জাতীয়
হাদির জানাজা দুপুরে, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ বর্তমানে রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘরে রয়েছে। আজ দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং থেকে বলা হয়, শনিবার দুপুর দুইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আরও জানিয়েছে, শহীদ ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণে আগ্রহীদের কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারি বস্তু বহন না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। সেই সঙ্গে এ সময় সংসদ ভবন ও এর আশপাশের এলাকায় ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এদিকে, ট্রাফিক নির্দেশনা দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে, শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক লোক সমাগম হবে। ফলে এ সময় মানিক মিয়া এভিনিউতে যানবাহন চলাচল সীমিত থাকবে। জানাজা অনুষ্ঠানের সুবিধার্থে খেজুর বাগান ক্রসিং হতে মানিক মিয়া এভিনিউ পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এ সময় বিকল্প সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ জানানো হয়।
বিকল্প সড়কগুলো-
১. মিরপুর রোড টু ফার্মগেট ভায়া মানিক মিয়া এভিনিউগামী যানবাহন মিরপুর রোড হয়ে উত্তর দিক থেকে আগত ফার্মগেট বা সোনারগাঁও অভিমুখী যানবাহন গণভবন ক্রসিং-লেকরোড-উড়োজাহাজ ক্রসিং-বিজয় সরণি ক্রসিংয়ে ডানে মোড় নিয়ে ফার্মগেট এর দিকে গমন করবে।
২. ফার্মগেট টু মানিক মিয়া এভিনিউ ভায়া ইন্দিরা রোডগামী যানবাহন ফার্মগেট হতে খেজুর বাগান ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং-বামে মোড় নিয়ে লেক রোড-গণভবন ক্রসিং এর দিকে গমন করবে।
৩. ধানমন্ডি হতে ফার্মগেটগামী যানবাহন ধানমন্ডি ২৭ হতে আগত যানবাহন আসাদগেট-গণভবন ক্রসিং ডানে ইউটার্ন করে লেকরোড-উড়োজাহাজ ক্রসিং-বিজয় সরণি ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে ফার্মগেট ক্রসিং এর দিকে গমনাগমন করবে।
৪. আসাদগেট হতে ফার্মগেট ক্রসিংগামী যানবাহন আসাদগেট-বামে মোড় নিয়ে গণভবন ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে লেক রোড-উড়োজাহাজ ক্রসিং-বিজয় সরণি ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে ফার্মগেট ক্রসিং এর দিকে গমন করবে।
৫. এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বা ইন্দিরা রোড থেকে ধানমন্ডিগামী যানবাহন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাইন্দিরা রোড হতে আগত যানবাহন খেজুর বাগান ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং-বামে মোড় নিয়ে লেক রোড-বামে মোড় নিয়ে আসাদগেট-সোজা পথে ধানমন্ডির দিকে গমন করবে।
৬. মিরপুর রোড হতে ধানমন্ডি ২৭ গামী যানাবাহন মানিক মিয়া এভিনিউ হতে ব্লকেড সরিয়ে ফেলা হবে বিধায় মিরপুর রোড হতে দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন শ্যামলী-শিশুমেলা-গণভবন-আসাদগেট হতে সোজা ধানমন্ডি ২৭ এর দিকে গমনাগমন করবে।
৭. এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েগামী যানবাহন সমূহকে জানাজা নামাজ চলাকালীন সময়ে ফার্মগেট এক্সিট র্যাম্প ব্যবহারের পরিবর্তে এফডিসি (হাতিরঝিল) র্যাম্প ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হলো।
অন্যদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজা ঘিরে রাজধানীর ফার্মগেট ও বিজয় সরণি মেট্রোরেল স্টেশনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে এমআরটি পুলিশ।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিতব্য ওসমান গনি হাদির জানাজা নামাজ উপলক্ষে ফার্মগেট ও বিজয় সরণি মেট্রোরেল স্টেশনে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবে এমরআরটি পুলিশ।
এতে বলা হয়, ওই এলাকায় কোনো ব্যক্তি ভারি বস্তা বা ব্যাগ বহনে বিশেষভাবে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। একই সঙ্গে, উক্ত এলাকায় জনসাধারণের জন্য ড্রোন ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে সবাইকে সচেতন নাগরিক হিসেবে এমআরটি পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
শরিফ ওসমান হাদি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের একজন সম্মুখ সারির নেতা ছিলেন। তিনি ইনকিলাব মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন।
গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণাকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
এরপর পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সবশেষ গত ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় ওসমান হাদিকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। পরে শুক্রবার তার মরদেহ ঢাকায় আনা হয়।
জাতীয়
হাদি তুমি আমাদের বুকের মধ্যে আছো: প্রধান উপদেষ্টা
‘প্রিয় ওসামান হাদি তোমাকে বিদায় দিতে আসি নাই। তুমি আমাদের বুকের ভেতর আছো। বাংলাদেশ যতদিন আছে, তুমি বাংলাদেশের মানুষের বুকের মধ্যে আছো।’
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ ওসমান হাদির জানায়ায় অংশ নিয়ে হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে একথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, লাখ লাখ লোক আজ এখানে হাজির হয়েছে। পথে ঢেউয়ের মতো লোক আসছে। সারা বাংলাদেশ জুড়ে কোটি কোটি মানুষ এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছে। বিদেশিরাও হাদির কথা জানতে চায়। প্রিয় ওসামান হাদি তোমাকে বিদায় দিতে আসি নাই। তুমি আমাদের বুকের ভেতর আছো। বাংলাদেশ যতদিন আছে, তুমি সব বাংলাদেশির বুকের মধ্যে আছো।
তিনি বলেন, তোমার কাছে ওয়াদা করতে আসছি, তুমি যা বলে গেছো, সেটা যেন পূরণ করতে পারি। শুধু আমরা নয়, বংশানুক্রমে বাংলাদেশের সব মানুষ পূরণ করবে। তোমার মানবপ্রেম, ভঙ্গি মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সবাই গ্রহণ করেছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তুমি এমন মন্ত্র আমাদের দিয়ে গেছো, সেটা চিরদিন আমাদের কানে বাজবে। তোমার মন্ত্র ছিল- বল বীর চির উন্নত মম শির। আমাদের শির কখনো নত হবে না। আমাদের সব কাজে সেটা প্রমাণ করবো, পূরণ করবো।’
‘প্রিয় হাদি, তুমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিলে, কীভাবে নির্বাচন করতে হয়, কীভাবে প্রচারণা চালাতে হয়, কীভাবে কষ্ট না দিয়ে মানুষের কাছে যাওয়া যায়, আমরা সেই শিক্ষা গ্রহণ করলাম। আমরা এভাবেই করতে চাই।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘প্রিয় হাদি, তুমি যুগ যুগ ধরে আমাদের সঙ্গে থাকবে। বল বীর উন্নত মম শির, এই মন্ত্র নিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো। সবার পক্ষ থেকে ওয়াদা করলাম। তোমাকে আল্লাহর হাতে আমানত রেখে গেলোম। সব সময় তোমার কথা স্মরণ করে জাতির অগ্রগতির পথে চলতে থাকবো।’
জাতীয়
ওসমান হাদির জানাজা সম্পন্ন
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। জানাজায় অংশ নেন লক্ষাধিক মানুষ।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা পড়ান ওসমান হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।
জানাজায় অংশগ্রহণ করতে আসা লাখো ছাত্র-জনতা জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশ করেন। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দীর্ঘক্ষণ সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়। এসময় চীন থেকে আনা আটটি আর্চওয়ে গেট দিয়ে ছাত্র-জনতা দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশ করেন।
জাতীয়
সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান এ কে খন্দকার মারা গেছেন
মহান মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ ও সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার, বীর উত্তম মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ কে খন্দকার ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে পিএএফ (পাকিস্তান বিমানবাহিনী) থেকে কমিশন (পাইলট অফিসার পদ) লাভ করেন। তিনি ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ফাইটার পাইলট হিসেবে কাজ করেন ও পরে ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর হয়ে ওঠেন।
তিনি পাকিস্তান এয়ার ফোর্স একাডেমিতে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর স্কুলে তিনি ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত ফ্লাইট কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে জেট ফাইটার কনভারশন স্কোয়াড্রনে তিনি ফ্লাইট কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৬০ সাল পর্যন্ত।
এ কে খন্দকার ১৯৬১ সাল পর্যন্ত স্কোয়াড্রন কমান্ডার হিসেবে কাজ করেন পিএএফ একাডেমিতে। পরে জেট ফাইটার কনভারশন স্কোয়াড্রনে তিনি স্কোয়াড্রন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত। ট্রেনিং উইংয়ের অফিসার কমান্ডিং হিসেবে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত তিনি পিএএফ একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করেন। পিএএফ প্ল্যানিং বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ১৯৬৯ সালের আগ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। পরে তিনি সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পিএএফ বেইসের দায়িত্ব পান ঢাকায় ১৯৬৯ সালে।
জাতীয়
উসকানিমূলক কনটেন্ট সরাতে মেটাকে সরকারের চিঠি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংসতা উসকে দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়া কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) মেটাকে এ চিঠি দেয়। একই সঙ্গে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সংক্রান্ত কনটেন্টগুলোর ওপর বিশেষ নজরদারি জারি রাখতে মেটাকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে থাকা বাংলাদেশে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোকে সহিংসতা উসকে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা বাস্তব জীবনের সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। এর ফলে উত্তেজনা ভয়াবহভাবে বেড়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি ফেসবুকে প্রকাশ্যে ওসমান হাদির মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যরা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছেন। এসব বক্তব্য ছড়ানোর পর প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর মারাত্মক হুমকি তৈরি হয়।
সরকার ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ জানানো হলেও সহিংসতা উসকে দেওয়া অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করতে মেটা সহযোগিতা করেনি বলেও চিঠিতে অভিযোগ করা হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ফেসবুকের মাধ্যমে উসকে দেওয়া সহিংসতার সঙ্গে নাগরিকদের জীবন, গণতান্ত্রিক অধিকার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও দেশের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা গভীরভাবে যুক্ত। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় কয়েকটি বিষয়ে মেটাকে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে চিঠিতে।
সেসবের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সংক্রান্ত কনটেন্টের ক্ষেত্রে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রেক্ষাপট সংবেদনশীলভাবে প্রয়োগ করা, বাংলা ভাষাভিত্তিক কনটেন্ট মডারেশন করা, অনুভূতি বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিক পর্যালোচনা জোরদার করা এবং সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা সংগঠিত ক্ষতির আহ্বান জানানো কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি শনিবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে সন্ত্রাস ও সহিংসতার আহ্বান সম্বলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপ ও ই-মেইলে রিপোর্ট করার আহ্বান জানিয়েছে।
হোয়াটসঅ্যাপে ও ইমেইলে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পর বিটিআরসির মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মগুলোতে রিপোর্ট করবে।
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানায়, সরকার সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো পোস্ট ডাউন করতে পারে না। শুধু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত পোস্টগুলো সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মের কাছে রিপোর্ট করতে পারে।
যে মোবাইল ফোন নম্বর ও ইমেইলে রিপোর্ট করা যাবে: হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার 01308332592, মেইল notify@ncsa.gov.bd।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হেট স্পিচ, যা সরাসরি সহিংসতা ঘটায় কিংবা সহিংসতার ডাক দেয়- সেটা জাতীয় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ মতে দণ্ডনীয় অপরাধ।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি সোশ্যাল মিডিয়াকে সহিংসতা কিংবা ভায়োলেন্স তৈরির টুল হিসেবে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি দেশ, নাগরিকের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন হতে জনসাধারণকে আহ্বান জানাচ্ছে।
জাতীয়
হাদির মরদেহ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়, লাখো মানুষের ঢল
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জুলাই বিপ্লবী শহিদ ওসমান হাদির জানাজার নামাজে জন্য মরদেহ নেয়া হয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দরোগ ইনস্টিটিউট থেকে সহযোদ্ধা ও সমর্থকদের অংশগ্রহণে মিছিলসহ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে আসা হয় সেখানে।
এদেক সকালে শহিদ ওসমান হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। পরে তার মরদেহ আবারও নেয়া হয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সেখানে গোসল শেষে সহযোদ্ধা ও সমর্থকদের অংশগ্রহণে মিছিলসহ মরদেহ নিয়ে নিয়ে আসা হয় মানিক মিয়া অ্যঅভিনিউ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। এরপর দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে বলা হয়েছে, পরিবারের দাবির ভিত্তিতে শহিদ ওসমান হাদিকে কবি নজরুলের পাশে সমাহিত করার এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বাদ জোহর জানাজার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শহিদ ওসমান হাদির জানাজার নামাজ পড়াবেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শহিদ ওসমান হাদির জানাজার নামাজ পড়াবেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। দাফন হবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশেই।
বিপ্লবী শহিদ ওসমান হাদির জানাজার নামাজে অংশ নিতে জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জড়ো হচ্ছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। একের পর এক মিছিল নিয়ে জানাজার স্থানে প্রবেশ করছেন ছাত্র-জনতা।
শনিবার সকাল থেকেই আসতে শুরু করেন মানুষ। বেলা ১২টায় দেখা যায়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর ফার্মগেট, বিজয়স্মরণী, আসাদগেটসহ আসপাশের এলাকায় মানুষে ভরে গেছে। ‘আমরা সবাই হাদি হবো যুগে যুগে লড়ে যাবো’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ইত্যাদি স্লোগানও শোনা যাচ্ছে।
গত ১২ ডিসেম্বর গণসংযোগের জন্য রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাদি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শহীদ হাদির মরদেহ চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাদির মরদেহ বহনকারী ফ্লাইটটি অবতরণ করে।




