আন্তর্জাতিক
তিন মাসের সর্বোচ্চ তাপীয় কয়লা আমদানি চীন ও ভারতের
মার্চে সমুদ্রপথে চীন ও ভারতের তাপীয় কয়লা আমদানি বেড়ে তিন মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। স্থানীয় বিদ্যুৎ খাতে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা মেটাতে বিশ্বের শীর্ষ ক্রেতা দেশ দুটি আন্তর্জাতিক বাজারে কম দামের সুবিধা নিয়েছে। কম দামের কারণেই আমদানিতে এমন উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
পণ্যবাজারবিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের দেয়া তথ্য বলছে, চীন বিশ্বের শীর্ষ কয়লা উত্তোলক ও আমদানিকারক। মার্চে দেশটি সমুদ্রপথে ২ কোটি ৯৭ লাখ টন তাপীয় কয়লা আমদানি করে, যা ফেব্রুয়ারিতে আমদানীকৃত ২ কোটি ৩০ লাখ ৩০ হাজার টনের চেয়ে বেশি। পাশাপাশি গত বছরের মার্চের তুলনায়ও আমদানি বেড়েছে।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) চীন ৮ কোটি ৬ লাখ ৪০ হাজার টন তাপীয় কয়লা আমদানি করে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি ১৭ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। চীনের সরকারি তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশটিতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ খাতে কয়লার চাহিদা বাড়ছে।
চীনের স্থানীয় বাজারে বর্তমানে অনেক বেশি দামেই তাপীয় কয়লা বিক্রি হচ্ছে। সোমবার প্রতি টনের মূল্য দাঁড়ায় ৮২৫ ইউয়ান (১১৪ ডলার)। বিপরীতে বিশ্ববাজারে তাপীয় কয়লার দাম অব্যাহত কমছে। ফলে স্থানীয়ভাবে উত্তোলন হওয়ার কয়লার বদলে আমদানীকৃত কয়লার ওপর বেশি নির্ভর করছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) জানায়, চলতি বছর চীনে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ঘুরে দাঁড়াতে পারে। পাশাপাশি সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনও বাড়ছে। ফলে এ সময় দেশটিতে কয়লার ব্যবহার কমবে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
আরগাস মিডিয়ার দেয়া তথ্য বলছে, প্রতি কেজিতে ৫ হাজার ৫০০ কিলোক্যালোরিসমৃদ্ধ অস্ট্রেলিয়ান কয়লা ২৮ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে টনপ্রতি ৮৭ ডলার ৩৭ সেন্টে রফতানি হয়েছে। ওই মাসের শুরুর দিকে এ কয়লার দাম ছিল টনপ্রতি ৯৬ ডলার ৬৬ সেন্ট।
অন্যদিকে প্রতি কেজিতে ৪ হাজার ২০০ কিলোক্যালোরিসমৃদ্ধ ইন্দোনেশিয়ান কয়লার মূল্য ৮ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে ৫৫ ডলার ৭০ সেন্টে নেমে আসে, এর আগের সপ্তাহে যা ছিল টনপ্রতি ৫৮ ডলার ১৭ সেন্ট।
কেপলার জানায়, বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় মার্চে ভারত ১ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার টন তাপীয় কয়লা আমদানি করে। ফেব্রুয়ারিতে আমদানির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৪০ লাখ ৯০ হাজার টন। এছাড়া গত বছরের মার্চে আমদানি হয়েছিল ১ কোটি ৩৪ লাখ ১০ হাজার টন। প্রথম প্রান্তিকে আমদানি করা হয় ৪ কোটি ২৭ লাখ ৯০ হাজার টন, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে কয়লার সরবরাহ চাহিদার চেয়েও বেশি। তার ওপর এবার শীতের তীব্রতা কম থাকায় হিটিং জ্বালানি হিসেবে এটির ব্যবহার কমেছে। উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোয় শীত শেষ হয়ে এলে যা আরো কমে যেতে পারে। বাড়তি সরবরাহের বিপরীতে ব্যবহার কমায় চলতি বছরে তাপীয় কয়লার বৈশ্বিক দাম নিম্নমুখী থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
এক সপ্তাহে সৌদিতে ১৯ হাজারের বেশি অভিবাসী গ্রেপ্তার
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে আবাসন, শ্রম এবং নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের দায়ে ১৯ হাজারের বেশি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। দেশজুড়ে এক সপ্তাহের অভিযানে এই অভিবাসীরা গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে রবিবার সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, দেশজুড়ে অভিযান চালিয়ে ১৯ হাজার ৬৬২ জন অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। গত ২৪ এপ্রিল থেকে ১ মে পর্যন্ত অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন ওই অভিবাসীরা। তাদের বিরুদ্ধে আবাসন, শ্রম এবং নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
একই সময়ে ১৫ হাজার ২০০ জন অভিবাসীকে সৌদি আরব থেকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বিবৃতিতে সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আবাসন আইন লঙ্ঘনের দায়ে ১২ হাজার ৪৩৬ জন, সীমান্ত নিরাপত্তা আইনে ৪ হাজার ৪৬৪ জন এবং শ্রম আইন লঙ্ঘন করায় আরও ২ হাজার ৭৬২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৮৪ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৪ হাজার ৫০১ জন। পাশাপাশি আরও ১৫ হাজার ২২০ জনকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া ফেরত পাঠানোর আগে ভ্রমণের প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহের জন্য ৪৪ হাজার ৫২৪ জনকে তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে যোগাযোগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এক হাজার ২ হাজার ৯৫২ জনকে ফেরত পাঠানোর নথিপত্র চূড়ান্ত করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একই সময়ে সৌদির আবাসন, সীমান্ত এবং কাজের বিধিবিধান লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন, আশ্রয় এবং নিয়োগে জড়িত থাকার দায়ে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে অবৈধভাবে প্রবেশে সহায়তার চেষ্টাকারী ব্যক্তির ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানার বিধান রয়েছে। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে বারবার সতর্ক করে দিয়ে আসছে।
প্রায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ মানুষের দেশ সৌদি আরব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিক সৌদিতে কর্মরত রয়েছেন। সৌদি আরবের স্থানীয় গণমাধ্যম নিয়মিতভাবে দেশটিতে আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন ধরপাকড় অভিযান ও অবৈধ প্রবাসীদের গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ করছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
তামার দাম বেড়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে
আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল বেড়েছে তামার দাম। ডলারের বিনিময় হার কমে যাওয়ার প্রভাবে ধাতুটির বাজারদর নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে। এছাড়া সরবরাহ নিয়ে নতুন করে সৃষ্ট উদ্বেগও দাম বাড়াতে সহায়তা করেছে।
লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে (এলএমই) গতকাল তামার দাম আগের দিনের তুলনায় ১ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে ৯ হাজার ৮৬৭ ডলারে। এর আগের দিন ধাতুটির দাম ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
জলবায়ু পরিবর্তন রোধের অংশ হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে বর্তমান বিশ্ব। ফলে এ খাতে অপরিহার্য ধাতু তামার চাহিদা বাড়ছে লাফিয়ে। কিন্তু বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের কারণে এ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ক্রমবর্ধমান ব্যবধানের কারণে আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে দাম। আগামী দুই বছরের মধ্যে তামার বৈশ্বিক দাম ৭৫ শতাংশেরও বেশি বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা।
ধাতুটিকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের অন্যতম নির্দেশক হিসেবে ধরা হয়। বৈদ্যুতিক উপকরণ ও শিল্প খাতের যন্ত্রাংশ তৈরিতে ধাতুটির ব্যবহার ব্যাপক। বর্তমানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আভাসও তামার চাহিদা বৃদ্ধিতে বড় প্রভাব রাখছে।
ফিচ সলিউশনের গবেষণা ইউনিট বিএমআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে স্থানান্তর এবং চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ডলারের সম্ভাব্য বিনিময় হার হ্রাস তামার বাজারকে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলবে।
বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চলতি বছর মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে পারে। এতে ডলারের বিনিময় হার কমবে। এর ফলে অন্য মুদ্রার ক্রেতাদের কাছে ডলারে লেনদেন হওয়া তামার চাহিদা বাড়বে।
কপ২৮ জলবায়ু সম্মেলনে ৬০টি দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা তিন গুণ করতে একমত হয়েছে। বিষয়টি তামার বাজারদর ব্যাপকভাবে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলবে বলে জানিয়েছে সিটিব্যাংক।
বিনিয়োগ ব্যাংকটি গত ডিসেম্বরে দেয়া এক পূর্বাভাসে জানায়, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী লক্ষ্যমাত্রার কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত ৪২ লাখ টন তামার চাহিদা তৈরি হতে পারে। ফলে ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি টন তামার মূল্য ঠেকতে পারে ১৫ হাজার ডলারে। যা গত বছরের মার্চের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির চেয়ে অনেক বেশি।
বিশ্বজুড়ে তামার নতুন খনিগুলো নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে। নিম্ন গ্রেড, অনুমোদন পেতে কঠোর প্রক্রিয়া, পরিবেশবাদীদের আন্দোলন, সামাজিক ও সরকারি নানা ইস্যু এবং ঊর্ধ্বমুখী করের মতো বিষয় খনিগুলোয় উত্তোলন বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে ধাতুটির সরবরাহ ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ তীব্র হচ্ছে। গোল্ডম্যান স্যাকস জানায়, চলতি বছর তামার বৈশ্বিক ঘাটতি দাঁড়াতে পারে পাঁচ লাখ টনে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বেড়েছে এশিয়ায়
এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি ২০২৪ সালের প্রথম চার মাসে বেড়েছে। অঞ্চলটির বিভিন্ন দেশে জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়ার পেছনে মূল প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে তেলের চাহিদা বৃদ্ধি। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এলএসইজি। খবর রয়টার্স।
প্রতিবেদনে এলএসইজি জানায়, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ দৈনিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। গত বছরের একই সময় থেকে দৈনিক আমদানির এই পরিমাণ ৩ লাখ ব্যরেল বেশি।
তবে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়লেও গত এপ্রিলে আগের মাসের তুলনায় অঞ্চলটিতে জ্বালানি তেল আমদানি কমেছে। এ অঞ্চলের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ চীনে আমদানির পরিমাণ বাড়লেও অন্যান্য দেশে কমেছে।
এলএসইজির অয়েল রিসার্চের সংকলিত তথ্য অনুসারে, গত মার্চে এশিয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানির পরিমাণ ছিল দৈনিক ২ কোটি ৭৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল। এপ্রিলে তা কমে দিনপ্রতি ২ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল হয়েছে। এছাড়া গত ফেব্রুয়ারিতে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানির পরিমাণ ২ কোটি ৬৬ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল ছিল বলেও জানিয়েছিল তারা।
এদিকে পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক জ্বালানি তেলের বাজারবিষয়ক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা আগের বছর থেকে চলতি বছর দিনপ্রতি ২২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল বৃদ্ধি পাবে। আর এ চাহিদার ১২ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলই আসবে অর্থনৈতিক সহায়তা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) বহির্ভূত দেশগুলো থেকে।
প্রতিবেদনে ওপেক আরো জানায়, চলতি বছর বিশ্বের বৃহত্তম অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানিকারক দেশ চীনে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে দিনপ্রতি ৬ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের অফিশিয়াল কাস্টমস ডেটা এবং এলএসইজির অনুমান অনুয়ায়ী, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে মোট ১ কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে চীন, যা গত বছরের একই সময় থেকে ২ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল বেশি।
চীন ছাড়াও এশিয়ার অন্যান্য দেশেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে বলে এক পূর্বাভাসে জানিয়েছিল ওপেক। তবে এপ্রিলে চীন ছাড়া অন্যান্য দেশে আমদানি কমানোয় এ সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে এসেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে ওপেকসহ অন্য বিশ্লেষকরা পূর্বাভাসে জানিয়েছে, এশিয়ার উত্তর অংশে গ্রীষ্মের মাসগুলোয় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়তে পারে এবং চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তা আরো প্রসারিত হতে পারে। চীনের অর্থনীতি বৃদ্ধির গতি পুনরুদ্ধারসহ মুদ্রাস্ফীতি থেকে বিভিন্ন দেশের উত্তরণের কারণে চাহিদা বৃদ্ধির এমন পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাগুলো।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
লন্ডনের মেয়র পদে টানা তৃতীয়বার জয়ী সাদিক খান
লন্ডনের মেয়র পদে আনুষ্ঠানিকভাবে টানা তিনবার নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন লেবার পার্টির সাদিক খান। কনজারভেটিভ প্রতিদ্বন্দ্বী সুসান হলকে ২ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ভোটে হারান তিনি। শনিবার ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
মেয়র পদে সাদিক খানের তার যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। এরপর থেকেই মেয়র পদটি ধরে রেখেছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই রাজনীতিক। রোববার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মোট ৪৩ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছেন সাদিক খান। অন্যদিকে, সাদিকের প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির সুসান হল পেয়েছেন ৩২ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট।
সুসান হলকে ২ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়েছেন সাদিক খান। তিনি টোরিদের দুটি এলাকাসহ ১৪টি নির্বাচনী এলাকার মধ্যে নয়টিতে জয়ী হয়েছেন।
নির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ২৪ লাখের বেশি, যা মোট ভোটারের ৪২ দশমিক ৮ শতাংশ। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছিল। এরপর ভোট গণনা শুরু হয় গতকাল শুক্রবার থেকে।
স্থানীয় সময় আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, সাদিক খানের প্রাপ্ত ভোট ১০ লাখ ৮৮ হাজার ২২৫ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী সুসান হলের ভোটসংখ্যা ৮ লাখ ১১ হাজার ৫১৮।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
১৭ রোগীকে হত্যার দায়ে মার্কিন নার্সের ৭৬০ বছরের কারাদণ্ড
তিন বছরে ৫টি হাসপাতালে বেশি মাত্রায় ইনসুলিনের ডোজ প্রয়োগ করে ১৭ জন রোগীকে হত্যার দায়ে প্রেসডি (৪১) নামের মার্কিন এক নার্সকে ৭৬০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি আদালত। খবর এনডিটিভির।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিন বছরে মোট ২২ জন রোগীকে ইনসুলিনের ইঞ্জেকশন দেন হেদার প্রেসডি। যাদের সবার বয়স ৪৩ বছর থেকে ১০৪ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে মাত্র ৫ জন রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। যদিও যাদেরকে এই ইঞ্জেকশন দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে এমনও রোগী ছিলেন, যাদের ডায়াবেটিস ছিলো না।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ইঞ্জেকশন দেয়ার জন্য রাতের বেলার শিফটকে বেছে নিতেন হেদার। মূলত দেহে অতিমাত্রায় ইনসুলিন প্রবেশ করানো হলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করার মাত্রা শূন্যের কাছাকাছি নেমে যাওয়া) নামের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যায় রোগী শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল বোধ করেন। পাশাপাশি হৃৎস্পন্দনও বেড়ে যায়। ওই পরিস্থিতিতে যদি অতি দ্রুত চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য বা তরল গ্রহণ না করেন, তাহলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা তৈরি হয়।
গত বছর মার্চের দিকে পেনসিলভেনিয়ার এক হাসপাতালে দুই রোগীর পর পর মৃত্যুর ঘটনায় ওই নার্সের ওপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। তখন কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে অবহিত করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ওই তদন্তের এক পর্যায়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মে মাসে হেদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। বিচার শুরুর প্রথম দিন বাদিপক্ষের আইনজীবী হেদারকে যখন প্রশ্ন করেন, ‘আপনি নিজেকে দোষী দাবি করছেন, না নির্দোষ?’ জবাবে হেদার বলেন, ‘আমি দোষী।’ তখন কেন তিনি নিজেকে দোষী দাবি করছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি দোষ করেছি। তাই আমি দোষী।’
বিচার চলাকালে বাদিপক্ষের এক সাক্ষী হেদারের সম্পর্কে বলেন, ‘তিনি অসুস্থ নন, উন্মাদও নন; তবে অশুভ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। যে রাতে তিনি আমার বাবাকে খুন করেছেন, তার পরদিন সকালে তার মুখে আমি শয়তানের ছায়া দেখেছি।’
অভিযোগ প্রমাণের পরপরই হেদারের নার্সিং লাইসেন্স বাতিল করা হয়। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পেনসিলভেনিয়ার কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতালে কাজ করেছেন হেদার।
কাফি