদুর কাঁধে একটা দেশের দায়িত্ব। তবুও আমার স্মৃতিতে দাদু হলেন পরিবারকে আগলে রাখা একজন মমতাময়ী অভিভাবক। লাখো মানুষের কাছে তিনি ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আমার আর আমার কাজিনদের কাছে তিনি ছিলেন ‘দাদু’।
আমাদের ‘দাদু’। তিনি সব সময় আমাদের খেয়াল রাখতেন, আমাদের জন্য সময় বের করতেন, আর যেসব মুহূর্ত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেগুলোতে আমাদের সাহস দিতেন, উজ্জীবিত করতেন। এই ছোট-ছোট মুহূর্তগুলো থেকেই আমি নেতৃত্বের প্রথম শিক্ষা পাই। সেটি হলো, নম্রতা, আন্তরিকতা আর মন দিয়ে শোনার মানসিকতা।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বাইরে কাটানো সতেরোটা বছর আমার জীবন অনেকভাবে বদলে দিয়েছে। কিন্তু আমি কখনোই আমার শিকড় ভুলে যাইনি। কারণ, আমাদের সত্তার যে ভিত্তি, আমাদের যে সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ; সেটিই আমাদেরকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে, পরিচয় বহন করে। প্রবাসে থাকা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের অনেক বাংলাদেশির মতো আমিও নিজ দেশের বাইরে, ভিন্ন দেশে অনেকগুলো বছর কাটিয়েছি। লন্ডনের দিনগুলো আমাকে বাস্তববাদী করেছে, একটা বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে। যদিও আমার হৃদয়-মন সব সময় বাংলাদেশেই ছিল।’
ব্যারিস্টার জাইমা বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমাকে শৃঙ্খলা ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান শিখিয়েছে। তবে মানুষের সঙ্গে কাজ করা আমাকে শিখিয়েছে আরও অনেক বেশি; শিখিয়েছে দায়িত্বশীল হতে, বিপদগ্রস্তের পাশে দাঁড়াতে। আইন পেশায় কাজ করার সময় কাছ থেকে দেখা মানুষগুলোর গল্প, আর সেই গল্পগুলোর যৌক্তিক এবং আইনগত সমাধান খোঁজার দায়িত্ব আমাকে আলোড়িত করে। প্রত্যেক ক্লায়েন্ট, প্রতিটি মামলা, প্রতিটি মানুষের সমস্যা, কারো না কারো জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। যারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, অবহেলার শিকার হয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সেই বিশ্বাস দিতে হয় যে, তাদের বিষয়টি দেখা হচ্ছে, শোনা হচ্ছে, সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। কারো জীবনের সবচেয়ে কঠিন দিনে তার পাশে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা যে শিক্ষাটা দেয়, সেটা কোনো ক্লাসরুম দিতে পারে না। এই প্রতিটা ধাপ আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে, মানুষ হিসেবে কেমন হতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার ‘দাদা’কে কখনো দেখিনি। কিন্তু তাঁর সততা আর দেশপ্রেমের কথা সব সময় শুনে এসেছি। ‘দাদু’ আর ‘আব্বু’ সেই আদর্শটাই বয়ে নিয়ে চলেছেন। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় এবং ৫ আগস্টের আগে-পরের সময়টাতে আমি যতটুকু পেরেছি, নেপথ্যে থেকে সাধ্যমতো ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি। অধিকাংশ সময় বলেছি কম, বরং শুনেছি বেশি। ছোট-ছোট কাজের মাধ্যমে তাঁদের বোঝা একটু হালকা করার চেষ্টা করেছি।’
দেশে ফেরা নিয়ে জাইমা রহমান বলেন, ‘অনেকগুলো বছর পর দেশে ফিরছি। দেশে ফেরা মানে আবেগ আর অনুভূতির এক অনন্য সংমিশ্রণ। দেশে ফিরে ইনশাআল্লাহ, আমি ‘দাদু’র পাশে থাকতে চাই। এই সময়টাতে আব্বুকে সর্বাত্মক সহায়তা করতে চাই। একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের জন্য সর্বস্ব দিয়ে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে চাই। নিজের চোখে, নিজের অভিজ্ঞতায় প্রিয় বাংলাদেশকে নতুন করে জানতে চাই; মানুষের সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলতে চাই। যেভাবে এগুনো দরকার, আমি চাই বাংলাদেশ আবারো সেভাবে সামনে এগিয়ে যাক, গর্জে উঠুক।’
‘আমি জানি, আমার পরিবারকে ঘিরে দেশের জনগণের কৌতূহল রয়েছে, প্রত্যাশা রয়েছে। সেটি কখনো আশার, কখনো প্রশ্নের। সেই প্রত্যাশা পূরণের দায়ভারও রয়েছে। জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণের চাপ আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে অনুভব করি; পরিবারে, বন্ধুত্বে, সমাজে। সংক্ষেপে, আমার নিজের ভাষায়, এই হলো আমার গল্প। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে একটা নিজস্ব গল্প আছে। এই গল্পগুলোকে ধারণ করে, আমরা সবাই হয়তো একসঙ্গে বাকি পথটা হাঁটতে পারি।’
রাজনীতি
শরীয়তপুরে ছাত্রদল-এনসিপি সংঘর্ষ, হাতবোমা বিস্ফোরণ
শরীয়তপুর সদর উপজেলায় ছাত্রদল ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একাধিক হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার চৌরঙ্গ মোড়ে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান সদর পালং মডেল থানার ওসি শাহ আলম।
আহতরা হলেন- ইসাহাক সরদার (৩৪), নাঈম ইসলাম (২৬), নিরব (১৯), আরমান দরর্জি (২৫) এবং মোহাম্মদ আলী (৩২)। এর মধ্যে নাঈমকে আশঙ্কাজনক অবস্থা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তারা সবাই ছাত্রদলের কর্মী।
ওসি শাহ আলম বলেন, একজনের গায়ে মোটরসাইকেল লাগা নিয়ে প্রথমে হাতাহাতি হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় একটি পক্ষ হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজধানীতে গুলিতে নিহত শরীফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে বিকেলে শহরে মিছিল বের করেন এনসিপি নেতাকর্মীরা। মিছিলটি চৌরঙ্গী এলাকায় পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেলকে সাইট দেওয়া নিয়ে ছাত্রদলের এক কর্মীর সঙ্গে এনসিপি কর্মীদের বাগবিতণ্ডা হয়।
তবে ছাত্রদলের অভিযোগ, ওই কর্মীকে মারধর করেছেন এনসিপির নেতাকর্মীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় হামবোমা বিস্ফোরণে পাঁচজন আহত হন।
প্রায় ৪০ মিনিট পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। সংঘর্ষ থামলেও এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
আহতদের নিজেদের কর্মী দাবি করে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, এনসিপি নামধারী কিছু লোক ছাত্রদলের ওপর হামলা করেছে। একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব সোহেল তালুকদার বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রদলের এক কর্মীকে আটকে রাখেন এনসিপির নেতারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে এনসিপির শরীয়তপুর জেলা কমিটির সাবেক যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার বলেন, ছাত্রদলের এক ছেলে মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের মিছিলে ঢুকে পড়ে। এ সময় ছাত্রদলের ওই কর্মী আমাদের একজনের ওপর হামলা চালায়। পরে আমরা তাকে আটকে রাখলে ছাত্রদলের সদস্যসচিব সোহেল ও তার লোকজন এসে আমাদের ওপর দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
ওসি শাহ আলম জানান, এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমকে
রাজনীতি
নারী সঙ্গীর বাসায় গুলিবিদ্ধ হন এনসিপি নেতা, মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর খুলনা বিভাগীয় প্রধান মোতালেব শিকদারের মাথায় গুলির ঘটনায় প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। একই সঙ্গে গুলিবিদ্ধ মোতালেব শিকদার বর্তমানে শঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে গুলির ঘটনাটি ঘটে। শুরুতে সোনাডাঙ্গার গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তরা তাকে মাথা লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়—এমন তথ্য পাওয়া গেলেও পরবর্তীতে পুলিশের তদন্তে ভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে।
কেএমপির দাবি, মোতালেব শিকদার সোনাডাঙ্গা এলাকার আল আকসা মসজিদ রোডের ‘মুক্তা হাউজ ১০৯’ নামের একটি ভবনের নিচতলায় গুলিবিদ্ধ হন। এটি এনসিপি নেতা মোতালেবের নারীসঙ্গী তন্বীর বাসা বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি গত দুই মাস ধরে সেখানে বসবাস করছিলেন।
কেএমপির মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুরুতে পুলিশের কাছে রাস্তায় গোলাগুলি হওয়ার এবং সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ হওয়ার মিথ্যা জবানবন্দি দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি বিদেশি মদের খালি বোতল, পিস্তলের একটি গুলির খোসা, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি এবং অনৈতিক কার্যক্রমের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে।
এছাড়া ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ঘটনার আগের দিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে দুজন ব্যক্তি মোতালেব শিকদারের ভাড়া বাসায় প্রবেশ করেন।
পুলিশের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, মোতালেব শিকদার খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর অনুসারী সৌরভ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন। পূর্ব থেকেই তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। চাঁদার অর্থের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে অন্তর্কোন্দলের জেরে এ গুলির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
কেএমপির উপকমিশনার (দক্ষিণ বিভাগ) তাজুল ইসলাম বলেন, “এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে মাদক ব্যবহারের দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। মূল ঘটনা উদঘাটনে আমাদের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”
এদিকে গুলিবিদ্ধ মোতালেব এখন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে কেএমপি। চিকিৎসকদের বরাত দিয়েছে পুলিশ জানায়, বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিক্যাল কলেজের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। তার সিটি স্ক্যান রিপোর্ট স্বাভাবিক এবং তিনি আশঙ্কামুক্ত।
এমকে




