রাজনীতি
আমিও একজন সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম: জেলা জামায়াত আমির
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের আপামর জনসাধারণ, সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছে উল্লেখ করে চাঁদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা বিল্লাল হোসাইন মিয়াজী বলেছেন, ‘আমি তখন চতুর্থ শ্রেণীতে লেখাপড়া করি। আমাদের গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। আমরা বাড়ি বাড়ি থেকে তাদের জন্য চাল, ডাল ইত্যাদি উঠিয়ে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছি। তাইলে আপনি কি আমাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলতে পারেন না? আমি কি সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম না?’
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ‘অঙ্গীকার’-এ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
মাওলানা বিল্লাল হোসাইন বলেন, ‘যাতে আমরা স্বাধীনভাবে নিজেদের জীবন যাপন করতে পারি। আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সবকিছুকেই যাতে আমরা স্বাধীনভাবে নিজেরা নিজেদেরটা করতে পারি। কোনো আধিপত্যবাদী শক্তি যাতে আমাদের উপরে নাক গলাতে না পারে। এটাই ছিল আমাদের মূল মুক্তিযুদ্ধের টার্গেট।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং আমাদেরকে যারা আসলে একটু বাঁকা চোখে দেখতেছে, আমি তাদের প্রতি অনুরোধ করব, বাঁকা চোখে না দেখে দেশ গঠন করার লক্ষ্যে আমরা আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা একত্রে কাজ করি।’
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘এই দেশের আপামর বাঙালি মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন। চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে মেজর জিয়া, পরবর্তীতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। কিন্তু সেই ইতিহাস বিকৃত করেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এই দেশ যতোদিন টিকে থাকবে, আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা মানুষের মণিকোঠায় থাকবেন। তাদেরকে সম্মান জানানো দেশের প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব।’
প্রসঙ্গত, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ১৯৭১ সালের এই দিনে চাঁদপুর পাক হানাদারমুক্ত হয়। এদিন চাঁদপুর থানায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আউয়াল কিরন। তবে তার আগেই জেলার ফরিদগঞ্জ, হাইমচর, মতলব উত্তর ও দক্ষিণ, কচুয়া, শাহরাস্তি ও হাজীগঞ্জ শত্রুমুক্ত করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
এর আগে বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করেন। এছাড়া বেলুন উড়িয়ে ও দেশের সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করা হয়।
এমকে
রাজনীতি
আমরা ধর্ম নিয়েই কাজ করি, ধর্মকে ব্যবহার করি না: জামায়াত আমির
আমরা ধর্ম নিয়েই কাজ করি, আমরা ধর্মকে ব্যবহার করি না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকাস্থ দূতাবাসে আট দেশের দূতদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন জামায়াত আমির।
তিনি বলেন, ‘সাধারণভাবে নির্বাচন পেছানো কাম্য নয়। তবে কোনো কারণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সম্ভব না হলে দেশ গুরুতর সংকটে পড়বে।’ তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে যদি জামায়াত নির্বাচিত হয়, তবে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। নির্বাচনে ২০০ আসনে জিতলেও সেই সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘পিআর আমাদের দাবি, আমরা এটা জনগণের জন্য করেছি, দলের জন্য নয়। আমরা যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হই এবং দেশসেবার সুযোগ পাই তখনো আমরা পিআর বাস্তবায়নে আন্তরিকতার পরিচয় দেব।’
ইলেকশনের সময় নতুন করে যারা বেশি বেশি নামাজ শুরু করেন, টুপি পরেন, তসবি হাতে নিয়ে ঘোরেন—ধর্মকে তারাই বোধ হয় ব্যবহার করেন। আমরা সারা বছর তসবিহ হাতে নিয়ে ঘুরি না, তসবিহ বুকে নিয়ে ঘুরি।’
বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশবাসী তার (বেগম খালেদা জিয়া) অসুস্থতার জন্য তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া করছে। যার যতটুকু শ্রদ্ধা-ভালোবাসা পাওয়া সে যেন এটা পায়, সেদিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত।
ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, ‘আমিও তো মরব, আমরা কেউ তো চিরদিন থাকব না। আমাদের এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। আমাদের বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সমাজের থাকা, চলা ও অচল হওয়ার কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত নয়।’
বৈঠকের বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সাধারণ নির্বাচন ও রেফারেন্ডাম যদি একই দিনে হয়, সেখানে কোনো প্রবলেম হবে কি না, জানতে চাওয়া হয়। আমরা বলেছি, আমাদের দেশের মানুষ ততটা এখনো কনশাস (সচেতন) না।
এ জন্য একই দিনে দুটো নির্বাচন হলে দুটি নির্বাচন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে, ভোটার টার্নওভারও কম হতে পারে। এসব কারণ সামনে রেখেই আমরা বলেছিলাম—দুটো নির্বাচন আলাদা আলাদা হওয়া উচিত। সে দাবি এখনো আমাদের আছে। সরকার ইচ্ছা করলে সে দাবি এখনো বাস্তবায়ন করতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তারা (আট দেশের রাষ্ট্রদূতরা) আরো জানতে চেয়েছেন, পিআরের (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) ব্যাপারে আমাদের অবস্থান কী? আমরা বলেছি, পিআর আমাদের দাবি, আমরা এটা জনগণের জন্য করেছি, দলের জন্য নয়। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় গেলে, তখনো পিআর বাস্তবায়নে আন্তরিকতার পরিচয় দেব।’
জামায়াত আমির আরো বলেন, ‘অতীতের যে কালচার, আমরা তো জিতে গেছি এখন আর পিআরের দরকার কী—এটাকে আমরা পাল্টে দিতে চাই। মানুষ এখন অনেক রাজনৈতিক দলের কমিটমেন্টের (প্রতিশ্রুতি) ওপর আস্থা রাখে না। তারা বলে, আপনারা তো কমিটমেন্ট রক্ষা করেন না। এই যে একটা ব্যাড কালচার হয়ে গেছে, এটাকে পাল্টানোর দায়িত্ব কাউকে না কাউকে নিতে হবে, সেই দায়িত্বটা আমরাই নিতে চাই।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আট দেশের রাষ্ট্রদূতরা জানতে চেয়েছেন—সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব কিভাবে হবে, সব মানুষের সিকিউরিটি কিভাবে নিশ্চিত হবে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানটা কিভাবে হবে? যদি আমরা নির্বাচিত হই, তাইলে প্রথমে ১০০ দিনে আমাদের জনগণের প্রতি কী বক্তব্য থাকবে, কী করণীয় থাকবে—এই বিষয়গুলো তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, আমাদের সবকিছুই ফ্রেম করা আছে, আমরা যখন যেটা প্রযোজ্য সেটা সামনে রিলিজ (প্রকাশ) করব।’
জামায়াত আমির বলেন, তারা একটা ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ দেখতে চান। আমরা বলেছি, জনগণের ভালোবাসায় আমরা নির্বাচিত হলে সেই ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ আমরা গড়ব ইনশাআল্লাহ, আমরা কোনো দলকেই বাদ দেব না। আগামী পাঁচ বছরে দেশের স্থিতিশীলতা, ইকোনমি ফিরিয়ে আনা, আইনের শাসন সমাজে কায়েম করা এবং সমাজ থেকে দুর্নীতিকে নির্মূল করার জন্য আমাদের একটি জাতীয় সরকারের প্রয়োজন। আমরা নির্বাচিত হলে সেই সরকারই গঠন করব।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা ইলেকশন (নির্বাচন) পেছানোর কোনো সুযোগ আছে মনে করি না, এবং এটি উচিত নয় মনে করি। আমরা মনে করি, ফেব্রুয়ারির ঘোষিত এই টাইমলাইনের ভেতরে নির্বাচন হওয়াই দেশের জন্য একান্ত প্রয়োজন। এর সামান্য কোনো ব্যত্যয় ঘটলে দেশ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এমকে
রাজনীতি
ঘোষিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে: ড. হেলাল
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত ঢাকা-৮ আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ঘোষিত সময়ের মধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের যেই রোডম্যাপ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে সেই রোডম্যাপেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। কোনভাবেই এর ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। এক ব্যক্তি কিংবা এক দলেল জন্য কোনো কিছু থেমে যায় না, থেকে থাকতে পারে না।
সোমবার (০৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা-৮ আসনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের সমর্থনে পল্টন থেকে মগবাজার এলাকায় প্রচার মিছিল পূর্বক বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে অনুষ্ঠিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ডাকসু. রাকসু, চাকসু, জাগসুতে ভরাডুবির পর একটি দল জাতীয় নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে আতঙ্কে আছে। তারা নির্বাচন পিছিয়ে দিতে নানারকম ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করছে। দাঁড়িপাল্লার প্রতি গণজোয়ার দেখে একটি দল পাগল হয়ে গেছে । তারা এখন পতিত আওয়ামী লীগের ভাষায়, আওয়ামী লীগের ভূমিকায় আবির্ভূত হচ্ছে। তাদের দলীয় কর্মকাণ্ড আর আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মকাণ্ডের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘‘দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিলে দেশ দুর্নীতি- সন্ত্রাস – চাঁদাবাজ মুক্ত হবে”। জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত এক নিরাপদ বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়তে চায়। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ। সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের কালো হাত ভেঙ্গে দিয়ে জনগণের প্রত্যাশিত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। দুর্নীতি-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ মুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী ধর্মের ব্যবসা করে না, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না। ধর্মের ব্যবসা আর ধর্ম নিয়ে তারাই রাজনীতি করে যারা নির্বাচন আসলে মাথায় টুপি লাগিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগায়।
জামায়াতে ইসলামীর জন্য আওয়ামী লীগ ভালো ছিল বিএনপি নেতার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘‘জামায়াতের জন্য নয় যারা নেত্রীর বাসার সামনে থেকে বালুর ট্রাক সরাতে রাস্তায় আসেনি তাদের জন্যই আওয়ামী লীগ ভালো ছিল”। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে যিনি ব্যাংকের মালিক হয়েছেন, নিজের মালিকানাধীন ব্যাংক রক্ষা করেছেন তার জন্যই আওয়ামী লীগ ভালো ছিল। যারা দলের স্বার্থ না দেখে নিজের স্বার্থ দেখেছে তাদের জন্যই আওয়ামী লীগ ভালো ছিল। জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতাকর্মী নিজের স্বার্থ দেখেনি। বরং জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ফাঁসির মঞ্চে গিয়েছে তবুও আধিপত্যবাদের দোসর আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করেনি, আপোষ করেনি।
তিনি আরও বলেন, অতীতে ভোট ডাকাতি করে যারা ঢাকা-৮ আসনের এমপি হয়েছে তাদেরকে ভোট ডাকাতি করতে জনগণ আর সুযোগ দেবে না। ভোট ডাকাতদের জনগণ প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে। তাই ভোট ডাকাতির চিন্তা বাদ দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জনে মনযোগী হতে তিনি রাজনৈতিক পক্ষদ্বয়ের প্রতি আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি (ঢাকা-৮ আসন কমিটির পরিচালক) মুহাম্মদ শামছুর রহমান বলেন, একটি দল আওয়ামী লীগের মতোই পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসতে চায়। তারা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে না পেরে আওয়ামী লীগের মতো অপরাজনীতি চর্চা চেষ্টা করছে। জনগণ এদেশে আর কাউকে হাসিনা হতে দেবে না, আর কাউকে আওয়ামী লীগের ভূমিকায় আবির্ভূত হতে দেবে না।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশের ন্যায় ঢাকা-৮ আসনেও জামায়াতে ইসলামীর দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে মানুষের সমর্থন ও আস্থা বেড়ে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রায় যাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে তাদেরকে প্রতিহিংসার রাজনীতি প্রতিহার করে জামায়াতে ইসলামীকে অনুসরণ করার আহ্বান জানান।
সভা শেষে, নেতৃবৃন্দ এক বিশাল প্রচার মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে পল্টন-বিজয়নগর-কাকরাইল-শান্তিনগর হয়ে মগবাজারের অভিমুখে যাত্রা শুরু করে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খান, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম, মহানগরীর সহকারী প্রচার সম্পাদক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবদুস সাত্তার সুমন, শাহবাগ পূর্ব থানা আমীর আহসান হাবীব, মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা মোতাছিম বিল্লাহ, শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা আমীর মো. সরোয়ার হোসেনসহ ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এমকে
রাজনীতি
সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করছে জামায়াত: এনসিপি
জামায়াতে ইসলামী ধর্মীয় অনুভূতিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সমাজে বিভাজন, ঘৃণা ও সহিংসতার পরিবেশ তৈরি করছে বলে অভিযোগ এনেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দলের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৭ ডিসেম্বর এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে উদ্দেশ করে দেওয়া জামায়াতের বক্তব্যকে ‘অসত্য, মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর’ আখ্যা দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, এনসিপি তা প্রত্যাখ্যান করছে এবং এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও কঠোর প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এনসিপি মনে করে, জামায়াতের এই বিবৃতি বাস্তবতাবিবর্জিত, রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত এবং জনমত বিভ্রান্ত করার স্পষ্ট অপচেষ্টা।
এনসিপি মনে করে, ৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তে তারা পুরোনো সহিংস ও আধিপত্যবাদী রাজনীতির পথে ‘নতুন খেলোয়াড়’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চাচ্ছে। যা দেশের জন্য অশুভ সংকেত।
এনসিপির দাবি, গত ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে ন্যাশনাল প্রফেশনালস অ্যালায়েন্স (এনপিএ)-এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার প্রমাণনির্ভর যে মন্তব্য করেন, তা সম্পূর্ণ তথ্যসম্মত ও দায়িত্বশীল। কারণ ২৭ নভেম্বর পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্বাচনি প্রচারণাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুলি চালানো তুষার মণ্ডল যে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী, তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে এবং অস্ত্র-গুলিসহ তাকে গ্রেফতার করেছে। এমন স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বাস্তবতা অস্বীকার করা সত্য গোপন ও দায় এড়ানোর নিন্দনীয় অপচেষ্টা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
এনসিপি আরও জানায়, সহিংসতা, অস্ত্রনির্ভরতা ও ধর্মের অপব্যবহার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিপন্থি। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল আচরণ অপরিহার্য। জামায়াতকে সত্য, শান্তি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পক্ষে সুস্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এনসিপি।
এমকে
রাজনীতি
নারী জাগরণের আলোক দিশারি বেগম রোকেয়া: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, কঠোর রক্ষণশীল পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন সেই সময়ের অগ্রণী এক অগ্রদূত। নারী জাগরণের একজন আলোক দিশারি।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তিনি তার জীবনের বাস্তবতার মধ্যে উপলব্ধি করেছিলেন সমাজে নারীর পিছিয়ে পড়া। অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন শিক্ষাই নারীর আত্মমর্যাদা। বেগম রোকেয়া নারীশিক্ষার বিস্তারকে বিশিষ্টতা দিয়েছেন ও এর মাধ্যমে ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটানো সম্ভব। বিশেষভাবে পিছিয়ে পড়া এ দেশের মুসলিম নারীসমাজকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য তিনি সর্বপ্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, নারীমুক্তির বাণী বহন করতে গিয়ে বেগম রোকেয়াকে সমাজের গোঁড়া রক্ষণশীলদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন কর্তব্যকর্মে স্থির, অদম্য ও অবিচল। বেগম রোকেয়া তার ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে নারীর প্রতি সমাজের অন্যায় ও বৈষম্যমূলক আচরণের মূলে আঘাত হেনেছিলেন। সংসার, সমাজ ও অর্থনীতিকে জীবনের মর্মস্থলে তিনি স্থাপন করেছিলেন নারীর স্বায়ত্তশাসন ও আত্মমর্যাদা রক্ষা করতে। আর এ জন্য তিনি বিশ্বাস করতেন নারীকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। নারীসমাজকে স্বাবলম্বী করতে তিনি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন, শত কূপমন্ডূকতার বাধা সত্ত্বে। বেগম রোকেয়ার উচ্চারণের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে নারীর সঠিক স্বাধীনতা। তার কর্মময় জীবন ও আদর্শ নারীসমাজকে আরো উদ্যমী ও অনুপ্রাণিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আমি তার অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। বেগম রোকেয়া এ দেশের নারী জাগরণের এক অক্লান্ত পথিকৃৎ। তিনি নারীসমাজের অগ্রগতির জন্য শিক্ষাকে বাস্তব ও অপরিহার্য বলে মনে করতেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন, শিক্ষাই নারীকে স্বমহিমায় অভিষিক্ত করবে। তার দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি ছিল নারীর ভাগ্যোন্নয়ন এবং সে জন্য তাদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার। বেগম রোকেয়ার নারী স্বাধীনতার অর্থ গভীরভাবে বিচারসহ তার জীবন ও আদর্শ বাস্তবায়নই এ দেশের নারীসমাজকে আলোকিত ও আত্মনির্ভরশীল করতে প্রেরণা জোগাবে।
এমকে
রাজনীতি
একটি দল ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করছে: সালাউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, একটি দল বলছে এই মার্কাতে ভোট দিলে তরতরিয়ে জান্নাতে যাওয়া যাবে। ইহকালে কীভাবে চলব তার কোনো বক্তব্য নেই। কোনো নীতি-আদর্শ নেই, পরিকল্পনা নেই, শুধু ধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করে জনগণের সাথে প্রতারণা করছে।
সোমবার সকালে রাজধানীর খামাড়বাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা শীর্ষক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
সালাউদ্দিন বলেন, আমরা ধর্মের ট্যাবলেট বিক্রি করতে চাই না। আমরা চাই জনগণের কল্যাণের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা কী আছে তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। জনগণকে সহজ ভাষায় বিএনপির পরিকল্পনা সম্পর্কে জানাতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যারা বিনা পরিশ্রমে জান্নাতে যেতে চায় তাদের জানতে হবে সেখানে যাওয়ার বাস স্টেশনটা কোথায়। জনগণ এসব বোঝে। যদি আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আগে থেকে পরিকল্পনা প্রণয়ন না করি তাহলে আমরা নিজেরাই ব্যর্থ হওয়ার পরিকল্পনা করছি।
অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জামায়াত ধর্মের নামে ব্যবসা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
সাত দিনব্যাপী বিএনপির এই কর্মসূচির আজ দ্বিতীয় দিন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে, আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে মানুষের মতামত জানবে বিএনপি। যার আলোকে প্রস্তুত হবে দলটির নির্বাচনী ইশতেহার।
দ্বিতীয় সেশনের সমাপনী অনুষ্ঠান প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন তিনি। গতকাল উদ্বোধন করা হয় সাত দিনব্যাপী এই কর্মসূচি। আগামী ১৩ ডিসেম্বর শেষ হবে বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা।
এমকে




