জাতীয়
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২: চার দিনে গ্রেফতার ২ হাজার ৪৩৩
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্টদের দমনে গত শনিবার সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে যৌথবাহিনী। গত চার দিনে এ অভিযানে দুই হাজার ৪৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ১২টি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর গত শনিবার আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোর কমিটির সভায় জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং ফ্যাসিস্টদের দমনে এ অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়।
সে অনুযায়ী ওইদিন রাত থেকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও সেনাবাহিনী অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২ নামের বিশেষ অভিযান শুরু করে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন জানান, গত শনিবার রাত থেকে শুরু হয়ে গতকাল রোববার পর্যন্ত চলা এই অভিযানে দুই হাজার ৪৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে ৮২৩ জনকে। এ সময় তিনটি এলজি, একটি দেশীয় ওয়ান শুটারগান, ৮ রাউন্ড রাইফেলের গুলি, ৪ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৩ রাউন্ড কার্তুজ ও দুটি বার্মিচ চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
গত শনিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলমান। এটিকে আরও জোরদার ও বেগবান করার জন্য এবং ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের দমনের উদ্দেশ্যে কোর কমিটি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এর ১০ মাস আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু করা হয়েছিল। গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে গাজীপুরসহ সারাদেশে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করা হয়।
জাতীয়
হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন: প্রেস উইং
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন জুলাই গণ অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে এক বার্তায় এ তথ্য জানায় প্রেস উইং।
এতে বলা হয়, সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান আজ হাসপাতালে গিয়ে শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। পরে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করে হাদির বর্তমান শারীরিক অবস্থা ও চলমান চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন।
ফোনালাপে ড. ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান জানান, হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং চিকিৎসকরা তাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে শরিফ ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করার অনুরোধ করেছেন।
জাতীয়
বইমেলা ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু
আগামী বছরের অমর একুশে বইমেলার সময়সূচি নিয়ে জটিলতার অবসান হয়েছে শেষ পর্যন্ত। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতেই হচ্ছে বইমেলা। তবে সাধারণত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে হলেও এবারের একুশে বইমেলা শুরু হবে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে। চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত।
আজ বুধবার এক জরুরি সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলা একাডেমি।
বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে অমর একুশে বইমেলা ২০২৬-এর তারিখ নির্ধারণ সংক্রান্ত একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, বাংলা একাডেমির পরিচালকরা, প্রকাশক প্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রতিনিধি।
বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অমর একুশে বইমেলা ২০২৬-এর উদ্বোধনের সময় আগামী বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় নির্ধারণ করা হয়েছে।
জাতীয়
সিঙ্গাপুরে হাদির অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হসপিটালে (এসজিএইচ) চিকিৎসাধীন। কিছুক্ষণ আগে নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সংকটাপন্ন অবস্থাতেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে গত সোমবার হাদিকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই তার অবস্থার কিছুটা অবনতি হলেও হাসপাতালে নেয়ার পর কিছুটা উন্নতি হয়। গতকাল মঙ্গলবার সারাদিন ও আজ সকালে স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও দুপুরের পর স্বাস্থ্যের অবনতির খবর জানা যায়।
এর আগে অন্তবর্তীকালীন সরকার ও পরিবারের অনুরোধে আরও ভালো চিকিৎসার জন্য হাদিকে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে কুইন এলিজাবেথ হাসাপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছিল সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা মেডিক্যাল রিপোর্টসহ আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চিঠিও পাঠায় কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে। স্বাস্থ্য পারমিট করলে যুক্তরাজ্যে পাঠানোর এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই স্বাস্থ্যের কিছুটা অবনতির খবর জানা গেছে।
সূত্র বলছে, ওসমান হাদির মাথায় খুব জটিল একটি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। তবে এ জন্য সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে ভালো ব্যবস্থা নেই। বৃটেনের বার্মিংহামের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে এ অপারেশনের ভালো ব্যবস্থা রয়েছে।
সূত্রটি আরও বলছে, শুরুতে ইনকিলাব মঞ্চ এবং বাংলাদেশ ও বৃটেনের কয়েকজন শুভাকাঙ্ক্ষী ওসমান হাদিকে বৃটেনে নেওয়ার প্রচেষ্টা নেন। তবে এখন বিষয়টি নিয়ে সরকার দ্রুত উদ্যোগী হয়েছে। আজ সকালে তিনজন উপদেষ্টা, ফওজুল কবির খান, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও ডা. সায়েদুর রহমান টেলিকনফারেন্সে হাদির বড় ভাই ওমরের সঙ্গে কথা বলেন এবং সরকারের তরফ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা ও উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন।
সব ঠিক থাকলেও ওসমান হাদিকে লম্বা সফরে নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা আছে কিনা, সে বিষয়ে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকদের সবুজ সংকেতের প্রয়োজন। চিকিৎসকরা সফরের বিষয়ে সায় না দিলে তাকে বৃটেনে নেওয়ার চেষ্টা হবে ঝুঁকিপূর্ণ।
এর আগে আজ সকালে ইনকিলাব মঞ্চে তাদের ফেসবুক পেজের একটি পোস্টে জানায়, হাদির স্বাস্থ্য স্থিতিশীল হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে সবাই। অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করতে হলে প্রথমে শরীরকে সম্পূর্ণভাবে স্থিতিশীল করতে হবে। চিকিৎসা সিঙ্গাপুর অথবা ইংল্যান্ড যে কোনো জায়গায় হতে পারে। ব্রেন সক্রিয় করার জন্য অপারেশন প্রয়োজন। বর্তমানে মূল লক্ষ্য হলো শরীর আর ব্রেনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা। ব্রেন ছাড়া শরীরের অন্য সব অঙ্গ সক্রিয় রয়েছে।’
তার পরিবার তার জন্য বিশেষ দোয়া কামনা করেছে, ‘ওসমান হাদির জন্য বিশেষ দোয়ার আহ্বান করেছে তার পরিবার। আল্লাহ যেন তাকে হায়াতে তাইয়েবাহ নসীব করেন।’
জাতীয়
বাংলাদেশি হাইকমিশনারকে তলব করে যে বার্তা দিলো নয়াদিল্লি
বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে এ বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানানো হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত রোববার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিএম) বি শ্যাম।
এদিন সকালেই চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে বুধবার দুপুর ২টা থেকে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়। ভারতীয় ভিসার আবেদন কেন্দ্র (আইভ্যাক) নিজেদের ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।
এদিকে হাইকমিশনারকে তলবের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে ভারত গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে। বিশেষভাবে হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে, কিছু উগ্রবাদী বিষয় বিবেচনায় নিয়ে, বিশেষ করে যারা ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের চারপাশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
ভারত জানায়, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়ে উগ্রবাদের তৈরি মিথ্যা কাহিনি সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করে দেশটি। এটা দুঃখজনক যে, অন্তর্বর্তী সরকার এখনো সম্পূর্ণ তদন্ত চালায়নি এবং ভারতকে প্রাসঙ্গিক প্রমাণ শেয়ার করেনি।
নয়াদিল্লির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যা মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিতে গড়ে উঠে।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, তারা বাংলাদেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষপাতী এবং সবসময়ই মুক্ত, ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছে।
ভারত আশা করছে, অন্তর্বর্তী সরকার কূটনৈতিক দায়িত্ব অনুযায়ী বাংলাদেশে মিশন ও পোস্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন এবং তখন থেকেই তিনি সেখানে অবস্থান করছেন। পরবর্তী সময়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এ রায়ের পর শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার একাধিকবার ভারতের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানালেও এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।
ভারতে অবস্থান করে শেখ হাসিনার বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবিতে সম্প্রতি কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করে ঢাকা। এ ধারাবাহিকতায় গত রোববার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের গভীর উদ্বেগের কথা ভারতের প্রতিনিধিকে জানান।
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হত্যাচেষ্টার ঘটনার দুই দিন পর এই তলব করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনরা ভারতে প্রবেশ করলে তাদের গ্রেফতার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বানও জানায় ঢাকা।
এছাড়া কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পলাতক নেতা-কর্মীরা ভারতে বসে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র ও সহিংস তৎপরতায় জড়িত—এমন অভিযোগও তুলে ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসব ব্যক্তিকে আটক করে দেশে ফেরত পাঠাতে ভারত সরকারের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
জবাবে ভারতের হাইকমিশনার শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশার কথা জানান এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে তারা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পক্ষে নিজেদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরও শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনের বিরোধিতামূলক বক্তব্য অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে গত ১৪ ডিসেম্বর আবারও ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করা হয়। গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ নিয়ে মোট পাঁচবার ভারতের হাইকমিশনার ও ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করলো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানায়, বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করা হলো একদিন পরে, যখন একজন বাংলাদেশি নেতা উত্তর-পূর্ব ভারতের ‘সেভেন সিস্টারস’ আলাদা করার হুমকি দিয়েছেন।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত ‘সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে’ ভারত বাংলাদেশকে ফিলিস্তিন বানাতে চায় মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘ভারতকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, সম্ভাবনা, ভোটাধিকার ও মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে না, তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। ভারতের যারা সেপারেটিস্ট আছে বাংলাদেশে আমরা তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যে সেভেন সিস্টার রয়েছে সেটাকে ভারত থেকে আলাদ করে দেবো।’
জাতীয়
বাড্ডায় ‘লং মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা
শেখ হাসিনাসহ সব খুনিকে দেশে ফিরিয়ে দেওয়া এবং ভারতীয় প্রক্সি রাজনৈতিক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের অব্যাহত ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে জুলাই ঐক্যের ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ থেকে এ লং মার্চ শুরু হয়। বিকেল ৪টায় বাড্ডার হোসেন মার্কেটের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের লং মার্চ থামিয়ে দেয় পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, লং মার্চ এগোতে না পাড়ায় জুলাই ঐক্যের লোকজন প্রগতি সরণিতে অবস্থান নেন। এ সময় তারা ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। জুলাই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এছাড়া ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
এদিকে, পুলিশের রাস্তায় ব্যারিকেড ও জুলাই ঐক্যের নেতাকর্মীরা সড়কে অবস্থান নেওয়ায় বিকেল ৩টা থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রগতি সরণিতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এমকে




