অর্থনীতি
৯ মাসে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ ১০৫ কোটি ডলার
বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসেই ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ১০০ কোটি ডলারের বেশি। গত জুলাই-মার্চ সময়ে বিদেশি ঋণের বিপরীতে ১০৫ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। একই সময়ে গত অর্থবছরে সুদ বাবদ ৪৮ কোটি ডলার পরিশোধ করেছিল বাংলাদেশ।
রবিবার (২১ এপ্রিল) দেশের বৈদেশিক ঋণের হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তৈরি করা সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ বাবদ খরচ বেড়েছে। যা পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮৯ কোটি ডলার। গত ৯ মাসে ২৫৭ কোটি ডলারের বেশি সুদ ও আসল পরিশোধ করা হয়েছে। গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১৭৩ কোটি ডলার।
বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ এসেছে এমন সময়ে, যখন দেশে কয়েক মাস ধরে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট চলছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলার-সংকটের এ সময়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের কারণে রিজার্ভ ও বাজেটের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চীন ও রাশিয়ার স্বল্প মেয়াদের ঋণের কারণে ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। ইতিমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে। মেট্রোরেল প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের কিস্তিও শুরু হয়েছে। এ ছাড়া কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের ঋণ পরিশোধও শিগগিরই শুরু হবে।
আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে অন্য মেগা প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ শুরু হলে চাপ আরও বাড়বে। অন্যদিকে ঋণের ছাড় আগের তুলনায় তেমন বাড়েনি।
ইআরডি সূত্র বলছে, জুলাই-মার্চ সময়ে সব মিলিয়ে এসেছে ৫৬৩ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৫৩৬ কোটি ডলার।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন ঘোষণা এডিবির
বাংলাদেশের মতো ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোর জন্য ৫ বিলিয়ন ডলার নতুন অর্থায়ন ঘোষণা করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
শুক্রবার (৩ মে) সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে দুর্বল দেশগুলোকে সহায়তা করতে সম্মত হয়েছে এশীয় উন্নয়ন তহবিলের (এডিএফ)।
সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উন্নয়নশীল সদস্য দেশগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এডিএফ হচ্ছে এডিবির সবচেয়ে বড় অনুদানের উৎস। প্রতি চার বছর পর পর এমন ঘোষণা আসে। ২০২৫-২৮ মেয়াদে এ অর্থায়ন করা হবে। প্রকল্প প্রস্তুত, সক্ষমতা তৈরি করতে এবং প্রযুক্তিগত বা নীতি পরামর্শ দিতে সহায়তায় এ অর্থায়ন।
এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেছেন, আমাদের দরিদ্রতম এবং সবচেয়ে দুর্বল সদস্যরা সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়নের নানা ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করছে। এ ধাক্কাগুলোকে ফিরিয়ে আনতে এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। এই অর্থ বেশি প্রয়োজন তাদের উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে।
এডিবি জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ভঙ্গুর এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে সহায়তা দেওয়া জরুরি। এ ঋণ জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এপ্রিলে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ১ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি
মোট রপ্তানি আয়ের ৮৫ ভাগ দখল করে নিয়ে আছে তৈরি পোশাক। তৈরি পোশাক রপ্তানি কমলে মোট রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধিতে ধাক্কা লাগে।
গত এপ্রিল মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি সংকুচিত হওয়ায় পুরো রপ্তানির চিত্র বদলে গেছে। এ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরে একই সময়ে যা হয়েছিল ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ফলে এপ্রিলে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি সংকুচিত হয়েছে ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। এ মাসে তৈরি পোশাকের এই সংকোচন পুরো রপ্তানির গতিকে থামিয়ে দিয়েছে।
আগের মাস মার্চ শেষে জুলাই-মার্চ ৯ মাসে তৈরি পোশাকে রপ্তানির প্রবদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এপ্রিল শেষে জুলাই-মার্চ ১০ মাসে সেই প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ। দেশের মোট রপ্তানিও ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এপ্রিল মাসে ঈদের ছুটি ছিল। এ কারণে ওয়ার্কিং ডে কম ছিল। এটি এপ্রিলে রপ্তানি কমের একটি কারণ।
তিনি আরও বলেন, আগামী মাসগুলোতে লক্ষ্যপূরণে বড় কোনো অর্জন হবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ হলো আগামীতে আর দুইটি মাস আছে। যদি মাসে তিন বিলিয়ন করেও ধরি, তবে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি হবে। বড় ধরনের অর্জন হবে বলে মনে হয় না। অনেক দিন ধরেই বিশ্ব অর্থনীতি ভালো না। করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে আবার লোহিত সাগরে অস্থিরতা যোগ হয়েছে। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা চলছেই।
তিনি আরও বলেন, মানুষ আগে যে পর্যায়ে ছিল, এখনও সেখানেই আছে। এ জন্য মানুষ বাড়তি কেনাকাটা করছেন না বা করতে পারছেন না। তাই বাজার থেকে নেতিবাচক প্রভাব যাচ্ছে না। আর আমরাও এর প্রভাব থেকে বাইরে যেতে পারছি না। তাই এখনই বলা যাচ্ছে না যে শীঘ্রই রপ্তানি বাড়বে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সবজিতে অস্বস্তি, কমেছে ব্রয়লার-ডিমের দাম
গরমে অস্বস্তিতে থাকা নগরবাসীকে বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি এনে দিলেও বাজারে এসে আবারও অস্বস্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। রোদ হোক বা বৃষ্টি ব্যবসায়ীদের সারাবছর অজুহাত লেগেই থাকে। সরবরাহের ঘাটতি না থাকলেও গরমের অজুহাতে দাম বেড়েছে প্রায় সব নিত্য পণ্যের বাজারে। তবে সুখের সংবাদ এই যে সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গত সপ্তাহে যে মুরগি বিক্রি হচ্ছিলো ২২০/২৩০ টাকা কেজি তা আজ বিক্রি হচ্ছে ১৯০/২০০ টাকা কেজি।
শুক্রবার (৩ মে ) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতার আনাগোনা কম থাকলেও গরুর মাংসের দাম এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৮০/৮০০ টাকায় বিক্রি করছে দোকানিরা। আর ছাগল বা ভেড়ার মাংস ৯৫০-১০০০ টাকা কেজি। এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা কেজি দরে। বেলজিয়াম জাতের হাস ৫০০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি ৬৬০ টাকা কেজি, পাকিস্তানি কক ৩৭০ টাকা কেজি তবে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমে ১৯০/ ২০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে গত রাতের সামান্য বৃষ্টিতে সরবরাহ কম হবার অজুহাত দেখিয়ে গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে শাক সবজির দাম।
কারওয়ান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সুমন জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গরমের কারণে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। এছাড়া গত কাল দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হওয়ায় রাতে পাইকারি সবজি ব্যাপারিরাও মাল নিয়ে তেমন আসতে পারেন নি। তাই চাহিদার তুলনায় কম সবজি থাকায় একটু দাম বেশি। তবে আগামী কয়েক সপ্তাহ পরে মালের যোগান বৃদ্ধি পেলে দাম কিছুটা কমতে পারে বলে ধারণা তার।
এদিকে খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি, মিষ্টি কুমড়া কেটে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি, পেঁপে ৪০ টাকা, দেশি গাজর ৬০ টাকা। এছাড়া লাউ প্রতি পিছ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বরবটি প্রতি কেজি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, দেশি পটল ১২০ টাকা আর হাইব্রিড পটল ৬০ টাকা, গোল বেগুন ১০০ টাকা আর লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, লেবুর হালি ৪০ টাকা তবে বরাবরের মতো মুলার দাম ছিলো একটু কম ৪০ টাকা কেজি।
এছাড়া গত সপ্তাহের তুলনায় খুব একটা বাড়েনি মাছের দাম। বাজারে ঘুরে দেখা গেছে ছোট আইড় মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজি, বোয়াল ৭০০-৮০০ টাকা কেজি, এছাড়া বড় বাইম ১২০০-১৪০০ টাকা কেজি।
তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত এবং চাহিদার শীর্ষ থাকা মাছের দাম ছিলো অপরিবর্তিত। বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজি, পাঙ্গাশ আকারভেদে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, পাবদা ৫০০-৫৫০ টাকা, একটু ছোট জাতের রুই মাছ ৩০০ টাকা আর বড় সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪২০-৪৫০ টাকা কেজি, সিলভার কার্প ২৪০ এবং মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সংশোধিত বাজেটে কৃষি খাতে ভর্তুকি বেড়েছে ৮ কোটি টাকা
আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমলেও চলতি অর্থবছরে কৃষি খাতে ভর্তুকি কমছে না। সংশোধিত বাজেটে বরং কৃষি খাতের ভর্তুকি ৮ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মূল বাজেটে এ খাতে ১৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এছাড়া চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা বাবদ ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় করবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার মানের অবমূল্যায়ন, জাহাজভাড়া বেড়ে যাওয়া এবং এলএনজির দাম বৃদ্ধির কারণে চলতি অর্থবছরেও ব্যাপক ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি ভর্তুকির জন্য ১৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এ খাতে ভর্তুকি কত রাখা হবে, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে অর্থ মন্ত্রণালয়।
তবে বিশ্বব্যাংকের প্রকাশ করা বৈশ্বিক পণ্যমূল্যের প্রতিবেদনের (পিংক শিট) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালের তুলনায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম বেশ কম ছিল।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন ইউরিয়া সারের দাম ছিল ৩৫১.৩০ ডলার। এছাড়া প্রতি টন ডিএপির দাম ৫৮৩.৮০ ডলার, প্রতি টন টিএসপির দাম ৪৫৪.৪০ ডলার এবং প্রতি টন এমওপির দাম ছিল ২৮৯.৪০ ডলার।
২০২৩-এর এপ্রিলে সরকার ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সারের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ায়। কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া ও টিএসপি সারের দাম ২২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৭ টাকা, ডিএপির দাম ১৬ টাকার পরিবর্তে ২১ টাকা ও এমওপি সারের দাম ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
ওই সময় কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় সারের আমদানি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা এবং সারের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে পণ্যটির দাম পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে দেশে ২৭ লাখ টন ইউরিয়া সারের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া টিএসপি ৭.৫ লাখ টন, ডিএপি ১৬ লাখ টন ও এমওপি সারের চাহিদা রয়েছে ৯ লাখ টন।
এর মধ্যে ১০ লাখ টন ইউরিয়া, ১ লাখ টন টিএসপি ও ১ লাখ টন ডিএপি দেশেই উৎপাদন করে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)।
চলতি অর্থবছরে গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত ইউরিয়া ১৫.৮৫ লাখ টন, টিএসপি ৬.৭২ লাখ টন, ডিএপি ১৩.০৫ লাখ টন ও এমওপি ১০.৩৪ লাখ টন আমদানি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাজেটবিষয়ক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতি বছরই মূল বাজেটে কৃষি ভর্তুকি বাবদ যে বরাদ্দ রাখা হয়, সংশোধিত বাজেটে তা বাড়ানো হয়।
তবে এই বৃদ্ধি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল সবচেয়ে বেশি। ওই অর্থবছরের মূল বাজেটে ভর্তুকি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১৬ হাজার কোটি টাকা; কিন্তু অর্থবছর শেষে ব্যয় হয়েছিল ২৬ হাজার কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বাজেটে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়; অর্থবছর শেষে খরচ হয় ১২ হাজার কোটি টাকা। একইভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মূল বাজেটে কৃষি খাতের ভর্তুকি বাবদ ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও বছর শেষে এ খাতে ব্যয় হয় ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরেও ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ ছিল ৮ হাজার কোটি টাকা, অর্থবছর শেষে ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়।
কৃষকদের কম দামে সার সরবরাহ করতে গিয়েই মূলত সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি ব্যয় হয়। এছাড়া কৃষি খাতে পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবহার করে যে সেচ দেওয়া হয়, তার বিলের ২০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হয়। এর বাইরে আখ চাষে সামান্য ভর্তুকি রয়েছে।
কৃষি পুনর্বাসন ৬০০ কোটি টাকা সহায়তা
চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা বাবদ ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা করছে। এরমধ্যে ৫৩০ কোটি টাকা সার, বীজ ও চারা বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হবে।
কৃষকদের নতুন জাতের বীজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা, এক ধরনের ফসল থেকে অন্য ধরনের ফসল চাষে আগ্রহী করতে এ সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। আর ৭০ কোটি টাকা দেওয়া হবে অনুদান। খরা, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এই অনুদান দেওয়া হয়।
২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে সরকার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা দিল ব্র্যাক ব্যাংক
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘ব্র্যাক ব্যাংকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের অভিযান’ শিরোনামে বেশ কিছু খবর প্রকাশিত হয়েছে। এই খবরগুলোতে পুরো বিষয়টিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
ব্যাংকের হেড অব কমিউনিকেশন ইকরাম কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ৩০ এপ্রিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর অঞ্চল ১৫-এর কর্মকর্তারা ব্র্যাক ব্যাংকের গ্রাহক প্রতিষ্ঠান উলকা গেমস লিমিটেডের অ্যাকাউন্ট থেকে করের তহবিল সংগ্রহের জন্য গুলশান শাখায় যান। প্রথমত, এটি কোনো অভিযান ছিল না। কর্মকর্তারা ব্র্যাক ব্যাংকের কাছ থেকে করের অর্থ সংগ্রহের জন্যও যাননি। বরং ব্যাংকের গ্রাহক প্রতিষ্ঠানের করের টাকা সংগ্রহই ছিল তাদের লক্ষ্য। বিভিন্ন মিডিয়াতে ব্যাংকের কর ফাঁকির উল্লেখ সম্পূর্ণ অসত্য। পুরো ঘটনাটি নিয়ে মিডিয়ার প্রতিবেদনগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আদেশের নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্র্যাক ব্যাংক এনবিআর কর্মকর্তাদের উক্ত কোম্পানির করের অর্থ প্রদান করতে পারেনি। এই অনিচ্ছাকৃত অপরাগতার কথা ব্রাঞ্চ ম্যানেজার লিখিতভাবে এনবিআর কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। এখানে ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষ থেকে অসহযোগিতারও অবকাশ ছিল না। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আদালতের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে ও আদালতের অবমাননা এড়াতে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরবর্তীতে ১ মে একটি অবকাশকালীন বেঞ্চ ৫ মে তারিখের নির্ধারিত শুনানি পর্যন্ত উলকা গেমসের তহবিল স্থানান্তরের বিষয়ে স্থগিতাদেশ জারি করেন। শুনানি পর আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্র্যাক ব্যাংক যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। করের টাকা আদায়ে এনবিআরকে পূর্ণ সহযোগিতা নিশ্চিত করতে ব্র্যাক ব্যাংক সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এমআই