জাতীয়
হাদিকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রেখেছে মেডিকেল বোর্ড
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে বর্তমানে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) মেডিকেল বোর্ডের এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিবৃতিতে মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো-
১. রোগীর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেহেতু সার্জিক্যাল হস্তক্ষেপ সম্পন্ন হয়েছে, তাই বর্তমানে তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব সাপোর্ট চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে পুনরায় ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে।
২. ফুসফুসে ইনজুরি বিদ্যমান রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা আপাতত চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (ARDS) প্রতিরোধের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
৩. কিডনির কার্যক্ষমতা বর্তমানে ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখার জন্য পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে।
৪. পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যকার অসামঞ্জস্যতা (DIC) দেখা দিলেও বর্তমানে তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
৫. ব্রেন স্টেম ইনজুরির কারণে রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে তা চলমান থাকবে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
৬. ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য এই মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।
৭. বর্তমানে রোগীর সার্বিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
৮. এই মেডিকেল সামারি রোগীর ভাই ও নিকটাত্মীয়দের বিস্তারিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। তারা চাইলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীকে এ বিষয়ে অবহিত করতে পারেন। মেডিকেল টিমের পক্ষ থেকে সবার প্রিয় শরিফ মো. ওসমান হাদীর জন্য বিনীতভাবে দোয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
৯. অপ্রয়োজনে কেউ হাসপাতালে এসে ভিড় করবেন না। কোনো ধরনের ভিজিটর অনুমোদিত নয়।
১০. কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে। রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হলো।
১১. আমাদের মেডিকেল টিম সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। রোগীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য মেডিকেল বোর্ড ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলো।
এমকে
জাতীয়
বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে নেমেছে সর্বস্তরের জনতার ঢল। এ সময় ফুলেল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করা হয় দেশের জন্য আত্মদানকারী বীর শহীদদের।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রপতি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শ্রদ্ধা জানানোর পরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ খুলে দেওয়া হয় সর্ব সাধারণের জন্য।
প্রায় এক মাস ধরে প্রস্তুতির পর রেওয়াজ অনুযায়ী গত চারদিন সর্বসাধারণের প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ ছিল স্মৃতিসৌধ এলাকায়। এরপরে সেখানে নামে হাজারো মানুষের ঢল। এদিন জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, শিশু-কিশোর ও বয়োবৃদ্ধরা ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় বীর শহীদদের।
এর আগে, সকাল ৬টা ৩৩ মিনিটে দিনের প্রথম প্রহরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির বীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ ও তাদের শ্রদ্ধায় পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এরপর সকাল ৬টা ৫৭ মিনিটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধান উপদেষ্টা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদর্শন করে। বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। পরে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধে সংরক্ষিত দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
এ সময় প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, মুক্তিযোদ্ধা, কূটনীতিকসহ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সময় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করেন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা।
প্রথমে সকাল ৬টা ৩৩ মিনিটে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এর কিছুক্ষণ পর সকাল ৬টা ৫৬ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস।
রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল।
এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
১৬ ডিসেম্বর প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান বিজয় দিবস উদযাপন শুরু হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপগুলো জাতীয় পতাকাসহ ব্যানার, ফেস্টুন এবং রঙিন পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছে।
মহান বিজয় দিবস দেশব্যাপী জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে সর্বোচ্চসংখ্যক জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাশুটিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়া হবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে শহরের তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে পৃথকভাবে ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শন করবে। সেখানে একটি বিশেষ বিজয় দিবস ব্যান্ড শো আয়োজন করা হবে।
‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার দেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর উপলক্ষে সকাল ১১টা ৪০ মিনিট থেকে পতাকাবাহী স্কাইডাইভ প্রদর্শন করবে। যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ পতাকা-প্যারাশুটিং প্রদর্শনী হবে, যা একটি নতুন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড স্থাপন করবে।
এ ছাড়া, দেশের অন্যান্য শহরেও সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা একই রকম ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শনী পরিচালিত হবে। এর পাশাপাশি, পুলিশ, বিজিবি এবং আনসার বাহিনী দেশব্যাপী ব্যান্ড শো আয়োজন করবে। সমস্ত অনুষ্ঠান জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় দেশের সব জেলা ও উপজেলায় তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলার আয়োজন করবে।
জেলা ও উপজেলা প্রশাসন শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধের ওপর আবৃত্তি, প্রবন্ধ রচনা এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং দিবসটি উদ্যাপনের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
সকাল ৯টায় বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হবে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিকেল ৩টায় আ্যক্রোবেটিক শো ও সন্ধ্যা ৬টায় যাত্রাপালা ‘জেনারেল ওসমানী’ অনুষ্ঠিত হবে।
১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পরিবেশিত হবে বিজয় দিবসের গান। পাশাপাশি সারাদেশের ৬৪ জেলায় একযোগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করবেন নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে জেলা উপজেলা পর্যায়ে সুবিধাজনক সময়ে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, ফুটবল ম্যাচ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, কাবাডি ও হাডুডু প্রভৃতি খেলার আয়োজন করা হবে।
রাষ্ট্রপতি কর্তৃক বঙ্গভবনে অপরাহ্নে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এছাড়া, মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ উপলক্ষে স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে।
দেশের সব হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র, ডে-কেয়ার ও শিশু বিকাশ কেন্দ্র এবং শিশু পরিবার ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হবে।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি বেতার ও টিভি চ্যানেলে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসভিত্তিক অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হবে। দেশের সব শিশু পার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে এবং ঢাকাসহ সারা দেশের সিনেমা হলগুলোতে বিনামূল্যে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।
এ ছাড়া, সকাল ৯টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চট্টগ্রাম, খুলনা, মংলা ও পায়রা বন্দর, ঢাকার সদরঘাট, পাগলা ও বরিশালসহ বিআইডব্লিউটিসি’র ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ড একক ও যৌথভাবে জনসাধারণের দেখার জন্য জাহাজ উন্মুক্ত রাখবে।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য কামনা এবং দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে।
এমকে
জাতীয়
আমরা নিরাপদ না থাকলে শত্রুরাও নিরাপদ থাকতে পারবে না: মাহফুজ আলম
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক মাহফুজ আলম বলেছেন, আমাদের অনিরাপদ করলে বাংলাদেশে ভারত ও ভিনদেশের স্বার্থ রক্ষাকারীদের নিরাপদে থাকতে দেওয়া হবে না। আমরা যদি নিরাপদ না থাকি, এই দেশে আমাদের শত্রুরাও নিরাপদ থাকতে পারবে না।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে তিনি এই কথা বলেন।
মাহফুজ আলম বলেন, আমাদের হাতে যখন মুজিববাদী, ১৪ দলীয় সন্ত্রাসীদের প্রত্যেকের বাড়ি চুরমার করে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল, তখন আমরা নিজেদের সংবরণ করার কারণে আজ তারা এটি করার (শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি) সাহস করেছে। ক্ষমা করে যদি ভুল করে থাকি, তাহলে আমরা প্রতিজ্ঞা নেব, আর ক্ষমা করব না।
তিনি বলেন, দেশের ভেতরের রাজনৈতিক লড়াই কেউ কেউ দেশের বাইরে নিয়ে গেছে, তাদের হুঁশিয়ার করতে চাই, মুক্তির লড়াইও কিন্তু দেশের বাইরে যাবে।
মাহফুজ বলেন, আমাদের গায়ে হাত দেওয়া যাবে না। একটা লাশ পড়লে আমরা কিন্তু লাশ নেব। কোনো সুশীলতা করে লাভ নেই।
অনেক ধৈর্য হয়েছে। অনেক রিকনসিলিয়েশন, অনেক কথা বলেছি। আমরা বলেছি, আইসিটি ট্রাইব্যুনালে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচার করুন। কিন্তু একদিকে বিচার চলছে, অন্যদিকে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে ভারত পালিয়ে আশ্রয় নেবেন, ভারত থেকে সন্ত্রাস করবেন, ভাইয়ের ওপর গুলি চালাবেন, আমরা এটা বরদাশত করব না।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারতের এবং ভিনদেশিদের স্বার্থ যারা রক্ষা করবে, তাদের নিরাপদে থাকতে দেওয়া হবে না। আমরা যদি নিরাপদ না থাকি, এই দেশে আমাদের শত্রুরাও নিরাপদ থাকতে পারবে না।’
মাহফুজ আলম বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভেতর দিয়ে ১৯৭২-এর সংবিধানের ভিত্তিতে যে মুজিববাদ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তার মধ্য দিয়ে হাজার হাজার মানুষের লাশ বাংলাদেশে ফেলা হয়েছে। ভারতীয় আধিপত্যবাদ বজায় রাখার জন্য সাংস্কৃতিক কর্মী, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক থেকে শুরু করে সবাইকে কব্জা করা হয়েছে। একটা অংশ তাদের মাথা বিক্রি করে দিয়েছে।
আরেকটা অংশ বাংলাদেশের মধ্যে থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে ওসমান হাদি দাঁড়িয়েছিল।
জাতীয়
হাদিকে নিয়ে সিইসির মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলো ইসি
রাজধানীতে আইএফইএস আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখার পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাখ্যা দেয় কমিশন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের যে তথ্য প্রচারিত হয়েছে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার বক্তব্যে মূলত বোঝাতে চেয়েছেন যে ওসমান হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলা আসন্ন নির্বাচনকে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। একই সঙ্গে কমিশন তার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছে এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানায়, শরিফ ওসমান হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে কমিশন একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত করে। সভায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় নির্বাচন কমিশন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
জাতীয়
হাদিকে হত্যাচেষ্টা: আদালতে যে তথ্য দিলেন শুটার ফয়সালের স্ত্রী
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া আদালতকে জানিয়েছেন, ঘটনার ২-৩ দিন আগে ফয়সাল করিমের সাথে তার সর্বশেষ দেখা হয়।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রিমান্ড শুনানিতে আদালতকে এ কথা জানান তিনি।
সামিয়া বলেন, ঘটনার ২-৩ দিন আগে ফয়সাল করিমের সাথে সর্বশেষ আমার দেখা হয়। তিনি বাসা থেকে কাপড় নিয়ে আসেন। এর বাইরে উনার সম্পর্কে কিছু জানি না।
তিনি আরও বলেন, উনি (ফয়সাল) আমার কাছে অনেক রাতে যেতেন। সকালে চলে আসতেন। এর বেশি যোগাযোগ হতো না। ঘটনার আগে থেকে আমার সাথে ছিল না। এটা বারবারই বলে আসছি। ঘটনার দিন তিনি মারিয়া আক্তার লিমার সাথে ছিলেন।
এদিকে এই মামলায় ফয়সালের শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু ও ফয়সালের প্রেমিকা মারিয়া আক্তার লিমারও ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শুনানিতে লিমা আদালতকে বলেন, কিছু আর্থিক সমস্যার কারণে ফয়সাল আমাকে টাকা দিতে চেয়েছিল।
এর আগে বিকেলে তাদের ডিবি কার্যালয় থেকে আদালতে নেয়ার পর ৭ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করে র্যাব। পরে হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও প্রেমিকাকে আটকের আগে হাদিকে গুলির সময় ব্যবহার করা মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে আটক করে র্যাব। পরে হান্নানকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর এভায়ারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সোমবার দুপুরে সিঙ্গাপুর নেয়া হয়েছে। গুলির ঘটনার পর থেকেই সারা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা করা হয়েছে। ওসমান হাদির এক আত্মীয় এই মামলার বাদী বলে জানিয়েছেন পল্টন থানার ডিউটি অফিসার উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) রকিবুল হাসান। পরে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।




