রাজনীতি
ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বিএনপি হতাশ: সালাহউদ্দিন
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বিএনপি হতাশ বলে জানিয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, কমিশন ও সরকারের পদক্ষেপগুলোর সঙ্গে বিএনপির প্রত্যাশা মিলে না।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) হোটেল লেকশোরে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গত ১৭ তারিখ যে দলিল স্বাক্ষর হয়েছে, সেই বিষয়গুলো জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বলা হলো ৪৮টি দফার ওপর গণভোট করা হবে, কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো আলাপ হয়নি। এতদিন কেন এত আলোচনা, এত কসরত করা হলো, তা প্রশ্নবিদ্ধ।
তিনি বলেন, যেগুলো ঐকমত্য হবে, সেগুলো বাস্তবায়ন হবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। জুলাই সনদ যেটা স্বাক্ষর হয়েছে সেটা নেই। আছে কমিশন ও দুই-একটি দল যে প্রস্তাব দিয়েছে। কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা, কিন্তু যা প্রস্তাব এসেছে, তাতে জাতিতে বিভক্তি ও অনৈক্য সৃষ্টি হবে, কোনো ঐকমত্য হবে না। তাদের উদ্দেশ্য আমরা জানি না, তারা কী অর্জন করতে চায় তা আমরা জানি না।
আরপিও এবং জোটের প্রতীক নিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, জোটবদ্ধ যেকোনো রাজনৈতিক দল তাদের স্বাধীনভাবে নিজস্ব প্রতীকে বা জোটের প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে। হঠাৎ করে বলা হলো, জোটবদ্ধ হলেও তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। দেখলাম আরেকটি রাজনৈতিক দল সেটাকে সমর্থন করছে। এটা আমরা আশা করি না।
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, বর্তমান সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা রাখবে, তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা রেখে কাজ করবে বলে আমরা আশা করি। আমরা ঐকমত্য কমিশন এবং সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে হতাশা প্রকাশ করছি।
রাজনীতি
সংসদ নির্বাচনে অংশ নিবে জাতীয় পার্টি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে তা এককভাবে নাকি জোটগতভাবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি দলটি। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির শীর্ষপর্যায়ের একাধিক নেতা জানান বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দলের বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। দলের তৃণমূলের নেতারাও এই সভায় অংশ নেবেন। মঙ্গলবার রাত দশটা পর্যন্ত পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভাটি হতে পারে।
এদিকে, দলের চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি শৌর্য দ্বীপ্ত সূর্য গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, বুধবার বিকাল চারটায় কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। জানা গেছে, ওই সংবাদ সম্মেলনেই নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারে জাতীয় পার্টি। মঙ্গলবার মধ্যরাতে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম পাটোয়ারী বলেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে নমিনেশন সাবমিট করবো।”
এর আগে, সন্ধ্যায় দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের জানিয়েছেন, আপাতত তিনশ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার দলের। তবে নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা কী মতামত দেন, সেটিও দল বিবেচনা করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জাতীয় পার্টির অন্য একটি অংশও নির্বাচনের অংশগ্রহণের বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ নেতৃত্বে তার জাতীয় পার্টি, আনোয়ার হোসেন মুঞ্জুর জেপিসহ ১৮ টি দল মিলে নতুন একটি জোট করেছেন। জোটের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সম্প্রতি এক সভায় তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানান। তবে তিনি মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।ও তা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন তিনি।
জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করছে কিনা, এই প্রশ্নটি এখন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে বিএনপি। এমনকি জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে যেতে সম্মত আছেন, কয়েকটি দলের এমন একাধিক নেতাও জানিয়েছেন, তারা জিএম কাদেরের নেতৃত্বে জোট করতে আগ্রহী। তবে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির নির্বাচনে অংশগ্রহণ কোনদিকে গড়ায় তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ কিছু দল নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। জিএম কাদের বলেন, “নির্বাচনে আমরা এককভাবে করার চিন্তাও আছে। তিনশ আসনে আগে আমরা প্রার্থী নিশ্চিত করতে চাই। জোট হবে কিনা, কারও সঙ্গে যুক্ত হবো কিনা, এগুলো দলীয় ফোরামে আলোচনা হওয়ার পর সিদ্ধান্ত হবে।”
এমকে
রাজনীতি
ইনশাআল্লাহ ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবো: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই বলেছেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমি আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরে যাবো। আপনাদের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর কাজ করেছি।’
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজকে এই অনুষ্ঠানটি প্রথমত দুটি বিষয়—১৬ ডিসেম্বর আমাদের ‘বিজয় দিবস’ এবং একইসঙ্গে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ বছর আপনাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ছিলাম; কিন্তু আগামী ২৫ তারিখে ইনাশাআল্লাহ আমি দেশে চলে যাচ্ছি।’
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, সামনের দিনগুলো খুব সহজ হবে না। ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলে আমরা আমাদের পরিকল্পনাগুলো সফল করতে পারবো এবং আমরা আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।
তিনি বলেন, দুমাস পর দেশে বহুল প্রত্যাশিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা যেমন বিএনপির দায়িত্ব, তেমনি দেশের মানুষের সামনে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তুলে ধরাও তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আমি কোনো স্বপ্নের মধ্যে নেই, আমি আছি পরিকল্পনার মধ্যে।
এমকে
রাজনীতি
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভাজন করা যাবে না: নাহিদ ইসলাম
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভাজন করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা শেষে শাহবাগের সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে ধর্মের নামে ভোট চাওয়া হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের নামে যেমন দেশকে বিভাজন করা যাবে না, তেমন ইসলামের নামেও দেশকে বিভাজন করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধ আমার এবং জুলাইও আমার।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্ন সুরাহা করতে পারি নাই।
এনসিপির এই আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতির মাধ্যমে মুজিববাদ দিয়ে বাংলাদেশকে বিভাজিত করে রেখেছিল। আমরা মনে করি মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম ভিত্তি। পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্র কায়েম করার বারবার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, আমরা ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের বয়ান থেকে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা বের করে নতুন বয়ান প্রতিষ্ঠা করেছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার পর বিষয়টিকে সহজভাবে দেখার আর কোনো উপায় নাই। আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের নিতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণ ছাড়া আমাদের আর কোনো নিরাপত্তা বাহিনী নাই। পুলিশ বাহিনী যদি ব্যর্থ হয়, আমরা পাল্টা আঘাত চালিয়ে যাবো।
নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির এই আহ্বায়ক বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণ চাই।
রাজনীতি
গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য বাসভবন এবং অফিস প্রস্তুত করেছে বিএনপি। রাজধানীর গুলশান এভিনিউর ১৯৬নং বাসাতে উঠবেন তিনি। এই বাসার পাশেই ভাড়া করা বাসা ‘ফিরোজা’য় থাকেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য আলাদা চেম্বারও তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া গুলশানে আরেকটি বাসা ভাড়া নেওয়া হয়েছে, যেটি থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানের ৯০নং সড়কে ১০/সির নতুন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে জাতীয় রিল-মেকিং প্রতিযোগিতা কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন।
আগামী ২৫ ডিসেম্বর টানা ১৭ বছর লন্ডনে নির্বাসিত থাকার পরে ঢাকায় ফিরছেন তারেক রহমান। তার আগমন উপলক্ষে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ২৫ তারিখ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে তাকে নেতাকর্মীরা সংবর্ধনা জানাতে উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের নেতার অপেক্ষা আছে দেশবাসী। সেদিন দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সড়কের দুই পাশে সুশঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাবে। আমরা সেই প্রস্তুতির কাজ করছি।’
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তারেক রহমানকে কীভাবে অভ্যর্থনা দেওয়া হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তারেক রহমানের বাসভবন ঠিক করা হয়েছে গুলশান এভিনিউর ১৯৬নং বাসাটি। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়াকে এই বাড়িটি বরাদ্দ দেয়। কয়েক মাস আগে এই বাড়ির দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রাজউকে চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রিজু। সেই বাড়িতে উঠছেন তারেক। এই বাসার সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাসার সামনে নিরাপত্তা ছাউনি বসানো হয়েছে। সড়কের সামনে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মীরা জানান, এখানে তারেক রহমান সাহেব থাকবেন, সেজন্য এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তারেক রহমানের জন্য গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে চেয়ারপারসনের চেম্বারের পাশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য আলাদা চেম্বার তৈরি করা হয়েছে। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও আলাদা চেম্বার তৈরি করা হয়েছে তার জন্য। কেন্দ্রীয় কার্যালয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আলাদা চেম্বার আছে। এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্যও আরেক চেম্বার করা হলো।
এদিকে গুলশানের ৯০ সড়কের ১০সি বাড়িটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে বিএনপি অফিস হিসেবে। চার তলায় এই ভবনে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এখানে দোতলায় রয়েছে ব্রিফিং রুম। অন্যান্য তলায় বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে গবেষণা সেল।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি। আমরা এখন অধীর আগ্রহে সময় গুনছি কখন আমাদের বহুদলীয় গণতন্ত্রের মানসপুত্র আধুনিক স্বনির্ভর রাষ্ট্র নির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঢাকার মাটিতে পা রাখবেন। সে লক্ষ্যে আপনি যাই বলুন, আমাদের সব প্রস্তুতি তাকেই ঘিরে। ইনশাল্লাহ দেশের মানুষ যেমন প্রত্যাশা করছে, আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের নেতা হারানো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন।’
নতুন অফিস খোলার পরে বিকেলে এই প্রথম সংবাদ সম্মেলনে মাহাদী আমিন বলেন, এটি বিএনপির একটি কার্যালয়। এখান থেকে নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত যে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশে ফিরবেন ইনশাআল্লাহ। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে গণ মানুষের মাঝে রয়েছে তীব্র আবেগ, আকাঙ্ক্ষা ও আগ্রহ। আমাদের নেতা বিশ্বাস করেন, আগামীর বাংলাদেশ গড়তে হলে রাজনীতি এবং আদর্শের ঊর্ধ্বে গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে কাজ করতে হবে। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য আমাদের এ রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য। ইতোমধ্যে বিএনপি প্রণীত দেশ গড়ার পরিকল্পনার শীর্ষক কর্মসূচি নিয়ে ঢাকায় এক সপ্তাহব্যাপী মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা এসেছিলেন। আমাদের তৃণমূলের মানুষের নেতা তারেক রহমান দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, যেহেতু এই বাংলাদেশটা আমাদের সবার ধর্ম-বর্ণ-আদর্শ -দর্শন-রাজনীতির অবস্থান, সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমাদের দল-মত পার্থক্যের ঊর্ধ্বে উঠে এক হয়ে এই দেশটাকে গড়তে হবে, সবাইকে একযোগে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
মাহদী আমিন বলেন, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা একটি জাতীয় রিল মেকিং প্রতিযোগিতা শুরু করতে যাচ্ছি। আমাদের এই আয়োজন শুরু হবে আজ থেকে এবং এই প্রতিযোগিতা চলমান থাকবে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে দেশ এবং বিদেশের সব শ্রেণি এবং পেশার মানুষ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে তাদের নিজ নিজ যে পরিকল্পনা, প্রত্যাশা, ভাবনা-চিন্তা তা প্রত্যেকটি এক মিনিটের রিল ভিডিওর মাধ্যমে অনলাইনে সাবমিট করতে পারবেন। এই রিল হতে পারে ছোট্ট একটা ভিডিও, যেখানে যে কোনো কন্টেন্টের মাধ্যমে প্রত্যেকটা অংশগ্রহণকারী তাদের নিজেদের বক্তব্য, স্যাটায়ার, গান, সংলাপ, ডকুমেন্টারি অ্যানিমেশন কিংবা কয়েকটি ছবি বা আর্টের সমন্বয় সেটি সাবমিট করতে পারবেন। যার মাধ্যমে হতে পারে গঠনমূলক সমালোচনা। হতে পারে নতুন কোনো ভাবনা। হতে পারে সুবিস্তৃত কোনো পরিকল্পনা কিংবা ব্যক্তিগত অভিব্যক্তির বহির্প্রকাশ।
তিনি বলেন, আমার ভাবনায় বাংলাদেশ- এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশ গড়ার মহাপরিকল্পনায় দেশের প্রতিটি মানুষকে সম্পৃক্ত করার সুযোগ করে দেওয়া এবং একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল হিসেবে গণমানুষের যে ভাবনা এবং পরিকল্পনা সেগুলোকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পৃক্ত করা। আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সমান সুযোগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে চিন্তাগুলোকে পৌঁছে দিতে চাই এবং তৃণমূলের সাথে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্বে যদি বিএনপি আসে সেই দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীর একটি আন্তরিকতার এবং সৌহার্দ্যের মেলবন্ধন তৈরি করতে চাই। বাংলাদেশের সব তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতীসহ যে কোনো বয়সের যে কোনো নাগরিক তিনি দেশে থাকুক কিংবা দেশের বাইরে থাকুক যেন নিজের ভাবনাকে সর্বোচ্চ সৃজনশীলতার মাধ্যমে কন্টেন্টরূপে জনসম্মুখে উপস্থাপন করতে পারেন সে সুযোগ আমরা এর মাধ্যমে তৈরি করে দিতে চাই।
তিনি জানান, আমার ভাবনায় বাংলাদেশ- এই কর্মসূচির সবচাইতে বড় চমক হচ্ছে, যারা বিজয়ী হবেন মেধাভিত্তিক সেই বিজয়ের মাধ্যমে আমাদের শীর্ষ ১০ জনকে আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একান্ত আলাপচারিতার সুযোগ দিব।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, জিয়া উদ্দিন হায়দার, চেয়ারপারসনের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য সাইমুম পারভেজ এবং মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
আ.লীগ ৫০ প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে: রাশেদ খান
আওয়ামী লীগ একটি মিশন নিয়েছে—প্রায় ৫০ জন প্রার্থীকে হত্যা করবে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। তিনি বলেন, তাদের এই মিশনের অংশ হিসেবে আমাদের বিপ্লবী যোদ্ধা ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ওসমান হাদি ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুলি চালানো হয়েছে। অথচ এখনো সেই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে মহান বিজয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যের সমালোচনা করে রাশেদ খান আরও বলেন, ‘৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার আগে প্রশ্ন আসে—তাহলে গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ, র্যাব ও যৌথ বাহিনী কী করছে?’
তিনি বলেন, এর আগে অপারেশন ডেভিল হান্ট ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার ফ্যাসিবাদের দোসর যারা সরকার, উপদেষ্টা পরিষদ ও বিভিন্ন বাহিনীতে রয়েছে, তাদের ধরতে অপারেশন ডেভিল হান্ট-২ ঘোষণা করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, সরকার সংস্কারের কথা বলে ক্ষমতায় এসে বাস্তবে সেই সংস্কার দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং গত ১৬ মাসে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনই দৃশ্যমান হয়েছে। এর ফলেই আজ দেশে গুপ্তহত্যা ও অস্থিতিশীলতা বাড়ছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় এই সরকারের অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও উপদেষ্টাদের মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। সরকার সবসময় বলেছে, তারা রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার করবে, একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তুলবে—যা হবে আমেরিকা ও ইউরোপের মতো আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা; কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন জনগণ দেখেনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১৬ মাসে আমরা দেখেছি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে তাদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ার ফলেই তাদের দুর্বৃত্তরা আজ গুপ্তহত্যায় নেমেছে।
গণ অধিকার পরিষদের এ নেতা আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য—সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার—তা আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। মুক্তিযোদ্ধারাও যে ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর স্বপ্ন দেখেছিলেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেই বাংলাদেশ আমরা গড়তে পারিনি।’
আওয়ামী লীগকে সরাসরি অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, ‘যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দাবি করে, তারাই গণতন্ত্র হত্যা করেছে। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’
রাশেদ খান বলেন, ‘এ কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। ওই অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছে। নির্বিচারে গুলি করে শিশু, বৃদ্ধ, তরুণ এমনকি মা-বোনদের হত্যা করা হয়েছে। আমরা আর সেই অন্ধকার সময়ে ফিরে যেতে চাই না।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘এই নির্বাচন অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ফ্যাসিবাদমুক্ত হতে হবে। সরকার যদি জাতিকে এমন একটি নির্বাচন উপহার দিতে পারে, তবেই নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথ সুগম হবে।’
এ সময় গণঅধিকার পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।




