রাজনীতি
আমি শান্ত ছিলাম, নির্দেশনা পেলে তোমাদের তুলোধুনো করে দিত: মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ওসমান হাদীর ওপর বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, সে আমার সন্তানসমতুল্য। হাদী গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ পেয়ে আমি মানসিকভাবে আহত হয়েছি। হাসপাতালে স্লোগান ও হট্টগোলের বিষয়ে তিনি বলেন,আমি শান্ত ছিলাম। আমার নির্দেশনা পেলে তোমাদের তুলোধুনো করে দিত।
শনিবার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত ইনকিলাব মঞ্চে ওসমান হাদী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে এবং সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভপূর্ব এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, দুপুর দুইটায় হাদী গুলিবিদ্ধ হন, তার আধাঘণ্টা পরই একটি দল উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া শুরু করে। আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পেলাম, সবই পরিকল্পিত। আমি ঢাকার ছেলে। দীর্ঘ ৫০ বছর ঢাকায় রাজনীতি করি।
আমি শান্ত ছিলাম। আমার নির্দেশনা পেলে তোমাদের তুলোধুনো করে দিত। হাসপাতালে যারা এসব করেছে, তারা হাদীর সমর্থক নয়, তারা অন্য একটি দলের। আমরা শান্ত না থাকলে হাদীর চিকিৎসা ব্যাহত হতো। তারা চেয়েছিল হাদীর চিকিৎসা যেন ব্যাহত হয় এবং সে মারা যায়।
তিনি বলেন, একটি দলের ষড়যন্ত্র আমরা ’৭১, ’৮৬ সহ বহুবার দেখেছি। এদের মূল শক্তিই ষড়যন্ত্র। এরা স্থির রাষ্ট্র সহ্য করতে পারে না। তাই রাষ্ট্রকে সবসময়ই অস্থিতিশীল রাখতে চায়।
তিনি আরও বলেন, একটি লোক গুলিবিদ্ধ হয়েছে- সে যেই হোক, তার মৃত্যু আমি কামনা করি না। হাদী গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর এক–দেড়শ লোক ফেসবুকে দেশে মব সৃষ্টির জন্য উসকানি দিয়ে পোস্ট দিয়েছেন। তারা সবাই একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের।
’৭৭ সাল থেকে নির্বাচন করে আসছি, কারও সঙ্গে মারামারি হয়নি। একসঙ্গে প্রার্থীরা কোলাকুলি করেছি, খেয়েছি। মারামারি করে আওয়ামী লীগ। আর নির্বাচনসহ রাষ্ট্রকে অস্থির করে সেই বিতর্কিত রাজনৈতিক দল। আমরা চাই, হাদীর ওপর হামলাকারীরা গ্রেপ্তার হোক এবং বিশেষ দলের মুখোশ উন্মোচিত হোক।
তিনি বলেন, হাদী আমার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, প্রতিযোগী। সে রাজপথের সাহসী সৈনিক। তাকে আমি নির্বাচনী মাঠে আবারও সক্রিয় দেখতে পাব—এই প্রত্যাশা করি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এ সময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, শেখ রবিউল আলম, হাবিবুর রশিদ হাবিব, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল কবির পল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর ফকিরাপুল মোড় ঘুরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। .
এমকে
রাজনীতি
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়নের আহ্বান তারেক রহমানের
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আইনের শাসন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।’
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ৪৬ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। ওই পোস্টটি নিচে হুবহু দেওয়া হলো।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নিহত শিক্ষক, চিকিৎসক, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ১৪ ডিসেম্বর মূলত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ। শহীদ বুদ্ধিজীবীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন, স্বাধীনতার পক্ষে কলম ধরেছিলেন। তাদের জীবন ও কর্ম আজও আমাদের অনুপ্রাণিত করে।
দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা দেশকে মেধাশূন্য করার গভীর চক্রান্ত। কারণ স্বাধীনতার বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করা।
বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা আজও সারা জাতিকে বেদনাবিধুর করে। তবে তাদের রেখে যাওয়া আদর্শ অর্থাৎ জ্ঞান বিজ্ঞান, মুক্ত চিন্তা, ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির চেতনা উন্নত ও প্রগতিশীল দেশ গড়ার প্রত্যয় জাগিয়ে তোলে। একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ ছিল যাদের অভীষ্ট লক্ষ্য।
কিন্তু অর্ধশতাব্দী পার হলেও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। গণতন্ত্র বারবার মৃত্যুকূপে পতিত হয়েছে।
একদলীয় দুঃশাসনের বাতাবরণ তৈরি করে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশ প্রতিহত করা হয়েছে। অনেক রক্ত ঝরলেও মতপ্রকাশ, লেখা ও বলার স্বাধীনতা সংকটের দুর্বিপাক থেকে আজও মুক্ত হতে পারেনি।
তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের পর আইনের শাসন, স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং বহু পথ ও মতের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আদর্শ বাস্তবায়িত হবে।
আজকের এই শোকাবহ দিনে আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই—আসুন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রত্যাশার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা একসঙ্গে কাজ করি।
আমি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
রাজনীতি
ওসমান হাদির ওপর হামলা বৃহৎ চক্রান্তের ক্ষুদ্র অংশ: মির্জা আব্বাস
নির্বাচনের আগে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখছে না বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, এটি বৃহৎ এক চক্রান্তের ক্ষুদ্র অংশ।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন মির্জা আব্বাস। চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর এবং ঢাকায় ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা এই সমাবেশের আয়োজন করে।
১২ ফেব্রুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন ঠিক করে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল নির্বাচন কমিশন ঘোষণার পরদিন শনিবার ঢাকার সড়কে প্রকাশ্যে ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে প্রচার চালাচ্ছিলেন। মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর আগে গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে গণসংযোগের সময় গুলি করা হয় চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহকে।
প্রতিবাদ সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন, এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এর আগে চট্টগ্রামে এরশাদ উল্লাহর ওপর আক্রমণ করা হয়েছিল। এবার হাদির ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এটা বৃহৎ চক্রান্তের ক্ষুদ্র একটি অংশ। সামনে আরও চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র প্রকাশ পাবে।
ওসমান হাদিকে গুলি করার মাধ্যমে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর আঘাত হানা হয়েছে মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, এটাকে প্রতিরোধ করতে হবে। এই অপশক্তির কালো হাত ভেঙে দিতে হবে। তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। যাঁরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছেন, তাঁরা সাবধান হয়ে যান।
হাদির ওপর গুলির ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, সোয়া দুইটায় হাদির ওপরে গুলি চালানো হয়। আড়াইটার সময় ফেসবুকে একটি পোস্ট আসে। সেখানে যে যেখানে আছে, ঐক্যবদ্ধ হতে বলা হয়। এটা ছিল পরিকল্পিত।
ওসমান হাদি যে আসনে প্রার্থী হতে চাইছেন, সেই আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস। গতকাল গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন মির্জা আব্বাস। তাঁর উদ্দেশে আক্রমণাত্মক স্লোগান দেওয়া হয়েছিল।
সেই প্রসঙ্গ তুলে সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি ভাই ঢাকার ছেলে। আমি ঢাকার রাজপথে মিছিল করে বড় হয়েছি। আমি ঢাকার রাজপথে আন্দোলন করে বড় হয়েছি। আমার বয়সটা একটু বেশি হয়ে গেছে। শান্ত থেকেছি, নীরব থেকেছি। কিন্তু ওই মুহূর্তে যদি আমার নির্দেশনা পেত, তাহলে তোমাদের তুলাধোনা করতে আমাদের ছেলেরা দেরি করত না।’
যারা আক্রমণাত্মক স্লোগান দিয়েছিল, তাদের কেউ ওসমান হাদির সমর্থক নয় দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, এরা বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের নেতা ছিল। যারা সেখানে মব সৃষ্টি করেছিল, তারা চেয়েছিল হাদি ওখানেই মারা যাক।
সমাবেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ওসমান হাদি সব সময় দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। তিনি ঢাকা-৮ আসনে প্রার্থী হয়েছেন। তবে কখনো মির্জা আব্বাস তাঁকে বিরক্ত করছেন, এমন কথা বলেননি।
ডাকসুর ভিপি, ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা সাদিক কায়েমের উদ্দেশে রাকসুর একসময়ের ভিপি রুহুল কবির বলেন, ‘আপনি এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে (হাদিকে গুলি করার) ফেসবুকে দিয়ে দিলেন। তার মানে কি ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাইনির মতো অবস্থা না? আপনি ঘোড়ার আগেই গাড়ি জুড়িয়ে দিলেন।’
হাদির ওপর হামলা সুপরিকল্পিত দাবি করে রুহুল কবির বলেন, ‘সন্তানের বয়সী একজন ছেলেকে মির্জা আব্বাস আঘাত করবেন, এটা অকল্পনীয়। তিনি হঠাৎ করে রাজনীতিবিদ হননি। তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ৫০ বছরের। হাদির ওপর হামলা এটা সুপরিকল্পিত। এই ঘটনায় যাকে শনাক্ত করা হয়েছে, সে ছাত্রলীগের নেতা। একই সঙ্গে ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমের সঙ্গে একই টেবিলে বসে চা খাচ্ছে। এই পরিকল্পিত নকশা করেছে সংগঠনটি।’
ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব ও ঢাকা-৪ আসনে দলের প্রার্থী তানভীর হোসেন রবিনের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী, যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী ইশরাক হোসেন, ঢাকা-১০ আসনের প্রার্থী শেখ রবিউল আলম, ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী হাবিবুর রশীদ প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে আবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
রাজনীতি
এই তিনজনকে যেকোনো মূল্যে ধরিয়ে দিন: জুমা
যারা ওসমান হাদির ওপর গুলি চালিয়েছে তারা প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তার প্রচারণার টিমে যোগ দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের একজন সদস্য।
ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য মোহাম্মদ ওসামা জানান, একটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুজনের মধ্যে থেকে একজন ওসমান হাদির ওপর গুলি চালায়। তার দাবি, ‘এই দুজন প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ওসমান হাদির প্রচারণার টিমে যোগ দিয়েছিল। মাঝখানে কিছুদিন তাদের দেখা যায়নি। কয়েকদিন আগে তারা আবার এসে প্রচারণার কাজে যোগ দেয়।’
এদিকে ডাকসুর মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা নিজের ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করেছেন। সেই ছবিতে ওসমান হাদির একটি ছবি প্রকাশ করা হয়। ছবিতে আরো কয়েকজন রয়েছে।
জুমা তিনজনকে ছবিতে চিহ্নিত করে তাদের ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। জুমা বলেন, ‘এই তিনজনকে যেকোনো মূল্যে ধরিয়ে দিন। বাংলাদেশের জনতা আপনারাই ইনকিলাব কর্মী, আপনারাই এই ভার হাতে নিন। প্রশাসন কোথায় আমাদের আপডেট দিবে, তা না করে উলটো আমাদের কাছেই আপডেট চাইতেছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে একটি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে নেওয়া হয় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে।
এমকে
রাজনীতি
যারা নির্বাচন চায় না, তারাই হাদির ওপর হামলা করেছে: সালাহউদ্দিন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে যারা নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচাল করতে চায়, তারাই ওসমান হাদির ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত। ওসমান হাদির ওপর চালানো হামলা শুধু একজন ব্যক্তির ওপর নয়, বরং এটি বাংলাদেশের ওপরই আঘাত।
শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১০ তারিখ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই একজন সম্ভাব্য জাতীয় সংসদ সদস্য প্রার্থীর ওপর প্রাণনাশের চেষ্টা চালানো হয়েছে। হামলার ধরন দেখে স্পষ্ট, এটি একটি পরিকল্পিত ও পেশাদার অপরাধ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ওসমান হাদি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। তিনি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন যেন হাদিকে সুস্থ করে তোলা হয় এবং তাকে জীবন দান করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা জানান, এ পরিস্থিতিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার বিষয়ে কথা হয়েছে। তিনি বলেন, সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিতর্ক থাকবে, তবে সে ধরনের কোনো অবস্থানে যাওয়া হবে না, যাতে জাতীয় ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুলাই ২০২৪-এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের চেতনা, প্রত্যাশা ও জনআকাঙ্ক্ষাই তাদের রাজনৈতিক অবস্থানের ভিত্তি। এই চেতনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তারা ঐক্য ধরে রাখবেন, এ বিষয়ে কোনো আপস হবে না।
তিনি আরও বলেন, যারা নির্বাচনকে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ হিসেবে দেখতে চায় না, যারা শক্তিশালী রাষ্ট্র গঠনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়, তারাই মূলত গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি। এ ধরনের শক্তি দেশের ভেতরে ও বাইরে উভয় জায়গাতেই সক্রিয় রয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে এ ধরনের সহিংসতা চালিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা থামানো যাবে না।
জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে তিনি বলেন, সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখা হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যেকোনো মূল্যে অর্থবহ ও বিশ্বাসযোগ্য করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এমকে
রাজনীতি
জামায়াতে যোগ দিলেন বিএনপির সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামান
বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেছেন। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান।
সাক্ষাৎকালে আমীরে জামায়াতের উপস্থিতিতে মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দলের অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন। পরে তিনি প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগ দেন।
তিনি ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ, দেশের স্বার্থ এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অবশিষ্ট জীবন অতিবাহিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিয়ম-নীতি, আদর্শ, দলীয় শৃঙ্খলা ও আনুগত্যের প্রতি সর্বদা অনুগত থাকার অঙ্গীকার করেন।
এ সময় আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান তাকে আন্তরিকভাবে আলিঙ্গন করেন এবং তার দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিত্ব। স্বাধীনতার পর তিনি রাজনীতি ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিবেদিত রাখেন।
তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে দুইবার কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ও ন্যায্য স্বীকৃতি আদায়ে আজও সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন।
এমকে




