অর্থনীতি
নারীর আইনি সুরক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ায় সপ্তম বাংলাদেশ
নারীর অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিতে আইনকানুন প্রণয়ন এবং এর বাস্তবায়ন দুই ক্ষেত্রেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এ অঞ্চলের আটটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে সপ্তম স্থানে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বিশ্বের ১৯০টি দেশ ও অঞ্চল স্থান পেয়েছে। এ নিয়ে দশমবারের মতো এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করল বিশ্বব্যাংক। তবে এবারের প্রতিবেদনে নারীর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও সুযোগ নিশ্চিতে আইনকানুনের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো এসব আইন বাস্তবায়নের দিকটিও বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে নারী, ব্যবসা ও আইন ১.০ সূচকে নারীর অর্থনৈতিক সুযোগ নিশ্চিতে কাগজ-কলমে কতটা আইনি ব্যবস্থা রয়েছে তা দেখা হয়েছে। এ জন্য কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে– নারীর চলাচল, কর্মক্ষেত্র, মজুরি, বিয়ে, মাতৃত্ব, ব্যবসায়িক উদ্যোগ, সম্পদ ও অবসর ভাতা। অন্যদিকে নারী, ব্যবসা ও আইন ২.০ নামের আরেকটি সূচকে দেখা হয়েছে এসব আইনকানুনের বাস্তবায়ন পরিস্থিতি কেমন। বাস্তবায়ন পরিস্থিতির সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় দেখার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, নারী, ব্যবসা ও আইন ১.০ সূচকে ১০০ পয়েন্টের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৯ দশমিক ৪ পয়েন্ট। নারী, ব্যবসা ও আইন ২.০ সূচকে ৩২ দশমিক ৫ পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম সূচকটিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নেপাল ৮০ দশমিক ৬, ভুটান ৭৫, ভারত ৭৪ দশমিক ৪, মালদ্বীপ ৭৩, শ্রীলঙ্কা ৬৫ দশমিক ৬ ও পাকিস্তান ৫৮ দশমিক ৮ পয়েন্ট পেয়েছে। বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে শুধু আফগানিস্তান। এ সূচকে তাদের পয়েন্ট ৩১ দশমিক ৯।
দ্বিতীয় সূচক অর্থাৎ আইনকানুন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পেয়েছে মাত্র ৩২ দশমিক ৫ পয়েন্ট। এর মানে আইনি কাঠামো ও তার বাস্তবায়নের মধ্যে বেশ পার্থক্য রয়েছে। এ সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নেপাল ৬২ দশমিক ৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে। এর পরের অবস্থানে থাকা ভারতের পয়েন্ট ৬০। পরবর্তী অবস্থানগুলোতে থাকা দেশগুলোর পয়েন্ট হচ্ছে ভুটান ও মালদ্বীপ ৫২ দশমিক ৫, শ্রীলঙ্কা ৪৫, পাকিস্তান ৪২ দশমিক ৫। এ ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের পেছনে আছে শুধু আফগানিস্তান। দেশটির পয়েন্ট ২০।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায়, নারীর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও সুযোগ নিশ্চিতে বিশ্বের কোনো দেশে আইনকানুনের শতভাগ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা বেলজিয়াম আইনকানুন থাকার ক্ষেত্রে ১০০ নম্বর পেলেও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পেয়েছে ৯০। আইনকানুন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শীর্ষ পাঁচে আরও যেসব দেশ রয়েছে সেগুলো হচ্ছে– কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স ও জার্মানি। সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, ইরান, আফগানিস্তান ও সুদান।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার
এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের রিজার্ভ ১৩৩ মিলিয়ন ডলার কমে ১৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ৮ মে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২৭ কোটি মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন এক হাজার ৯৮২ কোটি ডলার (১৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন)।
গেল মাসের একই সময় অর্থাৎ গত ৮ এপ্রিল বিপিএম–৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ১১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। ওই দিনে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৩৯ কোটি ডলার।
তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়। প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্যপ্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। প্রতি মাসে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে কষ্টসাধ্য হবে বাংলাদেশের জন্য। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ।
২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। এ সময় কিছু নীতি সংস্কারসহ বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়। ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় কিস্তিতে ৭০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা আগামী মাসে। তার আগে পর্যালোচনা বৈঠক করতে ঢাকায় আসে আইএমএফের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
আইএমএফ বাংলাদেশকে যে ঋণ দিয়েছে, তার অন্যতম শর্ত তাদের লক্ষ্য অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ সংরক্ষণ করা। সেই অনুযায়ী গত মার্চ মাস শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রকৃত রিজার্ভ থাকার কথা এক হাজার ৯২৬ কোটি মার্কিন ডলার। কিন্তু ওই সময় প্রকৃত রিজার্ভ ছিল এক হাজার ৫০০ কোটি ডলারের কম। এছাড়া আগামী জুন নাগাদ লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া ছিল ২ হাজার ১০ কোটি ডলার। তবে লক্ষ্য পূরণে বার বার ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশের আবেদনের প্রেক্ষিতে রিজার্ভ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে শর্ত কিছুটা শিথিল করেছে আইএমএফ।
বুধবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আইএমএফ জানায়, জুনভিত্তিক রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ২০ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছে। অর্থাৎ আগামী জুনের মধ্যে প্রকৃত রিজার্ভ ১৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন রাখতে হবে। এছাড়া আগামী মাসে তৃতীয় কিস্তির ৭০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা থাকলেও এ অঙ্ক বাড়িয়ে আইএমএফ বাংলাদেশকে দেবে এক হাজার ১৫ কোটি ২০ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর আগে ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে বেড়ে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছায়। ওই বছরের ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নতুন মাইলফলক অতিক্রম করে। এরপর তা বেড়ে করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ রেকর্ড গড়ে ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট। ওইদিন রিজার্ভ ৪৮ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার বা চার হাজার ৮০৪ কোটি ডলারে উঠে যায়। এরপর ডলার সংকটে গত বছর থেকে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এপ্রিলে অর্থনীতির গতি কমেছে
এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স বা পিএমআই কমেছে। এপ্রিল মাসে এই সূচক ২ দশমিক ১ শতাংশ কমে ৬২ দশমিক ২-এ নেমে এসেছে। মার্চ মাসে এই সূচকের মান ছিল ৬৪ দশমিক ৩। অর্থাৎ এপ্রিল মাসে দেশের অর্থনীতির গতি কমেছে।
শিল্পোদ্যোক্তাদের সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই বা মেট্টো চেম্বার) ও গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে প্রথমবারের মতো পিএমআই সূচক প্রকাশ করেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে এমসিসিআই কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এই সূচক প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল। স্বাগত বক্তব্য দেন এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান।
মেট্টো চেম্বার মনে করছে, এ সূচক প্রকাশের ফলে দেশে তথ্য–উপাত্তভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার যুগ শুরু হবে। শুরুতে প্রান্তিক হিসাবে এবং পরে প্রতি মাসের নির্ধারিত তারিখে এ সূচক নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে মেট্টো চেম্বার ও পলিসি এক্সচেঞ্জ। সেবা, নির্মাণ, কৃষি ও উৎপাদন—এই চার খাতের কর্মকাণ্ড নিয়ে এ সূচক প্রকাশ করা হবে। সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্ট এবং যুক্তরাজ্যের ইউকে ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এই সূচক প্রণয়নে সহায়তা করেছে।
প্রথমবারের মতো পিএমআই প্রকাশ অনুষ্ঠানে বলা হয়, সেবা ও নির্মাণ খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতের গতি কমে যাওয়ায় এপ্রিল মাসে অর্থনীতির গতি মন্থর হয়েছে। তবে কৃষি ও উৎপাদন খাতের দ্রুততর প্রবৃদ্ধির কারণে সেই ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে নেওয়া গেছে।
মার্চ মাসে সেবা খাতের পিএমআই ছিল ৬৩ দশমিক ৬, এপ্রিল মাসে তা কমে ৫৬ দশমিক ২-এ নেমে আসে। মার্চ মাসে নির্মাণ খাতের পিএমআই ছিল ৬৭ দশমিক ৭, এপ্রিলে যা নেমে আসে ৬৩ দশমিক ৮-এ। তার মানে এই দুই খাতের উৎপাদন কর্মকাণ্ড মার্চের চেয়ে এপ্রিলে খারাপ ছিল।
তবে কৃষি ও উৎপাদন খাতের সূচক বেড়েছে। মার্চে কৃষি খাতের পিএমআই ছিল ৫৫ দশমিক ৭, এপ্রিলে তা বেড়ে হয়েছে ৬০ দশমিক ৯; মার্চে উৎপাদন খাতের সূচকের মান ছিল ৬৮ দশমিক ৪, এপ্রিলে তা বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৫—অর্থাৎ এ দুই খাতে মার্চের চেয়ে এপ্রিলে উৎপাদন বেশি ছিল।
পিএমআই প্রকাশ অনুষ্ঠানে কামরান টি রহমান বলেন, পিএমআই অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সূচক। এই সূচকের ভিত্তিতে সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে নীতি–সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়। মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি ও মূল্যস্ফীতির মতো সূচকের সঙ্গে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ধীরে ধীরে এই সূচক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মহলের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠবে। এর মধ্য দিয়ে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার যুগ শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে পিএমআইয়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্টের (এসআইপিএমএম) নির্বাহী পরিচালক স্টিভেন পোহ ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কৃষি, নির্মাণ, উৎপাদন ও পরিষেবা—এই ৪ খাতের ৫০০টির বেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের মতামতের ভিত্তিতে পিএমআই প্রকাশ করা হবে। শুরুতে প্রতি প্রান্তিকে এই সূচক প্রকাশ করা হবে, পরে তা প্রতি মাসে প্রকাশিত হবে। সূচক তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পণ্যের ক্রয়াদেশ, মজুত, উৎপাদন, সরবরাহ পরিস্থিতি ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে তথ্য নেওয়া হবে।
পিএমআই শূন্য থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরিমাপ করা হবে। আগের মাসের তুলনায় স্কোর ৫০-এর বেশি হলে অর্থনীতির সম্প্রসারণ আর তার নিচে হলে সংকোচন বোঝাবে। স্কোর ৫০ হলে ধরে নিতে হবে, ওই প্রান্তিকে কোনো পরিবর্তন, অর্থাৎ অর্থনীতির সংকোচন বা প্রসারণ হয়নি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিশ্বে রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম
২০২২ সালের রেমিট্যান্স প্রাপ্তির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে অষ্টম। এদিকে ১১১ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রাপ্তির মাইলফলক অর্জন করেছে ভারত।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ২০২৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে রেমিট্যান্স পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ পাঁচে রয়েছে ভারত, মেক্সিকো, চীন, ফিলিপাইন্স ও ফ্রান্স।
দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ- ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ রেমিট্যান্স প্রাপ্তিতে শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় রয়েছে। ২০২২ সালে রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে যথাক্রমে ষষ্ঠ ও অষ্টম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। এ বছর পাকিস্তান প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার ও বাংলাদেশ ২১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালে রেমিট্যান্স পাওয়ার দিক থেকে ভারত ছাড়াও শীর্ষ ৫ দেশের মধ্যে রয়েছে মেক্সিকো, চীন, ফিলিপাইনস ও ফ্রান্স। ২০২২ সালে মেক্সিকোর রেমিট্যান্স প্রাপ্তি ছিল ৬১ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার। তা ছাড়া চীনের ৫১ বিলিয়ন ডলার, ফিলিপাইন্সের ৩৮ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার এবং ফ্রান্সের ৩০ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স প্রাপ্তি ছিল।
আইওএমের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, ২০১০ বাংলাদেশ ১০ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার ও ২০১৫ সালে ১৫ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছিল। সেই হিসাবে ১২ বছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ১০ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছর দেশটি ৭৯ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে বিভিন্ন দেশে। রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সৌদি আরব (৩৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার), তৃতীয় অবস্থানে সুইজারল্যান্ড (৩১ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার), চতুর্থ অবস্থানে জার্মানি (২৫ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার) ও পঞ্চম অবস্থানে আছে চীন (১৮ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার)।
রেমিট্যান্সপ্রাপ্তিতে অষ্টম অবস্থানে থাকলেও অভিবাসী পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ষষ্ঠ। অভিবাসী পাঠানোর ক্ষেত্রে শীর্ষ পাঁচ দেশ হচ্ছে ভারত, মেক্সিকো, রাশিয়া, চীন ও সিরিয়া।
আইওএমের প্রতিবেদনে বলা হয়, রেমিট্যান্স বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় বহু মানুষের লাইফলাইন হলেও এসব দেশ থেকে যাওয়া অভিবাসী কর্মীরা অনেক ঝুঁকির মধ্যে কাজ করেন, আর্থিক শোষণের শিকার হন, অভিবাসন খরচের কারণে অতিরিক্ত আর্থিক দেনায় ডুবে যান। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে নিপীড়নের শিকার হওয়ার পাশাপাশি তারা ‘জেনোফোবিয়া’রও (বিদেশিদের প্রতি ঘৃণার মনোভাব) শিকার হন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাজেট ঘোষণা ৬ জুন
আগামী ৬ জুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব সংসদে পেশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় বাজেট উত্থাপন করবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বলেন, আগামী ৬ জুন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেট পেশের দিনক্ষণ ঠিক করে ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া হয়েছে।
অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট হবে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার, যা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আকারের বাজেট। এবারের বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ডলারের দাম বাড়ায় রপ্তানি বাড়বে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, গত তিন বছরে টাকার বিপরীতে ডলারের ডিভ্যালুয়েশন হয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশের ওপরে। তার মানে আমাদের রপ্তানিকারকদের আয় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। যার কারণে আমাদের ডেভেলপিং দেশ হিসেবে ক্যাশ ইনসেনটিভগুলো দেওয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) হোটেল রেডিসন ব্লুতে সিআইপি (রপ্তানি ও ট্রেড)-২০২২ কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশের যে অর্জন, বিশেষ করে ২০০৯ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের যে অর্জন তা সারা পৃথিবীতে স্বীকৃত। বাংলাদেশ এই জায়গায় পৌঁছাতে পারবে তা অনেকে বিশ্বাস করতো না। ২০০৯ সালে যেখানে রপ্তানি ছিল ১৫ বিলিয়ন ডলারের একটু বেশি, আজকে সেই রপ্তানি আয় প্রায় ৪ গুণ বেড়ে ৬৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। যার জিডিপির আকার প্রায় ৪৬০ বিলিয়নের ওপরে। এই সবগুলো অর্জনই সম্ভব হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে। তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যে লজিস্টিক যে সাপোর্ট দিয়েছেন এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে পরিবর্তন হয়েছে, সেটি অনস্বীকার্য। আজকে রপ্তানি বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় নিয়ামক শক্তি যোগাযোগ ব্যবস্থা।
তিনি আরো বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা রপ্তানি বাণিজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও আমরা ১৪০ জনকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য সিআইপি প্রদান করছি। সেই সঙ্গে এ দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই তাদের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সুপারিশ মোতাবেক ৪৪ জনকে সিআইপি ট্রেড হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি উদ্যোগের মধ্যে একটি হলো প্রোডাক্ট ডাইভারসিফিকেশন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা দেশে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টসের সঙ্গে লেদার, জুট, টি সেক্টরসহ ফার্মাসিটিক্যালস সেক্টরকে অগ্রাধিকার দিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। এ বছর প্রধানমন্ত্রী বর্ষপণ্য হিসেবে হস্তশিল্পকে ঘোষণা করেছেন। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ‘একটি গ্রাম, একটি পণ্য’ স্লোগানে তৃণমূলে কারিগরদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে হস্তশিল্পকে একটি বিকল্প রপ্তানি পণ্য হিসেবে তুলে ধরতে চাই। এটি নিয়ে আমাদের অনেকগুলো পরিকল্পনা আছে। বিশ্বের ৭৩টি দেশে আমাদের অ্যাম্বাসি আছে। ২৩টি দেশে আমাদের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর আছে। তাদের মাধ্যমে আগামী ১ বৈশাখে অ্যাম্বাসিতে বৈশাখী মেলা করতে চাই। সেখানে আমরা আমাদের হস্তশিল্প পৌঁছে দিতে চাই। যাতে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যে সেটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে। বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুঁড়ি নয়। বাংলাদেশ এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছি। সেই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা ২০২৬ সালে যাত্রা শুরু করবো। এলডিসি গ্র্যাজুয়েটিং দেশ হিসেবে আমরা তিন বছর বিভিন্ন দেশে ঢোকার বিশেষ সুবিধা পাবো। কিন্তু ডেভেলপিং দেশ হলে সেই সুযোগ সীমিত হয়ে যাবে। তাই আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে, যেন আমরা বিভিন্ন দেশের বাজারে ঢুকতে পারি। আমাদের লক্ষ্য আমাদের রপ্তানিকে বহুমুখী করা।
তিনি আরো বলেন, গতকালই আমাদের টাকার প্রায় ৬ শতাংশ ডিভ্যালুয়েশন করা হয়েছে। রপ্তানিকারকদের সব সময় একটা চাপ ছিল, আমরা যেনো ডলার ডিভ্যালুয়েশন করে এমন একটি পর্যায়ে রাখি যাতে আমাদের রপ্তানি কস্পিটিটিভ হয়। এখন যখন ডিভ্যালুয়েশন হয়েছে, তখন কিন্তু আমাদের রপ্তানিকারকদের আয় বেড়েছে। যদিও আমাদের দেশ আমদানি নির্ভর। তারপরও আমাদের রপ্তানি কম্পিটিটিভনেসের জন্য আমাদের ডিভ্যালুয়েশ করতে হচ্ছে। আমরা আশা করি, এতে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্যের কম্পিটিটিভনেস বাড়বে। এই সুযোগটা আমাদের রপ্তানিকারকদের কাজে লাগাতে হবে।