জাতীয়
ডেঙ্গুতে একদিনে প্রাণ গেল ৪ জনের
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একদিনে (শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা) চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন করে ১১৪৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
রোববার (২৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
মারা যাওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি ও রাজশাহী বিভাগ থেকে ১ জন করে মারা গেছেন।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১১৪৩ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৮৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২১ জন, ঢাকা বিভাগে ২৮২, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৬৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৫৪ জন, খুলনা বিভাগে ৬৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫৬ জন, রংপুর বিভাগে ৫০ জন ও সিলেট বিভাগে ৮ জন ভর্তি হয়েছেন।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৬৫ হাজার ৪৪০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জাতীয়
অপারেশন ডেভিল হান্টের ফেজ টু অবিলম্বে শুরু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের দমনের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট: ফেজ-২’ চালু করা হবে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এটি আরও জোরদার ও বেগবান করার জন্য এবং ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের দমনের উদ্দেশ্যে কোর কমিটি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট: ফেজ-২’ অবিলম্বে চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বদ্ধপরিকর। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এজন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধা ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করছে এবং বিষয়টিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জড়িত কাউকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। উপদেষ্টা এ বিষয়ে জনগণের সার্বিক সহযোগিতা কামনা এবং অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জাহাঙ্গীর আলমের মতে, ওসমান হাদির ওপর আক্রমণের ঘটনা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত বা বানচাল করার যেকোনো ধরনের অপচেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উপদেষ্টা জানান, ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ করার ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কেউ ধরিয়ে দিতে পারলে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। উপদেষ্টা এসময় হাদির দ্রুত সুস্থতার জন্য সবাইকে দোয়া করার অনুরোধ করেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রে এতদিন শুধু সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীদের অনুকূলে দেওয়া হতো। এখন জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে যারা আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চাইবেন, তাদের জন্যও ইস্যু করা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরলে তার নিরাপত্তায় কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে এবং তার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমকে
জাতীয়
হাদিকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রেখেছে মেডিকেল বোর্ড
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে বর্তমানে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) মেডিকেল বোর্ডের এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিবৃতিতে মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো-
১. রোগীর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেহেতু সার্জিক্যাল হস্তক্ষেপ সম্পন্ন হয়েছে, তাই বর্তমানে তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব সাপোর্ট চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে পুনরায় ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে।
২. ফুসফুসে ইনজুরি বিদ্যমান রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা আপাতত চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (ARDS) প্রতিরোধের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
৩. কিডনির কার্যক্ষমতা বর্তমানে ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখার জন্য পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে।
৪. পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যকার অসামঞ্জস্যতা (DIC) দেখা দিলেও বর্তমানে তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
৫. ব্রেন স্টেম ইনজুরির কারণে রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে তা চলমান থাকবে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
৬. ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য এই মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।
৭. বর্তমানে রোগীর সার্বিক অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
৮. এই মেডিকেল সামারি রোগীর ভাই ও নিকটাত্মীয়দের বিস্তারিতভাবে অবহিত করা হয়েছে। তারা চাইলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীকে এ বিষয়ে অবহিত করতে পারেন। মেডিকেল টিমের পক্ষ থেকে সবার প্রিয় শরিফ মো. ওসমান হাদীর জন্য বিনীতভাবে দোয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
৯. অপ্রয়োজনে কেউ হাসপাতালে এসে ভিড় করবেন না। কোনো ধরনের ভিজিটর অনুমোদিত নয়।
১০. কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে। রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হলো।
১১. আমাদের মেডিকেল টিম সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। রোগীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য মেডিকেল বোর্ড ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলো।
এমকে
জাতীয়
জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাতের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সব দল ঐক্যবদ্ধ
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকে জুলাই অভ্যুত্থান নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে অবহিত করে রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, এই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করার সকল প্রচেষ্টা রুখে দিতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছে।
শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির নেতারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের এবং আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা পূর্ব-পরিকল্পিত ও গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ; এর পেছনে বিরাট শক্তি কাজ করছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনটি না হতে দেওয়া। এই আক্রমণটি খুবই সিম্বলিক। তারা তাদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়, নির্বাচনের সব আয়োজন ভেস্তে দিতে চায়। এগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। তারা প্রশিক্ষিত শুটার নিয়ে মাঠে নেমেছে।”
বৈঠকে ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে ওসমান হাদীর ওপর ন্যাক্কারজনক হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী দু-একদিনের মধ্যে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক ঐক্যে যাতে ফাটল না ধরে সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিএনপি, জামায়াত ইসলামী ও এনসিপি নেতৃবৃন্দ। এ ব্যাপারে দলগুলো সুদৃঢ় অবস্থান নেবে বলে জানান তারা।
এছাড়া, নির্বাচনের আগে কঠোরভাবে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনার ওপর জোর দিয়েছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই পরস্পরের দোষারোপ থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, “ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতে হবে। কোনো ধরনের অপশক্তিকে আমরা বরদাস্ত করব না।”
তিনি আরো বলেন, আমাদের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বক্তব্যের বিরোধিতা থাকুক না কেন, জাতির স্বার্থে এবং জুলাইয়ের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার পরামর্শ দেন তিনি।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের নানা বক্তব্য একে অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা বাড়িয়েছে, যার ফলে আমাদের বিরোধীরা সুযোগ পেয়েছে। আমাদের পূর্বের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে আমরা একে অন্যকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলেছি। জাতিকে বিভক্ত করে এমন কথা আমরা কেন বলব? সব দলকে তাদের কমিটমেন্ট ঠিক করতে হবে।
এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই কিছু লোক এই অভ্যুত্থানকে খাটো করার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, “সুসংগঠিতভাবে জুলাইয়ের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চলছে। মিডিয়া ও প্রশাসনের নানা স্তরে এই কাজ হচ্ছে। নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় আসবে, তারাও এর ভুক্তভোগী হবে। কেউই একা সরকার চালাতে পারবে না।”
তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে যাতে মনে হয় যারা অভ্যুত্থান করেছে তারা অপরাধ করেছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নরমালাইজ করতে নানা চেষ্টা চলছে। টিভি টকশোতে তারা নিয়মিত অংশ নিচ্ছে, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মিলিত হচ্ছে এবং আদালত প্রাঙ্গণে স্লোগান দিচ্ছে।
‘আমাদের বিশেষ কোনো নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই। আমরা এটা নেব না। জুলাইকে সবাই মিলে ওউন করতে হবে। জুলাইকে কে কী বলবে—এই টানাপোড়েনে আমরা জুলাইকে শেষ করে দিচ্ছি। ষড়যন্ত্রকারীরা আমাদের অনৈক্যকে আমাদের পরাজয় হিসেবে দেখছে। তারা ভারতে বসে যা ইচ্ছা তা-ই করছে, আর আমরা কিছুই করতে পারছি না,’ বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, ‘বুদ্ধিজীবী বেশে, সাংস্কৃতিক কর্মী বেশে আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকারীদের থামাতে হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে না পারলে কোনো নিরাপত্তাই আমাদের কাজে আসবে না। রাজনৈতিক স্বার্থে দলগুলো আওয়ামী লীগকে নানা রকম সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের চিন্তা করতে হবে—ভবিষ্যতের জন্য আমরা কী করতে পারি।
তিনি বলেন, শুধু সরকার নয়, সবাইকে শক্ত থাকতে হবে। নিজেদের মধ্যে যেন দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য থাকবে, কিন্তু কাউকে শত্রু ভাবা বা আক্রমণ করার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।
‘নির্বাচনের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে মাথায় রাখতে হবে—এটি যেন একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে থাকে,’ বলেন তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে হানাহানি শুরু হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনাদের শুধু দলীয় স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থের বিষয়েও সজাগ থাকতে হবে।”
এমকে
জাতীয়
সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক মারা গেছেন। তার নাম শান্ত (২৪)।
নিহত শান্ত উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর ডাংয়েরপাড়া গ্রামের শিপন আলীর ছেলে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর দুই দেশের সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তার লাশ হস্তান্তর করবে বিএসএফ।
বিজিবি সূত্র জানান, গত ৫ ডিসেম্বর রাত ২টার দিকে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আশ্রয়ণ বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ১৫৪/৩-এস এর কাছে এ ঘটনা ঘটে। সেই সময় ভারতীয় ১৪৬ বিএসএফ কোম্পানির উদয়নগর ক্যাম্প থেকে গুলি ছোড়া হলে শান্ত গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার সময় এলাকাবাসী তিনটি গুলির শব্দ শুনতে পান। পরে শান্তর পরিবার বিষয়টি বিজিবিকে জানায়।
বিজিবি আরও জানান, বিএসএফ গুরুতর আহত অবস্থায় শান্তকে ভারত সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার হোগলবাড়ী থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে বিজিবির সহকারী পরিচালক জাকিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি তদন্তে বিজিবি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ঘটনার রাতে সীমান্তে শান্তসহ কয়েকজনকে লক্ষ্য করে বিএসএফ গুলি চালায়। সেই সময় শান্ত গুলিবিদ্ধ হলে আহত অবস্থায় বিএসএফ হেফাজতে নেয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ৮ ডিসেম্বর বিএসএফের সঙ্গে আমাদের পতাকা বৈঠক হয়েছে। আগামী ১৪ ডিসেম্বর শান্তর লাশ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আমরা আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ তাদের পরিবারকে হস্তান্তর করব।
এমকে
জাতীয়
বিশেষ নিরাপত্তা পাবেন জুলাইযোদ্ধারা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জুলাইযোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে তিনি এ ঘোষণা দেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সম্মুখসারির জুলাইযোদ্ধারা বিশেষ নিরাপত্তা পাবে। ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদিকে যে সন্ত্রাসী গুলি করেছে, তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদি কেউ তার সন্ধান দিতে পারে, তাকে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
উপদেষ্টা বলেন, জুলাইযোদ্ধাদের বিশেষ নিরাপত্তায় আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি। তারাই মূলত এটা নিয়ে কাজ করবে।
ওসমান হাদির ওপরে হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসীদের অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলা জাতীয় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস বলে আমি মনে করি। জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করার যেকোনো অপচেষ্টা কঠোর হাতে দমন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, যারা এবারের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান, তারা চাইলে ব্যক্তিগত অস্ত্রের জন্য লাইসেন্সের অনুমোদন দেওয়া হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিরাপত্তার প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, তার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। যত ধরনের নিরাপত্তা দরকার, আমরা দেব।
এমকে




