অন্যান্য
বিআইএফসির লোকসান কমেছে
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি) গত ৩০ সেপ্টেম্বর,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সমাপ্ত তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই’২৫-সেপ্টেম্বর’২৫) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ৮১ পয়সা লোকসান হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ১ টাকা ০৬ পয়সা লোকসান হয়েছিল।
অন্যদিকে তিন প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ার প্রতি ৩ টাকা ৯৩ পয়সা লোকসান হয়েছে। গতবছর একই সময়ে লোকসান ছিল ২ টাকা ৬১ পয়সা।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট দায় ছিল ১৩০ টাকা ০৪ পয়সা।
এসএম
অন্যান্য
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের আশাব্যঞ্জক লক্ষণ দেখা দিয়েছে: জিইডি
২০২৫ অর্থবছরের শেষ ছয় মাসে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে পুনরুদ্ধারের আশাব্যঞ্জক লক্ষণ দেখা গেছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগে (জিইডি) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ স্টেট অব দ্য ইকোনমি ২০২৫’ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন পূর্বাভাসে প্রবৃদ্ধি শ্লথ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হলেও বর্তমানে প্রধান সূচকগুলো ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের দিকেই ইঙ্গিত করছে।
জিইডির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগের বছরের তুলনায় কম থাকবে বলে বড় উন্নয়ন সহযোগীরা ধারণা করছে।
বিশ্বব্যাংক ৩.৩ শতাংশ থেকে ৪.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে, আর এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) পূর্বাভাস দিয়েছে ৩.৯ শতাংশ। তবে ২০২৬ অর্থবছরে অর্থনীতি গতি সঞ্চার করবে এবং প্রবৃদ্ধি ৫.১ শতাংশ থেকে ৫.৩ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের বহিঃখাতের উল্লেখযোগ্য স্থিতিশীলতার কথা বলা হয়েছে। শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ, আমদানি স্থিতিশীলতা এবং মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির পুনরুদ্ধার অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
রপ্তানি আয়ও শক্তিশালী রয়েছে, যা তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি, নীতি মেনে চলা এবং বাজার বহুমুখীকরণের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটাতে সক্ষম অবস্থায় স্থিতিশীল রয়েছে, যা বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার প্রতিফলন।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দুই বিভাগে ভাগ করার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে এনবিআর কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে জুন মাসে রাজস্ব সংগ্রহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। পরে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় এবং রাজস্ব আদায় পুনরায় শুরু হয়।
জিইডি জোর দিয়ে বলেছে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং আর্থিক খাত স্থিতিশীল করা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য অপরিহার্য। যদিও অনেক পূর্বাভাস পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দিচ্ছে, তবে প্রবৃদ্ধি কতটা কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য হ্রাস এবং জীবনমান উন্নয়নে রূপান্তরিত হবে তা কার্যকর নীতি, শক্তিশালী আর্থিক খাতের শাসন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কৌশলের ওপর নির্ভর করবে।
প্রতিবেদনটিতে দুর্বল বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্প কার্যক্রমকে প্রবৃদ্ধির বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিপরীতে, রেমিট্যান্স প্রবাহ, রপ্তানি কার্যকারিতা এবং উৎপাদন খাতের আউটপুট-বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প-প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে ও ২০২৬ অর্থবছরেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে বাংলাদেশকে সীমিত রিজার্ভ, বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট, ক্রেতাদের পরিবর্তিত পছন্দ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ও ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। বৃহৎ ও ক্রমবর্ধমান শ্রমবাজারের চাহিদা মোকাবিলা, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো-বিশেষত পোশাক ও এসএমই খাতে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগকে জাতীয় অগ্রাধিকার দিতে হবে।
উদীয়মান দুর্বলতাগুলো- বিশেষ করে মূল্যস্ফীতি, আর্থিক খাতের অস্থিরতা, দুর্বল বিনিয়োগ পরিবেশ, সুশাসন সংকট এবং বৈদেশিক ঝুঁকি সমাধান করতে ব্যর্থ হলে প্রবৃদ্ধি মন্থর হতে পারে, জীবনমান খারাপ হতে পারে, দারিদ্র্য বাড়তে পারে এবং বৈষম্য দেখা দিতে পারে।
অন্যদিকে, সময়োপযোগী ও সমন্বিত নীতি সংস্কার, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং স্পষ্ট নীতিগত বার্তা প্রদান নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ পুনরায় গতি ফিরে পাবে এবং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের সুযোগ তৈরি হবে।
জিইডি উপসংহারে বলেছে, কাঠামোগত সংস্কার ও উদ্ভাবন-নির্ভর অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা সমর্থিত একটি সুপরিকল্পিত জাতীয় টেকসই উন্নয়ন কৌশল ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনাকে পরিচালিত করবে, যা স্থিতিস্থাপকতা ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক শক্তি বাড়াবে।
অন্যান্য
বেগম রোকেয়া নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নারীমুক্তি ও মানবাধিকার নিয়ে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ৯ ডিসেম্বর দেশে নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া স্মরণে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই অঞ্চলের নারী সমাজকে যথাযোগ্য মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াসে বেগম রোকেয়ার অসামান্য অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। আজ বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আমি এই মহীয়সী নারীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি বলেন, ঊনবিংশ শতাব্দীতে রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়া নারীদের ভাগ্যোন্নয়নের মূল চাবিকাঠি শিক্ষা। এ উপলব্ধি থেকে বেগম রোকেয়া নারীশিক্ষা বিস্তারে বিরাট সাহসী ভূমিকা পালন করেন। বেগম রোকেয়া নারী উন্নয়নের পথে যে যাত্রা শুরু করেছিলেন, তার ধারাবাহিকতায় নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ড. ইউনূস বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নানান পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, গ্রামীণ অসচ্ছল নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট কর্মসূচি, গ্রামীণ এলাকায় দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের এবং শহর এলাকায় স্বল্প আয়ের কর্মজীবী মায়েদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান, দেশব্যাপী তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের আত্ম-কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনা। এছাড়াও প্রান্তিক নারীদের উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা প্রদান করাসহ কর্মজীবী নারীদের নিরাপদ আবাসনের লক্ষ্যে কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল পরিচালিত হচ্ছে। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম প্রকল্পের আওতায় টোল ফ্রি (৭/২৪ ঘণ্টা) হট লাইন সেবা ১০৯ চালু রয়েছে।
বেগম রোকেয়ার আদর্শ অনুসরণে নারী অধিকার ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদানের জন্য যারা বেগম রোকেয়া পদক পেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা তাদের অভিনন্দন জানান। একই সঙ্গে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
অন্যান্য
পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনে অধ্যাদেশ অনুমোদন
উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে ‘পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫’সহ বেশ কয়েকটি অধ্যাদেশ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, সরকার ‘পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫’ অনুমোদন দিয়েছে। এর মাধ্যমে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন গঠন করা হবে। এ কমিশনের দায়িত্ব হবে পুলিশকে জনবান্ধব করা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং বাহিনীকে আরও আধুনিকায়ন করা।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট এই কমিশনের প্রধান থাকবেন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। এর সদস্য হবেন— জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা (গ্রেড-১ এর নিচে নয়), অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক পদমর্যাদার একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (গ্রেড-১ এর নিচে নয়), বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত বা কর্মরত) এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন বিশেষজ্ঞ।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ যেন প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করতে পারে, সে ব্যাপারে কী কী করণীয়, সে বিষয়ে কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। এ ছাড়া পুলিশ যেন মানবাধিকার সংবেদনশীল হয়, সে বিষয়ে পুলিশের কোথায়-কোথায় আধুনিকায়ন দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, সেগুলোও কমিশন চিহ্নিত করবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ কমিশনের আরও দুটি কাজ হলো— পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেবে এ কমিশন।
কমিশন গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটি সার্চ কমিটির মাধ্যমে কমিশনের নামগুলো আসবে। তার ভিত্তিতে সরকার নিয়োগ দেবে। সার্চ কমিটিতে থাকবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং জাতীয় সংসদের দুজন প্রতিনিধি।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে।
সংশোধনের বিষয়বস্তু তুলে ধরে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, একটি হচ্ছে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না সেই সংক্রান্ত, আরেকটি হলো— পোস্টাল ব্যালট গণনাপদ্ধতি নিয়ে একটি বিধান আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিরা ডাকযোগে ভোট দিতে পারবেন। এসব ভোট গণনার পদ্ধতি আনুষ্ঠানিকভাবে আরপিও-তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যেখানে ব্যালটে একটি সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে সেটি গণনায় ধরা হবে না, সিল না দেওয়া ব্যালটও গণনা করা হবে না।
পোস্টাল ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘোষণাপত্রে (ডিক্লারেশন) সই থাকতে হয়, সেটা না থাকলে গণনা করা হবে না। আর ভোটের দিন নির্বাচন কমিশন যে পর্যন্ত ভোট গ্রহণের সময় নির্ধারণ করে দেবে, সেই সময়ের মধ্যে যে ব্যালটগুলো (পোস্টাল) রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পৌঁছাবে, সেগুলো একসঙ্গে গণনা করা হবে।
উপদেষ্টা জানান, বৈঠকে বন ও বৃক্ষ সংরক্ষণ অধ্যাদেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা অধ্যাদেশের খসড়াও অনুমোদন করা হয়েছে।
এ ছাড়া, বৈঠকে ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত বাংলাদেশ বিল্ডিং রেগুলেটরি অথরিটি অধ্যাদেশের খসড়াও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি বাংলাদেশ বিল্ডিং কোড (ইমারত বিধি) যথাযথভাবে পালন নিশ্চিত করবে। সারাদেশের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষ সারাদেশে ভবন নিরাপত্তা মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য তদারকি করবে, ভূমিকম্প প্রস্তুতি নিশ্চিত করবে এবং সবুজ ও পরিবেশবান্ধব নির্মাণকে উৎসাহিত করবে। এই অথরিটি গঠিত হবে স্থপতি, পরিকল্পনাবিদ এবং প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে, যাদের সংশ্লিষ্ট কাজে অন্তত ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
আইন অনুযায়ী লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ সংস্থাগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
অন্যান্য
অনুমতি ছাড়া ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৯ টাকা বাড়ানো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার পরিদর্শন করে তিনি দেখেন, পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল কয়েক দিন আগেও যেখানে ৯২২ টাকা ছিল, সেখানে এখন ৯৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উত্তর বাড্ডা কাঁচাবাজারের মুদি দোকানি অসীম হালদার বলেন, কোম্পানিগুলো লিটারে ৯ টাকা করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছে। লিটারপ্রতি ১৮৯ টাকা যে তেল ছিল, এখন তা ১৯৮ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দামও লিটারে ৫ টাকা বেড়েছে।
দাম বৃদ্ধির জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীরা সরকারকে কিছু না জানিয়েই দাম বাড়িয়েছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তারা [ব্যবসায়ীরা] মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেনি।
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগেই দরপত্রের মাধ্যমে তারা আমাদের কাছে বাজার দরের চেয়ে লিটারে ২০ টাকা কম দামে সয়াবিন তেল সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছিল। আমরা ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কিনেছি। এখন কোন যুক্তিতে তারা দাম বাড়াল, আমি জানি না।
উপদেষ্টা বলেন, খুব শিগগিরই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসবে মন্ত্রণালয়। তারা যদি দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা দেখাতে না পারেন, তবে নতুন দাম অনুমোদন দেওয়া হবে না।
সরকারের অনুমোদন ছাড়া ব্যবসায়ীরা কীভাবে দাম বাড়াল—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অক্টোবরে তেলের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল তারা। কিন্তু আমরা অনুমোদন দেইনি এবং বাজারও তা গ্রহণ করেনি। আমরা তাদের সঙ্গে আবারও বসব।’
রমজান সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাম স্থিতিশীল থাকবে। সম্প্রতি ছোলা, চিনি ও ডালের দামও কমেছে।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিগুলো ১০ নভেম্বর সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর অনুমোদন চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়।
২৪ নভেম্বর তারা আবারও দাম সমন্বয়ের সুপারিশ করে, তবে মন্ত্রণালয় সাড়া দেয়নি।
অন্যান্য
পে স্কেল নিয়ে ৭০ সচিবের মতামত সংগ্রহ, রূপরেখা শিগগরই
সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নতুন পে স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে ফের জটিলতা তৈরি হয়েছে। রবিবার (৩০ নভেম্বর) পে কমিশনের কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেওয়ার জন্য কর্মচারীদের দেওয়া আল্টিমেটামের শেষ দিন। এদিকে নবম পে স্কেল প্রণয়নে দ্রুত অগ্রগতি করছে পে কমিশন। সরকারের সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে চার দফায় মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় মতামত সংগ্রহ করেছে কমিশন। ৭০-এর বেশি সচিবের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এসব সভায় পে স্কেল নিয়ে নানা প্রস্তাব ও সুপারিশ উঠে এসেছে। শিগগরই এর রূপরেখা উপস্থাপন করবে কমিশন।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) পে কমিশনের একটি সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, অনলাইনে মতামত গ্রহণের পাশাপাশি এখন পর্যন্ত আড়াই শতাধিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। সর্বশেষ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের মতামত সংগ্রহ করা হয়েছে, যা সুপারিশ প্রণয়নে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।
কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ৭০-এর বেশি সচিবের মতামত নেওয়া অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। সবাইকে একসঙ্গে পাওয়া সম্ভব নয়—এটি মাথায় রেখেই চার ধাপে সভা করা হয়েছে। প্রতিটি ধাপে ১৭ বা তার বেশি সচিব অংশ নেন এবং গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন। এগুলো বর্তমানে পর্যালোচনা চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কমিশন সুপারিশ জমা দিতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে, ২৪ ও ২৬ নভেম্বর সচিবদের সঙ্গে বৈঠকের পর কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ হলেও কয়েকজন সচিব অনুপস্থিত থাকায় আবারও বৈঠক হবে। সুপারিশ কবে জমা দেওয়া সম্ভব এ বিষয়ে তিনি জানান, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট দিতে পারব বলে আশা করছি।




