জাতীয়
বিদেশ গমনে দুর্নীতি-ভোগান্তি অনেক কমেছে: আসিফ নজরুল
বিদেশ গমনে যাবতীয় কার্যাবলি ডিজিটালাইজেশন করার কারণে দুর্নীতি, হয়রানি ও ভোগান্তি অনেক কমেছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী অ্যাপসের মাধ্যমে আগে শত শত হাজার কোটি টাকা প্রবাসীদের কাছ থেকে আদায় হতো এবং যারা বিদেশে যেতেন তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ঘটত। এটি বন্ধ করতে আমরা সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়েছি।
তিনি বলেন, এই উদ্যোগে আইওএম ও আইএলও গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে তারা ‘ওভারসিজ অ্যামপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম’ নামে একটি সম্পূর্ণ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন, যা বিদেশে যাত্রা করা সমস্ত প্রক্রিয়াকে ১০০ শতাংশ ডিজিটালাইজ করেছে। ডিজিটালাইজেশনের ফলে দুর্নীতি, হয়রানি ও ভোগান্তি হওয়ার সুযোগ অনেক কমে গেছে।
আসিফ নজরুল বলেন, যারা ভোটের জন্য নিবন্ধন করেছেন, তারা এবার প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পারবেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রবাসীদের প্রতি যে গুরুত্ব প্রদর্শিত হচ্ছে, তা ঢাকা এয়ারপোর্টে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন রুটিন কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়েছে। প্রবাসীদের জন্য রুটিন কাজের বাইরে নতুন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়েছে, যদিও এগুলো এখনো পর্যাপ্ত নয়।
তিনি জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে। চুক্তির প্রাথমিক প্রভাব পুরোপুরি বোঝা না গেলেও ভবিষ্যতে এর ইতিবাচক প্রভাব আসবে। সৌদি মিনিস্টার উল্লেখ করেছেন, পূর্বে অনেক সরকার চেষ্টা করলেও এ ধরনের চুক্তি হয়নি। এ ছাড়া বাংলাদেশের মিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তান বা ভারতের সঙ্গে এমন চুক্তি হয়নি, শুধুমাত্র বাংলাদেশের সঙ্গে হয়েছে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, আগে মালয়েশিয়ায় শ্রমিকরা দেশে ফিরে আসতে পারতেন না, কারণ তাদের একক ভিসা দেওয়া হতো। বিভিন্ন অনুরোধের মাধ্যমে এটি মাল্টিপল ভিসায় পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে, যা প্রথমবারের মতো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট নিয়ে বহু অভিযোগ শোনা যেত। তবে এই সিন্ডিকেটকে তারা সম্পূর্ণ ডিলিস্টিং করেছে এবং প্রবাসী শ্রমিকদের থেকে অবৈধ মুনাফা নেওয়া বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। তিনি স্বীকার করেন, এখনো অনেক কিছু করা বাকি আছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, পরবর্তী সরকার যদি দেশের মানুষের প্রতি ন্যূনতম ভালোবাসা, ঈমান এবং কৃতজ্ঞতাবোধ রাখে, তারা প্রবাসীদের কল্যাণে আরও অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে এবং ইতোমধ্যে শুরু করা কাজগুলোকে আরও এগিয়ে নিতে পারবে।
এমকে
জাতীয়
সচিবালয়ে আন্দোলনকারী ১৪ কর্মচারী বরখাস্ত
‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে আন্দোলন করা ১৪ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। তাদের বিরুদ্ধে করা মামলায় আদালত চার্জশিট গ্রহণ করায় নিয়ম অনুযায়ী তাদের সামরিক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো জানিয়েছে।
গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) কর্মচারীদের সাময়িক বরখাস্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সচিবালয় ভাতার দাবিতে গত ১০ ডিসেম্বর প্রায় ছয় ঘণ্টা সচিবালয়ের দপ্তরে অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন কর্মচারীরা। বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের নেতৃত্বে মূলত এ আন্দোলন হয়।
পরদিন ফের আন্দোলনে নামলে নেতৃত্ব দেওয়া কর্মচারীদের আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে তাদের ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেফতার দেখানো হয়। তাদের রিমান্ডেও পাঠিয়েছিলেন আদালত।
বরখাস্ত হওয়া কর্মচারীদের মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবির, সহ-সভাপতি শাহীন গোলাম রাব্বানী ও নজরুল ইসলাম রয়েছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মচারীদের মধ্যে অন্যরা হলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মো. তায়েফুল ইসলাম, বিকাশ চন্দ্র রায়, ইসলামুল হক, মো. মহসিন আলী, রোমান গাজী, আবু বেলাল।
এছাড়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের মিজানুর রহমান সুমন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী কামাল হোসেন ও মোহাম্মদ আলিমুজ্জামান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিপুল রানা বিপ্লব ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নাসিরুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে তার দপ্তরের অবরুদ্ধ করে রাখেন কর্মচারীরা। পরে পুলিশের সহায়তায় দপ্তর ত্যাগ করেন উপদেষ্টা।
দাবি পূরণে সরকার আশ্বাস দেওয়ার পরের দিনও আন্দোলন অব্যাহত রাখেন কর্মচারীরা। এরপর কঠোর অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সচিবালয়ের ভেতর থেকেই কয়েকজনকে আটক করা হয়।
জাতীয়
বিদায়ী উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের নির্বাচনি বিশেষ বরাদ্দ
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পদ থেকে সদ্য পদত্যাগকারী আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে বড় ধরনের নির্বাচনি বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব অনুমোদন করে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।নির্বাচন সামনে রেখে বিশেষ উদ্দেশে তিনি এসব বরাদ্দের প্রস্তাব অনুমোদন করে গেছেন। এছাড়া তিনি এ সংক্রান্ত আরও কিছু প্রস্তাব আগাম অনুমোদন করে গেছেন, যেগুলো তৃতীয় কিস্তি হিসেবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে বরাদ্দ হওয়ার কথা ছিল। সংশ্লিষ্টদের দাবি—নির্বাচন সামনে রেখে এসব বরাদ্দের জিও জারি হওয়ার হওয়ার সুযোগ নেই। এতে করে নির্বাচন প্রভাবিত হতে পারে। নির্বাচনে সব প্রার্থীর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ঠিক রাখার জন্য এই ধরনের বরাদ্দ না দেওয়ার দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে , উপদেষ্টা পদত্যাগ করে চলে গেলেও তার পিএসসহ ঘনিষ্টজনেরা এখনও বহাল তবিয়তে। তারা জিও জারির ক্ষেত্রে নানাভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সাবেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ঘনিষ্টদের না সরালে সরকারি বরাদ্দের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সম্ভব হবে না।
সারাদেশে ৬৪ জেলা, ৪৯৫ উপজেলা ও ৩২৮ উপজেলা—এই তিন পরিষদ টার্গেট করে নির্বাচনি বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে। শুধু খুলনায়ই ৩১০টি বরাদ্দ প্রস্তাব অনুমোদনসহ কয়েকটি তালিকা পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, একটি বিশেষ আসন ঘিরে বেশিরভাগ বরাদ্দ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশে বিভিন্ন জেলায় মোট ৪১ কোটি ৫০ লাখ টাকার জিও বরাদ্দ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। প্রকল্প অনুযায়ী, সেগুলোর কোনোটি ২০ লাখ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত।বেশ কিছু পছন্দের আসনে বিশেষ বরাদ্দগুলোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়ে গেছেন আসিফ মাহমুদ।এসব বরাদ্দের মধ্যে বেশিরভাগই নগদ টাকা।এই বরাদ্দের টাকা নির্বাচনের আগে পছন্দের প্রার্থীর কর্মীদের হাতে চলে যাবে। এতে নির্বাচনে সব প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ঠিক থাকবে না।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বিশেষ বরাদ্দ সংক্রান্ত আরও কিছু প্রস্তাব আগাম অনুমোদন করে গেছেন আসিফ মাহমুদ, যেগুলো তৃতীয় কিস্তি হিসেবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে বরাদ্দ হওয়ার কথা ছিল। আসিফ মাহমুদের সই করা এসব বরাদ্দের প্রস্তাব সারাদেশে বিশেষ বিশেষ আসনকে কেন্দ্র করে। এই বরাদ্দের টাকা ওইসব নির্বাচনি এলাকায় গেলে বিশেষ কোনো দলের প্রার্থী নির্বাচনি সুবিধা পাবেন। আসিফ মাহমুদ পদত্যাগ করলেও ওই মন্ত্রণালয়ে তার ঘনিষ্টরা জিও প্রভাব খাটিয়ে পাশ করার চেষ্টা করছেন।
প্রকল্প প্রস্তাবের বিবরণে দেখা গেছে- খুলনার ডুমুরিয়ার আন্দুলিয়া বায়তুন নূর জামে মসজিদ সংস্কার/ উন্নয়ন, একই উপজেলার বরুনা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংস্কার, একই উপজেলার বরুনা দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ সংস্কার প্রকল্প। আবার পাশের উপজেলা ফুলতলার দামোদর শীতলাতলা সার্বজনীন পূজা মন্দির সংস্কার/উন্নয়ন প্রকল্প, কালিকাপুর সার্বজনীন গোবিন্দ মন্দির সংস্কার/উন্নয়ন প্রকল্প, কাপালি ডাঙ্গা সার্বজনীন পূজা মন্দির সংস্কার/উন্নয়ন প্রকল্প। এরকম অর্ধশতাধিক প্রকল্প এই দুটি উপজেলায়। দুটি উপজেলা নিয়ে একটি নির্বাচনি আসন গঠিত, সেটি হচ্ছে খুলনা-৫।
এরকম সারাদেশেই বিশেষ বিশেষ আসনে কাউকে সুবিধা দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ রকম বরাদ্দের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্টদের দাবি, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ঠিক রাখতে হলে এসব উদ্দেশ্যমূলক প্রস্তাবের জিও যাতে জারি না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। সেই সঙ্গে আসিফ মাহমুদের ঘনিষ্টদের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সরানোর দাবি তাদের।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সদ্য বিদায়ী উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএসকে ফোন করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ও দেওয়া হয়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের উদ্দেশে তিনি গত ১০ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেছেন।
জাতীয়
ভারতে বাংলাদেশি হাইকমিশনারকে তলব
ভারতের নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাকে তলব করেছে দিল্লি। সেই সঙ্গে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারকে সাম্প্রতিক হুমকি ও বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ভারতবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্যের জন্য আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশটি।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।
এর আগে গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। এর ২ দিনের মাথায় দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করা হলো।
ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা ও শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতকারী ছাত্র-নেতৃত্বের আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্যকে ঘিরে এই তলব করা হয়েছে। ঢাকায় একটি সমাবেশে বক্তব্যকালে হাসনাত আবদুল্লাহ সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশ ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ভারতবিরোধী শক্তি’কে আশ্রয় দিতে পারে এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে, যা প্রায়শই ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত, দেশের বাকি অংশ থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিক্ষোভের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়, যা দু’দেশের কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। এই অবস্থায় ২০২৬ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে উত্তেজনামূলক বক্তব্য প্রতিবেশী দেশদু’টির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জটিল করে তোলার ঝুঁকিতে রয়েছে।
এমকে
জাতীয়
শ্রমশক্তি রপ্তানিতে বড় বাধা দালাল চক্র: প্রধান উপদেষ্টা
বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে দালাল চক্র বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী ও প্রবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শ্রমশক্তি রপ্তানির পুরোটাই দালাল বেষ্টিত। পদে পদে দালালদের প্রতারণার জন্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই শ্রমশক্তি রপ্তানি খাতকে দালাল মুক্ত করতে না পারলে উন্নতি সম্ভব না।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রমিকদের মুক্তির কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারা অনেক কষ্ট করে বিদেশ গেছেন। সেখানে আইন অমান্য করলে কি শাস্তি হবে সবই জানতো, তারপরও দেশের জন্য আইন ভাঙল। পরবর্তীতে ওই দেশের সরকারকে অনুরোধ করলাম, তিনি তাদের মুক্তি দিলেন।
তিনি বলেন, আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আনোয়ার ইব্রাহিম এখানে আসলেন। তখন খবর পেলাম ১৭ হাজার শ্রমিক মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে মালেয়েশিয়া যেতে পারেনি। তারা সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। আনোয়ার ইব্রাহিমকে বললাম, এদেরকে নিয়ে যেতে হবে। বন্ধু (আনোয়ার ইব্রাহিম) মানুষ না করতে পারেনি। বলছে, ঠিক আছে নিয়ে যাব। পরবর্তীতে মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে এগুলো নিয়ে কাজ করলাম। তখন দেখা গেছে, পুরো জগতটা দালাল-সিন্ডিকেট ভরা। সরকার এখান থেকে অনেকদূরে। এ হলো বিদেশ যারা যেতে চাচ্ছেন, তাদের কপাল।
ড. ইউনূস বলেন, জাপান সফরে গেলাম। তারা বলল, লোক দরকার। আমরা বললাম, আমরা তো লোক নিয়ে বসে আছি। কত লোক লাগবে। বলল, জানাবে। তারা নেপাল থেকে ৭ হাজার লোক নিয়েছে। আমি জানতে চাইলাম, বাংলাদেশ থেকে কত নিয়েছে? বলল, মাত্র ২ হাজার। শুনে অবাক হলাম, নেপাল থেকে এতো হলে, বাংলাদেশ থেকে কম কেন। আমাকে জিজ্ঞেস করল, কত দিতে পারব। আমি বললাম একলাখ লোক দিতে পারব। শুধু ভাষা শিখলে ওখানে যেতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, জাপানের বহু শহরে ট্যাক্সি বন্ধ হয়ে গেছে, ড্রাইভার নেই। মাইলের পর মাইল খালি জমি পড়ে আছে, জনশূন্য। তারা বলল, লোক পাঠাও আমরা যাতে এগুলো চালু করতে পারি। চাষাবাদ করতে পারি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পৃথিবীতে তারুণ্যের অভাব, আমরা তারুণ্যের খনি। এটা সোনার চেয়েও দামী। সারা পৃথিবীকে আমাদের কাছে আসতে হবেই, এত তরুণ জনশক্তি আর কোথাও নাই।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল প্রবাসীদের কল্যাণে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
এমকে
জাতীয়
ঢাকার ভারতীয় ভিসা সেন্টার হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা
দেশে চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (আইভিএসি) বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ivacbd.com-এ প্রকাশিত নোটিশে বলা হয়েছে, ‘চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে জানানো যাচ্ছে, ‘যমুনা ফিউচার পার্কের ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার আজ দুপুর ২টায় বন্ধ হয়ে যাবে।’
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আজ যাদের ভিসা সাবমিশনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল, তাদের পরবর্তী তারিখে নতুন স্লট প্রদান করা হবে। আবেদনকারীদের ধৈর্য ধরতে এবং ওয়েবসাইট বা হটলাইনের মাধ্যমে আপডেট চেক করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনাগুলোর কারণে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও তথ্যের জন্য আইভিএসির ওয়েবসাইট (ivacbd.com) বা হটলাইন নম্বর (০৯৬১২ ৩৩৩ ৬৬৬ / ০৯৬১৪ ৩৩৩ ৬৬৬) যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এমকে




