জাতীয়
বিদেশ গমনে দুর্নীতি-ভোগান্তি অনেক কমেছে: আসিফ নজরুল
বিদেশ গমনে যাবতীয় কার্যাবলি ডিজিটালাইজেশন করার কারণে দুর্নীতি, হয়রানি ও ভোগান্তি অনেক কমেছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী অ্যাপসের মাধ্যমে আগে শত শত হাজার কোটি টাকা প্রবাসীদের কাছ থেকে আদায় হতো এবং যারা বিদেশে যেতেন তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ঘটত। এটি বন্ধ করতে আমরা সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়েছি।
তিনি বলেন, এই উদ্যোগে আইওএম ও আইএলও গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে তারা ‘ওভারসিজ অ্যামপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম’ নামে একটি সম্পূর্ণ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন, যা বিদেশে যাত্রা করা সমস্ত প্রক্রিয়াকে ১০০ শতাংশ ডিজিটালাইজ করেছে। ডিজিটালাইজেশনের ফলে দুর্নীতি, হয়রানি ও ভোগান্তি হওয়ার সুযোগ অনেক কমে গেছে।
আসিফ নজরুল বলেন, যারা ভোটের জন্য নিবন্ধন করেছেন, তারা এবার প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পারবেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রবাসীদের প্রতি যে গুরুত্ব প্রদর্শিত হচ্ছে, তা ঢাকা এয়ারপোর্টে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন রুটিন কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়েছে। প্রবাসীদের জন্য রুটিন কাজের বাইরে নতুন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়েছে, যদিও এগুলো এখনো পর্যাপ্ত নয়।
তিনি জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে। চুক্তির প্রাথমিক প্রভাব পুরোপুরি বোঝা না গেলেও ভবিষ্যতে এর ইতিবাচক প্রভাব আসবে। সৌদি মিনিস্টার উল্লেখ করেছেন, পূর্বে অনেক সরকার চেষ্টা করলেও এ ধরনের চুক্তি হয়নি। এ ছাড়া বাংলাদেশের মিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তান বা ভারতের সঙ্গে এমন চুক্তি হয়নি, শুধুমাত্র বাংলাদেশের সঙ্গে হয়েছে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, আগে মালয়েশিয়ায় শ্রমিকরা দেশে ফিরে আসতে পারতেন না, কারণ তাদের একক ভিসা দেওয়া হতো। বিভিন্ন অনুরোধের মাধ্যমে এটি মাল্টিপল ভিসায় পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে, যা প্রথমবারের মতো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট নিয়ে বহু অভিযোগ শোনা যেত। তবে এই সিন্ডিকেটকে তারা সম্পূর্ণ ডিলিস্টিং করেছে এবং প্রবাসী শ্রমিকদের থেকে অবৈধ মুনাফা নেওয়া বন্ধ করার চেষ্টা করেছে। তিনি স্বীকার করেন, এখনো অনেক কিছু করা বাকি আছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, পরবর্তী সরকার যদি দেশের মানুষের প্রতি ন্যূনতম ভালোবাসা, ঈমান এবং কৃতজ্ঞতাবোধ রাখে, তারা প্রবাসীদের কল্যাণে আরও অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে এবং ইতোমধ্যে শুরু করা কাজগুলোকে আরও এগিয়ে নিতে পারবে।
এমকে
জাতীয়
ভারতে বাংলাদেশি হাইকমিশনারকে তলব
ভারতের নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাকে তলব করেছে দিল্লি। সেই সঙ্গে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারকে সাম্প্রতিক হুমকি ও বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ভারতবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্যের জন্য আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশটি।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।
এর আগে গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। এর ২ দিনের মাথায় দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করা হলো।
ধারণা করা হচ্ছে, সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা ও শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতকারী ছাত্র-নেতৃত্বের আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হাসনাত আবদুল্লাহর মন্তব্যকে ঘিরে এই তলব করা হয়েছে। ঢাকায় একটি সমাবেশে বক্তব্যকালে হাসনাত আবদুল্লাহ সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশ ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ভারতবিরোধী শক্তি’কে আশ্রয় দিতে পারে এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে, যা প্রায়শই ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত, দেশের বাকি অংশ থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিক্ষোভের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়, যা দু’দেশের কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। এই অবস্থায় ২০২৬ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে উত্তেজনামূলক বক্তব্য প্রতিবেশী দেশদু’টির মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জটিল করে তোলার ঝুঁকিতে রয়েছে।
এমকে
জাতীয়
শ্রমশক্তি রপ্তানিতে বড় বাধা দালাল চক্র: প্রধান উপদেষ্টা
বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে দালাল চক্র বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী ও প্রবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শ্রমশক্তি রপ্তানির পুরোটাই দালাল বেষ্টিত। পদে পদে দালালদের প্রতারণার জন্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই শ্রমশক্তি রপ্তানি খাতকে দালাল মুক্ত করতে না পারলে উন্নতি সম্ভব না।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রমিকদের মুক্তির কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারা অনেক কষ্ট করে বিদেশ গেছেন। সেখানে আইন অমান্য করলে কি শাস্তি হবে সবই জানতো, তারপরও দেশের জন্য আইন ভাঙল। পরবর্তীতে ওই দেশের সরকারকে অনুরোধ করলাম, তিনি তাদের মুক্তি দিলেন।
তিনি বলেন, আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আনোয়ার ইব্রাহিম এখানে আসলেন। তখন খবর পেলাম ১৭ হাজার শ্রমিক মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে মালেয়েশিয়া যেতে পারেনি। তারা সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। আনোয়ার ইব্রাহিমকে বললাম, এদেরকে নিয়ে যেতে হবে। বন্ধু (আনোয়ার ইব্রাহিম) মানুষ না করতে পারেনি। বলছে, ঠিক আছে নিয়ে যাব। পরবর্তীতে মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে এগুলো নিয়ে কাজ করলাম। তখন দেখা গেছে, পুরো জগতটা দালাল-সিন্ডিকেট ভরা। সরকার এখান থেকে অনেকদূরে। এ হলো বিদেশ যারা যেতে চাচ্ছেন, তাদের কপাল।
ড. ইউনূস বলেন, জাপান সফরে গেলাম। তারা বলল, লোক দরকার। আমরা বললাম, আমরা তো লোক নিয়ে বসে আছি। কত লোক লাগবে। বলল, জানাবে। তারা নেপাল থেকে ৭ হাজার লোক নিয়েছে। আমি জানতে চাইলাম, বাংলাদেশ থেকে কত নিয়েছে? বলল, মাত্র ২ হাজার। শুনে অবাক হলাম, নেপাল থেকে এতো হলে, বাংলাদেশ থেকে কম কেন। আমাকে জিজ্ঞেস করল, কত দিতে পারব। আমি বললাম একলাখ লোক দিতে পারব। শুধু ভাষা শিখলে ওখানে যেতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, জাপানের বহু শহরে ট্যাক্সি বন্ধ হয়ে গেছে, ড্রাইভার নেই। মাইলের পর মাইল খালি জমি পড়ে আছে, জনশূন্য। তারা বলল, লোক পাঠাও আমরা যাতে এগুলো চালু করতে পারি। চাষাবাদ করতে পারি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পৃথিবীতে তারুণ্যের অভাব, আমরা তারুণ্যের খনি। এটা সোনার চেয়েও দামী। সারা পৃথিবীকে আমাদের কাছে আসতে হবেই, এত তরুণ জনশক্তি আর কোথাও নাই।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল প্রবাসীদের কল্যাণে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
এমকে
জাতীয়
ঢাকার ভারতীয় ভিসা সেন্টার হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা
দেশে চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (আইভিএসি) বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ivacbd.com-এ প্রকাশিত নোটিশে বলা হয়েছে, ‘চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে জানানো যাচ্ছে, ‘যমুনা ফিউচার পার্কের ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার আজ দুপুর ২টায় বন্ধ হয়ে যাবে।’
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আজ যাদের ভিসা সাবমিশনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল, তাদের পরবর্তী তারিখে নতুন স্লট প্রদান করা হবে। আবেদনকারীদের ধৈর্য ধরতে এবং ওয়েবসাইট বা হটলাইনের মাধ্যমে আপডেট চেক করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনাগুলোর কারণে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও তথ্যের জন্য আইভিএসির ওয়েবসাইট (ivacbd.com) বা হটলাইন নম্বর (০৯৬১২ ৩৩৩ ৬৬৬ / ০৯৬১৪ ৩৩৩ ৬৬৬) যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এমকে
জাতীয়
প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন ছাড়ালো ৪ লাখ ৫৭ হাজার
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার জন্য “পোস্টাল ভোট বিডি” অ্যাপে নিবন্ধন ছাড়াল চার লাখ ৫৭ হাজার। বুধবার সকালে ইসির ওয়েব সাইট (https://portal.ocv.gov.bd/report/by-country) থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
গত ১৯ নভেম্বর থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছে, চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
যে সব দেশে নিবন্ধন চলছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, মিশর, মোজাম্বিক, লিবিয়া, মরিশাস, হংকং, ব্রাজিল, উগান্ডা, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়া, বতসোয়ানা, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, তানজানিয়া, সোমালিয়া, ঘানা, গিনি, মরক্কো, দক্ষিণ সুদান, চিলি, সিয়েরা লিওন, ইকুয়েডর, তাইওয়ান, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গাম্বিয়া, পেরু, জিম্বাবুয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, বাংলাদেশ ইত্যাদি। মোট নিবন্ধন করেছেন (সকাল সোয়া দশটা পর্যন্ত) চার লাখ ৫৭ হাজার ৬৬ জন, যা প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে।
ইসি জানিয়েছে, অ্যাপে নিবন্ধনকারীদের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ভোটার ভোট দিয়ে ফিরতি খামে তা আবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন।
উল্লেখ্য, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট করবে ইসি।
এমকে
জাতীয়
হাদিকে গুলির ঘটনায় শুটার ফয়সালকে নিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলো র্যাব
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের বোনের বাসার পাশ থেকে দুটি ম্যাগজিন ও ১১টি গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফয়সালের বাবা ও মাসহ তিনজনকে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে র্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় শুটার ফয়সাল ও তার পরিবারের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে চাঞ্চল্যকর কিছু দিয়েছে র্যাব।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন তথ্য ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে আগারগাঁওয়ের কর্নেল গলিতে ফয়সাল করিমের বোনের বাসা ও পাশের ভবনের ফাঁকা স্থান থেকে দুটি ভরা ম্যাগজিন, ১১টি গুলি এবং একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
একইসঙ্গে ফয়সালের বোনের বাসা থেকে একটি ট্যাব, একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল, একটি পুরনো বাটন মোবাইল, দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৫টি চেক বই, ছয়টি পাসপোর্ট এবং বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবের ৩৮টি চেক উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, ওই বাসার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফয়সাল করিম ও তার সহযোগী আলমগীর ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে মোটরসাইকেলে করে বাসা থেকে বের হয়ে যান। পরে বিকেল ৪টার দিকে ফয়সাল, আলমগীর এবং ফয়সালের মা ও ভাগিনাকে দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান থেকে কিছু বের করতে দেখা যায়। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে ফয়সাল ও আলমগীর একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
এদিকে নরসিংদীতে অভিযান চালিয়ে মো. ফয়সাল (২৫) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। এসময় তিনটি অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, এই তিনটি অস্ত্রের কোনো একটি দিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদিকে গুলি করা হয়েছে কি না, তা ফরেনসিক পরীক্ষার পর জানা যাবে। র্যাব-১১ নরসিংদীতে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে।
র্যাব জানায়, অস্ত্র ও গোলাবারুদ নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন তরুয়া এলাকাস্থ মোল্লার বাড়ির সামনে তরুয়ার বিলে পানির মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) এবং মা মোছা. হাসি বেগমকে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় র্যাব-১০-এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাচেষ্টা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে শুটার ফয়সালের বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রেপ্তার দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে ফয়সাল করিম তৃতীয়। ফয়সাল ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় তার বোন জেসমিন আক্তারের সপ্তম তলার বাসায় প্রায়ই যাতায়াত করতেন। ঘটনার দিন (১২ ডিসেম্বর) রাতে একটি কালো ব্যাগ নিয়ে তিনি ওই বাসায় ওঠেন। পরে ভবনের সরু জায়গায় ব্যাগটি ফেলে দেন।
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, ফয়সাল তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনের একটি ওই ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেন এবং অন্যটি তার মা হাসি বেগমকে দেন। পরে অবস্থান নিরাপদ মনে না হওয়ায় তিনি আগারগাঁও থেকে মিরপুর হয়ে শাহজাদপুরে তার চাচাতো ভাই আরিফের বাসায় যান।
এ সময় ফয়সালের ব্যাগ বহনের জন্য তার বাবা হুমায়ুন কবির একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে দেন এবং কিছু অর্থও সরবরাহ করেন বলে র্যাবের দাবি। পরে ফয়সালের বাবা-মা তাদের ছোট ছেলে হাসান মাহমুদ বাবুলের কেরানীগঞ্জের বাসায় চলে যান।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) গণসংযোগের জন্য রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পরিবারের সম্মতিতে রোববার রাতে পল্টন থানায় একটি মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। মামলাটি বর্তমানে ডিবিতে রয়েছে। মামলায় এর আগে ফয়সালের স্ত্রী, বান্ধবী, শ্যালক, হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে একজন, সহযোগী কবীর এবং তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে সীমান্ত এলাকা থেকে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এমকে




