জাতীয়
বাংলাদেশের চিকিৎসায় সুস্থ মেডিকেল ভিসায় আসা প্রথম রোগী
ভুটানের তরুণী কারমা দেমা (২৩)। ক্যানসারে নাকে পচন ধরেছিল তার। ভারতের টাটা মেমোরিয়ালে দুইবার অস্ত্রোপচার করেও সুফল পাননি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের চিকিৎসায় নিয়ে সুস্থ নাক ফিরে পেলেন তিনি। সম্প্রতি তার নাক রিকনস্ট্রাকশন সার্জারি সফল হয়েছে। এর পুরো কৃতিত্ব শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের। বর্তমানে তিনি ভালো আছেন। শিগগিরিই দেশে ফিরে যাবেন।
জানা গেছে, কয়েক বছর আগে নাকের গহ্বরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হসপিটালে চিকিৎসায় ক্যানসারমুক্ত হলেও রেডিওথেরাপিজনিত জটিলতায় নাক নষ্ট হয়ে যায় তার। পরে সেখানে দুই দফা অপারেশন করেও নাক পুনর্গঠনে ব্যর্থ হয় চিকিৎসকেরা। পরবর্তীতে কারমা বাংলাদেশে এসে চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নেন। এতে করে তিনি মেডিকেল ভিসায় দেশে চিকিৎসা নিতে আসা প্রথম বিদেশি রোগীর তালিকায় নাম লেখান।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কারমার নাকের গঠন এখন অনেকটা ভালো হয়েছে। তিন থেকে ৬ মাস পর তার আরেকটি ছোট সার্জারি করা হবে।
কামরা দেমার বড় ভাই কারমা ফুঁনথো গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বোন এখন অনেক ভালো। সেকেন্ড টাইম ফিনিশিং অপারেশন বাকি আছে। ভুটান ও বাংলাদেশ সরকারের কোলাবেরশনে চিকিৎসা হচ্ছে। আমাদের কোনো খরচ দিতে হচ্ছে না। বাংলাদেশের চিকিৎসা ও সার্ভিসে আমরা খুব খুশি। এর আগে ২০২০ সাল থেকে ভারতে দেড় বছরের মত চিকিৎসা হয়েছিলো তার।
গত ৯ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে সার্জনদের তিনটি টিম যৌথভাবে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে নাক রিকনস্ট্রাকশন সার্জারি করে কারমা দেমার। পুরো সার্জারির তত্ত্বাবধানে ছিলেন বার্ন ইনস্টিটিউটের তৎকালীন প্রধান সমন্বয়ক ও বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
কারমা দেমা বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটের ১৩-তলায় অবস্থিত একটি কেবিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশে এসে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন।
কারমা যেভাবে বাংলাদেশে
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভুটান সরকার যৌথভাবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে থিম্পুতে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের মাধ্যমে একটি প্লাস্টিক সার্জারি ক্যাম্পের আয়োজন করেছিল। সেখানে ডা. সামন্ত লাল সেন ১৪ সদস্যের এই চিকিৎসক দলের নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি বার্ন ইনস্টিটিউটগুলোর জাতীয় সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করছিলেন। সাত দিনব্যাপী এই ক্যাম্পে ১৬টি জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছিল। ওই ক্যাম্পে নাকের চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন কারমা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ বাড়াতে কাজ করছে সরকার: বিদ্যুৎপ্রতিমন্ত্রী
জাতীয় গ্রিডে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ বাড়াতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রবিবার (৫ মে) সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডা বার্জ ভন লিন্ডের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সুইডেন ও সুইডেনের কোম্পানি কাজ করছে। এর মধ্যে এইচঅ্যান্ডএম, আইকিয়া ও লিন্ডেক্স অন্যতম। বাংলাদেশ ও সুইডেন যৌথভাবে তৈরি পোশাক খাতে গ্রিন ট্রানজিশনের জন্য অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে ১২ হাজার ৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন চলমান ও প্রক্রিয়াধীন। ৩ হাজার ২৫৩ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চলমান এবং আরো ৭ হাজার ৮৬১ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরো বলেন, বায়ু বিদ্যুৎ নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন, যদিও এরইমধ্যে উইন্ড ম্যাপিং সম্পন্ন হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৪০ শতাংশ হবে পরিষ্কার বিদ্যুৎ। আমাদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ সহনীয় মূল্যে সবার জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা। নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন। স্মার্ট গ্রিড এবং সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা আরো আধুনিক করা দরকার। সরকার চেষ্টা করছে, জাতীয় গ্রিডে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ বাড়াতে।
সাক্ষাৎকালে সুইডেন দূতাবাসের পলিটিক্যাল, ড্রেড অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান লভিসা হোফম্যান উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বৃহস্পতিবার ঢাকা আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব
আগামী ৯ মে (বৃহস্পতিবার) ঢাকা সফরে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ পৌঁছে দেওয়ার কথা রয়েছে তার।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র কোয়াত্রার ঢাকা সফরের তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, আগামী ৯ মে ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিবের ঢাকায় আসার তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। ঢাকা সফরে তার মূল বৈঠক হবে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে।
গত ২০ এপ্রিল ঢাকায় আসার কথা ছিল ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রার। তবে অনিবার্য কারণে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের পূর্বনির্ধারিত সেই সফর স্থগিত হয়।
জানা গেছে, একদিনের আসন্ন ঢাকা সফরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন কোয়াত্রা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরসহ দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কোয়াত্রা। আশা করা হচ্ছে, সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেবেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জেদ্দায় ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম গন্তব্য লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত সৌদি আরবের জেদ্দায় ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। জেদ্দা মুসলিম উম্মাহর জন্য পবিত্রতম নগরী মক্কার প্রধান প্রবেশদ্বার।
আগামী আগস্ট মাস থেকে সৌদি আরবের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর জেদ্দায় প্রবাসী ও শ্রমজীবী বাংলাদেশিদের উন্নত যাত্রীসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে। সপ্তাহে প্রতিদিন ৪৩৬ আসনের বৃহদাকার এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-জেদ্দা রুটে ফ্লাইট শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বহরে দুটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০সহ মোট ২৪টি এয়ারক্রাফট রয়েছে।
ভ্রাতৃপ্রতিম রাষ্ট্র সৌদি আরবের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরালো করতে বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা ঢাকা-জেদ্দা রুটে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ধর্মপ্রাণ প্রতিটি মুসলমান জীবদ্দশায় হজ ও ওমরাহ পালন করার ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন। আর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী আগস্ট মাস থেকে ঢাকা-জেদ্দা রুটে ফ্লাইট শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছে।
প্রতিযোগিতামূলক ভাড়া ও যাত্রীদের পছন্দ অনুযায়ী সময়কে প্রাধান্য দিয়ে ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বলে রবিবার (৫ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বর্তমানে অভ্যন্তরীণ সব রুট ছাড়াও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি, মাস্কাট, দোহা, মালে, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, গুয়াংজু, চেন্নাই ও কলকাতা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণে মিশরের সম্মতি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বাংলাদেশের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি ও বাণিজ্য সম্পসারণে মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব দিলে কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল পাসপোর্টের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করতে কায়রো নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
পশ্চিম আফ্রিকার গাম্বিয়ার রাজধানী বানজুলে ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনের ফাঁকে স্থানীয় সময় শনিবার বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ হাসান শুকরি বৈঠক করেন। বৈঠকে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রোহিঙ্গা সংকটসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। নিয়মিত ফরেন অফিস কনসালটেশন আয়োজনের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে একমত হন তারা।
মিশরে বাংলাদেশ মিশনের চ্যান্সারি ভবন নির্মাণে মিশর সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে বলে মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দেন।
এরপর ডিজিটাল কো-অপারেশন অর্গাইনাইজেশনের (ডিসিও) মহাসচিব দিমা আল ইয়াহিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। ডিসিও’র সদস্য রাষ্ট্রসমূহ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আন্তুর্জাতিক ব্যবহার সংক্রান্ত ‘মাল্টিল্যাটেরাল এ আই এগ্রিমেন্ট’ শীর্ষক একটি চুক্তির খসড়া তৈরি করছে বলে মহাসচিব পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডিসিও’র মহাসচিবকে বাংলাদেশে সফর করে তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি সরেজমিনে দেখার আমন্ত্রণ জানালে তিনি আন্তরিকভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সফরের মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে ডিসিও’র সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
একই দিন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ পারস্পরিক সম্পর্কোন্নয়নের পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের বিষয়সমূহ বৈঠকে আলোচনায় স্থান পায়।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ওআইসির ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতীয় নীতিমালা প্রকাশ
তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে, স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতীয় নীতিমালা বা গাইডলাইন চালু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহায়তায় শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে উচ্চ তাপজনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিতে এই গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়।
রবিবার (৫ মে) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এ নীতিমালার মোড়ক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশে গত কয়েকদিনে যে পরিমাণ তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছিল তাতে জনগণকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল। তাপপ্রবাহ যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে তখনই আমরা এই নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। এটি সময় উপযোগী একটি নির্দেশিকা যা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের এই নীতিমালার আলোকে অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের ঘটনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত মানুষের জন্য অনেক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করেছে। ২০২১ সালে চালু হওয়া ইউনিসেফের ‘সুস্থ শিশুর জন্য সুস্থ পরিবেশ’ শীর্ষক বৈশ্বিক কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডিজিএইচএসের তৈরি এ জাতীয় নীতিমালা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে অরক্ষিত জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের ক্ষতি ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ শিশুদের নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ইউনিসেফের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাপমাত্রা প্রতি ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধিতে অপরিণত শিশু জন্মের ঝুঁকি ৫ শতাংশ বাড়ে এবং তাপপ্রবাহ না থাকা সময়ের তুলনায় তাপপ্রবাহের সময়ে এই হার ১৬ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তাপপ্রবাহের সময়ে অপরিণত শিশু জন্মের ঝুঁকি অনেক বেশি। অর্থাৎ তাপপ্রবাহ যত বেশি এবং যত তীব্র হবে ঝুঁকি তত বাড়বে। বাংলাদেশে অপরিণত শিশু জন্মের হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি (১৬.২%) এবং তাপপ্রবাহে এটি আরও বাড়ে।
ইউনিসেফের হিসেবে, ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের মোট শিশুর ৯৯ শতাংশ বা ৩ কোটি ৫৫ লাখ প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হবে। এই সংখ্যা ২০২০ সালের তুলনায় উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেশি। ২০২০ সালে মাত্র ২৬ লাখ শিশু, যা দেশের মোট শিশুর ৫ শতাংশ, এই ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছিল।
ইউনিসেফের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতি তিন শিশুর একজন বা প্রায় ২ কোটি শিশু প্রতিদিন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চলমান তাপপ্রবাহ, বন্যা, নদী ভাঙন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিবেশগত অভিঘাতের মতো বিরূপ আবহাওয়াজনিত পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে শিশুরা।
তাপপ্রবাহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতীয় নীতিমালায় বলা হয়েছে- গরমজনিত চাপ সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন; গরম জনিত চাপের লক্ষণগুলো সহজেই শনাক্ত করুন; নিজেকে ও অন্যদের সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিন; কারও মধ্যে গুরুতর লক্ষণ দেখা গেলে তাকে অবিলম্বে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান।
এই নির্দেশাবলীর লক্ষ্য হলো- জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো এবং গরমজনিত স্বাস্থ্য উদ্যোগে মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা।
বৃহত্তর কমিউনিটি ও জনসাধারণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যম ও তৃণমূল পর্যায়ের সংগঠনের মাধ্যমে এই নীতিমালা বা গাইডলাইন সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার চালানো হবে।