আইন-আদালত
শিশু সাজিদের মৃত্যু: ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ
রাজশাহীর তানোরে অরক্ষিত নলকূপে পড়ে দুই বছর বয়সী শিশু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে সাজিদের পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ অরক্ষিত নলকূপ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মনিরুল ইসলাম মিয়া নোটিশটি পাঠান।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলায় শত শত পরিত্যক্ত ও অরক্ষিত নলকূপ জনসাধারণের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।
সম্প্রতি রাজশাহীর তানোর উপজেলার কোয়েলহাট পূর্ব পাড়া গ্রামে একটি পরিত্যক্ত নলকূপে পড়ে শিশু সাজিদের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে, যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা ও প্রশাসনিক উদাসীনতার স্পষ্ট প্রমাণ।
নোটিশে সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ১৫ দিনের মধ্যে একাধিক নির্দেশনা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে- সব পরিত্যক্ত নলকূপ চিহ্নিত করে জরিপ, রাষ্ট্রীয় ব্যয়ে সিল/ভরাট বা স্থায়ীভাবে বন্ধকরণ, অবৈধ নলকূপ খননে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা, নিরাপদ নলকূপ ব্যবস্থাপনায় মানসম্মত কার্যপ্রণালি (SOP) প্রণয়ন, অননুমোদিত নলকূপ স্থাপনা রোধে কঠোর নজরদারি এবং দায়িত্বে অবহেলাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা।
এ বিষয়ে জানানো হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে বিষয়টি জনস্বার্থ মামলা (PIL) হিসেবে হাইকোর্ট ডিভিশনে দায়ের করা হবে। এ ঘটনায় অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্টে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে বরেন্দ্র অঞ্চলে অরক্ষিত নলকূপকে ‘মৃত্যুকূপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে শিশুদের জীবন ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
এমকে
আইন-আদালত
আগে গণভোট, অস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত চেয়ে আইনি নোটিশ
লুট হওয়া বিপুল পরিমাণ মারণাস্ত্র ও গোলাবারুদের একটি বড় অংশ আজও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তাই এসব মারণাস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরবর্তী সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) রেজিস্ট্রি ডাক ও ইমেইলের মাধ্যমে জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এবং র্যাব মহাপরিচালককে লিগ্যাল নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করা হবে।
লিগ্যাল নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী জানান, জুলাই সনদের ওপর গণভোট আয়োজনে বাধা নেই। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের পর ফ্যাসিবাদের পতন ঘটলেও দেশে এক গভীর নিরাপত্তা সংকট ও ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিপ্লব পরবর্তী অস্থিতিশীল সময়ে দেশের বিভিন্ন থানা ও নিরাপত্তা স্থাপনা থেকে বিপুল পরিমাণ মারণাস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়ে যায়, যার একটি বড় অংশ আজও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এই বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের হাতে থাকায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ ভোটার ও প্রার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা আজ চরম হুমকির মুখে। এরই মধ্যে নির্বাচনি সহিংসতা ও প্রাণের ঝুঁকি দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। এই চরম নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আজ (রোববার) জনস্বার্থে আমি নিজে নোটিশ পাঠিয়েছি।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় নির্বাচনি মাঠ এখন বারুদের স্তূপে পরিণত হয়েছে। এর প্রমাণস্বরূপ নোটিশে উল্লেখ করা হয় যে, গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি সন্ত্রাসীদের গুলিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না করে নির্বাচনের আয়োজন করা হলে তা প্রার্থীদের প্রাণনাশের কারণ হবে এবং সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নাগরিকদের জীবনের অধিকার লঙ্ঘন করবে।
নোটিশে এক গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, গণভোট একটি জাতীয় ঐকমত্যের বিষয় এবং রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ, তাই এতে সহিংস প্রতিযোগিতার সুযোগ নেই। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক প্রক্রিয়া। তাই অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।
এ অবস্থায়, নোটিশের মাধ্যমে দাবি জানানো হয়েছে যে, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত দিনে জুলাই সনদের ওপর গণভোট যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হোক, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক লুণ্ঠিত সব অস্ত্র উদ্ধার এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিত রাখতে হবে।
নোটিশে আরও স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, আগামী ৭ (সাত) দিনের মধ্যে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহামান্য হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।
এর আগে, এ সংক্রান্ত বিষয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরবর্তী সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ হয়ে গেছে।
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে ৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কংগ্রেসের পক্ষে দলটির মহাসচিব আইনজীবী মো. ইয়ারুল ইসলাম আবেদনটি করেছিলেন। তা গত সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।
আইন-আদালত
ট্রাইব্যুনালে হাজির ১৫ সেনা কর্মকর্তা, নিরাপত্তা জোরদার
আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-নির্যাতন ও চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় গ্রেপ্তার ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সবুজ রঙের গাড়িতে করে তাদের আনা হয়। এরই মধ্যে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জেআইসি সেলে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এ মামলায় ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ দেবেন ট্রাইব্যুনাল-১। গত ৯ ডিসেম্বর এ দিন নির্ধারণ করা হয়।
এ মামলায় গ্রেপ্তার তিন সেনা কর্মকর্তা হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
এছাড়া র্যাবের টিএফআই সেলে গুম-নির্যাতনের মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর আজ শুনানি করবেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। গত ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে গুমের ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আবেদন করেন তিনি।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে সাব-জেলে রয়েছেন ১০ সেনা কর্মকর্তা। তারা হলেন- গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তারা হলেন- র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
অপরদিকে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। গত ৬ ডিসেম্বর ফরমাল চার্জের বিষয়ে শুনানি শেষ করেন চিফ প্রসিকিউটর। আসামিপক্ষ ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীদের শুনানি হবে আজ। রেদোয়ানুল ছাড়া অপরজন হলেন বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম।
এদিকে, সেনা কর্মকর্তাদের আনা উপলক্ষ্যে বরাবরের মতোই হাইকোর্টের মূল ফটকে কঠোর নিরাপত্তায় রয়েছে পুলিশ-সেনাবাহিনী। ট্রাইব্যুনাল ফটকের দুই পাশেও বিজিবি-র্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তৎপর দেখা গেছে এপিবিএনসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও।
এমকে
আইন-আদালত
জোট করলেও নিজ নিজ প্রতীকে নির্বাচন, হাইকোর্টের রায়
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও নিজ নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধানের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে জোট করলেও সব দলকে নিজ নিজ প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা রুল শুনানি শেষে আদালত এ রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম, ব্যারিস্টার সাহেদুল আজম। এনসিপির পক্ষে রিটের বিরোধিতা করে শুনানি করেন– অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন লিপু, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মূসা, অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন, অ্যাডভোকেট নাজমুস সাকিব। কংগ্রেসের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম।
এর আগে, গত ১ ডিসেম্বর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও নিজ নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম। সঙ্গে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রেশাদ ইমাম, ব্যারিস্টার সাহেদুল আজম, ব্যারিস্টার মো. মোস্তাফিজুর রহমান। অ্যাডভোকেট জহুরুল ইসলাম মূসাসহ এনসিপির আইনজীবীরা শুনানিতে রুলের বিরোধিতা করেন।
গত ২৭ নভেম্বর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটবদ্ধ নির্বাচন করলেও নিজ নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। নির্বাচনে নিবন্ধিত একাধিক দল জোটভুক্ত হলেও ভোট করতে হবে নিজ নিজ দলের প্রতীকে, এমন বিধান যুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) বাতিল চাওয়া হয়েছে রিটে।
ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এনডিএমের মহাসচিব মোমিনুল আমিন এ রিট দায়ের করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ৩ নভেম্বর নির্বাচনে নিবন্ধিত একাধিক দল জোটভুক্ত হলেও ভোট করতে হবে নিজ নিজ দলের প্রতীকে– এমন বিধান যুক্ত করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করে সরকার।
আগে কোনো দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলে তারা জোটের শরিক যেকোনো দলের প্রতীক নেওয়ার সুযোগ পেত। গত ২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
জোট করলেও দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার বিধান নিয়ে তখন আপত্তি জানিয়েছিল বিএনপি। দলটি নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে তাদের আপত্তির কথা জানায়। জোটভুক্ত হতে আগ্রহী কিছু ছোট দলের মধ্যেও সরকারের এই সিদ্ধান্তে অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল।
এরপর সরকার বিষয়টি বাদ দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমন খবর জানতে পেরেছে উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামী এটি নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখায়। শেষ পর্যন্ত ওই বিধান রেখে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
আইন-আদালত
ট্রাইব্যুনালে সাদিক কায়েমসহ ডাকসুর তিন নেতা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সাক্ষ্য দিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসুর) তিন নেতা। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সাক্ষ্য দেন তাঁরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সাক্ষ্য দেওয়া তিন নেতা হলেন ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক ও সিনেট সদস্য আসিফ আব্দুল্লাহ এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ।
এমকে
আইন-আদালত
বসুন্ধরা গ্রুপ ও ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের ১৩ কর্মকর্তাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।
আসামীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- বসুন্ধরা ইম্পোর্ট এক্সপোর্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদাত সোবহান ও পরিচালক সাফিয়াত সোবহান। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক মনোয়ারা শিকদার, পারভীন হক শিকদার, মোয়াজ্জেম হোসেন, রিক হক শিকদার, রন হক শিকদার, মোঃ আনোয়ার হোসেন ও একেএম এনামুল হক শামীম এবং একই ব্যাংকের গুলশান শাখার ম্যানেজার আরিফ মো. শহিদুল হকসহ আরও ছয় শীর্ষ কর্মকর্তার নাম আসামী তালিকায় রয়েছে।
দুদক জানায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসির নিয়ম-কানুন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে বসুন্ধরা ইম্পোর্ট এক্সপোর্ট লিমিটেডের নামে মোট ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করেন। পর্যাপ্ত জামানত, স্টক রিপোর্ট, পরিদর্শন প্রতিবেদন, ক্রেডিট রেটিং ও গ্রাহকের প্রকৃত ঋণ পরিশোধ সক্ষমতার যাচাই ছাড়াই ভুয়া আর্থিক বিবরণীর ভিত্তিতে এ ঋণ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে গ্রাহকের ওপর অন্যান্য ব্যাংকে থাকা ৬২৯.১৬ কোটি টাকার দায়-দেনার বিষয়টিও ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা হয়। বসুন্ধরা গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও গ্রাহককে আলাদা গ্রুপ দেখিয়ে একক ঋণগ্রহীতা ঋণসীমা অতিক্রম করে ঋণ অনুমোদনের মাধ্যমেও ব্যাংক কোম্পানি আইন ও অভ্যন্তরীণ নীতিমালা লঙ্ঘন করা হয়।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ফান্ডেড ঋণের ৬০০ কোটি টাকা বৈধ উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করে আসামিরা তা বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর ও নগদ উত্তোলনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন এবং অর্থের উৎস ও মালিকানা গোপন করতে মানিলন্ডারিং কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকেন।
এসব অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৯ ও ১০৯ ধারা, দুর্নীতি দমন আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।




