অর্থনীতি
উচ্চ সম্ভাবনাময় নতুন খাত হতে যাচ্ছে জুয়েলারি
উচ্চ সম্ভাবনাময় নতুন একটি খাত হতে যাচ্ছে জুয়েলারি। এটা রপ্তানিকে বেগবান করতে পারে, আবার রপ্তানি বাস্কেটেও বৈচিত্র্য আনতে পারে। সোনাশিল্পের ক্ষেত্রে আমাদের যে ঐতিহ্য, ভুল পলিসির কারণে তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ট্যারিফ ন্যাশনালাইজেশন ট্যাক্স পলিসিটি ঠিক করা হলে এই খাতের সম্ভাবনা ও রাজস্ব আয় বাড়বে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে ‘রাজস্ব সম্ভাবনা ও যৌক্তিক কর কাঠামো’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি বলে একটি পলিসি গ্রহণ করেছে। সেখানে রপ্তানিতে নানা সুযোগ রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে সম্ভাবনাময় শিল্প হতে যাচ্ছে জুয়েলারি। তাই বসুন্ধরা গ্রুপের মতো বড় কম্পানিগুলোকে জুয়েলারি খাতে এগিয়ে আসতে হবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি কাজী সিরাজুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. দিলীপ কুমার রায়, এফবিসিসিআইয়ের ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ পলিসি অ্যাডভাইজার মনজুর আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র অতিরিক্ত মহাসচিব শাহ মো. আব্দুল খালেক, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় কর আইনজীবী ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট ড. মো. নুরুল আজহার শামীম, বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন ও সহসভাপতি মাসুদুর রহমান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম. মাসরুর রিয়াজ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাজুসের সহসভাপতি রিপনুল হাসান। সঞ্চালনায় ছিলেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন রপ্তানিতে জোর দেওয়ার কথা। আমরা শুধু আরএমজির ওপর নির্ভর করছি। আমার মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের জন্য আরেকটি রপ্তানিতে সম্ভাবনাময় খাত হতে যাচ্ছে জুয়েলারিশিল্প।
দীর্ঘ পরীক্ষিত ট্যারিফ পলিসিতে বলা আছে, আপনি যে পরিমাণ রপ্তানি করবেন, তার বিপরীতে যে পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করবেন তাতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন।’
আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, আমি ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের পক্ষ হয়ে কথা দিচ্ছি, আপনাদের বিশ্লেষণগুলো আমাদেরকে দেন। আমরা আপনাদেরকে নিয়ে আবার বসব। প্রয়োজনে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে। এই কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) দেব। স্বর্ণশিল্প বিকাশে একটি সুষম কর ও শুল্ক কাঠামো তৈরিতে ট্যারিফ কমিশন যাতে ভূমিকা রাখতে পারে, সেই কাজটি আমরা করব।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম. মাসরুর রিয়াজ বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে আমরা এখন যেসব সুবিধা পাচ্ছি, এলডিসিতে গেলে সেগুলো আর থাকবে না। তাই যদি এখনই নতুন নতুন পণ্য তৈরি করতে না পারি তাহলে সেই জায়গায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে জুয়েলারি খাতের বড় একটি সম্ভাবনা আছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমাদের স্থানীয় সোনার বাজার ২০২০ সালে ছিল প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, যা প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি হচ্ছে। ২০৩০ সালে এটা প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলারের বাজার হয়ে যাবে। এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জকে সামনে আনতে হবে।
বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমরা শুধু কর কমানো বা বাড়ানোর কথাই বলছি না। আমরা বলতে চাই, এই খাত থেকে সরকার বছরে মাত্র ৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব পায়। এই তথ্যটি সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আমাদের এক সেমিনারে জানিয়েছেন। তিন লাখ কোটি টাকার স্থানীয় বাজার, সেখানে এই রাজস্ব আসার কথা নয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিএসটিআই আইএসও সনদ পেল ২২ প্রতিষ্ঠান
আন্তর্জাতিক মানের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করায় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিটিউশন (বিএসটিআই) থেকে ২২টি প্রতিষ্ঠানকে ২৮টি আইএসও সনদ প্রদান করা হয়। রোববার (০৫ মে) রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই’র প্রধান কার্যালয়ে এসকল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দের কাছে সনদ হস্তান্তর করেন বিএসটিআই’র মহাপরিচালক (গ্রেড-১) এস এম ফেরদৌস আলম।
অনুষ্ঠানে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এর প্রথম সহসভাপতি মো. আমিন হেলালীসহ আইএসও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও বিএসটিআই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উপর আইএসও ৯০০১:২০১৫ সনদ প্রদান করা হয়।
সনদ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: লোভেন বায়োসায়েন্স বেভারেজ লিমিটেড, সেনা কল্যাণ ইলেকট্রনিক্স; জে. এইচ. এম আগারউড; নাভেদ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস; আলমগীর কন্সট্রাকশন লিমিটেড; দি রানী রি-রোলিং মিলস লিমিটেড; ফুলকলি ব্রেড এণ্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড; বেসিক পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড; এবিএস কেবলস; লাইফ মেড পলিমার টেকনোলজি লিমিটেড; এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড; হার্বস ওয়ার্ল্ড লিমিটেড; এনেক্স লিমিটেড; এপেক্স মেটাল; নিতা কোম্পানি লিমিটেড, এবিসি কন্সট্রাকশন কেমিক্যাল লিমিটেড।
এছাড়া জে. এইচ. এম আগারউড, পিওরিয়া ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড; এবিএস কেবলস, এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এর অনুকূলে পরিবেশ ব্যবস্থাপনার উপর আইএসও ১৪০০১:২০১৫ সনদ প্রদান করা হয় এবং ভিটালেক ডেইরি এন্ড ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ; নওরিশ ফুডস লিমিটেড, কেয়ার নিউট্রেশন লিমিটেড, প্রাইম পুষ্টি লিমিটেড; জাভেদ এগ্রো ফুড প্রসেসিং লিমিটেডের অনুকূলে খাদ্য ব্যবস্থাপনার উপর আইএসও ২২০০০:২০১৮ সনদ প্রদান করা হয়। এছাড়া অকুপেশনাল হেলথ সেফটি ম্যানেজমেন্টের অনূকূলে জে. এইচ. এম আগারউডকে আইএসও ৪৫০০১:২০১৮ প্রদান করা হয়।
উন্নত কর্মপরিবেশ ও ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্বারোপ করে বিএসটিআই’র মহাপরিচালক এসএম ফেরদৌস আলম বলেন, বিএসটিআই থেকে আপনাদের আইএসও সনদ গ্রহণ প্রমান করে পণ্য মান এবং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আমরা আরও উন্নতির দিকে যাচ্ছি। দেশে যত বেশি ভালো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠবে দেশ তত বেশি উন্নত হবে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দেশের রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিএসটিআই থেকে ‘হালাল’ সনদ প্রদান কার্যক্রম শুরু করেছি। এভাবে সামগ্রীক ক্ষেত্রে উন্নয়ন করতে পারলে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের কাতারে যাওয়ার ভিশন পূর্ণ হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আমদানির খবরে দাম কমেছে দেশি পেঁয়াজের
ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার খবরে দিনাজপুরের হিলিতে দেশি পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। একদিনের ব্যবধানে দাম কমেছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা।
সর্বনিম্ন রপ্তানি মূল্য ৫শ’ ৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে বাংলাদেশসহ ৬ দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি শুরু করেছে ভারত। রবিবার ও সোমবারের মধ্যে বেনাপোল ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে ঢুকবে বলে আশা আমদানিকারকদের।
বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজ আমদানির কারণে হিলির মতো পুরো দেশেই কোরবানি ঈদের আগে পেঁয়াজের দাম কমবে।
আমদানি করা পেঁয়াজ এলে কেমন দাম কমতে পারে জিজ্ঞেস করলে রাজধানীর শ্যামবাজারের আড়তদাররা বলেন, হয়তো ৫০ টাকার আশপাশে থাকতে পারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের মূল্য। তবে রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজারেই এখন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি। খুচরায় যা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ কোথাও কোথাও ৮০ টাকায়।
অন্যদিকে হিলি বাজারের কয়েকজন পেঁয়াজ বিক্রেতা জানান, ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার খবরে বাজারে কমেছে দেশি পেঁয়াজের দাম। এক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। যে পেঁয়াজ শনিবার ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, রোববার সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে।
ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ রপ্তানিকারক দেশ। গত ডিসেম্বরে তারা প্রথম পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু তারপর অনির্দিষ্টকালের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়।
বাংলাদেশ যত পেঁয়াজ আমদানি করে, তার সিংহভাগই আসে ভারত থেকে। তবে, ভারত পেঁয়াজ না দিলেই উৎপাদন ও মজুদ যায়ই থাকুক, দেশে বেড়ে যায় মশলা জাতীয় এই পণ্যটির দাম।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পতেঙ্গায় ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে আরব আমিরাত
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বে টার্মিনালে ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ আরব আমিরাত। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি যন্ত্রপাতিও দেবে দেশটি। এ বিষয়ে শিগগিরই উভয় প্রতিষ্ঠানের মাঝে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। তবে চুক্তি সইয়ের আগে আগামী ১৬ মে চট্টগ্রামে বন্দরের কার্যক্রম ও বে টার্মিনাল পর্যবেক্ষণে আসবে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া ডিজাইন অনুযায়ী বে টার্মিনালের ৩টি জেটিতে সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি এবং দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডের বিনিয়োগের বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত ছিল। তবে অবশিষ্ট বন্দরের অংশে সরাসরি বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে আসে আবুধাবী পোর্ট অথরিটি। মূলত চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গেই যৌথভাবে কাজ করবেন তারা। বিনিয়োগের সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আগেই অন্যান্য বিদেশি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় প্রথমেই চুক্তি স্বাক্ষর করে রাখছে প্রতিষ্ঠানটি।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, আবুধাবি পোর্টের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর পর্যবেক্ষণ করতে আসবে। এই মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে বাংলাদেশের।
চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পুরো আয়োজন রাজধানী ঢাকায় হলেও, তার আগে ১২ মে বাংলাদেশে আসবে আবুধাবী বন্দরের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি। ৩ দিন চট্টগ্রামে অবস্থান নিয়ে বন্দরের পাশাপাশি বে টার্মিনাল পর্যবেক্ষণ করবেন তারা।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, আবুধাবী পোর্ট অথরিটি নিজেদের অর্থায়নে অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন করবে, তেমনি টার্মিনাল পরিচালনার যন্ত্রপাতিও নিজেরাই আনবে বলে জানান বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বৈশ্বিক ঋণ এখন রেকর্ড ৩১৩ ট্রিলিয়ন ডলারে
গত বছর বৈশ্বিক ঋণের ভান্ডারে আরও ১৫ ট্রিলিয়ন বা ১৫ লাখ কোটি ডলারের বেশি যোগ হয়েছে। এর ফলে মোট বৈশ্বিক ঋণ ৩১৩ ট্রিলিয়ন ডলারের নতুন রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
আইএমএফের এক ব্লগপোস্টে বলা হয়েছে, গত ছয় মাসে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া প্রায় সব উন্নত দেশে মূল্যস্ফীতির হার কমেছে। কিন্তু সরকারের ক্রমবর্ধমান ঋণ অনেক দেশেই এখন বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যেভাবে সরকারের ঋণ বাড়ছে, তার প্রভাব মোকাবিলা করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
মহামারি শুরু হওয়ার চার বছর পর এখন উন্নত দেশগুলোতে সরকারি ব্যয় প্রাক্–মহামারি পূর্বাভাসের চেয়ে জিডিপির ৩ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি। এ ক্ষেত্রে সুদ পরিশোধ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। আর এই হিসাব যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ রেখে করা হয়েছে। চীন ব্যতীত উদীয়মান অর্থনীতির ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয় ২ শতাংশীয় পয়েন্ট বেশি। ব্যয়ের এই ধরন দেখে বোঝা যায়, সংকটের সময় যেসব আর্থিক নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল, যেমন ভর্তুকি ও করছাড়ের মতো নীতি, তা থেকে বেরিয়ে আসার গতি খুব কম। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতির সঙ্গে অসমন্বিত সুদহার বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক দেশের সুদ পরিশোধ বাবদ ব্যয় অনেকটাই বেড়ে গেছে।
সরকারি ঋণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবার ওপরে আছে বিশ্বের দুই প্রধান অর্থনীতি—যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। মহামারি শুরুর চার বছর পর এই দুই দেশে সরকারি ঋণ বেড়েছে যথাক্রমে ২ ও ৬ শতাংশীয় পয়েন্ট হারে। এই দুটি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর বৈশ্বিক অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে। চীনের প্রবৃদ্ধির হার কমে গেলে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ও বাণিজ্যের গতি কমে যায়। ফলে যেসব দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল, তারা ক্ষতির মুখে পড়ে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রেজারি বন্ডের সুদহার বেড়ে গেলে সারা বিশ্বে বিনিয়োগ প্রবাহে ভাটা পড়ে।
এই বাস্তবতায় আইএমএফ মনে করছে, চলতি বছর রাজস্ব আয়ে টানাটানি থাকবে।
২০২৪ সালজুড়ে বিশ্বের অনেক দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জনসংখ্যার হিসাবে এসব দেশে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষের বসবাস। ইতিহাসে দেখা যায়, নির্বাচনের বছরে সরকারি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি করহার কমে যায়। নির্বাচনের বছরে দেশে দেশে সরকারের রাজস্ব ঘাটতি পূর্বাভাসের চেয়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়ে যায়। এবারের নির্বাচনী বছরে এই ঘাটতি যেন লাগামছাড়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে আইএমএফ।
আইএমএফ মনে করছে, মধ্য মেয়াদে দেশে দেশে ঘাটতি কমানোর বা সরকারি ব্যয় হ্রাসের উদ্যোগ নেওয়া হলেও অনেক দেশের সরকারি ঋণ স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য তা যথেষ্ট নয়। এখন যে নীতিতে সরকারগুলো দেশ চালাচ্ছে, সেই নীতি চলমান থাকলে ২০২৯ সালের মধ্যে সরকারের প্রাথমিক রাজস্ব ঘাটতি (সুদ ব্যয় ব্যতীত) স্থিতিশীল পর্যায়ে থাকবে না। এক-তৃতীয়াংশ উন্নত ও উদীয়মান দেশগুলোর ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে। অন্যদিকে নিম্ন আয়ের এক-চতুর্থাংশ দেশের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য।
উদীয়মান দেশগুলোতে সরকারি ঋণ বেড়ে যাওয়ার কারণে এসব দেশের রাজস্ব ঘাটতি কমিয়ে আনা জরুরি বলে মনে করে আইএমএফ। তাদের হিসাবে, জিডিপির অন্তত ২ দশমিক ১ শতাংশীয় পয়েন্টের সমপরিমাণ ঘাটতি কমাতে হবে।
এদিকে বাংলাদেশে সরকারের ঋণ এখনো বিপজ্জনক পর্যায়ে না উঠলেও গত কয়েক বছরে ঋণ অনেকটা বেড়েছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১০ সালের পর ১২ বছরে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ বেড়েছে আড়াই গুণের বেশি। ২০২২ সালে ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক বিনিয়োগের গতি-প্রকৃতি বদলে যাওয়ার পর বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ বেড়েছে। দেশে ঋণ নিয়ে একধরনের উদ্বেগ তৈরি হলেও সামগ্রিক ঋণ–জিডিপির অনুপাত এখনো ৪০ শতাংশের নিচে। বিদেশি ঋণের অর্থে যেসব প্রকল্প হচ্ছে, সেখান থেকে বিদেশি মুদ্রা আয়ের তেমন সুযোগ নেই। এ ছাড়া টাকার যেভাবে অবমূল্যায়ন হচ্ছে, তাতে সরকারের ঋণ পরিশোধের ব্যয় বেড়ে যাবে। এর সঙ্গে রাজস্ব আয় আনুপাতিক হারে না বাড়লে ঋণ পরিশোধ নিয়ে শঙ্কা থেকে যায় বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
টানা ৮ বার কমার পর বাড়ল সোনার দাম
টানা ৮ দফা কমার পর দেশের বাজারে সোনার দাম আবারও বেড়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনা দাম এক হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ২১৩ টাকা।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ দাম বাড়ানো হয়েছে। আগামীকাল রোববার (৫ মে) থেকে এ দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে গত ৩ মে এবং ৩০ এপ্রিল, ২৯ এপ্রিল ২৮ এপ্রিল, ২৭ এপ্রিল, ২৫ এপ্রিল, ২৪ এপ্রিল ও ২৩ এপ্রিল আট দফা সোনার দাম কমানো হয়। এর মধ্যে ৩ মে এক হাজার ৮৭৮ টাকা কমানো হয়। তার আগে ৩০ এপ্রিল ৪২০ টাকা, ২৯ এপ্রিল ১ হাজার ১১৫ টাকা, ২৮ এপ্রিল ৩১৫ টাকা, ২৭ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৫ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২ হাজার ৯৯ টাকা এবং ২৩ এপ্রিল ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমানো হয়। এতে আট দফায় ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ২৬২ টাকা কমানো হয়।
আট দফা দাম কমার পর এখন সোনার দাম বাড়লো। শনিবার (৪ মে) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে নতুন করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজুস সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা রোববার থেকে কার্যকর হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ২১৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫ হাজার ১৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৮৬৩ টাকা বাড়িয়ে ৯০ হাজার ১৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭১২ টাকা বাড়িয়ে ৭৪ হাজার ৯৮৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশ্য সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয়। সেইসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ১৯ হাজার ২২৩ টাকা গুনতে হবে।
এর আগে ৩ এপ্রিল সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৮৭৮ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৯ হাজার ১৬৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৮০৭ টাকা কমিয়ে এক লাখ ৪ হাজার ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
কাফি