আন্তর্জাতিক
মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষে চলন্ত বাসে আগুন, নিহত ২০
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল জেলায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) ভোর সাড়ে তিনটার দিকে কুর্নুলের চিন্নাটেকুরে হায়দরাবাদ থেকে বেঙ্গালুরুগামী একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বাস মোটরসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষে আগুন ধরে যায়। এতে বাসে থাকা আরও ২১ জন যাত্রী আহত হন।
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
বাসটিতে ৪১ জন যাত্রী ছিলেন। স্থানীয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত ২১ জনকে খুঁজে পেয়েছেন। বাকি ২০ জনের মধ্যে ১১ জনের মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছে, আর ৯ জনের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। আহত যাত্রীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পুলিশের তথ্যমতে, বেসরকারি মালিকানাধীন বাসটি ৪৪ নম্বর জাতীয় মহাসড়ক ধরে দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল। সংঘর্ষের পর মোটরসাইকেলটি বাসের সামনের অংশে আটকে যায়। এরপর অল্প কিছু দূর যাওয়ার মধ্যেই বাসে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনার সময় বাসের বেশির ভাগ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুন লাগার পর বাসের দরজা আটকে যাওয়ায় কিছু লোক জানালা ভেঙে বেরিয়ে প্রাণ বাঁচান, তবে অনেকেই বাসের ভেতর থেকে বের হতে পারেননি।
স্থানীয় কিছু লোকজন যাত্রীদের চিৎকার শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন এবং খবর দেন ফায়ার সার্ভিসকেও। কিন্তু ততক্ষণে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, বাসটি প্রায় আগুনে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের অনেকের দেহ এতটাই পুড়ে যায়– তাদের শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। আহতদের কুর্নুল সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ আরও জানায়, দুর্ঘটনার পর চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। তার সন্ধানে তল্লাশি চলছে। কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সকাল পর্যন্ত উদ্ধার ও অগ্নিনির্বাপণ অভিযান অব্যাহত ছিল।
ডিআইজি কোয়া প্রবীণ বলেন, বাসের ভেতরে থাকা দাহ্য পদার্থ অনেকের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বাসের জ্বালানি ট্যাঙ্কটি অক্ষত ছিল, তবে এ ধরনের অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে গাড়িটিতে পর্যাপ্ত সুরক্ষার অভাব ছিল।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নায়ডু এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সরকারি সফরে তিনি বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ তদারকির নির্দেশ দিয়েছেন। আহতদের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক পোস্টে চন্দ্রবাবু নায়ডু লিখেন, ‘অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলে বাসে আগুন লেগে মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’
আন্তর্জাতিক
ভারতের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
ভারতের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার (৮ ডিসেম্বর) হোয়াইট হাউজের এক বৈঠকে তিনি জানান, ভারত থেকে চাল ও কানাডা থেকে সার আমদানির ওপর তার প্রশাসন নতুন শুল্ক আরোপ করতে পারে। কারণ, দুই দেশের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনায় কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি, বরং স্থবির হয়ে আছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবারের বৈঠকে ট্রাম্প মার্কিন কৃষকদের জন্য কয়েকশো কোটি ডলারের কৃষি ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেন ও একই সঙ্গে ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলো থেকে কৃষিপণ্য আমদানির তীব্র সমালোচনা করেন।
রিপাবলিকান এই নেতা অভিযোগ করেন, কৃষিপণ্য আমদানি যুক্তরাষ্ট্রের দেশীয় উৎপাদকদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তিনি আবারও স্পষ্ট করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের রক্ষায় তিনি শুল্ককে আক্রমণাত্মকভাবে ব্যবহার করতে বদ্ধপরিকর। তার ভাষায়, প্রশাসন মার্কিন কৃষকদের জন্য ১২ বিলিয়ন অর্থাৎ ১২০০ কোটি ডলার অর্থনৈতিক সহায়তা দেবে। আর এই অর্থায়ন আসবে বাণিজ্য অংশীদারদের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে শুল্ক রাজস্ব সংগ্রহ করছে, সেখান থেকে।
ট্রাম্প বলেন, আমরা সত্যিই ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের পণ্য নিচ্ছি, যদি একটু ভেবে দেখেন। তিনি অভিযোগ করেন, বহু দেশ এমনভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সুযোগ নিয়েছে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি।
তিনি আরও দাবি করেন, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া মুদ্রাস্ফীতি ও নিম্ন পণ্যমূল্যের প্রভাবে বিপর্যস্ত খামার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতেই এই সহায়তা অপরিহার্য। তার মতে, কৃষকরা অপরিহার্য জাতীয় সম্পদ ও যুক্তরাষ্ট্রের মেরুদণ্ড। মার্কিন কৃষিকে পুনরুজ্জীবিত করতে শুল্ককে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।
দীর্ঘ আলোচনায় চাল আমদানি প্রসঙ্গ ওঠলে ভারতকে প্রধান উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। লুইজিয়ানার এক উৎপাদক বলেন, ভারতীয় চাল দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের জন্য ‘ধ্বংসাত্মক’ হয়ে উঠছে। এরপর ট্রাম্পকে জানানো হয়, মার্কিন খুচরা বাজারে বিক্রি হওয়া চালের সবচেয়ে বড় দুটি ব্র্যান্ডই ভারতীয় কোম্পানির মালিকানাধীন। উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ঠিক আছে, আমরা এটা দেখছি। এটা খুবই সহজ… শুল্ক আরোপ করলে দুই মিনিটেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
তিনি আরও যোগ করেন, তাদের (ভারত) ডাম্পিং করা উচিত নয়… আমি এটা শুনেছি, অন্যদের কাছ থেকেও শুনেছি। এটা চলতে পারে না।
এসময় ট্রাম্প কানাডা থেকে আসা সারের ওপরও সম্ভাব্য কঠোর শুল্কের ইঙ্গিত দেন, যাতে স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো যায়। তার ভাষায়, অনেক সারই আসে কানাডা থেকে। প্রয়োজন হলে এর ওপর খুবই কঠোর শুল্ক দেবো, কারণ এভাবেই আপনারা এখানে উৎপাদন জোরদার করতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই এটা এখানেই করতে পারি।
গত এক দশকে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র কৃষি বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাসমতি, অন্যান্য চালজাত পণ্য, মসলা ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানি করে ভারত। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাদাম, তুলা ও ডাল কেনে ভারত। তবে ভর্তুকি, বাজার প্রবেশাধিকার ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) অভিযোগ, বিশেষ করে চাল ও চিনি সংক্রান্ত বিরোধ দুই দেশের আলোচনায় নিয়মিত চাপ সৃষ্টি করছে।
আন্তর্জাতিক
জাপানে আরও শক্তিশালী ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা
জাপানের উত্তর উপকূলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর আগামী এক সপ্তাহ আরও শক্তিশালী ভূমিকম্পের ব্যাপারে সতর্ক করেছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের উত্তরের হোক্কাইডো দ্বীপ থেকে টোকিওর পূর্বে চিবা প্রিফেকচার পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলের জন্য একটি সতর্কতা জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া অফিস। বলা হয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে, এজন্য ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
সোমবার রাত ১১টা ১৫ মিনিটে এ ভূমিকম্প আঘাত হানার পর জাপান উপকূলীয় অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করে। পরবর্তীতে সর্বোচ্চ সতর্কতা নামিয়ে নিম্ন-স্তরের সতর্কতা দেয় দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, জাপানের উত্তর অমোরি উপকূলের মাটির ৫৩ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। এরপর ৫ দশমিক ৫ ও ৫ মাত্রার আরও অন্তত দুটি আফটারশক হয়।
ভূমিকম্পের পর ইয়াতে ২৭ দশমিক ৫ ইঞ্চি, হোকাইদোতে ১৯ দশমিক ৬ ইঞ্চি এবং অমোরিতে ১৫ দশমিক ৭ ইঞ্চি উঁচু ঢেউ দেখা যায়।
শক্তিশালী এ ভূমিকম্পের প্রভাবে দেশটিতে অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া অমোরির ২ হাজার ঘরবাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক
জাপানে ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
জাপানের উত্তরের হোক্কাইডো অঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সোমবার রাতে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের পর দেশটির উপকূলীয় এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ওই ভূমিকম্পের পর দেশটির উপকূলীয় এলাকায় ৪০ সেন্টিমিটার উচ্চতার সুনামি আঘাত হেনেছে বলে জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, জাপানের স্থানীয় সময় রাত সোয়া ১১টার দিকে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে হোক্কাইডো অঞ্চল।
এতে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে দেশটির বিভিন্ন উপকূলে উচ্চমাত্রার সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়তে শুরু করেছে। দেশটির আবহাওয়া সংস্থা বলেছে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে সর্বোচ্চ তিন মিটার (১০ ফুট) উচ্চতার সুনামি আঘাত হানতে পারে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলেছে, জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় মিসাওয়া শহর থেকে ৭৩ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর-পূর্ব দিকে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
জাপানের স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১৫ মিনিট ১১ সেকেন্ডে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫৩ দশমিক ১ কিলোমিটার ভূগর্ভে। ভূমিকম্পের পর দেশটির হোক্কাইডো, আওমোরি ও ইওয়াতে প্রিফেকচারের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলজুড়ে উচ্চমাত্রার সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে বলেছে, স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে আওমোরি থেকে ইওয়া পর্যন্ত বন্দর এলাকায় সুনামির আঘাত শুরু হতে পারে।
এমকে
আন্তর্জাতিক
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে ফের সংঘাত
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে ফের সংঘাত শুরু হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) কম্বোডিয়ার ভেতর লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে থাই সামরিক বাহিনী। এর ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া শান্তিচুক্তি। তার সহায়তায় মাত্র দুই মাস আগে সমঝোতা করেছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সোমবার ভোর থেকে সীমান্তজুড়ে গুলিবিনিময় ও বিস্ফোরণের ঘটনা বাড়তে থাকায় উভয় দেশই অপর পক্ষকে আক্রমণ শুরুর অভিযোগ করেছে। দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনা এবং থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে সমঝোতা বাস্তবায়ন স্থগিতের পর পরিস্থিতি ফের ভয়াবহ রূপ নেয়।
থাই সেনাবাহিনী জানায়, কম্বোডিয়ার সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে মূলত প্রতিশোধ হিসেবে। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে এক হামলায় এক থাই সেনা নিহত ও দুই জন আহত হওয়ার পর পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে থাইল্যান্ড।
থাইল্যান্ডের মেজর জেনারেল উইন্থাই সুবারি বলেন, চং আন মা পাস এলাকায় কম্বোডিয়ার অস্ত্র-সমর্থনকারী অবস্থানগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। ওখান থেকে আর্টিলারি ও মর্টার ছুড়ে আনুপং ঘাঁটিতে হামলা করা হয়েছিল, যার ফলে আমাদের একজন সেনা মারা যান ও দু’জন আহত হন।
থাই সেনাবাহিনীর দাবি, সোমবার ভোর ৩টার দিকে কম্বোডিয়ার বাহিনী সীমান্তে গোলাবর্ষণ শুরু করে। অন্যদিকে কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী জানায়, স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৪ মিনিটে থাই বাহিনী তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তাদের অভিযোগ, অনেক দিন ধরে থাই বাহিনী নানা ধরনের উসকানিমূলক আচরণ করছিল।
সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তবর্তী থাই শহরগুলো থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সরানোর সময় আগে-থেকে থাকা শারীরিক জটিলতায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানিয়েছে থাই কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, গত জুলাই মাসে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ দিনের সীমান্তযুদ্ধ হয়েছিল। এতে বহু মানুষ প্রাণ হারায় এবং দুই লাখের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপের মাধ্যমে ২৮ জুলাই প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করান।
অক্টোবরের শেষ দিকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ট্রাম্প ও মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের উপস্থিতিতে সম্প্রসারিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়া। ওই মুহূর্তকে ট্রাম্প তার বড় কূটনৈতিক সাফল্য বলে দাবি করেছিলেন।
তবে স্বাক্ষরের দুই সপ্তাহের মধ্যেই সমঝোতা ভেঙে পড়তে শুরু করে। সীমান্তে একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর চুক্তির অগ্রগতি থামিয়ে দেয় ব্যাংকক।
আন্তর্জাতিক
খাবারের অভাবে মারা গেল ৬০ হাজার পেঙ্গুইন
দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলে খাদ্যের অভাবে ৬০ হাজারের বেশি পেঙ্গুইন মারা গেছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। আফ্রিকান পেঙ্গুইনদের অন্যতম প্রধান খাদ্য সার্ডিন মাছ কমে যাওয়ায় এ বিপর্যয় ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে আফ্রিকান পেঙ্গুইনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজননস্থল ডাসেন দ্বীপ ও রবিন আইল্যান্ডে ৯৫ শতাংশেরও বেশি পেঙ্গুইন বিলুপ্ত হয়ে যায়। মোল্টিং বা পালক পরিবর্তনের সময় প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে তারা মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জলবায়ু সংকট ও অতিমাত্রায় মাছ শিকারকে এই হ্রাসের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ওস্ট্রিচ: জার্নাল অব আফ্রিকান ওরনিথোলজি-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়, এ বিপর্যয় বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের সেন্টার ফর ইকোলজি অ্যান্ড কনজারভেশনের শিক্ষক ড. রিচার্ড শার্লি জানান, ‘অন্যান্য স্থানেও একইভাবে পেঙ্গুইন কমে যাচ্ছে।’
গত ৩০ বছরে আফ্রিকান পেঙ্গুইন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে। আফ্রিকান পেঙ্গুইনরা প্রতিবছর পুরনো পালক ফেলে নতুন পালক গজায়, যাতে তাদের শরীরের তাপরোধ ও জলরোধী ক্ষমতা বজায় থাকে। তবে প্রায় ২১ দিনের এই মোল্টিং পর্বে তাদের স্থলে অবস্থান করতে হয় এবং এ প্রক্রিয়ার জন্য আগে থেকেই শরীরে পর্যাপ্ত চর্বির মজুদ থাকা জরুরি।
ড. শার্লি জানান, ‘মোল্টিংয়ের আগে বা পরে যদি পর্যাপ্ত খাদ্য না পায়, তাহলে তারা উপবাসের সময়টায় টিকতে পারে না। আমরা হয়ত অনেক পেঙ্গুইনের মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখি না, কারণ তারা সমুদ্রেই মারা যায়।’
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ২০০৪ সালের পর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে সার্ডিন মাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। এই সার্ডিনই আফ্রিকান পেঙ্গুইনের প্রধান খাদ্য। উপকূলীয় পানির তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার পরিবর্তনে মাছের ডিম ছাড়া কমে গেছে, কিন্তু মাছ শিকার বেড়েছে।
২০২৪ সালে আফ্রিকান পেঙ্গুইনকে ‘অতিসংকটাপন্ন’ প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়, এবং বর্তমানে প্রজননক্ষম জোড়ার সংখ্যা ১০ হাজারেরও কম।




