রাজনীতি
জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে এক বছরেই দেশ ঘুরে দাঁড়াবে: ড. হেলাল উদ্দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে এক বছরেই দেশ ঘুরে দাঁড়াবে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ দমনের মাধ্যমে দেশেকে সমৃদ্ধশালী করে তোলা হবে। আমীরে জামায়াত ইতোমধ্যে জাতির সামনে ঘোষণা দিয়েছেন জনগণ জামায়াতে ইসলামীকে সরকার গঠনের সুযোগ দিলে জামায়াতের দলীয় কোনো এমপি-কোনো মন্ত্রী ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি নেবে না, কোনো এমপি-কোনো মন্ত্রী সরকারি প্লট বা ফ্ল্যাট নেবে না, কোনো এমপি-কোনো মন্ত্রী নিজ হাতে রাষ্ট্রীয় টাকা চালাচালি করবে না। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যেই বরাদ্দ দেওয়া হবে কাজ শেষে বরাদ্দকৃত টাকার হিসাব জনগণের সামনে তুলে ধরবে। জনগণের হিসাব জনগণ বুঝিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী জবাবদিহি মূলক সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জবাবদিহি মূলক সরকার কখনো ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে পারে না। জামায়াতে ইসলামী বৈষ্যম্যহীন সুখি-সমৃদ্ধ একটি কল্যাণ ও মানবিক রাষ্ট্র জাতিকে উপহার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার রমনা থানার আলেমেদ্বীন, মসজিদের খতিব ও ইমামদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকা থেকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ মুক্ত করে এই এলাকাকে শান্তির নীড় হিসেবে গড়ে তুলতে স্থানীয়দের ঐক্যবদ্ধ করতে আলেমসমাজের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন। আলেমদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনামলে আলেমগণ কুরআন ও হাদীসের কথা বলতে পারেনি। তাদের কন্ঠরোধ করা হয়েছে। জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার মাধ্যমে আল্লাহ ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে কথা বলার স্বাধীনতা ও পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। কিন্তু একটি দল সেই স্বাধীনতা ও পরিবেশ নষ্ট করছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী ঐ দলের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ভূমিকা আর্বিভূত হয়েছে। তারা আলেমদের কন্ঠরোধ করতে চায়, আলেমদের মসজিদ থেকে বের করে দিতে চায়। এরা ক্ষমতায় বসলে আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিত সৃষ্টি করবে।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জুলাই সনদ মানুষের মুক্তির সনদ, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সনদ। তাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিকল্প নেই। পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি হচ্ছে প্রতিটি ভোটের মূল্যায়ন করার উত্তম পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ভোট হলে লাখ-লাখ ভোট পঁচে চাওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিটি ভোটের যথাযথ হিসাব হবে। যেখানে চলমান পদ্ধতিতে একজন প্রার্থী ১ লাখ ভোট পেলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী অপর প্রার্থী যদি ১ লাখ ১ ভোট পায়। তাহলে মাত্র ১ ভোট বেশি পাওয়া প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। অপর দিকে ১ লাখ ভোটারের মতামতের কোনো মূল্যায়ন হয় না। ঐ ১ লাখ ভোট বাতিল হয়ে যায়। এই ব্যবস্থায় কখনো জনগণের সরকার গঠিত হয়নি, হতে পারে না। পিআর পদ্ধতির মাধ্যমেই জনগণের সরকার গঠিত হয়, হওয়া সম্ভব। তাই জুলাই সনদে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব রেখে গণভোটের আয়োজনের দাবি জানান ড. হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, গণভোটে জনগণ যেই রায় দিবে জামায়াতে ইসলামী সেই রায় মেনে নেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’, এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ করা না হলে আবারও ফ্যাসিবাদে উত্থান ঘটবে। জামায়াতে ইসলামীর উত্থাপিত ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিবে বলে জাতি বিশ্বাস করে। ঐ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়তে ইনসাফ ও ন্যায়ের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় সমর্থন দিতে তিনি ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রমনা থানা আমীর মো. আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মতিঝিল মিসবাহুল উমুল কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মহিউদ্দিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ওলামা বিভাগের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী প্রচার সম্পাদক ও ঢাকা সিটি করর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সাত্তার সুমন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফরচুন মার্কেট জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সোহায়ল জামিল, হাফেজ মাওলানা সাইদুর রহমান, মুসলিম উদ্দিন মাদরাসার পরিচালক মুফতি আবু সুফিয়ান সিরাজী, সবজি বাগান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

রাজনীতি
শিলংয়ে আমাকে পাগলাগারদে পাঠানো হয়: সালাহউদ্দিন

গুম নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি ডকুমেন্টারির কাজে সিলেটের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম হওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে যে পথ দিয়ে তাকে ভারতের শিলংয়ে নেয়া হয় ওই সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। পরিদর্শন শেষে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের কাছে সেই দিনের অনুভূতি তুলে ধরেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমাকে যেদিন চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো তখন তো আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। আর আমি জানতামও না যে, আমাকে বর্ডার ক্রস করানো হচ্ছে। ভেবেছিলাম আমাকে হয়তো ক্রসফায়ারের উদ্দেশে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে এখানে পরিদর্শনে এসে মনে হচ্ছে এই রাস্তা দিয়েই আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, শিলং নিয়ে যখন আমার চোখ খুলে দেয়া হয় তখন বুঝতে পারি, আমাকে হয়তো এখন ছেড়ে দেবে। ছেড়ে দেয়ার পরে পথচারী ও এলাকাবাসীর সহায়তায় আমি পুলিশের দ্বারস্থ হই। কিন্তু পরে আমাকে পাগলাগারদে পাঠানো হয়। তখন অবশ্য আমি ভাবছিলাম, বাকী জীবনটা হয়তো আমাকে এখানেই কাটাতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহউদ্দিন আহমদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়, তৎকালীর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। একই বছর ১১ মে ভারতের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
রাজনীতি
জাতীয় পার্টির সমাবেশে পুলিশের বাধা, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

জাতীয় পার্টির (জাপা) সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দলটির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ককটেল বিস্ফোরণ ছাড়াও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।
তবে ককটেল বিস্ফোরণের পেছনে কারা জড়িত সে বিষয়ে এবং কোনও হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান করছে।
জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বারবার অনুরোধ করার পরও পুলিশ তাদের সমাবেশ করতে দেয়নি। সমাবেশে বক্তব্য চলাকালীন হঠাৎ করে পুলিশ জলকামান থেকে পানি নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
এ বিষয়ে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, ‘আমরা তাদের সমাবেশ করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তারা সমাবেশ শুরু করে। সমাবেশ ঘিরে যেন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছি।’
রাজনীতি
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিষয়টি জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে: আমীর খসরু

পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতির বিষয়টি জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কসমস সেন্টারে আয়োজিত নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জনগণ রাজনৈতিক দলগুলোকে পিআর পদ্ধতি নিয়ে গণভোট আয়োজনের দায়িত্ব দেয়নি। কোনো দাবি না মানলে আলোচনা অর্থহীন বলা গণতান্ত্রিক আচরণ নয়। এ ধরনের মতবিরোধ বা অনৈক্যের বিষয় সংসদে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পারস্পরিক মতের প্রতি সহনশীলতা থাকা জরুরি। অন্যের মতকে সহ্য করার মানসিকতা না থাকলে আলোচনায় বসেও কোনো ফল পাওয়া যাবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বর্তমান সংবিধানের আওতায় নির্বাচন করে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে জনগণের কথা বলতে হবে। যতটুকু একমত হয়েছে সেগুলো নিয়ে সংসদে আলোচনা করা যেতে পারে। কোনটা হবে, কোনটা হবে না জণগণ ঠিক করবে।
আমির খসরু বলেন, এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো একটি কার্যকর সংসদ গঠন করা। সনদে যেসব বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে, এখন সেগুলো বাস্তবায়নের দিকেই এগোতে হবে।
আমির খসরু আরও বলেন, গণতন্ত্রে একক দলের শাসনের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই দেশের রাজনৈতিক কাঠামো পরিবর্তন করে ভিন্নমত ও বিরোধীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। সংঘাতনির্ভর রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসাই এখন সময়ের দাবি।
রাজনীতি
বাগদান সারলেন বিএনপি নেতা ইশরাক, পাত্রী কে

বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বাগদান সেরেছেন। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে তিনি পারিবারিকভাবে বিয়ের আংটি পরিয়েছেন।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।
তিনি জানান, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের সদস্য টাঙ্গাইল জেলা সাবেক সংসদ সদস্য নুর মোহাম্মদ খানের বড় মেয়ে ব্যারিস্টার নুসরাত খানকে আংটি পরানো হয়েছে।
ইশরাক হোসেনের মা ইসমত হোসেন বলেন, হঠাৎ করে পারিবারিকভাবে বিয়ের আংটি পরানো হয়েছে। সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।
ইশরাক হোসেন ১৯৮৭ সালের ৫ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে রাজধানী ঢাকা শহরে। তিনি ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুল থেকে ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেল সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব হার্টফোর্ডশায়ারে ভর্তি হন। সেখানে তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০১১ সালে পড়াশোনা শেষ করে তিনি কিছুদিন যুক্তরাজ্যে থেকে বিভিন্ন স্থানীয় মোটরগাড়ি সংস্থায় কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার পিতা সাদেক হোসেন খোকা ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিক ও ঢাকার মেয়র। তিনি পিতার রাজনৈতিক আদর্শ অনুসরণ করে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন।
রাজনীতি
প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্নের পাশে রাষ্ট্র থাকবে তার অংশীদার হয়ে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্নের পাশে রাষ্ট্র থাকবে তার অংশীদার হয়ে, বাধা হয়ে নয়।
শনিবার (১১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তারেক রহমান বলেন, আজ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসে আমরা উদযাপন করছি প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্ন দেখার, শেখার, নেতৃত্ব দেওয়ার এবং মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার।
তিনি বলেন, একজন কন্যাসন্তানের বাবা হিসেবে আমি জানি মেয়েদের ক্ষমতায়ন কোনো নীতি নয়, এটি ব্যক্তিগত দায়িত্ব ও অঙ্গীকার। বাংলাদেশের জন্য আমাদের স্বপ্ন হলো যেখানে প্রতিটি মেয়ের জন্য একই স্বাধীনতা, সুযোগ এবং নিরাপত্তা থাকবে, যা যেকোনো বাবা-মা তাদের সন্তানের জন্য কামনা করেন।
বিএনপি সরকার সব সময় মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার ঐতিহ্য গড়ে তুলেছে, আর আমরা সুযোগ পেলে সেই কাজ আরও এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর, যোগ করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় আমরা দেখেছি, তিনি কীভাবে তৈরি পোশাক শিল্পকে শুধু একটি শিল্প হিসেবে নয়, একে আশার প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। লক্ষ লক্ষ নারী আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ পান—আয়, সম্মান ও স্বাধীনতা অর্জন করেন। তার নেতৃত্বেই নারীর কল্যাণ ও উন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মেয়েদের শিক্ষা একটি অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়, কোনো বিশেষ সুবিধা নয়। নবম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের জন্য শিক্ষা বিনামূল্যে ঘোষণা করা হয়, এবং ‘খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষা’ ও ‘টাকার বিনিময়ে শিক্ষা’ কর্মসূচি লক্ষ লক্ষ মেয়েকে বিদ্যালয়ে ধরে রাখে—যার ফলে বদলে যায় অসংখ্য পরিবারের ভাগ্য, গড়ে ওঠে শক্তিশালী সমাজ, এবং তৈরি হয় ক্ষমতায়িত নারীর এক প্রজন্ম।
তার উদ্ভাবনী ‘Female Secondary School Assistance Project’ বা ‘মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহায়তা প্রকল্প’ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মেয়েদের বিদ্যালয়ে অংশগ্রহণের হার ছেলেদের সমান করে তোলে। এটি বাল্যবিবাহ কমায় এবং মেয়েদের শিক্ষার এক বৈপ্লবিক মডেল হিসেবে সারা বিশ্বে স্বীকৃতি পায়, যা পরে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশও অনুসরণ করে।
এই উদ্যোগগুলো দেখিয়েছে—যখন শাসনব্যবস্থা কন্যাশিশুর মর্যাদা ও ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করে, তখন অসম্ভবও সম্ভব হয়ে ওঠে।
বিএনপির ভবিষ্যৎ নীতিমালায় সেই ঐতিহ্য ও প্রতিশ্রুতি ধরে রাখবে, এর মাধ্যমে:
১. ‘ফ্যামিলি কার্ড’ দেওয়া হবে পরিবারের নারী প্রধানের নামে—যাতে সহায়তা সরাসরি পরিবারের মূল স্তম্ভের হাতে পৌঁছে যায়।
২. এসএমই ঋণ, ব্যবসায় প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে নারী উদ্যোক্তাদের—কারণ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে কোনো আপস করা যায় না।
৩. শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের সুযোগ আরও বাড়ানো হবে—যাতে শহর বা গ্রাম, প্রত্যেক মেয়েই দক্ষতা অর্জন করে নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারে।
৪. নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে স্থান নিশ্চিত করা হবে—রাজনীতি, শাসন ও নীতিনির্ধারণে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে। একটি নিরাপদ দেশ গড়তে এর বিকল্প নেই।
৫. মর্যাদা ও স্বাধীনতার সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে—যাতে মেয়েরা ভয়হীনভাবে চলাফেরা করতে, মত প্রকাশ করতে, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে।
৬. পরিবার ও সামাজিক কল্যাণকে কেন্দ্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করা হবে—স্বাস্থ্য, গ্রামীণ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে নারী ও কন্যাশিশুর জন্য।
শেষে তারেক রহমান বলেন, আমরা শূন্য বুলি দিই না—আমরা বলি বিশ্বাস থেকে, ঐতিহ্য ও অঙ্গীকারের ভিত্তিতে। প্রতিটি কন্যাশিশুর স্বপ্নের পাশে রাষ্ট্র থাকবে তার অংশীদার হয়ে, বাধা হয়ে নয়।