জাতীয়
দলগুলোর সঙ্গে ফের আলোচনায় বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
জুলাই জাতীয় সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার আলোচনায় বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রোববার (৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনা শুরু হবে।
এর আগে সকাল ১০টায় কমিশনের সদস্যরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
কমিশন সূত্র জানায়, সনদের খসড়া চূড়ান্ত হলেও এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য না হওয়ায় প্রক্রিয়া আটকে আছে। ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে নির্বাহী আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য অংশে দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা থাকলেও সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়েই মূল বিতর্ক চলছে। এ কারণে গত ১১ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন দফা আলোচনা হলেও সমাধান আসেনি।
বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কমিশন সংবিধান আদেশ, গণভোট, সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ এবং গণপরিষদ গঠনসহ বেশ কিছু বিকল্প প্রস্তাব সামনে এনেছে। এর মধ্যে কোনটি কার্যকর হবে তা নিয়েই আজকের আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হবে। কমিশন আশা করছে, দীর্ঘ বিরতির পর দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য কিছুটা কমেছে এবং আজকের বৈঠকে তা এক-দুইটি প্রস্তাবে সীমিত হতে পারে।
সূত্র জানায়, কমিশন ১৫ অক্টোবরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষর নিয়ে সনদের পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে চায়।
সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়ন প্রশ্নে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অবস্থান ভিন্ন। বিএনপি মনে করে, কেবল আগামী সংসদই এ সংস্কার বাস্তবায়নের বৈধ পথ। দলটি সংবিধান পরিবর্তনে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়ার পক্ষেও। অপরদিকে জামায়াত চায় সংবিধান আদেশ জারি ও পরে গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন। এনসিপি চায় গণপরিষদের মাধ্যমে এই কাজ সম্পন্ন করা হোক।
এ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশন এখন পর্যন্ত ৬টি প্রস্তাব পেয়েছে— গণভোট, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ, গণপরিষদ গঠন, আগামী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া।
শনিবার সংসদ ভবনে কমিশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান ও মো. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও বৈঠকে অংশ নেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দলগুলোর দীর্ঘ বিরতির মধ্যে পারস্পরিক আলোচনায় মতপার্থক্য কমে আসতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। কমিশন আশা করছে, আজকের আলোচনায় এ বিতর্ক নিরসন হয়ে সনদের বাস্তবায়নের স্পষ্ট পথ নির্ধারণ সম্ভব হবে।
জাতীয়
আ.লীগ সরকারের রোজ গার্ডেন ক্রয় নিয়ে তদন্তে দুদক
২০১৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন প্রাসাদ কেনার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করেছে।
অভিযোগ রয়েছে, বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত প্রাসাদটি অধিগ্রহণ করার ফলে সরকার ৩৩২ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে। ৩৩২ কোটি টাকায় প্রাসাদটি কেনা হয়েছিল।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপপরিচালক মো. আখতারুল ইসলাম।
দুদক সূত্র অনুযায়ী, ১৯৩১ সালে ব্যবসায়ী হৃষিকেশ দাস প্রায় ২২ বিঘা জমির ওপর প্রাসাদটি নির্মাণ করেন। ১৯৩৬ সালে তিনি এটি ঢাকার বই ব্যবসায়ী খান বাহাদুর মৌলভী কাজী আব্দুর রশীদের কাছে বিক্রি করেন। রশীদ সেখানে একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন।
পরে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এই প্রাসাদেই পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
২০১৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ব্যক্তিমালিকানাধীন ঐতিহ্যবাহী এই সম্পত্তিটি ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ টাকায় ক্রয় করে বলে সরকারি নথিতে উল্লেখ আছে।
ক্রয় প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, আর্থিক অসংগতি ও অতিরিক্ত ব্যয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত শুরু করেছে।
জাতীয়
বাংলাদেশকে বিজনেস ভিসা দেওয়া শুরু করেছে ভারত
ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, সীমিত সক্ষমতা সত্ত্বেও বিজনেস ভিসা ইস্যু আবার শুরু হয়েছে এবং জরুরি প্রয়োজনের আবেদনগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বারিধারায় ভারতের হাইকমিশন প্রাঙ্গণে নেটওয়ার্কিং ও জ্ঞান–বিনিময়মূলক ‘ফার্মা কানেক্ট’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সেখানে বাংলাদেশের শীর্ষ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা অংশ নিয়ে ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তিতে দীর্ঘদিনের জটিলতা দূর করতে আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ভারত থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সড়কপথে যাতায়াত আরও সহজ করার বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে বলেন তাঁরা।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ফার্মাসিউটিক্যাল প্রদর্শনী সিপিএইচআই–পিএমইসি ইন্ডিয়া ২০২৫–এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে এ আয়োজন করা হয়। আগামী সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত নয়া দিল্লিতে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ায় কিছু ভিসা আবেদন কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছিল। তবু সীমিত কর্মী নিয়েই প্রতিদিন বিপুল ভিসা দেওয়ার কাজ পুনরায় শুরু করা হয়েছে। ‘বিজনেস ভিসা ইস্যু আবার শুরু হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।
প্রণয় ভার্মা আরও বলেন, ‘আমরা বর্তমানে জরুরি প্রয়োজনের আবেদনগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে দেখছি এবং চেষ্টা করছি দ্রুত প্রক্রিয়া করতে। আপনাদের যদি ব্যবসায়িক ভিসার প্রয়োজন হয়, দয়া করে আমাদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তিনি আপনাদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে সহায়তা করবেন।’
বাংলাদেশ ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ফার্মা কানেক্টের মাধ্যমে প্রযুক্তি হস্তান্তর, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং সরবরাহ চেইন সংযুক্তিকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত–বাংলাদেশ সহযোগিতা বাড়বে। এতে প্রযুক্তি সহজলভ্যতা বাড়বে, সরবরাহ–চেইনের সক্ষমতা উন্নত হবে এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কাঁচামাল শিল্পের প্রসার ঘটছে। ভারত এ খাতে অনেক এগিয়ে। স্থল সীমান্ত থাকার কারণে আমরা ভারত থেকে কাঁচামাল আমদানি করে আরও উপকৃত হতে পারি।’
অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, সিপিএইচআই–পিএমইসি–তে অংশ নেওয়ার জন্য আগে কয়েক মাস আগে থেকেই হোটেল বুক করতে হতো; কারণ বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৫০০–৭০০ পেশাজীবী যেতেন। কিন্তু ভিসা জটিলতার কারণে এবার মাত্র আটটি প্রতিষ্ঠানের ৮৩ জন আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ১৬ বছরের কর্মজীবনে আট–নয়বার সিপিএইচআইতে গেছি। এটি শুধু পেশাদার অনুষ্ঠান নয়, বিশ্ব ফার্মা শিল্প বোঝার অন্যতম প্ল্যাটফর্ম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চাওয়া বিজনেস ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজীকরণ, জটিলতা নিরসন। বিশেষ করে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি থেকে যারা ভারতীয় ভিসার আবেদন করবে। তাদের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় নেবেন।’
জাতীয়
দিল্লিতে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক, অজিত দোভালকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিলুর রহমান ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১১টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে সিএসসি’র কার্যক্রম ও গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় ড. খালিলুর রহমান সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের জন্য ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানান।
সপ্তম কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) এনএসএ-স্তরের বৈঠকে অংশ নিতে ড. খালিলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছে। এ সফরকে ঘিরেই অজিত দোভালের সঙ্গে তাদের এই সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠক হয়।
এদিকে কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের (সিএসসি) জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলনে যোগ দিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ভারতের রাজধানীতে পৌঁছান। দেশটির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সচিবালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সিএসসির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলন বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত হবে। সকালে জোটের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সম্মেলন শুরু হবে। আর মধ্যাহ্নভোজের পর তা শেষ হবে। ওই দিন বিকেলেই খলিলুর রহমানের ঢাকার উদ্দেশে দিল্লি ছাড়ার কথা রয়েছে।
কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি) একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোট। গত বছর মরিশাস আয়োজিত অষ্টম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশকে পঞ্চম সদস্য হিসেবে স্বাগত জানায়। সিএসসিতে রয়েছে- ভারত, শ্রীলঙ্কা, মরিশাস ও মালদ্বীপ। আর সেশেলস পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নেয়।
২০২০ সালে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মধ্যে সামুদ্রিক সহযোগিতার পরিধি বাড়াতে সিএসসি গঠিত হয়। ২০২২ সালে এতে যোগ দেয় মরিশাস।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর এটি অন্তর্বর্তী সরকারের কোনও উপদেষ্টার ভারতের দ্বিতীয় সফর। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে অংশ নিতে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ভারত সফরে যান।
জাতীয়
সড়ক দুর্ঘটনায় এক মাসে প্রাণ গেলো ৪৪১ জনের
চলতি বছরের অক্টোবর মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৪১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে, যা গত মাসের তুলনায় ৫.৭৫ শতাংশ বেশি। বুধবার (১৯ নভেম্বর) প্রকাশিত রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসে মোট ৪৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত ৪৪১ জনের পাশাপাশি আহত হয়েছেন ১১২৮ জন। নিহতদের মধ্যে ৫৭ জন নারী এবং ৬৩ জন শিশুও রয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ১৩.৯ জন নিহত হলেও অক্টোবরে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪.৭ জনে। পরিসংখ্যান বলছে, মোট নিহতের ৩১ দশমিক ৬ শতাংশই ছিলেন মোটরসাইকেল আরোহী। অক্টোবর মাসে ১৯২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩৭ জন।
এছাড়া, এই সময়ে ৯৮ জন পথচারী দুর্ঘটনায় নিহত হন, যা মোট নিহতের ২২ দশমিক ২২ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারীদের মধ্যে নিহত হয়েছেন ৬২ জন, যা মোট নিহতের ১৪.৫ শতাংশ।
সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি অক্টোবর মাসে ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত এবং চারজন নিখোঁজ হয়েছেন। এছাড়া, ৪৬টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ৪৩ জন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, সংঘটিত দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৬৬টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৪৮টি আঞ্চলিক সড়কে, ৮১টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৮৭টি শহরের সড়কে ঘটেছে।
বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১২১টি দুর্ঘটনায় ১১২ জন নিহত হয়েছেন, অন্যদিকে সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২৬টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছেন।
ফাউন্ডেশন মনে করছে, অধিকাংশ দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত গতির কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারানো। এই গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
এছাড়াও, যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচারণার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
এমকে
জাতীয়
শর্ত বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে মালয়েশিয়া: আসিফ নজরুল
বৈশ্বিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশের সুযোগ তৈরি এবং তা সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য অবারিত করাই বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।
প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা জানান, মালয়েশিয়া থেকে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে সম্প্রতি যে ১০টি শর্ত দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটি শর্তের বিষয়ে বাংলাদেশ শক্ত আপত্তি জানিয়েছে। একই সঙ্গে শর্তগুলো পূরণের সময়সীমা বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছি যে বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা সম্ভব নয়। এগুলো পূরণ করতে গেলে সিন্ডিকেট হবে আবার।
ড. আসিফ নজরুল জানান, বাংলাদেশ চায় সুযোগ যত বেশি সম্ভব যেন অবারিত করা হয় এবং এ জন্য শর্তগুলো শিথিল করা জরুরি। মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ এই বিষয়গুলো বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে। তবে শর্ত শিথিল না করা পর্যন্ত এবং শ্রমবাজার যথাসম্ভব সব এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত মালয়েশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ ও কূটনৈতিক আদান-প্রদান অব্যাহত থাকবে।
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার অতীতে বহুবার জটিলতা এবং সিন্ডিকেটের কারণে বন্ধ হয়েছে। ২০১৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে বাজারটি বন্ধ হওয়ার পর, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ২০২২ সালে এটি পুনরায় চালু হয়। কিন্তু সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশসহ অন্যান্য কর্মী প্রেরণকারী দেশ (যেমন: ভারত, নেপাল, মিয়ানমার) থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
গত অক্টোবরের শেষের দিকে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি চিঠি দিয়ে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা যৌক্তিক করার জন্য ১০টি বাধ্যতামূলক মানদণ্ড নির্ধারণ করে। তাদের দাবি, এতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
এই শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: কমপক্ষে ৫ বছর কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; বিগত ৫ বছরে কমপক্ষে ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড থাকতে হবে; অন্তত ৩টি ভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে; কমপক্ষে ১০ হাজার বর্গফুটের নিজস্ব স্থায়ী অফিস থাকতে হবে; নিজস্ব প্রশিক্ষণ সুবিধা থাকতে হবে; মানবপাচার, জোরপূর্বক শ্রম, মানি লন্ডারিং বা অন্য কোনো অপরাধে সংশ্লিষ্ট না থাকার রেকর্ড থাকতে হবে।
বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সংগঠনসহ অনেকেই এই শর্তগুলোকে ‘অযৌক্তিক, অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক’ বলে মনে করছেন। তাদের আশঙ্কা, এত কঠোর মানদণ্ড পূরণ করা অধিকাংশ এজেন্সির পক্ষেই সম্ভব নয়, যার ফলে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় হাতেগোনা কয়েকটি এজেন্সির (সিন্ডিকেট) নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে এবং অভিবাসন ব্যয় বাড়তে পারে।



