ব্যাংক
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন বয়কট করলেন সাংবাদিকরা
সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সুরাহা না হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছেন ব্যাংক বিটের সাংবাদিকরা। বুধবার (৮ মে) দুপুর আড়াইটায় সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বয়কট করে বেরিয়ে আসেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হকসহ ব্যাংকটির কর্মকর্তারা। সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে সাংবাদিকরা জানতে চান গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য সংগ্রহে প্রবেশ ইস্যুর বিষয়ে সুরাহা হয়েছে কি-না। সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে সংবাদ সম্মেলনটি বর্জনের ঘোষণা দেন সাংবাদিকরা।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে আসছেন ব্যাংক বিটের রিপোর্টাররা। তাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। ইতোমধ্যে টিআইবি, নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) ও সম্পাদক পরিষদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) নিন্দা জানিয়েছে।
পৃথক পৃথক বার্তায় সংগঠনগুলো জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে এমন অলিখিত এ নিষেধাজ্ঞা স্বাধীন সাংবাদিকতা, গণতন্ত্র এবং মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাসহ নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে সাংবাদিকদের। তবে মেলেনি সমাধান। পরে গত ২৫ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টায় বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থান নেন। পরে ওইদিন বেলা ১১টায় ইআরএফের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম ব্যাংকে প্রবেশ সংক্রান্ত জটিলতা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপরও বিষয়টি সমাধান হয়নি।
আলোচনা শেষে ওইদিন (২৫ এপ্রিল) ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা নেই। তবে, বর্তমানে কড়াকড়ি অবস্থানে আছে। এর আগে কখনও এমন কঠোর হতে দেখিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এসব সমাধানে গভর্নরের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তারা (বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ) ৮ মের পর ব্যাংক বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। কীভাবে আগের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকে অবাধে প্রবেশ করা যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
ওইদিনের বৈঠকে শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র (প্রবেশ পাস) নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন। তবে, কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সেক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার কাছে যেতে পারবেন। তবে, আগের মতো তারা অবাধে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে চায় চীন
বাংলাদেশে একটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপন করতে চায় চীন। চীনের একদল ব্যবসায়ী বাংলাদেশি অংশীদারদের সঙ্গে যৌথভাবে ‘চায়না-বাংলা ব্যাংক পিএলসি’ নামে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী। এ লক্ষে সম্প্রতি তারা ব্যবসার নীতিমালা অনুসরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংকে বাণিজ্যিক ব্যাংক স্থাপনের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছে।
জানা গেছে, চায়না-বাংলা ব্যাংক পিএলসির দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা প্রাথমিকভাবে ১০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ বছরের মধ্যে আরও ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন আবেদনকারীরা।
চায়না-বাংলা ব্যাংক পিএলসি নামের এ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হলে দেশে ৭ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করছে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস। চীনের প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ পরোক্ষভাবে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াবে। এই উদ্যোগ ব্যাংকের সেবাপ্রাপ্ত কমবেশি ৭৫ মিলিয়ন মানুষের কাছে ডিজিটাল ব্যাংকের সেবা প্রসারিত হবে। এ বিষয়ে চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড গুয়াংডং কমিটি (সিসিপিআইটি গুয়াংডং কমিটি) সম্প্রতি বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের ইকোনমিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবেদনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দল কিছু দিন আগে চীন সফর করেছে, যেখানে চীনা উদ্যোক্তাদের ডিজিটাল ব্যাংকিং কার্যক্রমের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মহাসচিব আল মামুন মৃধা গণমাধ্যমকে বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ প্রযুক্তির ব্যবহারে (ডিজিটাল) উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এ জন্য ডিজিটাল ব্যাংক ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল ব্যাংক বিদ্যমান ব্যাংক পরিষেবাগুলোর তুলনায় অধিকতর সুবিধা, নিরাপদ এবং তহবিল স্থানান্তর সহজ করবে। চীনা বিনিয়োগকারীরা যৌথভাবে ডিজিটাল ব্যাংকে বিনিয়োগ করলে প্রযুক্তিতে চীনের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যাংকিং খাতের জন্য উপকারী হবে। ডিজিটাল যুগে গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে এবং ব্যাংকবিহীন জনগোষ্ঠীকে সেবা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যেই আটটি ডিজিটাল ব্যাংককে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। প্রথাগত ব্যাংকগুলোর থেকে ভিন্ন এ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে শুধু অনলাইনে কাজ করা হবে এবং কোনো শাখা থাকবে না। ডিজিটাল ব্যাংক গ্রাহকদের একটি ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা যে কোনো স্থান থেকে ব্যাংকিং লেনদেন এবং পরিষেবাগুলো নিজের মতো করে করার সুবিধা দেবে, তাই কোনো গ্রাহককে শাখায় যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। ইতোমধ্যে নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি এবং কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি নতুন দুটি ডিজিটাল ব্যাংকের লেটার অব ইন্টেন্ট (এলওআই) দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
জানা গেছে, ব্যাংক দুটি শিগগিরই কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী ছয় মাস তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে। এ ছাড়া, তিন ব্যাংক মিলে করা আবেদনটি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ব্যাংক এশিয়ার নেতৃত্বাধীন ডিজিটাল, ব্র্যাক ব্যাংকের নেতৃত্বাধীন বিকাশ ডিজিটাল ব্যাংক ও ১০ বেসরকারি ব্যাংকের সমন্বয়ে ডিজি ১০ ডিজিটাল ব্যাংকও চালু হয়ে যেতে পারে। স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক, জাপান-বাংলা ডিজিটাল ব্যাংক ও নর্থ ইস্ট ডিজিটাল ব্যাংককে এলওআই দেওয়ার পরিকল্পনা আছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
তথ্য প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩ জন মুখপাত্র আছেন: ডিজি খুরশিদ
তথ্য দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩ জন মুখপাত্র নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর (ডিজি) খুরশিদ আলম। তিনি বলেন, বলা হচ্ছে- বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ। কে বললো ভাই? আপনার তো তথ্যের দরকার। তথ্যের দরকার হলে তথ্যের জন্য ১০০ বার যাবেন।
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে পঞ্চগড়ের চেম্বার ভবন মিলনায়তনে রংপুর বিভাগে গ্রাহক সচেতনতা সপ্তাহ-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ডেপুটি গভর্নর খুরশিদ আলম বলেন, প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানে একজন করে মুখপাত্র থাকে। সবার তো কথা বলার দরকার নাই। তিন জন মুখপাত্র আছে। তাদের কাছে যাবেন। সেখানে বসার যায়গা আছে। চায়ের ব্যবস্থা আছে। তারা যদি আপনাকে সেটিসফাই (সন্তুষ্ট) না করতে পারে আমরা চার জন ডেপুটি গভর্নর আছি- আমরা উত্তর দেব। সমস্যা কোথায়? তাও বলা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশ নিষেধ।
তিনি বলেন, অবাধ বলতে কী? অবাধে কোথায় যায়? আপনার একটা প্রাইভেট কোম্পানি কি আরেকটি কোম্পানিকে অবাধে কোনও কিছু দেবে? জার্নালিস্টকে দেবে যতই বন্ধু হন? অ্যাবসার্ড (অবাস্তব)। পৃথিবীর কোনও দেশে নাই। তাহলে আপনি বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে আপনারা অবাধে যেতে চান। আমিতো যেতে নিষেধ করিনি। আপনি তো যান না। আমার লোকজন আপনার জন্য রেডি হয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, যদি কোন কর্মকর্তার কাছে একাই যেতে চান, যান। ধরুন আমার কাছে একাই আসতে চান, আসুন। যেটা সিক্রেসি আইনে কাভার করে না। যতদূর খোলামেলা বলা যায় তারা বলে দেবে। কিন্তু আপনি রাষ্ট্রীয় সিক্রেসির তথ্য চাইবেন সেটা তো পারমিট করে না কেউ।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
রাজধানীর ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট।
শনিবার (১৮ মে) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুন লাগে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার লিমা খানম।
তিনি জানান, ধোলাইখালে চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে সূত্রাপুর ও সিদ্দিকবাজার থেকে পাঁচটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
বাংলাদেশের রির্জাভ চুরির গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে!
ডলার সংকটে প্রতিনিয়ত কমছে দেশের রির্জাভের পরিমাণ। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। যা এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। এমন সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলার ভারতীয় হ্যাকাররা চুরি করে নিয়েছেন বলে একটি তথ্য দেশের সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমের সূত্র ধরে এসব তথ্য ছড়ানো হয়। তবে এসব তথ্যকে গুজব বলে দাবি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘বাংলাদেশের নতুন রিজার্ভ চুরি’ বিষয়ে প্রকাশিত খবরটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং ভিত্তিহীন। দেশের রিজার্ভ সুরক্ষিত রাখতে আমাদের ফেডারেল রিজার্ভের সাথে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া আমরা নিয়মিত রিজার্ভের এনালগ এবং ডিজিটাল হিসাব পরীক্ষা করছি। পাশাপাশি প্রতিদিনই রিজার্ভের হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। ফলে রিজার্ভ চুরি বা হ্যাংকিংয়ের মতো ঘটনার সুযোগ নেই।
তিনি জানান, অতীতেও কিছু অসাধু চক্র নিজেদের স্বার্থে এমন ভুয়া নিউজ প্রচার করেছে। আদতে তার কোন প্রমাণ মিলেনি।
ভারতীয় গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট হ্যাকারদের সূত্র ধরে বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কিছু অর্থ সরিয়ে নিয়েছে হ্যাকাররা। বিষয়টি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এবং ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে জানাজানিও হয়ে গেছে। এমনকি দুই দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো চুপিচুপি এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। তবে এর কোন সঠিক সূত্র উত্থাপন করতে পারেনি সংবাদ মাধ্যমটি।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’ মন্তব্য নিয়ে সন্দেহ উসকে দিচ্ছে একদল অসাধু চক্র। তবে সেখানে রির্জাভ চুরির বিষয়ে কোন মন্তব্য ছিলো না।
গত ৭ মে ইআরএফের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমাদের একটা গর্ব ছিল, বিদেশি ঋণ নিয়ে কখনো খেলাপি হইনি আমরা। কিন্তু সম্প্রতি তেল আমদানি করে আমরা অর্থ পরিশোধ করতে পারছি না। বিদেশিরা মুনাফা নিতে পারছে না, এয়ারলাইন্স ব্যবসায়ীরা অর্থ পাচ্ছে না। তার মানে গর্বের জায়গায় ফাটল ধরিয়ে দিয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশ ব্যাংক দেয়। সেখানে প্রবেশ নিষেধ। তার মানে সেখানে ‘ডাল মে কুচ কালা হে’। এখন এটা কি মসুর ডাল না কি মুগ ডাল নাকি সব জায়গায় ডাল; এটাই এখন বোঝার বিষয়।
এর আগে ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছিল। ৮১ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সে সময় চুরি হয়। পরে জানা যায়, এ অর্থ যায় ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজাল ব্যাংকের একটি শাখায় চারটি ভুয়া হিসাবে। সেখান থেকে দ্রুত অর্থ উত্তোলন করা হয়। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং ডিপার্টমেন্টের উপ-পরিচালক জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করেন৷
চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে রিজাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এখনো পুরোপুরি অর্থ উদ্ধার করা যায়নি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
খেলাপিদের বিরুদ্ধে মামলা না করার আহ্বান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
ব্যাংক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় বিতরণ করা হচ্ছে ঋণ। নামে-বেনামে দেওয়া এই ঋণ মেয়াদ শেষে ব্যাংকেও ফিরছে না। ফলে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়ছে। পাশাপাশি তারল্য সংকটে ভুগছে নানান তফসিলি ব্যাংক। ব্যাংক খাতের এমন দুর্দিনে খেলাপিদের বিরুদ্ধে মামলা না করার নির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে মামলার পরিবর্তে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে ঋণ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়।
রোববার (১২ মে) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দ্রুত আদায়ে আদালতের বাইরে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই আইন অনুসারে আদালত রায় বা আদেশ প্রদানের আগে মামলার যেকোনো পর্যায়ে উভয় পক্ষ আদালতের অনুমতিক্রমে বিকল্প পদ্ধতিতে মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য জারি করা নোটিশে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বা সদিচ্ছাকে বিবেচনায় নিয়ে কেস টু কেস ভিত্তিতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা। ব্যাংকার ও গ্রাহক উভয়পক্ষের সম্মতিতে বিআইএসিসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানে তালিকাভুক্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ মধ্যস্থতাকারী অথবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, আইনজীবী, অথবা অন্য যেকোনো উপযুক্ত ব্যক্তি যাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সফলতার ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে তাদেরকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নির্বাচন করা।
মধ্যস্থতাকারী নিযুক্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিরোধীয় পক্ষগণ ও মধ্যস্থতাকারী পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে পারিশ্রমিকের পরিমাণ, পরিশোধকারী পক্ষ ইত্যাদি নির্ধারণ এবং যথাসময়ে তা পরিশোধ নিশ্চিত করা। মধ্যস্থতাকে সফল করা এবং খেলাপি ঋণ দ্রুত আদায়ের স্বার্থে প্রয়োজনে কেস টু কেস ভিত্তিতে বিদ্যমান নির্দেশনা মোতাবেক ব্যাংক কর্তৃক ছাড় দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।
এদিকে এডিআররের কার্যক্রম গতিশীল করতে লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দিয়েছে আর্থিক খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আগামী ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রত্যেক ব্যাংকের খেলাপি ঋণস্থিতির ন্যূনতম ১ শতাংশ নগদ আদায় এডিআর’র মাধ্যমে করতে হবে। এই লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোর সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতেও নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে।
এমআই