আন্তর্জাতিক
তিন হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিলো ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ৩ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার এই কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় কারাগার দপ্তরের জনসংযোগ বিভাগ।
দু’টি ব্যাচে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এই কারাবন্দিদের। প্রথম ব্যাচটি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলের রাজধানী রামাল্লার পশ্চিমাংশে ইসরায়েলের মালিকানাধীন ‘ওফের’ কারাগারের। এই ব্যাচে কারবন্দিদের সংখ্যা ছিল প্রায় ২ হাজার।
গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের জনসংযোগ দপ্তর জানিয়েছে সোমবার স্থানীয় সময় দুপরের দিকে বেশ কয়েকটি বাসে চেপে ওফের কারাগার থেকে পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া শহরে এসে পৌঁছেছেন এই কারাবন্দিরা। কারাবন্দিদের জন্য বাস সরবরাহ করেছে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (আইসিআরসি)।
এদিকে প্রথম ব্যাচটি পশ্চিম তীরে যাওয়ার কাছকাছি সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার খান ইউনিস শহরে এসে পৌঁছান দ্বিতীয় ব্যাচের ১ হাজার ৭ ১৮ ফিলিস্তিনি কারাবন্দি। দক্ষিণ ইসরায়েলের নাগেভ কারাগারে ছিলেন তারা।
ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় কারা দপ্তরের বিবৃতিতে নাগেভ-এর কারাবন্দিদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, “২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর সেখান থেকে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে থেকে ১ হাজার ৭১৮ জনকে মুক্তি দেওয়া হলো। এই কয়েদিদের মধ্যে ২৫০ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন।
গাজায় যেসব কারাবন্দি এসে পৌঁছেছেন, তাদের সবাইকে প্রাথমিক মেডিকেল পরীক্ষা করেছে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসার মেডিকেল কমপ্লেক্স।
কারাবন্দিদের স্বাগত জানাতে পশ্চিম তীরের বেইতুনিয়া ও গাজার খান ইউনিসে জড়ো হয়েছিলেন শত শত ফিলিস্তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় প্রায় ১ হাজার হামাস যোদ্ধা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় যোদ্ধারা। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর ইসরায়েলের ইতিহাসে ৭ অক্টোবরের হামলা ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।
হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের উদ্ধারে পরদিন ৮ অক্টোবর থেকেই গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ভয়াবহ সেই সামরিক অভিযানে ২ বছরে গাজায় নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার।
গত দুই বছরে বেশ কয়েকবার এই যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা চলেছে। সেসব চেষ্টার অংশ হিসেবে কয়েক দফা অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিও ঘোষণা করে ইসরায়েল। সেসব যুদ্ধবিরতির সময় বেশ কিছু জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলও কারাগার থেকে কয়েক শ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে।
শেষ পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন জিম্মি আটক ছিল হামাসের হাতে। তবে গোষ্ঠীটি আগেই জানিয়েছিল, কাগজে-কলমে ৪০ জন থাকলেও এই জিম্মিদের মধ্যে বর্তমানে জীবিত আছেন ২০ জন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব আকারে পেশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েল ও হামাস উভয়ে সেই পরিকল্পনায় সম্মতি জানানোর পর গত শুক্রবার থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয় গাজায়।
যুদ্ধবিরতির তৃতীয় দিন সোমাবার অবশিষ্ট ২০ ইসরায়েলি জিম্মির সবাইকে মুক্তি দেয় হামাস। এই জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়েই ৩ হাজার ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিলো ইসরায়েল।
মুক্তি পাওয়া এসব কয়েদিদের মধ্যে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামি নেই। ইসরায়েল আগেই জানিয়েছিল, মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত কোনো ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে না। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি।
আন্তর্জাতিক
তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকে অভিবাসন স্থায়ীভাবে স্থগিত করা হবে: ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ‘তৃতীয় বিশ্বের দেশ’ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থগিত করার পরিকল্পনা করছেন। তবে তিনি তৃতীয় বিশ্বের দেশ বলে কাদের বুঝিয়েছেন, সেটি পরিষ্কার করেননি।
ওয়াশিংটনে একজন আফগান নাগরিক দুজন ন্যাশনাল গার্ড সেনাকে গুলি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠার এক দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাম্প এ ঘোষণা দিলেন।
ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থা পুরোপুরি স্থিতিশীল করার সুযোগ করে দিতে আমি তৃতীয় বিশ্বের সব দেশ থেকে অভিবাসন স্থায়ীভাবে স্থগিত করব।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হুমকি দিয়ে আরও লিখেছেন, তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের আমলে দেওয়া ‘লাখ লাখ’ অভিবাসনের অনুমোদন বাতিল করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রকৃত সম্পদ নন, এমন যে কাউকে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, ১৯টি দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা নাগরিকদের গ্রিনকার্ড পর্যালোচনা করে দেখা দেখা হবে।
মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন পরিষেবা বিভাগের (ইউএসসিআইএস) প্রধান জোসেফ এডলো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ঝুঁকিপূর্ণ বা উদ্বেগের তালিকায় থাকা ১৯টি দেশ থেকে আসা প্রত্যেক নাগরিকের গ্রিনকার্ড কঠোরভাবে পর্যালোচনা করতে তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
হংকংয়ে বহুতল ভবনে আগুনে নিহত বেড়ে ৪৪, নিখোঁজ ২৭৯
হংকংয়ের উত্তরাঞ্চলীয় তাই পো এলাকায় পাশাপাশি অবস্থিত কয়েকটি বহুতল আবাসিক ভবনে লাগা ভয়াবহ আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন ৪৫ জন। এছাড়া এখনও নিখোঁজ আছেন ২৭৯ জন। আগুনের সুনির্দিষ্ট কারণও জানা যায়নি এখন পর্যন্ত।
এদিকে, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ‘হত্যার’ অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুজন একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও একজন প্রকৌশল পরামর্শক।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) নিজেদের সবশেষ আপডেটে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো তদন্তাধীন হলেও পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে সংস্কার কাজ চলছিল ও জানালাগুলোতে পলিস্টাইরিন বোর্ড লাগানো ছিল। এগুলোই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলেন, আগুন অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পাশের ভবনগুলোতেও পৌঁছে যায়, যার একটি কারণ বাঁশের স্ক্যাফোল্ডিং (অস্থায়ী কাঠামো যা শ্রমিক ও উপকরণকে উঁচু স্থানে কাজ করতে সহায়তা করে।) তদন্তে পুলিশ ভবনের বাইরে জাল ও সুরক্ষা সামগ্রী পেয়েছে, যেগুলো আগুন নিরোধক বলে মনে হয়নি। এছাড়া জানালাগুলোতে স্টাইরোফোমও পাওয়া গেছে।
ঘটনার পরের দিন সকালেও টাওয়ার ব্লকগুলোর কিছু অংশ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। আটটি ভবনের মধ্যে চারটির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দমকল বিভাগ জানিয়েছে, পুরো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পুরো দিন লেগে যাবে।
এরই মধ্যে শত শত বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়ে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। যারা পুনর্বাসনের প্রয়োজন, তাদের জন্য জরুরি আবাসন বরাদ্দ করা হচ্ছে।
হংকং ফায়ার ডিপার্টমেন্ট আগুনটিকে লেভেল-ফাইভ অ্যালার্ম হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে, যা সর্বোচ্চ সতর্কতার স্তর। হংকংয়ে সর্বশেষ এমন শ্রেণির অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল ১৭ বছর আগে। ১৯৯৬ সালে হংকংয়ের কোউলুন এলাকায় একটি বাণিজ্যিক ভবনে আগুন লেগে ৪১ জন নিহত হন। গতকালের ঘটনার আগে এটিই ছিল শহরটির সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।
স্থানীয় পুলিশের মুখপাত্র জানান, আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে, নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা চরম অবহেলা করেছেন। তাদের অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে ও আগুন নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে।
এমকে
আন্তর্জাতিক
শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পর্যালোচনা করা হচ্ছে: ভারত
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে ঢাকার করা অনুরোধ পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারত। বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে ভারত।
জয়সওয়াল বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশের কাছ থেকে নতুন করে একটি অনুরোধ এসেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর এই অনুরোধ পাঠানো হয়েছে।
শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ভারতে অবস্থান করছেন। গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা নেতৃত্বাধীন তুমুল আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তিনি।
তখন থেকে দেশটির অজ্ঞাত স্থানে অবস্থান করা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দুই দফায় ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এবারই প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাওয়ার তথ্য স্বীকার করেছে দিল্লি।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, আমরা একটি অনুরোধ পেয়েছি। এই অনুরোধটি চলমান বিচারিক ও অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ—বিশেষ করে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং এ বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যোগাযোগ চালিয়ে যাবো।’’
গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনকারীদের হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর চলতি মাসে তাকে ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে দিল্লির কাছে প্রথমবারের মতো একই ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশের পাঠানো চিঠি চলমান বিচারিক ও আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ভারতে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জয়সওয়াল। সূত্র: রয়টার্স, দ্য স্টেটসম্যান।
এমকে
আন্তর্জাতিক
ভূমিকম্পে সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশে যেতে ভিসা লাগে না বাংলাদেশিদের
ভূমিকম্পে সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশে যেতে ভিসা লাগে না বাংলাদেশিদের। বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নিঃসন্দেহে এটি এক দারুণ খবর! কিন্তু কোথায় সেই দেশ? উত্তর হলো, দক্ষিণ আমেরিকার বাহামা দ্বীপপুঞ্জ।
ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাসের হিসাবে, ভূমিকম্পের সবচেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে চাদ, নাইজার, বাহামা, আইভরি কোস্ট, বুরকিনা ফাসো, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, লাটভিয়া, আয়ারল্যান্ড ও উরুগুয়ে। এই দেশগুলো প্রধান ভূমিকম্পের ফল্টলাইন থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হওয়ায় সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে ভূমিকম্প হয় না।
বাহামায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি কেন কম?
বাহামা ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত। দেশটির নিকটতম প্রধান ফল্ট লাইন– উত্তর আমেরিকান ও ক্যারিবীয় টেকটোনিক প্লেটের সীমান্ত প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দূরে। ফলে বাহামায় ভূমিকম্প খুবই বিরল। তবে ওই ফল্ট লাইন ক্যারিবীয় অন্যান্য দেশে ভূমিকম্প সৃষ্টি করলে তার প্রভাব কিছু ক্ষেত্রে দূরবর্তী অঞ্চল হিসেবে বাহামাতেও অনুভূত হতে পারে।
পাসপোর্ট ইনডেক্সের তথ্যমতে, বাংলাদেশের নাগরিকরা বর্তমানে মাত্র ১৫টি দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার পান। সেগুলো হলো বাহামা, বার্বাডোজ, ভুটান, ডমিনিকা, ফিজি, গাম্বিয়া, গ্রেনাডা, হাইতি, জ্যামাইকা, কিরিবাতি, মাইক্রোনেশিয়া, রুয়ান্ডা, সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডাইনস, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো এবং ভানুয়াতু।
বাহামার ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ভিসা নিয়ন্ত্রণ চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য বাহামিয়ান ভিসার প্রয়োজনীয়তা মওকুফ করা হয়েছে। বাংলাদেশিরা বাহামায় পর্যটক হিসেবে তিন মাস বা কিছু ক্ষেত্রে আট মাস পর্যন্ত থাকতে পারবেন।
বাহামায় যেতে কী কী কাগজপত্র লাগে?
বাহামার আইন অনুযায়ী, কেউ যদি বাহামার নাগরিক বা বসবাসের অনুমতিপ্রাপ্ত না হন এবং তার দেশের সঙ্গে বাহামার ভিসা নিয়ন্ত্রণ চুক্তি না থাকে, তবে তাকে দেশটিতে প্রবেশের সময় নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—
ফেরার টিকিট থাকতে হবে বা বাহামা ছাড়ার নিশ্চিত ব্যবস্থা থাকতে হবে।
বাহামায় থেকে কোনো ধরনের কাজ বা আয়ের উদ্দেশ্যে থাকতে পারবেন না।
ভ্রমণের সময় নিজের খরচ চালানোর মতো পর্যাপ্ত অর্থ থাকতে হবে, অথবা সেখানে কোনো স্থানীয় স্পন্সরকে উল্লেখ করতে হবে যিনি খরচ বহন করবেন।
পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে। শুধু পাসপোর্ট কার্ড হলে গ্রহণযোগ্য নয়।
বাহামাস ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের একটি সম্পূর্ণ ডিসএমবার্কেশন কার্ড পূরণ করতে হবে।
যারা নৌপথে বাহামায় যাবেন, তাদের জন্য ‘ইনওয়ার্ড প্যাসেঞ্জার অ্যান্ড ক্রু ম্যানিফেস্ট’ ফরম পূরণ করতে হবে।
সতর্কতা
মনে রাখতে হবে— শুধু এই শর্তগুলো পূরণ করলেই প্রবেশের অনুমতি নিশ্চিত নয়। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রবেশের অনুমতি না-ও দিতে পারেন।
ভ্রমণের আগে সবসময় বাহামা ইমিগ্রেশন বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সর্বশেষ নিয়মাবলি দেখে নেওয়া উচিত, কারণ ভিসার নিয়ম পরিবর্তন হতে পারে।
ভূমিকম্প না হলেও অন্য দুর্যোগের ঝুঁকি
বাহামায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি কম হলেও দেশটি উপকূলীয় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত। নিম্নভূমি এবং উপকূলসংলগ্ন অঞ্চলগুলোর অবস্থান ও ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সামুদ্রিক ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও উপকূলীয় বন্যা বাহামায় বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
এছাড়া ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলোর নিকটবর্তী অবস্থানের কারণে বাহামায় সুনামির মধ্যমস্তরের ঝুঁকিও রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির নিম্নভূমি অঞ্চলে সুনামির প্রভাব মারাত্মক হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র: ওয়ার্ল্ড অ্যাটলাস, বাহামাস ইমিগ্রেশন, পাসপোর্ট ইনডেক্স।
এমকে
আন্তর্জাতিক
এশিয়ার দুই দেশে আবারও শক্তিশালী ভূমিকম্প
একই দিনে ফিলিপাইন ও জাপানে প্রায় ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে জাপানে দুই দফায় ভূকম্পনের খবর পাওয়া গেছে। যদিও এই ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস-এর বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দক্ষিণ ফিলিপাইনে এই ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৯।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশটির দক্ষিণ মিন্দানাও দ্বীপের জলসীমার কাছে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার (প্রায় ৬.২ মাইল)।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জাপান টাইমস-এর বরাত দিয়ে জানা গেছে, জাপানে একই দিনে দুইবার তুলনামূলক শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
মঙ্গলবার ভোরে জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ কিউশুতে ৫.৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। একই দিন সন্ধ্যা ৬টা ০১ মিনিটে কুমামোটো প্রিফেকচারে ৫.৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
এই ভূকম্পনটি জাপানের ১০ পয়েন্ট ভূমিকম্পের তীব্রতার স্কেলে চতুর্থ সর্বোচ্চ স্তরের ছিল এবং এটির উৎপত্তি হয়েছিল ৯ কিলোমিটার গভীরে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়েছে, আগামী সপ্তাহ বা কাছাকাছি সময়ে একই মাত্রার ভূমিকম্পের জন্য যেন সবাই প্রস্তুত থাকে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, জাপান টাইমস।
এমকে



