জাতীয়
ওসমান হাদির মৃত্যুতে আজ রাষ্ট্রীয় শোক
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দেন। ওইদিন রাতেই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা, প্রতিবাদী তারুণ্যের প্রতীক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। তার মৃত্যুতে অন্তর্বর্তী সরকার গভীরভাবে শোকাহত। সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, তার মৃত্যুতে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হবে।
রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালনের কর্মসূচি হিসাবে শনিবার বাংলাদেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
ওসমান হাদির রুহের মাগফেরাতের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) মসজিদগুলোতে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও তার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওসমান হাদি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করে দুর্বৃত্তরা। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় তার লাশ দেশে আনা হয়।
শনিবার বেলা দুইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ওসমান হাদির জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হবে।
জাতীয়
সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান এ কে খন্দকার মারা গেছেন
মহান মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ ও সাবেক বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার, বীর উত্তম মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ কে খন্দকার ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে পিএএফ (পাকিস্তান বিমানবাহিনী) থেকে কমিশন (পাইলট অফিসার পদ) লাভ করেন। তিনি ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ফাইটার পাইলট হিসেবে কাজ করেন ও পরে ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর হয়ে ওঠেন।
তিনি পাকিস্তান এয়ার ফোর্স একাডেমিতে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর স্কুলে তিনি ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত ফ্লাইট কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে জেট ফাইটার কনভারশন স্কোয়াড্রনে তিনি ফ্লাইট কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৬০ সাল পর্যন্ত।
এ কে খন্দকার ১৯৬১ সাল পর্যন্ত স্কোয়াড্রন কমান্ডার হিসেবে কাজ করেন পিএএফ একাডেমিতে। পরে জেট ফাইটার কনভারশন স্কোয়াড্রনে তিনি স্কোয়াড্রন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত। ট্রেনিং উইংয়ের অফিসার কমান্ডিং হিসেবে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত তিনি পিএএফ একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করেন। পিএএফ প্ল্যানিং বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ১৯৬৯ সালের আগ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। পরে তিনি সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পিএএফ বেইসের দায়িত্ব পান ঢাকায় ১৯৬৯ সালে।
জাতীয়
উসকানিমূলক কনটেন্ট সরাতে মেটাকে সরকারের চিঠি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংসতা উসকে দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা এবং সংবাদমাধ্যমের ওপর হামলায় উসকানি দেওয়া কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মেটাকে চিঠি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) মেটাকে এ চিঠি দেয়। একই সঙ্গে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সংক্রান্ত কনটেন্টগুলোর ওপর বিশেষ নজরদারি জারি রাখতে মেটাকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে থাকা বাংলাদেশে মেটার প্ল্যাটফর্মগুলোকে সহিংসতা উসকে দিতে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা বাস্তব জীবনের সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। এর ফলে উত্তেজনা ভয়াবহভাবে বেড়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি ফেসবুকে প্রকাশ্যে ওসমান হাদির মৃত্যুকে সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যরা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছেন। এসব বক্তব্য ছড়ানোর পর প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর মারাত্মক হুমকি তৈরি হয়।
সরকার ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বারবার অনুরোধ জানানো হলেও সহিংসতা উসকে দেওয়া অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করতে মেটা সহযোগিতা করেনি বলেও চিঠিতে অভিযোগ করা হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ফেসবুকের মাধ্যমে উসকে দেওয়া সহিংসতার সঙ্গে নাগরিকদের জীবন, গণতান্ত্রিক অধিকার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও দেশের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা গভীরভাবে যুক্ত। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় কয়েকটি বিষয়ে মেটাকে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে চিঠিতে।
সেসবের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সংক্রান্ত কনটেন্টের ক্ষেত্রে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড আরও কঠোর, দ্রুত ও প্রেক্ষাপট সংবেদনশীলভাবে প্রয়োগ করা, বাংলা ভাষাভিত্তিক কনটেন্ট মডারেশন করা, অনুভূতি বিশ্লেষণ ও প্রাসঙ্গিক পর্যালোচনা জোরদার করা এবং সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা সংগঠিত ক্ষতির আহ্বান জানানো কনটেন্টের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি শনিবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে সন্ত্রাস ও সহিংসতার আহ্বান সম্বলিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের বিষয়ে সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপ ও ই-মেইলে রিপোর্ট করার আহ্বান জানিয়েছে।
হোয়াটসঅ্যাপে ও ইমেইলে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পর বিটিআরসির মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মগুলোতে রিপোর্ট করবে।
তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানায়, সরকার সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো পোস্ট ডাউন করতে পারে না। শুধু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরে সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত পোস্টগুলো সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মের কাছে রিপোর্ট করতে পারে।
যে মোবাইল ফোন নম্বর ও ইমেইলে রিপোর্ট করা যাবে: হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার 01308332592, মেইল notify@ncsa.gov.bd।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, হেট স্পিচ, যা সরাসরি সহিংসতা ঘটায় কিংবা সহিংসতার ডাক দেয়- সেটা জাতীয় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ মতে দণ্ডনীয় অপরাধ।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি সোশ্যাল মিডিয়াকে সহিংসতা কিংবা ভায়োলেন্স তৈরির টুল হিসেবে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি দেশ, নাগরিকের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন হতে জনসাধারণকে আহ্বান জানাচ্ছে।
জাতীয়
হাদির মরদেহ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়, লাখো মানুষের ঢল
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জুলাই বিপ্লবী শহিদ ওসমান হাদির জানাজার নামাজে জন্য মরদেহ নেয়া হয়েছে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দরোগ ইনস্টিটিউট থেকে সহযোদ্ধা ও সমর্থকদের অংশগ্রহণে মিছিলসহ ওসমান হাদির মরদেহ নিয়ে আসা হয় সেখানে।
এদেক সকালে শহিদ ওসমান হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। পরে তার মরদেহ আবারও নেয়া হয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে। সেখানে গোসল শেষে সহযোদ্ধা ও সমর্থকদের অংশগ্রহণে মিছিলসহ মরদেহ নিয়ে নিয়ে আসা হয় মানিক মিয়া অ্যঅভিনিউ জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। এরপর দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে বলা হয়েছে, পরিবারের দাবির ভিত্তিতে শহিদ ওসমান হাদিকে কবি নজরুলের পাশে সমাহিত করার এবং মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বাদ জোহর জানাজার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
শহিদ ওসমান হাদির জানাজার নামাজ পড়াবেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শহিদ ওসমান হাদির জানাজার নামাজ পড়াবেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। দাফন হবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশেই।
বিপ্লবী শহিদ ওসমান হাদির জানাজার নামাজে অংশ নিতে জাতীয় সংসদ সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জড়ো হচ্ছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। একের পর এক মিছিল নিয়ে জানাজার স্থানে প্রবেশ করছেন ছাত্র-জনতা।
শনিবার সকাল থেকেই আসতে শুরু করেন মানুষ। বেলা ১২টায় দেখা যায়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর ফার্মগেট, বিজয়স্মরণী, আসাদগেটসহ আসপাশের এলাকায় মানুষে ভরে গেছে। ‘আমরা সবাই হাদি হবো যুগে যুগে লড়ে যাবো’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ইত্যাদি স্লোগানও শোনা যাচ্ছে।
গত ১২ ডিসেম্বর গণসংযোগের জন্য রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাদি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শহীদ হাদির মরদেহ চাঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাদির মরদেহ বহনকারী ফ্লাইটটি অবতরণ করে।
জাতীয়
হাদিকে বিদায় জানাতে জনস্রোত, আছেন নারী-শিশুরাও
চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা, দেশে–বিদেশের মানুষের দোয়া— সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে চলে গেছেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি। আজ হাদির জানাজায় অংশ নিতে নানা বয়সের মানুষ আসছেন রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে। যেন বাঁধভাঙা স্রোতে ঢেউয়ে মিলিত হচ্ছে জানাজাস্থলে। ছোট ছোট বাচ্চারা এসেছেন বাবার সঙ্গে, স্বজনদের সঙ্গে এসেছেন নারীরাও।
জানাজায় আগত নারীদের সংখ্যা তুলনামূলক কম দেখা হলেও যারা এসেছেন, তারা বলছেন, হাদিকে শেষ বিদায় জানাতে এখানে পুরুষের পাশাপাশি তারাও একাত্ম হতে এসেছেন।
জনসমুদ্রে বয়স্কদের তুলনায় তরুণদের উপস্থিতি অনেক বেশি লক্ষকরা যাচ্ছে। তাদের মুখে হাদিকে নিয়ে নানা স্লোগান শোনা যাচ্ছে। ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, ‘তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি’, হাদির রক্ত, বৃথা যেতে দেব না, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘হাদির খুনিদের ঠাই, এই বাংলায় হবে না’, ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘হাদি এখন কবরে, খুনি কেন ভারতে’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’…।
দুপুর দুইটায় জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকে দলে মানুষ আসছেন মানিক মিয়া এভিনিউতে। ঢাকার মানুষের পাশাপাশি আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ আসছেন। প্রতিটি গেট দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে তারা জানাজাস্থলে পৃরবেশ করছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রয়োজন হলে চেক করে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন।
অনেকে কালো ব্যাচ কিনছেন হাদির মৃত্যুতে শোক জানাতে, অনেকে কিনছেন জাতীয় পতাকা হাদির দেশপ্রেমে একাত্মতা প্রকাশ করতে।
জাতীয়
হাদির জানাজায় অংশ নিতে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় লাখো মানুষের ঢল
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান হাদির নামাজে জানাজায় অংশ নিতে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। খামারবাড়ি থেকে আসাদ গেট পর্যন্ত পুরো এলাকা এখন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। হাতে জাতীয় পতাকা আর মুখে স্লোগান নিয়ে আসা এই বিশাল জনস্রোত সামাল দিতে এবং ১৬টি প্রবেশপথ দিয়ে মানুষকে ভেতরে ঢোকাতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জানাজার সময় যত ঘনিয়ে আসছে, মানুষের উপস্থিতি ততই বাড়ছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ শরীফ ওসমান হাদীর জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ধানমন্ডি থেকে জানাজায় অংশ নিতে এসেছেন এনামুর রহমান। তিনি বলেন, এতো মানুষ জীবনে দেখিনি।
সারিতে দাঁড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী বাংলাদেশি এসএম নজরুল ইসলাম বলেন, হাদির মতো একজন মানুষ হাজার বছরে একবার জন্ম নেয়। এমন মানুষের জন্য দুই-তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ানো সৌভাগ্যে বিষয়। সারাদিন দাঁড়ানো লাগলেও আমরা অপেক্ষা করতে প্রস্তুত। আমার ইচ্ছে ছিল হাদি ভাই সুস্থ হয়ে ফিরলে তার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করবো। এখন সেই সুযোগ পাচ্ছি না, এটিই আমার দুঃখ।




