জাতীয়
হাদিকে হত্যাচেষ্টা: শুটার ফয়সালের বাবা-মা গ্রেফতার
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলার মূল অভিযুক্ত শ্যুটার ফয়সালের মা-বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে শ্যুটার ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) ও হাসি বেগম (৬০)।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় র্যাব-১০ এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং এ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাচেষ্টা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে মো. হুমায়ুন কবির ও হাসি বেগমের চার সন্তানের মধ্যে ফয়সাল তৃতীয়। ফয়সাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তার বোন জেসমিন আক্তারের সপ্তম তলার বাসায় প্রায়ই যাতায়াত করতেন। ঘটনার দিন রাতে জেসমিন আক্তারের বাসায় একটি ব্যাগ নিয়ে ওঠেন ফয়সাল। পরে ওই বাসার চিপা দিয়ে কালো ব্যাগটি ফেলে দিয়ে আবার তার ভাগনে জামিলকে (১৮) দিয়ে ব্যাগটি নিয়ে আসান। আসামি তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনের একটি ওই বাসার ছাদ থেকে ফেলে দেন এবং অন্যটি তার মা হাসি বেগমকে দেন।
তিনি আরও বলেন, সেখানে বাবা-মার সঙ্গে দেখা করেন ফয়সাল। এরপর ফয়সাল তার অবস্থান নিরাপদ মনে না হওয়ায় আগারগাঁও থেকে মিরপুর পরে শাহজাদপুরে চাচাতো ভাই আরিফের বাসায় যান। ফয়সালের ব্যাগ নিয়ে তার বাবা মো. হুমায়ুন কবির একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে দেন এবং সঙ্গে কিছু টাকাও দেন। পরে আসামিরা তার ছোট ছেলে হাসান মাহমুদ বাবলু ওরফে রাজের কেরাণীগঞ্জের বাসায় যান এবং তারা জুরাইন থেকে দুটি মোবাইল ফোনের সিম কিনে ব্যবহার করেন।
গ্রেপ্তারের পর ফয়সালের বাবা-মাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাদি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক এবং অভ্যুত্থান-অনুপ্রাণিত সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন ‘ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক। তিনি ঢাকার ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনে স্বত্রন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন হাদি এবং এ লক্ষ্যে নিয়মিত গণসংযোগ করছিলেন তিনি।
গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে করে আসা দুই আততায়ীর একজন চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
হাদির ওপর হামলাকারী দুই আততায়ীর একজন সন্দেহভাজন ‘ফয়সাল করিম’ তার সঙ্গেই কিছুদিন ধরে নির্বাচনী প্রচার কাজে যুক্ত ছিলেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও তাকে সন্দেহভাজন হামলাকারী ধরে নিয়ে নাগরিকদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ ফয়সাল করিম নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঢাকার মোহাম্মদপুর-আদাবর এলাকার নেতা ছিলেন।
এমকে
জাতীয়
শ্রমশক্তি রপ্তানিতে বড় বাধা দালাল চক্র: প্রধান উপদেষ্টা
বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে দালাল চক্র বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী ও প্রবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শ্রমশক্তি রপ্তানির পুরোটাই দালাল বেষ্টিত। পদে পদে দালালদের প্রতারণার জন্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, এই শ্রমশক্তি রপ্তানি খাতকে দালাল মুক্ত করতে না পারলে উন্নতি সম্ভব না।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রমিকদের মুক্তির কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারা অনেক কষ্ট করে বিদেশ গেছেন। সেখানে আইন অমান্য করলে কি শাস্তি হবে সবই জানতো, তারপরও দেশের জন্য আইন ভাঙল। পরবর্তীতে ওই দেশের সরকারকে অনুরোধ করলাম, তিনি তাদের মুক্তি দিলেন।
তিনি বলেন, আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আনোয়ার ইব্রাহিম এখানে আসলেন। তখন খবর পেলাম ১৭ হাজার শ্রমিক মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে মালেয়েশিয়া যেতে পারেনি। তারা সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। আনোয়ার ইব্রাহিমকে বললাম, এদেরকে নিয়ে যেতে হবে। বন্ধু (আনোয়ার ইব্রাহিম) মানুষ না করতে পারেনি। বলছে, ঠিক আছে নিয়ে যাব। পরবর্তীতে মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে এগুলো নিয়ে কাজ করলাম। তখন দেখা গেছে, পুরো জগতটা দালাল-সিন্ডিকেট ভরা। সরকার এখান থেকে অনেকদূরে। এ হলো বিদেশ যারা যেতে চাচ্ছেন, তাদের কপাল।
ড. ইউনূস বলেন, জাপান সফরে গেলাম। তারা বলল, লোক দরকার। আমরা বললাম, আমরা তো লোক নিয়ে বসে আছি। কত লোক লাগবে। বলল, জানাবে। তারা নেপাল থেকে ৭ হাজার লোক নিয়েছে। আমি জানতে চাইলাম, বাংলাদেশ থেকে কত নিয়েছে? বলল, মাত্র ২ হাজার। শুনে অবাক হলাম, নেপাল থেকে এতো হলে, বাংলাদেশ থেকে কম কেন। আমাকে জিজ্ঞেস করল, কত দিতে পারব। আমি বললাম একলাখ লোক দিতে পারব। শুধু ভাষা শিখলে ওখানে যেতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, জাপানের বহু শহরে ট্যাক্সি বন্ধ হয়ে গেছে, ড্রাইভার নেই। মাইলের পর মাইল খালি জমি পড়ে আছে, জনশূন্য। তারা বলল, লোক পাঠাও আমরা যাতে এগুলো চালু করতে পারি। চাষাবাদ করতে পারি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পৃথিবীতে তারুণ্যের অভাব, আমরা তারুণ্যের খনি। এটা সোনার চেয়েও দামী। সারা পৃথিবীকে আমাদের কাছে আসতে হবেই, এত তরুণ জনশক্তি আর কোথাও নাই।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল প্রবাসীদের কল্যাণে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
এমকে
জাতীয়
ঢাকার ভারতীয় ভিসা সেন্টার হঠাৎ বন্ধ ঘোষণা
দেশে চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (আইভিএসি) বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ivacbd.com-এ প্রকাশিত নোটিশে বলা হয়েছে, ‘চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে জানানো যাচ্ছে, ‘যমুনা ফিউচার পার্কের ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার আজ দুপুর ২টায় বন্ধ হয়ে যাবে।’
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আজ যাদের ভিসা সাবমিশনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল, তাদের পরবর্তী তারিখে নতুন স্লট প্রদান করা হবে। আবেদনকারীদের ধৈর্য ধরতে এবং ওয়েবসাইট বা হটলাইনের মাধ্যমে আপডেট চেক করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনাগুলোর কারণে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও তথ্যের জন্য আইভিএসির ওয়েবসাইট (ivacbd.com) বা হটলাইন নম্বর (০৯৬১২ ৩৩৩ ৬৬৬ / ০৯৬১৪ ৩৩৩ ৬৬৬) যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
এমকে
জাতীয়
প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন ছাড়ালো ৪ লাখ ৫৭ হাজার
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার জন্য “পোস্টাল ভোট বিডি” অ্যাপে নিবন্ধন ছাড়াল চার লাখ ৫৭ হাজার। বুধবার সকালে ইসির ওয়েব সাইট (https://portal.ocv.gov.bd/report/by-country) থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
গত ১৯ নভেম্বর থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছে, চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
যে সব দেশে নিবন্ধন চলছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, মিশর, মোজাম্বিক, লিবিয়া, মরিশাস, হংকং, ব্রাজিল, উগান্ডা, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়া, বতসোয়ানা, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, তানজানিয়া, সোমালিয়া, ঘানা, গিনি, মরক্কো, দক্ষিণ সুদান, চিলি, সিয়েরা লিওন, ইকুয়েডর, তাইওয়ান, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গাম্বিয়া, পেরু, জিম্বাবুয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, বাংলাদেশ ইত্যাদি। মোট নিবন্ধন করেছেন (সকাল সোয়া দশটা পর্যন্ত) চার লাখ ৫৭ হাজার ৬৬ জন, যা প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে।
ইসি জানিয়েছে, অ্যাপে নিবন্ধনকারীদের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ভোটার ভোট দিয়ে ফিরতি খামে তা আবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন।
উল্লেখ্য, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট করবে ইসি।
এমকে
জাতীয়
হাদিকে গুলির ঘটনায় শুটার ফয়সালকে নিয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলো র্যাব
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের বোনের বাসার পাশ থেকে দুটি ম্যাগজিন ও ১১টি গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব। একইসঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফয়সালের বাবা ও মাসহ তিনজনকে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে র্যাবের গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় শুটার ফয়সাল ও তার পরিবারের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে চাঞ্চল্যকর কিছু দিয়েছে র্যাব।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন তথ্য ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে আগারগাঁওয়ের কর্নেল গলিতে ফয়সাল করিমের বোনের বাসা ও পাশের ভবনের ফাঁকা স্থান থেকে দুটি ভরা ম্যাগজিন, ১১টি গুলি এবং একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে।
একইসঙ্গে ফয়সালের বোনের বাসা থেকে একটি ট্যাব, একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল, একটি পুরনো বাটন মোবাইল, দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৫টি চেক বই, ছয়টি পাসপোর্ট এবং বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবের ৩৮টি চেক উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, ওই বাসার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ফয়সাল করিম ও তার সহযোগী আলমগীর ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে মোটরসাইকেলে করে বাসা থেকে বের হয়ে যান। পরে বিকেল ৪টার দিকে ফয়সাল, আলমগীর এবং ফয়সালের মা ও ভাগিনাকে দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান থেকে কিছু বের করতে দেখা যায়। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে ফয়সাল ও আলমগীর একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
এদিকে নরসিংদীতে অভিযান চালিয়ে মো. ফয়সাল (২৫) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। এসময় তিনটি অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, এই তিনটি অস্ত্রের কোনো একটি দিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদিকে গুলি করা হয়েছে কি না, তা ফরেনসিক পরীক্ষার পর জানা যাবে। র্যাব-১১ নরসিংদীতে মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করে।
র্যাব জানায়, অস্ত্র ও গোলাবারুদ নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন তরুয়া এলাকাস্থ মোল্লার বাড়ির সামনে তরুয়ার বিলে পানির মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) এবং মা মোছা. হাসি বেগমকে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় র্যাব-১০-এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ ও আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাচেষ্টা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে শুটার ফয়সালের বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রেপ্তার দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে ফয়সাল করিম তৃতীয়। ফয়সাল ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় তার বোন জেসমিন আক্তারের সপ্তম তলার বাসায় প্রায়ই যাতায়াত করতেন। ঘটনার দিন (১২ ডিসেম্বর) রাতে একটি কালো ব্যাগ নিয়ে তিনি ওই বাসায় ওঠেন। পরে ভবনের সরু জায়গায় ব্যাগটি ফেলে দেন।
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, ফয়সাল তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোনের একটি ওই ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেন এবং অন্যটি তার মা হাসি বেগমকে দেন। পরে অবস্থান নিরাপদ মনে না হওয়ায় তিনি আগারগাঁও থেকে মিরপুর হয়ে শাহজাদপুরে তার চাচাতো ভাই আরিফের বাসায় যান।
এ সময় ফয়সালের ব্যাগ বহনের জন্য তার বাবা হুমায়ুন কবির একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে দেন এবং কিছু অর্থও সরবরাহ করেন বলে র্যাবের দাবি। পরে ফয়সালের বাবা-মা তাদের ছোট ছেলে হাসান মাহমুদ বাবুলের কেরানীগঞ্জের বাসায় চলে যান।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) গণসংযোগের জন্য রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।
হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় পরিবারের সম্মতিতে রোববার রাতে পল্টন থানায় একটি মামলা করেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। মামলাটি বর্তমানে ডিবিতে রয়েছে। মামলায় এর আগে ফয়সালের স্ত্রী, বান্ধবী, শ্যালক, হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে একজন, সহযোগী কবীর এবং তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে সীমান্ত এলাকা থেকে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এমকে
জাতীয়
‘১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি চূড়ান্ত’
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আগামী বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা জানান তিনি। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ এবং বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন ভাষণটি একযোগে সম্প্রচার করে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
এবারের নির্বাচন ও গণভোট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথরেখা নির্ধারণের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কোন ধরনের রাষ্ট্র প্রত্যাশা করি, তা নির্ভর করবে গণভোটের ফলাফলের ওপর। এই ভোটের মাধ্যমে ঠিক হবে নতুন বাংলাদেশের চরিত্র, কাঠামো ও অগ্রযাত্রার গতিপথ।
তিনি বলেন, আমরা চাই এই নির্বাচন হোক সত্যিকার অর্থে উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ এবং সর্বোপরি সুষ্ঠু। নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা, প্রশাসনিক প্রস্তুতি, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং পর্যবেক্ষণের প্রতিটি ধাপকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি আরও বলেন, নতুন বাংলাদেশ গঠনের দায়িত্ব সবার। আপনাদের মূল্যবান ভোটই আমাদের রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। তাই ভোটকে শুধু কাগজে একটা সিল মারার আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে দেখলে হবে না, বরং এটি হবে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণে আপনার সক্রিয় অংশগ্রহণ, গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা এবং দেশকে এগিয়ে নিতে সরাসরি অবদান। দেশের মালিকানা আপনাদের হাতে, আর সেই মালিকানারই স্বাক্ষর আপনার ভোট।
এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা ও পবিত্রতা রক্ষার জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকা অপরিসীম বলেও মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।




