জাতীয়
ফয়সাল করিমের ব্যাংক হিসাবে রহস্যজনক লেনদেন
ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় আততায়ী হিসেবে যার নাম উঠে এসেছে, তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ক্যাডার ফয়সাল করিম মাসুদ (ছদ্মনাম-দাউদ বিন ফয়সাল)। তাকে ঘিরে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে। তার রাজনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের তথ্যও খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জানা গেছে, ফয়সাল ছাত্ররাজনীতিতে প্রভাবশালী ছিলেন। তিনি সর্বশেষ ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং আদাবর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জুলাই বিপ্লবের পর নিষিদ্ধ সংগঠনটির পক্ষে ঝটিকা মিছিল, চোরাগোপ্তা হামলা ও বৈঠকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন। এমনকি ভারতে পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ফয়সালের রাজনৈতিক উত্থান ছিল দ্রুত। স্থানীয় পর্যায়ে তিনি শুধু পদধারী নেতা নন, বরং প্রভাব বিস্তারে দক্ষ সংগঠক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তার এই প্রভাবের পেছনে ছিল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতার আশীর্বাদ। বিশেষ করে ফ্যাসিবাদী দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং বর্তমানে ভারতে পলাতক কামালের অত্যন্ত বিশ্বস্ত অনুসারী ছিলেন ফয়সাল।
এই প্রভাবশালী নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতাই তাকে ক্ষমতার বৃত্তে অবস্থান করতে সাহায্য করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুতর তথ্য হলো, গুলিবর্ষণের মাত্র কয়েক দিন আগে, গত ৯ ডিসেম্বর একটি কালচারাল বৈঠকে ফয়সালকে হাদির ঠিক পাশেই বসে থাকতে দেখা যায়। হামলাকারী হিসেবে সন্দেহে থাকা ওই ব্যক্তি হাদির ঘনিষ্ঠ হওয়ারও চেষ্টা করেন। ‘মানবতাবাদী মুক্ত চিন্তার অধিকারী’ জুলাই বিপ্লবী হাদির উদারতার সুযোগ নিয়ে হামলার বিষয়ে পূর্ব ধারণা বা প্রস্তুতি নিতেই হাদির আশপাশে ভিড়েছিলেন আততায়ী ফয়সাল।
গোয়েন্দা তথ্য বলছে, হাদির ওপর হামলার প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্যগুলোর একটি হলোÑজুলাই বিপ্লবের পর ফয়সালের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিপুল অঙ্কের লেনদেন। একাধিক ব্যাংকে থাকা তার হিসাবগুলো পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, স্বল্প সময়ে বড় অঙ্কের টাকা জমা ও উত্তোলন হয়েছে। এই লেনদেনের একটি অংশ এসেছে বিদেশ থেকে। তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন, এসব অর্থ বৈধ চ্যানেলে এসেছে কি না। একই সঙ্গে দেশের ভেতর থেকেও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তার অ্যাকাউন্টে অর্থ এসেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, কারা এই অর্থ দিয়েছেন এবং কী উদ্দেশ্যে দিয়েছেনÑতা জানাই এখন তদন্তের অন্যতম লক্ষ্য। বিদেশে অবস্থানরত কিছু ব্যক্তির সঙ্গে ফয়সালের নিয়মিত আর্থিক যোগাযোগের তথ্যও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভারতে পলাতক কামালের কাছ থেকে অর্থ পাওয়ার তথ্য বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
সূত্র বলছে, রাজনৈতিক প্রভাব ও আর্থিক লেনদেনের এই যোগসূত্র হামলার পেছনের পরিকল্পনা বোঝার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ফয়সালকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য সরকার ইতোমধ্যে ৫০ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। ফয়সালের বিরুদ্ধে আগেও গুরুতর অপরাধের অভিযোগ ছিল, যা তার বর্তমান কর্মকাণ্ডকে আরো রহস্যময় করে তুলেছে। ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর ডাকাতির সময় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আদাবর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়।
গ্রেপ্তারের পর দ্রুততার সঙ্গে তার পক্ষে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করা হয়। চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে। তবে এই জামিন প্রক্রিয়া নিয়ে আইন অঙ্গনে প্রশ্ন ওঠে যখন দেখা যায়, জামিন আদেশের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়ার মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে ১৯ ফেব্রুয়ারি আদেশটি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ পায়। পরে ১২ আগস্ট হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চ তার জামিনের মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বাড়িয়ে দেয়।
অস্ত্র মামলার আসামি, যিনি জামিনে থাকাকালীন সময়েই সম্ভাব্য একজন প্রার্থীর ওপর এমন ভয়াবহ হামলার প্রধান সন্দেহভাজন হলেন, সেই প্রক্রিয়া এখন আইনের শাসন নিয়ে জনমনে গভীর সংশয় তৈরি করেছে। তদন্তকারীরা ফয়সালের জামিনকালীন চলাফেরা ও যোগাযোগগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখছেন।
ফয়সালের রাজনৈতিক সংযোগ শুধু তার ব্যক্তিগত পরিচয়েই সীমাবদ্ধ নয়। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, তার পরিবারও আওয়ামী রাজনীতিতে জড়িত। যদিও তার বাবা একজন ছোট ব্যবসায়ী, তবে পরিবারের এই দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা তাকে এবং পরিবারকে মোহাম্মদপুর এলাকায় প্রভাব বিস্তারে ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে। হামলার ঘটনার পর পরিবারের দুই সদস্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
ফয়সাল তথ্যপ্রযুক্তিতে বেশ দক্ষ। সূক্ষ্ম পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি গুলি করার আগেই তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাক্টিভ করা হয়। গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, অত্যন্ত উচ্চপর্যায়ের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হাদিকে গুলি করা হয়। ঘটনার দিন আততায়ী ফয়সাল মোবাইল ফোনও ব্যবহার করেনি। এমনকি তাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য আশপাশে কিলার গ্রুপের রেসকিউ টিমও ছিল।
ফয়সাল ‘অ্যাপল সফট আইটি’ নামে একটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি দুবছর আগে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসেরও (বেসিস) সদস্য হন। বেসিসের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অ্যাপল সফট আইটি ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি। এটি আদাবর এলাকায় অবস্থিত। এর মাধ্যমে দেশের আইসিটি খাতে দক্ষ কর্মী তৈরি এবং প্রশিক্ষণের কাজ করা হয়। কোম্পানির সেবার মধ্যে আরো আছেÑ ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, প্রশিক্ষণ, আউটসোর্সিং ট্রেনিং, সার্টিফাইড প্রফেশনাল ইন ট্রেনিং ম্যানেজমেন্ট, এসকিউএল ডাটাবেস পরিচালনা, গেম ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ও লোগো ডিজাইন, ২ডি-৩ডি অ্যানিমেশন, অ্যানিমেশন কার্টুন ডেভেলপমেন্ট, বিজ্ঞাপন তৈরি এবং অন্যান্য ডিজিটাল সমাধান।
হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কায় নাম প্রকাশ না করে বেসিসের এক সদস্য জানান, এইট পিয়ারস সলুশনস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ শাহজালালের সুপারিশে ফয়সালকে বেসিসের সদস্য পদ দেওয়া হয়। ফয়সাল ২০২০ সালের ৯ জুন বেসিসের সদস্য হন।
এসব তথ্যের মাধ্যমে সন্দেহভাজন হামলাকারীর পরিচয় এবং তার ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক সংযোগও আলোচনায় এসেছে। তবে শাহজালাল বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। ফয়সালকে চেনেনও না।
হাদির ওপর সশস্ত্র হামলা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন অপরাধ নয়; এটি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে নির্বাচনি পরিবেশ ও নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘আমরা প্রাইম সাসপেক্টকে খুঁজছি। হোপফুলি আমরা হিট করতে পারব। আমরা জনগণের সহযোগিতা চাইছি।’
এমকে
জাতীয়
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব
ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানি দেওয়ার সুযোগ দেওয়া এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের প্রচেষ্টার অভিযোগে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ সময় ভারতীয় দূতকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার আহ্বান জানিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য অব্যাহত রাখার অনুমতি দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের গভীর উদ্বেগের কথা দিল্লির কাছে পৌঁছে দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। এছাড়া, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে দ্রুত প্রত্যর্পণের আহ্বান জানানো হয়।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় দূতকে তলবের বিষয়টি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্য ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সদস্যদের বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব— তাদেরকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করার জন্য ভারত সরকারকে আহ্বান জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত সন্দেহভাজনদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া রোধ করতে এবং যদি তারা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়, তবে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করতে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সরকার আশা করছে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ভারতের হাইকমিশনার জোর দিয়ে বলেন, ভারত বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে এবং এ বিষয়ে ভারত সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
জাতীয়
ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীরা পালায়নি: জুমা
দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির অবস্থা অপরিবির্তত রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া হতে পারে।
এদিকে বলা হচ্ছে ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণকারী সীমান্ত পেরিয়ে ভারত চলে গেছে। কিন্তু এ তথ্য মানতে নারাজ ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা।
তিনি বলেন, যে আসামী অলরেডি একবার গ্রেপ্তার হয়েছে তার সকল তথ্য সংস্থাগুলোর কাছে আছে। তবুও তাকে চিহ্নিত করতে পারছেনা, আঁটকাতে পারছেনা এইটা আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়।
আসামি পালায়নি জানিয়ে জুমা বলেন, দ্বিতীয়ত, আমাদের বিশ্বাস আসামী পালায়নি, পালিয়ে গিয়েছে বলে হতাশা তৈরি করে দায়মুক্তি নিতে চাইছে, অথবা পালাতে সহযোগিতা করার একটা প্লান এটা। এই প্লান একজন করেনি, একজন এক্সিকিউট করেনি।
এই পুরো সিন্ডিকেট এখনো এক্টিভ এবং খুনিদের সহযোগিরা হাসপাতালে এসেছিল বলেও আমাদের কাছে তথ্য এসেছে।
অনেক কষ্টে ধৈর্য ধরে আছেন জানিয়ে জুমা বলেন, পুরো সিন্ডিকেটকে আমরা জীবিত গ্রেপ্তার দেখতে চাই। ওসমান ভাইয়ের নিরাপত্তা সহ সকলের নিরাপত্তা জোরদার করেন। অনেক কষ্ট করে ধৈর্য্য ধরে আছি আমরা। কিন্তু সেটা বেশিক্ষণ পারবো না।
এমকে
জাতীয়
হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন আশিক চৌধুরী
১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের মধ্যে একজন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে জাম্প করবেন।
রোববার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এই তথ্য জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, ‘১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের একজন আশিক চৌধুরী জাম্প করবেন ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে। বিজয়ের দিনে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড ওসমান হাদির দ্রুত আরোগ্য কামনায় সকলকে দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানাই।’
এর আগে গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হন ওসমান হাদি।
তিনি জাতীয় সংসদের ঢাকা-৮ আসনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। সেদিন রাত থেকে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এমকে
জাতীয়
শঙ্কামুক্ত নন ওসমান হাদি, বিদেশে নেয়ার পরিকল্পনা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া হতে পারে।
রোববার সকালে হাদির পরিবার ও একাধিক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে ৭২ ঘণ্টা পর কাছের কোনো দেশে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের কথা বলা হচ্ছে।
ওসমান হাদির গুরুতর অসুস্থতার কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আশ্বাস দিয়েছেন চিকিৎসার প্রয়োজনে তাকে বিদেশে পাঠানো হবে। সরকার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে, যার জন্য তার পরিবার ও ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ সরকারের সাথে যোগাযোগ করেছে এবং সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর এভারকেয়ারে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও হাদি এখনও শঙ্কামুক্ত নন বলে জানা গেছে।
শনিবার রাত ১১টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এসময় সংগঠনের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, গুলিবিদ্ধ হাদির অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও তিনি শঙ্কামুক্ত নন।
চিকিৎসাধীন হাদির শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেওয়ার পর শুক্রবার রাতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে গণমাধ্যমে ব্রিফ করেন, ঢাকা মেডিকেলের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ।
তিনি বলেন, হাদির অর্গানগুলো মোটামুটি কাজ করছে। পরবর্তীতে হয়তো তার আর কোন অপারেশন নাও লাগতে পারে।
এমকে
জাতীয়
হাদির ওপর হামলাকারীর সীমান্ত পার হওয়ার তথ্য নেই: ডিএমপি
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীর সীমান্ত পার হওয়ার কোনো তথ্য পুলিশের কাছে নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেলের মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
রোববার রাজধানীর পল্টনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেফতার করে র্যাব পল্টন থানায় হস্তান্তর করেছে। প্রধান সন্দেহভাজনকে দ্রুত শনাক্ত করতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি জানান, সিসিটিভি বিশ্লেষণের মাধ্যমে হাদিকে হত্যাচেষ্টাকারী শুটারকে শনাক্ত করা হয়েছে। তবে ওই ব্যক্তি সীমান্ত পার হয়েছে- এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছে নেই।
মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, হাদিকে কেন লক্ষ্যবস্তু করা হলো এবং এই সময়েই কেন হামলার ঘটনা ঘটল- এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে টার্গেট কিলিংয়ের কোনো শঙ্কা দেখছে না পুলিশ। নির্বাচনকালীন সময়ে প্রার্থী ও নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, হাদির ওপর হামলার ঘটনায় এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
এমকে




