অর্থনীতি
৫ ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা আমানত ফেরত পাবেন যেভাবে
সম্মিলিত ইসলামী পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে বিশেষ স্কিমের খসড়া চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। স্কিম অনুযায়ী প্রথম ধাপে একজন গ্রাহক একবারে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা তুলতে পারবেন। এই অর্থ দেওয়া হবে আমানত বিমা তহবিল থেকে। এরপর যাদের আমানত দুই লাখ টাকার বেশি, তারা প্রতি তিন মাসে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা করে তুলতে পারবেন।
গভর্নর আহসান এইচ. মানসুরের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে একীভূত হওয়া ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসির’ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়াকে নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চার ডেপুটি গভর্নর, পাঁচ সমস্যাগ্রস্ত ইসলামী ব্যাংকের প্রশাসক এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
বৈঠকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, একীভূত ব্যাংকের গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কারণ নতুন ব্যাংক থেকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো সেই ব্যাংকের ডাটাবেজ তৈরি হয়নি এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকও নিয়োগ করা হয়নি। ফলে আইনি একটি বাধা দাঁড়িয়েছে। তবুও গভর্নর নির্দেশ দিয়েছেন—ডিসেম্বরের মধ্যেই টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো সমাধানে কি করা যায়, এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে বিশেষ স্কিমের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, যেসব গ্রাহকের হিসাবে ২ লাখ টাকা বা এর কম আছে, স্কিম কার্যকর হওয়ার পর তারা পুরো টাকা একবারেই তুলতে পারবেন।
আর যাদের হিসাবে ২ লাখ টাকার বেশি রয়েছে, তারা প্রতি তিন মাস অন্তর সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা করে দুই বছর পর্যন্ত তুলতে পারবেন।
তবে ৬০ বছরের বেশি বয়সী গ্রাহক অথবা ক্যানসার বা জটিল রোগে আক্রান্ত আমানতকারীদের জন্য এই সীমা শিথিল রাখা হয়েছে—তারা প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো পরিমাণ টাকা তুলতে পারবেন।
এদিকে প্রয়োজন ছাড়া টাকা তুলতে নিরুসাহিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন ব্যাংকটি সম্পূর্ণ নতুন হওয়ায় মৌলিকভাবে কোনো জটিলতা নেই। তাই সবার টাকা তোলা বাধ্যতামূলক নয়; তবে কেউ চাইলে স্কিম অনুযায়ী তুলতে পারবেন। এই স্কিমের মূল লক্ষ্য হলো আমানতকারীদের মধ্যে তৈরি হওয়া আস্থাহীনতা দূর করা এবং ধাপে ধাপে ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।
স্কিমের সুবিধা পেতে গ্রাহকের অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে খোলা বৈধ হিসাব থাকতে হবে। এক ব্যাংকে একাধিক হিসাব থাকলেও একজন গ্রাহক একটি হিসাব থেকেই এ সুবিধা পাবেন। তবে পাঁচ ব্যাংকে একজনের আলাদা আলাদা হিসাব থাকলে প্রতিটি হিসাবের বিপরীতে পৃথকভাবে টাকা পাওয়ার সুযোগ থাকবে। যেসব আমানতকারীর ঋণ রয়েছে, তারা ঋণ সমন্বয় না করা পর্যন্ত স্কিমের আওতায় টাকা তুলতে পারবেন না।
গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কয়েকটি প্রভাবশালী গ্রুপ জালিয়াতির মাধ্যমে ডজনখানেক ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ তুলে নেয়। এসব অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারির চাপেই ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে গভীর সংকটে পড়ে। এরমধ্যে সংকটে থাকা পাঁচটি ব্যাংক একত্রিত করে ‘সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংক’ গঠনের অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো– এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসির পরিশোধিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার কোটি এবং আমানতকারীদের শেয়ার থেকে আসবে বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা। অনুমোদিত মূলধন রাখা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ ব্যাংকে বর্তমানে ৭৫ লাখ আমানতকারীর প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা জমা রয়েছে। বিপরীতে ঋণ রয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা, যার বড় অংশ ইতোমধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে।
সারা দেশে এসব ব্যাংকের ৭৬০টি শাখা, ৬৯৮টি উপশাখা, ৫১১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৯৭৫টি এটিএম বুথ রয়েছে। একীভূত হওয়ার পর একই এলাকার একাধিক শাখা মিলে একটি বা দুটি করা হবে। ব্যাংকগুলোর পরিচালন খরচ কমাতে এরই মধ্যে কর্মীদের বেতন–ভাতা ২০ শতাংশ কমানো হয়েছে।
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের জন্য প্রাথমিকভাবে রাজধানীর মতিঝিল সেনা কল্যাণ ভবনে অফিস নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি চলতি হিসাব খোলা হয়েছে। শিগগিরই পরিচালনা পর্ষদ গঠন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে ৫ নভেম্বর প্রশাসক নিয়োগ ও ব্যাংকগুলোর শেয়ার শূন্য ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এমকে
অর্থনীতি
হজযাত্রীদের বিমান টিকিটের ওপর আবগারি শুল্ক অব্যাহতি
২০২৬ সালের হজযাত্রীদের বিমান টিকিটের ওপর আবগারি শুল্ক অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। হজের ব্যয় হ্রাস করতে এবং ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষের হজ পালনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে সংস্থাটি। এর আগে রোববার অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
হজ পালনের ব্যয় হ্রাসের অভিপ্রায় বাস্তবায়নের স্বার্থে ২০২৫ সালের মতো ২০২৬ সালের হজ পালনের লক্ষ্যে সৌদি আরব গমনকারী যাত্রীদের বিমান টিকিটের ওপর প্রযোজ্য আবগারি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এতে করে প্রত্যেক হজযাত্রীর পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবে যাওয়া এবং আসা বাবদ বিমান টিকিটের খরচ প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ সাশ্রয় হবে।
অর্থনীতি
সচিবালয়ে অবরুদ্ধ অর্থ উপদেষ্টা
সচিবালয়ে কর্মরত সবার জন্য ২০ শতাংশ সচিবালয় ভাতার দাবিতে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় তলায় এই ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিবালয়ে জড়ো হন। পরে তারা মিছিল নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় তলায় অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন এবং তাকে অবরুদ্ধ করেন। এ সময় হ্যান্ড মাইকে তারা সচিবালয় ভাতার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হচ্ছে
সচিবারয়ের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, সচিবালয়ে কর্মরত সব ধরনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ২০ শতাংশ সচিবালয় ভাতার দাবিতে এই আন্দোলন চলছে। উপদেষ্টা, মন্ত্রী ও সচিবরা রাতে যতক্ষণ অফিসে থাকেন, ততক্ষণ আমাদেরও থাকতে হয়। অথচ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পে-স্কেলের বাইরে নানা ধরনের ভাতা পেলেও আমরা তা থেকে বঞ্চিত।
আন্দোলনকারীরা গণমাধ্যমকে জানান, এর আগে রেশনের দাবিতেও তারা অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করেছিলেন। তখন তিনি বিবেচনার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ্য ভাতা চালুর ঘোষণা দিয়েও সরকার তা কার্যকর করেনি। নতুন পে-কমিশন গঠন করা হলেও বর্তমান সরকার তা বাস্তবায়ন করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। এসব পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকেই আজকের এই অবরোধ কর্মসূচি।
অর্থনীতি
জনগণ ভ্যাট দিলেও অনেক সময় সরকার পায় না: অর্থ উপদেষ্টা
আমার দেশে একটা দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে ভ্যাট আদায় হলেও সরকারের কোষাগারে অনেক সময় পৌঁছায় না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দীন আহমেদ।
তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য ভ্যাট একটি মডার্ন সিস্টেম। এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। জিডিপির তুলনায় ভ্যাট তেমন নেই।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ে ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভ্যাট যেন সরকারের কোষাগারে পৌঁছায়। আমার দেশে একটা দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে ভ্যাট আদায় হলেও সরকারের কোষাগারে অনেক সময় পৌঁছায় না। বিদেশে ভ্যাট দেওয়া ছাড়া ক্রয় করা যায় না। কিন্তু আমাদের দেশে সব স্থানে ভ্যাটের বিষয়টি পৌঁছায়নি।
সালেহউদ্দিন বলেন, কর জিডিপি এত কম। সরকারের সম্পদ না বাড়ালে কাজ করবো কীভাবে? রাজস্ব বাড়াতে হবে। কোনো কোনো দেশে কর জিডিপি অনুপাত ২৬ শতাংশের কারণে সে দেশ সেবা পায়। আমাদের দেশে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। যেমন– আমাদের দেশে যদি হাসপাতাল ও শিক্ষায় সেবা পাওয়া যায়, তাহলে মানুষ স্বেচ্ছায় রাজস্ব দিতে এগিয়ে আসবে।
তিনি বলেন, এনবিআরকে বলবো পরিধি বাড়ান, আধুনিকায়ন করেন। সম্পূরক ডিউটি কমান। না হলে বেশি আগানো যাবে না। কর দিলাম, সেবা পাবো না। কর দিলে কী লাভ হলো এই প্রশ্ন যেন করতে না পারে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে ও থাকবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক বলেন, অনেকগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মোমেনটাম তৈরি হয়েছে। সেটাকে ধরে রাখতে হবে। অটোমেটেড করা বড় সাফল্য। ভ্যাট অব্যাহতি কমেছে। এর মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক চেম্বার অফ কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হলেন মাহবুবুর রহমান বলেন, ভ্যাটের বিরোধিতা শুরু থেকে ছিল। ভ্যাট আদায় যতটুকু হওয়ার কথা ছিল, সে তুলনায় পিছিয়ে আছি। তবে সম্ভাবনা রয়েছে। একদিকে ভোক্তাকে ভ্যাট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের ভ্যাট আদায় করে এনবিআরকে দিতে হবে। সেখানে কোনো ব্যত্যয় করা যাবে না।
ভ্যাট না দিলে কী হবে, সে বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে বলে জানিয়েছেন এফআইসিসিআইর ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আজমান।
এ দিকে ‘সময়মত নিবন্ধন নেব, সঠিকভাবে ভ্যাট দেব’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজধানীসহ দেশের সব বিভাগীয় শহর ও কমিশনার কার্যালয়ে উদযাপন হচ্ছে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ।
এমকে
অর্থনীতি
আমাদের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত উগান্ডার চেয়েও খারাপ: এনবিআর চেয়ারম্যান
দেশে প্রতি বছর রাজস্ব আয় বাড়লেও জিডিপির তুলনায় তার পরিমাণ খুবই কম। আফ্রিকার দেশ উগান্ডার জিডিপির তুলনায় রাজস্বের হার সাড়ে ১২ শতাংশ। আমরা অনেক সময় উগান্ডাকে নিয়ে হাসাহাসি করে থাকি। কিন্তু জিডিপির তুলনায় রাজস্ব আহরণে আমাদের অবস্থান উগান্ডার চেয়েও খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
তিনি বলেন, রাজস্ব আয় বাড়ানো ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার জাতীয় রাজস্ব ভবনে ভ্যাট সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘জিডিপির কোন অংশ থেকে রাজস্ব আদায় করা যাচ্ছে না, তা নিয়ে আমাদের গবেষণা করতে হবে। আমাদের ভ্যাট ও আয়কর থেকে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে। আয় বাড়াতে না পারলে আমরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ব। একটা পরিবারে যেমন আয় না বাড়লে ঋণের বোঝা বাড়ে, রাষ্ট্রের জন্যও এটা প্রযোজ্য। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। তবে কোনো ধরনের জোর জবরদস্তি বা জুলুম করে আমরা আদায় করতে চাই না। যারা কর দেয় না, তাদের করের আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে ভ্যাট সপ্তাহ। প্রতি বছরের মতো এ বছরও ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভ্যাট সপ্তাহ পালন করা হবে। এবারের ভ্যাট সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সময়মতো নিবন্ধন নিব, সঠিকভাবে ভ্যাট দিব’। নিবন্ধনকে গুরুত্ব দিয়ে এ বছরের ভ্যাট দিবস ১০ ডিসেম্বর (আজ) থেকে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশব্যাপী বিশেষ নিবন্ধন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করবে এনবিআর। ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে নতুন করে এক লাখ প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমানে বহু প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধনের আওতার বাইরে রয়েছে। এর সঠিক তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে ভ্যাট নিবন্ধনের আওতার সংখ্যাটা অনেক বেশি।’
চলতি অর্থবছরে নতুন করে ৫৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এনবিআরের জন্য সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং। লক্ষ্যমাত্রা যত বাড়বে চ্যালেঞ্জও তত বাড়বে। সে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য আমরা কাজ করছি। এজন্য কর ফাঁকি রোধে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এনবিআরের যেসব গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে, তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা অনেক কর ফাঁকি উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি এবং আগামীতেও এটি অব্যাহত থাকবে।
এমকে
অর্থনীতি
যুক্তরাজ্য থেকে এলএনজি কিনবে সরকার, ব্যয় ৪৩৬ কোটি টাকা
দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে যুক্তরাজ্য থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট খরচ হবে ৪৩৬ কোটি ৭ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের ৪৯তম সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
জ্বালানি বিভাগের আওতাধীন পেট্রোবাংলা যুক্তরাজ্যের টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১০ দশমিক ৩৭ মার্কিন ডলার দরে এলএনজি ক্রয় করবে।
কর্মকর্তারা জানান, শীতকালে সর্বোচ্চ চাহিদা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার কৌশলের অংশ হিসেবে এ ক্রয় কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া আজকের (৯ ডিসেম্বর) ক্রয় কমিটির সভায় ‘হাওর এলাকায় ফ্লাইওভার সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প’-এর একটি বড় নির্মাণ প্যাকেজ অনুমোদনের সুপারিশও করা হয়।
অনুমোদিত প্যাকেজ (সুনা/ধর্মপাশা/সিডব্লিউ-৬) এর আওতায় সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় ৩৪৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে। এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে যোগ্য দরদাতা হিসেবে সুপারিশ করা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পটি হাওর অঞ্চলের গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও দুর্যোগ সহনশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করবে।
এমকে




