সারাদেশ
চট্টগ্রামে ঝুটের গুদামে আগুন
চট্টগ্রাম নগরীর রাজাখালী এলাকায় একটি ঝুটের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট কাজ করছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজাখালী খালের বেড়িবাঁধ এলাকায় আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। আগুন লাগার পর আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের এক অপারেটর জানান, একটি ঝুটের গুদামে আগুন লেগেছে এবং তা নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আরও কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে।
আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
সারাদেশ
সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার লালন শাহ সেতুর নিকট কাভার্ড ভ্যানচাপায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে পাবনার ঈশ্বরদী থেকে কুষ্টিয়া অভিমুখে যাওয়ার পথে তারা দুর্ঘটনার শিকার হন।
নিহতরা হলেন, পুলিশ পরিদর্শক (এসআই নি.) মোজাহারুল ইসলাম ও এএসআই কয়েস উদ্দিন। দুজনই পাবনার ঈশ্বরদী ডিএসবিতে কর্মরত ছিলেন।
নিহত পুলিশ পরিদর্শক (এসআই নি.) মোজাহারুল ইসলাম রংপুরের পীরগাছা থানার ইটাকুমারী গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে ও এএসআই কয়েস উদ্দিন রাজশাহীর তানোর থানার রাতৈল গ্রামের কছিমদ্দিনের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানার ওসি আবু ওবায়েদ।
তিনি জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঈশ্বরদী থেকে মোটরসাইকেলযোগে তারা কুষ্টিয়ার দিকে আসছিলেন। লালন শাহ সেতু পার হয়ে ইউটার্ন নেওয়ার সময় দ্রুতগামী কাভার্ডভ্যান মটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়।
ওসি আরও বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। তাদের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর কার্ভাডভ্যানসহ চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে।
সারাদেশ
ওসমান হাদির গ্রামের বাড়িতে চুরি
ঢাকায় গুলিবিদ্ধ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদির গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটিতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে শহরের খাসমহল এলাকায় ওই বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
হাদির চাচাতো ভাই সিরাজুল ইসলাম বলেন, কেউ না থাকার সুযোগে জানালা ভেঙে চোর ঘরে প্রবেশ করে। এখন কী পরিমাণ মালামাল নিয়েছে সেটা আমরা জানতে পারিনি।
নলছিটি থানার ওসি আরিফুল আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। আমাদের তদন্ত চলছে।
এদিকে শুক্রবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় হাদিকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মস্তিষ্কে একটি অস্ত্রোপচার শেষে খুলি খুলে রেখে তাকে পাঠানো হয় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত এভারকেয়ার হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তার চিকিৎসা চলছে। হাদির জীবন সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
এদিকে তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনেই সেদিন বিকালেই ঢাকায় রওনা দেন পরিবারের সদস্যরা।
এমকে
সারাদেশ
লক্ষ্মীপুরে পেট্রোল ঢেলে নির্বাচন অফিসে আগুন
লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের নিচতলার স্টোর রুমে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে এক যুবক। সিসিটিভির ফুটেজে মাস্ক পরিহিত ওই যুবককে দেওয়াল টপকে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে ও বের হতে দেখা যায়। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোর ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মাস্ক পরিহিত এক যুবক নির্বাচন অফিসের গেটের পশ্চিম পাশের দেওয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুনের রশ্মি দেখা যায়। এর পরপরই ওই যুবক গেট টপকে বের হয়ে যায়।
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসাইন বলেন, মাস্ক পরিহিত এক যুবক জানালার কাঁচ ভেঙে বা খুলে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। ভেতরে আমাদের দারোয়ান হামিম ঘুমে ছিল। সে টের পেয়ে কে কে বলতেই ওই যুবক পালিয়ে যায়। এরমধ্যেই ২০০৮ ও ২০০৯ সালের ভোটারদের দ্বিতীয় ফরম পুড়ে গেছে। এ ছাড়া একটি অকেজো ডেস্কটপ-সিপিইউসহ কিছু সরঞ্জামও পুড়েছে। আগুন নেভাতে বেশি সময় লাগেনি।
তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে আমি ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ কার্যালয়ে গিয়ে আগুনের ঘটনা দেখি। পরে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তাও ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি নিয়মিত নিরাপত্তা জোরদারের আশ্বাস দিয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ বলেন, আগুনে অফিসের কিছু নথিপত্র পুড়ে গেছে। তবে বিষয়টি টের পাওয়ার কারণে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, ঘটনাটি তদন্ত চলছে। জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক এস এম মেহেদী হাসান বলেন, নির্বাচন কার্যালয়গুলোতে নিরাপত্তা জোরদারের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এমকে
সারাদেশ
আমার একটা কলিজা হারিয়ে ফেলেছি, বিচার চাই: সাজিদের বাবা
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় একটি পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদের উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে দুঃখজনকভাবে। দীর্ঘ ৩২ ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করলেও, হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় গভীর শোকাহত হয়ে পড়েছে পরিবার, এবং সাজিদের বাবা রাকিব উদ্দীন এই ক্ষতির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে বিচার দাবি করেছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে সাজিদ তার মায়ের সঙ্গে বাড়ির কাছে হাঁটতে গিয়ে অসতর্কতায় গর্তে পড়ে যায়। মা রুনা খাতুন জানান, ছেলে হঠাৎ ‘মা’ বলে ডেকে ওঠে, কিন্তু পেছনে তাকিয়ে দেখেন সে গর্তের ভেতরে। গর্তের ওপর খড় বিছানো থাকায় বিপদটি আগে থেকে বোঝা যায়নি। স্থানীয়রা দ্রুত খবর দিলেও, শিশুটি গর্তের গভীরে চলে যায়।
উদ্ধারকারী দল ৪০ ফুট মাটি খনন করে রাত সোয়া ৯টায় সাজিদকে বের করে আনে। তাকে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, কিন্তু সেখানে তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় তার মরদেহ বাড়িতে আনা হয়। আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বাড়ির পাশের মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে, এবং পরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
সাজিদের বাবা রাকিব উদ্দীন গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি ফুটফুটে একটা সন্তান হারিয়েছি। আমার একটা কলিজা হারিয়ে ফেলেছি। আমি বিচার চাই। প্রশাসনিকভাবে যে বিচার করবে, আমি তাতেই সন্তুষ্ট। আমার কিছু করণীয় নাই। এখন শুধু দোয়া করা লাগবে। যেহেতু আল্লাহই দিয়েছেন, আল্লাহই নিয়ে গেছেন। কিন্তু অবহেলা হয়েছে, এটা একমাত্র অবহেলা। এ ছাড়া আর কিছু না।’
তিনি আরও যোগ করেন যে, গর্ত খননকারীরা যদি সঠিকভাবে এটি বন্ধ করে রাখতেন বা কোনো সতর্কতা চিহ্ন দিতেন, তাহলে এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
স্থানীয়দের মতে, এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপ বসানো নিষিদ্ধ, কিন্তু একজন ব্যক্তি পানি যাচাইয়ের জন্য গর্ত খনন করেছিলেন। পরে এটি ভরাট করা হলেও বর্ষায় মাটি বসে গিয়ে আবার গর্ত সৃষ্টি হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন অবহেলা না ঘটে।
সারাদেশ
৩২ ঘণ্টা পর গর্ত থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুটি মারা গেছে
রাজশাহীর তানোরে গর্ত থেকে উদ্ধার করা শিশুটি বেঁচে নেই। তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ কথা জানিয়েছেন।
ভূগর্ভস্থ পানি তোলার জন্য তৈরি করা গভীর গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধারের পর তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
এর আগে শিশুটিকে উদ্ধারের পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেনটেইন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘রাত ৯টায় শিশুটিকে আমরা অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেছি। পরে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসকেরা জানাবেন।’
গত বুধবার বেলা একটার দিকে তানোর উপজেলার কোয়েল হাট পূর্বপাড়া গ্রামে মায়ের সঙ্গে মাঠে গিয়ে গভীর গর্তে পড়ে যায় দুই বছরের শিশু সাজিদ। সে কোয়েল হাট পূর্বপাড়া গ্রামের মো. রাকিবুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় লোকজন জানান, তানোরের কোয়েল হাট গ্রামে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। এ এলাকায় এখন গভীর নলকূপ বসানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। এরপরও ওই গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁর জমিতে পানির স্তর পাওয়া যায় কি না, সেটা যাচাই করার জন্য গর্তটি খনন করেছিলেন। সেই গর্ত ভরাটও করেছিলেন; কিন্তু বর্ষায় মাটি বসে গিয়ে নতুন করে গর্ত সৃষ্টি হয়। মায়ের সঙ্গে মাঠে গিয়ে শিশুটি সেই গর্তে পড়ে যায়।
শিশুটিকে উদ্ধারে বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। একে একে যোগ দেয় আটটি ইউনিট। মূল গর্তের পাশ থেকে কেটে শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য গতকাল সন্ধ্যা থেকে এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) দিয়ে খননকাজ শুরু করা হয়। ৪৫ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
বুধবার রাতে রাতে শিশু সাজিদের মা রুনা খাতুনকে গর্তের পাশ থেকে বাড়িতে নেওয়া হয়। গতকাল বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, রুনা খাতুনকে নিয়ে বসে আছেন তাঁর মা শেফালী বেগম। শেফালী বেগম সাজিদের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে রুনা খাতুন বলেন, ‘গ্রামের কছির উদ্দিন তিন জায়গায় গভীর নলকূপ বসানোর জন্য গর্ত খুঁড়েছিল। দুই বছর ধরে বন্ধ না করে গর্তগুলো এভাবে ফেলে রাখেন। আমি কছিরের শাস্তি চাই, তাঁর বিচার চাই।’ তিনি জানান, ঘটনার পর কছির একবার দেখতে এসেছিলেন। তারপর আর আসেননি। তিনি পালিয়ে গেছেন।
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কছিরের দেখা হয়নি। আমরা তাঁকে পাইনি।’ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না প্রশ্ন করলে ওসি বলেন, ‘তদন্ত চলছে। আমরা এটা দেখছি।’




