রাজনীতি
দাড়ি-টুপিকে রাজাকারের প্রতীক বানানো প্রতিহত করুন: হেফাজতে ইসলাম
দাড়ি-টুপিকে ইসলামের বিধান উল্লেখ করে এগুলোকে রাজাকারের প্রতীক বানিয়ে ঘৃণা চর্চার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সংগঠনের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।
আজিজুল হক বলেন, বিজয় দিবসকে উপলক্ষ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ইসলামের বিধান ও মুসলমানদের প্রতীক দাড়ি-টুপিকে রাজাকারের প্রতীক বানিয়ে ঘৃণার চর্চা আবারও শুরু হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জাতিকে বিভাজনকারী এই ঘৃণাজীবীদের প্রতিহত করুন। পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে মুসলমানি পরিচয় ও নাম-নিশানাকে ঘৃণার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ইসলাম নির্মূলের রাজনীতি করা হয়েছিল। জুলাই বিপ্লবীরা শান্তি ও সহাবস্থানের পথ বেছে নেওয়ার সুযোগে হিন্দুত্ববাদী ও কালচারাল ফ্যাসিস্ট বাম সেকুলাররা আবারও উৎপাত শুরু করেছে। ফের বিভাজন তৈরি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত করলে আমরা চুপচাপ বসে থাকবো না।
‘আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, কথিত ‘রাজাকার’ বয়ান ধসে যাওয়ায় ভারতের হুকুমবরদার ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ঘটেছিল। ভারতীয় বয়ানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রত্যাখ্যান করেছে জুলাইয়ের নতুন বিপ্লবী প্রজন্ম। একাত্তরের মহান জনযুদ্ধকে আধিপত্যবাদী শক্তির হাতে যারা তুলে দিয়েছিল, তারা ক্ষমতার স্বার্থে স্ব-জাতির সঙ্গে বেঈমানি করেছে। ফলে ভারতের ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাহুল গান্ধীসহ দেশটির শীর্ষ রাজনীতিকরা আজ আমাদের বিজয় দিবস ছিনতাই করার স্পর্ধা দেখাতে পারছেন। একাত্তরে আমাদের রক্তাক্ত জনযুদ্ধ ও বিজয় একান্তই আমাদের,’ যোগ করেন হেফাজতের যুগ্ম-মহাসচিব।
আজিজুল হক বলেন, ভারতীয় বয়ানে ‘মুক্তিযুদ্ধ’র প্রচারকরা মূলত ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের দালাল। তারা একাত্তরকে ব্লাসফেমিতে পরিণত করেছে। এমনকি কোনো বিতর্কিত তথ্য বা সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন তোলা যাবে না! একাত্তরের জনযুদ্ধ কারও একার পিতার সম্পত্তি নয়। সাতচল্লিশের উত্তরসুরি একাত্তর, যেভাবে একাত্তরের উত্তরসুরি চব্বিশ। সাতচল্লিশ, একাত্তর ও চব্বিশ- আমাদের আজাদির সিলসিলা। কোনোটিকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। আমাদের এখন বরং সত্য ইতিহাস চর্চা করতে হবে। যুগ যুগ ধরে চলমান ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী প্রপাগান্ডা মোকাবিলা করতে হবে।
‘স্বাধীনতাযুদ্ধের লিখিত ইতিহাস প্রায় ৯০ ভাগই মিথ্যা’ বলে বদরুদ্দীন উমরের বক্তব্য টেনে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এ বিজয়ের মাসে আমরা একাত্তরের জনযুদ্ধ ও বিজয় নিয়ে নির্মোহ ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে বিদগ্ধ ইতিহাসবিদদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’
রাজনীতি
হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ৬ দফা দাবিতে ১৮ ছাত্রসংগঠনের ঐক্যবদ্ধ বিবৃতি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ৬ দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ বিবৃতি দিয়েছে ছাত্রশিবিরসহ ১৮টি ছাত্রসংগঠন। আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশকে নিয়ে আজ বহুমুখী ষড়যন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ববিরোধী অপতৎপরতা চলছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হলেন এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার ও বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা দেশের রাজনীতিতে বিভাজন ও নিজেদের পুনর্বাসনের নীলনকশা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই জুলাই যোদ্ধা ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীন কণ্ঠস্বর শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার জঘন্য অপচেষ্টা করে। রাজধানীতে প্রকাশ্য দিবালোকে সংঘটিত এই সশস্ত্র হামলা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, গণহত্যাকারী পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি পরিকল্পিতভাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বকে টার্গেট কিলিং মিশনে নেমেছে।
৬ দফা দাবি হলো-
শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলায় জড়িত সকল সন্ত্রাসীকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে। ভারতীয় প্রক্সি ফ্যাসিস্ট শক্তির মূল হোতা খুনি শেখ হাসিনাসহ সকল অপরাধীকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ফ্যাসিস্ট শক্তির আর্থিক উৎসের সঙ্গে যুক্ত সকল ব্যবসায়ীর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। প্রশাসন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা ও গণমাধ্যমে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও জনজীবনের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাই যোদ্ধা ওসমান বিন হাদিকে পরিকল্পিত হত্যাচেষ্টা প্রমাণ করে, পতিত ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী কার্যক্রম এখনো সক্রিয় রয়েছে এবং গণহত্যাকারী আধিপত্যবাদী শক্তি ভারতের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠিত হচ্ছে। ভারতে অবস্থানরত পতিত ফ্যাসিস্ট গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার দোসররা এখন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের টার্গেট বানিয়েছে। মুজিববাদ, ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ ও অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে যারা দৃপ্ত কণ্ঠে কথা বলছে-তাদের কণ্ঠ স্তব্ধ করাই এই ষড়যন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য।
বিবৃতে নেতারা বলেন, ‘আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি-এই হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী ঘটনা নয়; বরং এটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও নেতৃত্ব ধ্বংস করে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির রাজনৈতিক পুনর্বাসনের সুসংগঠিত অপারেশন। এই বর্বর হামলা প্রমাণ করে, গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তি এখনো সক্রিয় রয়েছে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় তারা পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে। ভারতে অবস্থানরত গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা এখন পরিকল্পিতভাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের টার্গেট করছে।
একজন বিপ্লবী যোদ্ধা ও সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর এই হামলা রাষ্ট্রের নিরাপত্তাহীনতা এবং ভঙ্গুর আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো- হত্যাচেষ্টার ৫ দিন অতিক্রান্ত হলেও হামলার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান ও কার্যকর অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি। অপরদিকে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরাসরি গণহত্যায় জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের অসংখ্য খুনি ও দুষ্কৃতকারী ধারাবাহিকভাবে জামিনে মুক্ত হয়ে সারাদেশে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও গোপন হামলার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।’
তারা বলেন, ‘আমরা মনে করি, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে এই ব্যর্থতা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গুরুতর দুর্বলতার প্রতিফলন। এই ব্যর্থতার দায় আইন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। জনগণের জানমাল রক্ষা, অপরাধ দমন এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।’
তারা আরও বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আরও লক্ষ্য করছি যে, কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী এখনো টকশো, কলাম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের পক্ষে সহানুভূতি উৎপাদনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনার বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান এবং শহীদদের রক্তের সঙ্গে নির্মম বিশ্বাসঘাতকতা। গণমাধ্যমে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিস্ট এজেন্ডার বাহক সাংবাদিক নামধারীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে যারা পতিত ফ্যাসিবাদের সাংস্কৃতিক কাঠামো, বয়ান ও আধিপত্যবাদী চিন্তাকে পুনরুজ্জীবিত করতে তৎপর, তাদের বিরুদ্ধেও সুস্পষ্ট ও কার্যকর রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি-নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ, ন্যায়বিচার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক এস্টাবলিশমেন্টকে মূল থেকে উৎখাত করার কোনো বিকল্প নেই। এ প্রশ্নে কোনো আপস, দ্বিধা বা শৈথিল্য জাতির ভবিষ্যৎকে ভয়াবহ ঝুঁকির
মুখে ঠেলে দেবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ভিত্তিতে ন্যায়ভিত্তিক সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণের অবিনাশী গণ-আকাঙ্ক্ষা অবশ্যই বাস্তবায়ন করতে হবে। অগণিত শহীদ গাজীদের রক্তের ওপর অর্জিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে তার কাঙ্ক্ষিত মঞ্জিলে পৌঁছানো না পর্যন্ত আমরা জুলাই প্রজন্ম থামব না। আমরা মনে করি, কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বিনির্মাণে ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী সকল শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস সময়ের দাবি।’
বিবৃতি প্রদানকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা হলেন- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সভাপতি মুনতাছির আহমেদ, জাগপা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস সভাপতি মুহাম্মদ রায়হান আলী, জাতীয় ছাত্র সমাজ (কাজী জাফর) সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস সভাপতি মুহাম্মাদ আব্দুল আজীজ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ সভাপতি বি এম আমির জিহাদি, বাংলাদেশ ছাত্র মিশন সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সভাপতি খালেদ মাহমুদ, গণতান্ত্রিক ছাত্রদল (এলডিপি) সভাপতি মেহেদি হাসান মাহবুব, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলন সভাপতি আবু দারদা, ভাষানী ছাত্র পরিষদ সভাপতি মোশাররফ হোসেন, নাগরিক ছাত্র ঐক্য আহবায়ক মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি, বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষ সভাপতি মোহাম্মদ প্রিন্স আল আমিন, বাংলাদেশ মুসলিম ছাত্র ফেডারশেন সভাপতি মোহাম্মদ নুর আলম, ইসলামী ছাত্র ফোরাম বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় আহবায়ক প্যানেল সদস্য শেখ সাব্বির আহমদ, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন সভাপতি লামিয়া ইসলাম, ন্যাশনাল ছাত্র মিশন সভাপতি মো. রেজাউল ইসলাম।
রাজনীতি
খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের নিরাপত্তায় ‘প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা’ নিয়োগ
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পেয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলাম।
বুধবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নিমিত্তে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলামকে ‘প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা’ হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরতে যাচ্ছেন তারেক রহমান। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে লন্ডনে আয়োজিত আলোচনা সভায় অতিথির বক্তব্যে নিজেই এ কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তিনি বলেছেন, আপনারা সবাই জানেন যে আজকে এই অনুষ্ঠানটি, প্রথমত দুটো বিষয়। এক. ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের বিজয় দিবস। এবং একই সাথে আপনাদের সাথে বহুদিন ছিলাম। ১৭, প্রায় ১৮ বছর আপনাদের সাথে ছিলাম। বাট, আগামী ২৫ তারিখে ইনশা আল্লাহ আমি দেশে চলে যাচ্ছি।
এর আগে, গত শুক্রবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, ২৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান।
রাজনীতি
সংসদ নির্বাচনে অংশ নিবে জাতীয় পার্টি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে তা এককভাবে নাকি জোটগতভাবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি দলটি। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির শীর্ষপর্যায়ের একাধিক নেতা জানান বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দলের বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। দলের তৃণমূলের নেতারাও এই সভায় অংশ নেবেন। মঙ্গলবার রাত দশটা পর্যন্ত পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সভাটি হতে পারে।
এদিকে, দলের চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি শৌর্য দ্বীপ্ত সূর্য গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, বুধবার বিকাল চারটায় কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। জানা গেছে, ওই সংবাদ সম্মেলনেই নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারে জাতীয় পার্টি। মঙ্গলবার মধ্যরাতে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম পাটোয়ারী বলেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে নমিনেশন সাবমিট করবো।”
এর আগে, সন্ধ্যায় দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের জানিয়েছেন, আপাতত তিনশ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার দলের। তবে নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা কী মতামত দেন, সেটিও দল বিবেচনা করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জাতীয় পার্টির অন্য একটি অংশও নির্বাচনের অংশগ্রহণের বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ নেতৃত্বে তার জাতীয় পার্টি, আনোয়ার হোসেন মুঞ্জুর জেপিসহ ১৮ টি দল মিলে নতুন একটি জোট করেছেন। জোটের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সম্প্রতি এক সভায় তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানান। তবে তিনি মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।ও তা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন তিনি।
জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করছে কিনা, এই প্রশ্নটি এখন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে বিএনপি। এমনকি জাতীয় পার্টির জিএম কাদেরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে যেতে সম্মত আছেন, কয়েকটি দলের এমন একাধিক নেতাও জানিয়েছেন, তারা জিএম কাদেরের নেতৃত্বে জোট করতে আগ্রহী। তবে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির নির্বাচনে অংশগ্রহণ কোনদিকে গড়ায় তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ কিছু দল নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। জিএম কাদের বলেন, “নির্বাচনে আমরা এককভাবে করার চিন্তাও আছে। তিনশ আসনে আগে আমরা প্রার্থী নিশ্চিত করতে চাই। জোট হবে কিনা, কারও সঙ্গে যুক্ত হবো কিনা, এগুলো দলীয় ফোরামে আলোচনা হওয়ার পর সিদ্ধান্ত হবে।”
এমকে
রাজনীতি
ইনশাআল্লাহ ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবো: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই বলেছেন, ‘ইনশাআল্লাহ, আমি আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরে যাবো। আপনাদের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর কাজ করেছি।’
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় দেয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজকে এই অনুষ্ঠানটি প্রথমত দুটি বিষয়—১৬ ডিসেম্বর আমাদের ‘বিজয় দিবস’ এবং একইসঙ্গে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ বছর আপনাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ছিলাম; কিন্তু আগামী ২৫ তারিখে ইনাশাআল্লাহ আমি দেশে চলে যাচ্ছি।’
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, সামনের দিনগুলো খুব সহজ হবে না। ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারলে আমরা আমাদের পরিকল্পনাগুলো সফল করতে পারবো এবং আমরা আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবো।
তিনি বলেন, দুমাস পর দেশে বহুল প্রত্যাশিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা যেমন বিএনপির দায়িত্ব, তেমনি দেশের মানুষের সামনে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তুলে ধরাও তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আমি কোনো স্বপ্নের মধ্যে নেই, আমি আছি পরিকল্পনার মধ্যে।
এমকে
রাজনীতি
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভাজন করা যাবে না: নাহিদ ইসলাম
মুক্তিযুদ্ধ ও ইসলামের নামে দেশকে বিভাজন করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আগ্রাসনবিরোধী যাত্রা শেষে শাহবাগের সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে ধর্মের নামে ভোট চাওয়া হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের নামে যেমন দেশকে বিভাজন করা যাবে না, তেমন ইসলামের নামেও দেশকে বিভাজন করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধ আমার এবং জুলাইও আমার।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্ন সুরাহা করতে পারি নাই।
এনসিপির এই আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনীতির মাধ্যমে মুজিববাদ দিয়ে বাংলাদেশকে বিভাজিত করে রেখেছিল। আমরা মনে করি মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম ভিত্তি। পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশকে তাবেদার রাষ্ট্র কায়েম করার বারবার চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, আমরা ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের বয়ান থেকে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা বের করে নতুন বয়ান প্রতিষ্ঠা করেছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার পর বিষয়টিকে সহজভাবে দেখার আর কোনো উপায় নাই। আমাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদের নিতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণ ছাড়া আমাদের আর কোনো নিরাপত্তা বাহিনী নাই। পুলিশ বাহিনী যদি ব্যর্থ হয়, আমরা পাল্টা আঘাত চালিয়ে যাবো।
নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির এই আহ্বায়ক বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণ চাই।




