জাতীয়
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুসংবাদ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ই ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টা দিকে তিনি মারা যান
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা, হিন্দুস্তান টাইমস এবং দ্য অস্ট্রেলিয়ান-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরীফ ওসমান হাদি ২০২৪ সালে শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। সেই আন্দোলনের পর থেকেই তিনি দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে অন্যতম অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
হিন্দুস্তান টাইমস তাদের প্রতিবেদনে তাকে ‘বাংলাদেশি ছাত্র অভ্যুত্থান নেতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। আল-জাজিরা জানিয়েছে, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রভাবশালী এই নেতার মৃত্যুতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বড় শূন্যতা তৈরি হলো।
শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে উত্তজনা ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। দ্য অস্ট্রেলিয়ান জানিয়েছে, প্রিয় নেতার মৃত্যুর সংবাদে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ ও সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এমকে
জাতীয়
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সতর্কতা জারি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজাকে কেন্দ্র করে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকাজুড়ে ব্যাপক জনসমাগম ও তীব্র যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকার এবং বড়ো ধরনের জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) মার্কিন দূতাবাস এক সতর্কবার্তায় বলেছে, ওসমান হাদির জানাজাকে ঘিরে মানিক মিয়া এভিনিউসহ আশপাশের এলাকায় এবং রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ভারী যানজট সৃষ্টি হতে পারে।
সতর্কবার্তায় আরও বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে আয়োজিত সমাবেশও কখনো কখনো সংঘাতপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে এবং সহিংসতায় রূপ নিতে পারে।
এ অবস্থায় মার্কিন নাগরিকদের বিক্ষোভ ও বড়ো জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার পাশাপাশি, জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় চলাচলের সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতীয়
বিমানবন্দর থেকে ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হবে হাদিকে
দেশে পৌঁছানোর পর ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ ওসমান বিন হাদিকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে নেওয়া হবে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে ইনকিলাব মঞ্চের ভেরিফায়েড পেইজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটাই জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে- ‘শহীদ ওসমান হাদিকে বহনকারী বিমানটি (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
আমাদের জুলাই জজবার প্রাণ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অকুতোভয় বীরকে গ্রহণ করতে আমরা সবাই এয়ারপোর্ট থেকে শাহবাগগামী রাস্তার দুইপাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নেবো।
সেখান থেকে শহিদ ওসমান হাদীকে সর্বসাধারণের সাক্ষাতের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আনা হবে।’
এর আগে এক পোস্টে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে শুক্রবার সিঙ্গাপুরের স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে শহীদ ওসমান হাদির লাশ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করা হবে। ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
জাতীয়
হাদি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল বায়তুল মোকাররম
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বায়তুল মোকাররম এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস। এ সময় স্লোগান, বক্তব্য ও মিছিলে জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট উত্তাল হয়ে ওঠে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ২টার দিকে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেন তারা।
এসময় ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা, আজাদি না গোলামি, আজাদি আজাদি, আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম ইত্যাদি স্লোগানে প্রকম্পিত হয় আশপাশ।
স্লোগানে তারা আরও বলেন, ‘তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি, আমার সোনার বাংলায় খুনি লীগের ঠাঁই নাই, ফ্যাসিবাদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, আমরা সবাই হাদি হবো যুগে যুগে লড়ে যাবো।’
এমকে
জাতীয়
সিঙ্গাপুর থেকে দেশের পথে ওসমান হাদির মরদেহ
আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার ৬ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিঙ্গাপুরে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ বহনকারী ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩৮৫ ফ্লাইটটি শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩ মিনিটে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দায়িত্বশীল একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকতা জানান, বিজি-৫৮৫ ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে। শহীদ ওসমান হাদির মরদেহ মর্যাদাপূর্ণ ও নির্বিঘ্নভাবে দেশে আনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। তার মৃত্যুর সংবাদ ঢাকায় পৌঁছালে কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলি করা হয় রিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদিকে। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক একটি অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
এমকে
জাতীয়
একজন সাবেক সাংবাদিক হিসেবে শুধু বলব, আমি দুঃখিত: প্রেস সচিব
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল ২টা ৪২ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
পোস্টে প্রেস সচিব লেখেন, ‘গত রাতে দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোতে কর্মরত আমার সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে সাহায্যের জন্য আতঙ্কিত, অশ্রুসিক্ত ফোন কল পেয়েছিলাম। আমার সব বন্ধুদের কাছে আমি গভীরভাবে দুঃখিত, আমি তোমাদের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছি। তোমাদের সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য ফোন করেছি, কিন্তু সেই সহায়তা সময়মতো পৌঁছায়নি।’
তিনি লেখেন, ‘দ্য ডেইলি স্টার ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সব সাংবাদিককে উদ্ধারের পর ভোর ৫টায় আমি ঘুমাতে যাই। কিন্তু ততক্ষণে এই দুটি সংবাদমাধ্যম দেশের ইতিহাসে গণমাধ্যমের ওপর সংঘটিত অন্যতম ভয়াবহ হামলা ও অগ্নিসংযোগের সাক্ষী হয়ে গেছে।’
সাংবাদিকদের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে শফিকুল আলম লেখেন, ‘আমি জানি না কোন শব্দ দিয়ে তোমাদের সান্ত্বনা দেব। একজন সাবেক সাংবাদিক হিসেবে শুধু বলব, আমি দুঃখিত। লজ্জায় মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছি।’
এদিকে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় পত্রিকা দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় সরকার পত্রিকা দুটির পাশে আছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আপনাদের প্রতিষ্ঠান ও সংবাদকর্মীদের ওপর এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যক্কারজনক হামলা আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। আপনাদের এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।’
এমকে




