সারাদেশ
শনিবার ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
জরুরি মেরামত, সংরক্ষণ এবং গাছের ডালপালা কাটার জন্য শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সিলেট ও সুনামগঞ্জ—দুই জেলায় নির্ধারিত সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। সিলেট অংশে ১০ ঘণ্টা এবং সুনামগঞ্জ অংশে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকবে বিভিন্ন এলাকা।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিলেটের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ–২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুর রাজ্জাক জানান, শনিবার সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১১ কেভি বালুচর, ১১ কেভি সেনপাড়া এবং ১১ কেভি শিবগঞ্জ ফিডারের আওতাধীন বিস্তৃত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়— বালুচর, শান্তিবাগ আ/এ, সোনার বাংলা আ/এ, নতুনবাজার, আল-ইসলাহ, আরামবাগ, বালুচর ছড়ারপাড়, ফোকাস, জোনাকী, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, আলুরতল; সেনপাড়া, শিবগঞ্জ, ভাটাটিকর, সাদিপুর, টিলাগড়, গোপালটিলা, এমসি কলেজ; এবং শিবগঞ্জ, টিলাগড়, সবুজবাগ, বোরহানবাগ, হাতিমবাগ, লামাপাড়া, রাজপাড়া ও আশপাশের এলাকায় নির্ধারিত সময় বিদ্যুৎ থাকবে না। কাজ নির্দিষ্ট সময়ের আগে শেষ হলে দ্রুত সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে বিউবো জানিয়েছে। গ্রাহকদের সাময়িক ভোগান্তির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।
এদিকে একই দিনে সুনামগঞ্জেও পাঁচ ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বিউবো সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাসেল আহমেদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আগামী শনিবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩৩ কেভি সুনামগঞ্জ ফিডারের মেরামত, সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ এবং সড়ক প্রশস্তকরণের লক্ষ্যে বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ ও প্রতিস্থাপন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
এ কারণে ১৩২/৩৩ কেভি সুনামগঞ্জ গ্রীড উপকেন্দ্রের ৩৩ কেভি লাইনে সাট-ডাউন নেওয়া হচ্ছে। ফলে বিউবো সুনামগঞ্জ দপ্তরের আওতাধীন সব এলাকায় সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
তবে নির্ধারিত সময়ের আগে কাজ শেষ হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা। গ্রাহকদের সাময়িক এ অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
সারাদেশ
বগুড়ায় ‘জ্বিনের বাদশা’ গ্রেফতার
সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া ‘জিনের বাদশা’ পরিচয়দানকারী এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি)। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরের ডিবির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল বাহার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃত প্রতারক জ্বীনের বাদশা পরিচয়দানকারি মহিদুল ইসলাম জেলার সোনাতলা উপজেলার রানীরপাড়া গ্রামের মোজাম আকন্দের ছেলে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) আরিফুল ইসলাম-২ জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বাদী অবসরপ্রাপ্ত আর্মি সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে প্রতারক মহিদুল ইসলাম (৩৫)কে রাতে তার নিজ বসতবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, মহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে কবিরাজী চিকিৎসা ও অলৌকিক ক্ষমতার ভান করে নিজেকে “জ্বিনের বাদশা” পরিচয়ে বিভিন্ন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে আসছিল। তার প্রলোভনে পড়ে বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে— ০২টি কথিত হাড়, ০২টি সুরমাদানি, ০৩টি লাল কাপড়, ০১ বোতল আতর, ০২টি তাবিজ, ০৩ টুকরা সাদা কাপড়, ছোট-বড় ০৩টি তসবিহ, ০৫টি আগরবাতি ও কালো সুতা।
ডিবির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল বাহার বলেন, ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সারাদেশ
স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার বাড়ি থেকে ৪৪৪ বস্তা সার জব্দ
রাজশাহীর বাগমারায় স্বেচ্ছাসেবকলীগের এক নেতার বাড়ি থেকে ৪৪৪ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ ও কৃষি বিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে এই সার জব্দ করেছে। অভিযান চলাকালে অভিযুক্ত নেতা পালিয়ে যান।
জব্দকৃত সারের মধ্যে রয়েছে ২০০ বস্তা টিএসপি, ২০০ বস্তা ডিএপি ও ৪৪ বস্তা এমওপি। এসব সার প্রশাসনের প্রাথমিক তদন্তে কালোবাজারে বিক্রির জন্য মজুত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযান শেষে বাড়িটি সিলগালা করা হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ওয়ারেস আলী (৩৫) ওরফে ‘মুরগী বাবু’, যিনি ভবানীগঞ্জ পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি এবং দানগাছি গ্রামের আমজাদ হোসনের ছেলে। তিনি এলাকায় মুরগীর ব্যবসার জন্য পরিচিত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক জানান, বাবু খুরচা সার বিক্রেতা হিসেবে নিবন্ধিত। তিনি ডিলারদের কাছ থেকে সার কিনে খুচরা বিক্রি করতে পারবেন। তবে নিজ বাড়িতে এত বড় পরিমাণ সার মজুত রাখা অননুমোদিত এবং অবৈধ।
পুলিশ জানায়, ৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রশাসনের কাছে খবর আসে যে, মুরগী বাবু বাড়িতে সার মজুত করেছেন। এরপর দানগাছি গ্রামে তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সারগুলো জব্দ করা হয়।
ওয়ারেস আলী দাবি করেছেন, জব্দ করা সব সার বৈধ এবং কাগজপত্রও রয়েছে। ভবানীগঞ্জ বাজারের দোকানে রাখার জন্য পর্যাপ্ত পরিবেশ না থাকার কারণে বাড়িতে রাখা হয়েছিল।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, সমন্বিত সার নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদিত ডিলার পয়েন্টের বাইরে সার মজুত রাখা যাবে না। ওয়ারেস আলী নিজ বাড়িতে সার মজুত করেছেন, যা অবৈধ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসন কৃষকদের ন্যায্য মূল্যে সার প্রাপ্তির বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। বাড়িতে অবৈধ সার মজুতের সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত চলছে। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারাদেশ
কিশোরগঞ্জের ইউএনও হিসেবে নিয়োগ পেলেন সাবেক লাক্স সুন্দরী
চ্যানেল আই লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতার সেরা দশে স্থান পাওয়া সুন্দরী তানজিয়া আঞ্জুম সোহানিয়া এখন যোগদান করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে। সম্প্রতি তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের ইউএনও হিসেবে যোগদান করেছেন।
তানজিমা আঞ্জুম সোহানিয়া বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ উপপরিচালক (সিনিয়র সহকারী সচিব) সমন্বয় ও সংসদ বিভাগে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সোহানিয়া ২০১০ সালে চ্যানেল আই লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি সেরা দশের তালিকায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, পুরস্কার জিতে নেন ক্লোজআপ মিস বিউটিফুল স্মাইল ক্যাটাগরিতেও। এরপর শোবিজে কিছু কাজ করেছেন তিনি। তবে নিয়মিত ছিলেন না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই ছাত্রী লাক্স সুন্দরী ৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে গেজেটপ্রাপ্ত হন। ২০১৯ সালের ২০ মার্চ প্রকাশিত সরকারি প্রজ্ঞাপনে তিনি ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সামনে রেখে দ্বিতীয় ধাপে ৭৭ উপজেলায় নতুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এরমধ্যে নীলফামারী জেলার ৬ উপজেলার মধ্যে তিনটিতে আনা হয়েছে রদবদল।
জানা গেছে, সোহানিয়ার বাবা ডা. আজিজুল হক খান সরকারি কর্মকর্তা। মা সালমা সুলতানা গৃহিণী। ৫ম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন সোহানিয়া। ছোটবেলা থেকেই ট্যালেন্টদের তালিকায় নাম ছিল তার।
ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতির সঙ্গে তার সম্পর্ক। গান ও একক অভিনয়ে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কারও রয়েছে। কাবস্কাউট জাতীয় পর্যায়ে রানার্স আপ হয়েছেন। পাশাপাশি নাচেও তিনি ছিলেন সেরা।
টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ ও এইচএসসিতে কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। তুখোড় মেধাবী ওই ছাত্রী এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।
সারাদেশ
কুড়িগ্রামে বাড়ছে শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা নামল ১২ ডিগ্রিতে
উত্তরের সীমান্ত জেলা কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা দিনদিন বাড়ছে। টানা তিনদিন ধরে জেলার তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার।
বুধবার (৩ ডিসেম্বের) ছিল ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সোমবার ছিল ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেখা গেছে, সকালে ঘন কুয়াশায় পুরো জেলা ঢেকে থাকে। রাস্তায় মানুষের সংখ্যা খুবই কম। বিশেষ করে দিনমজুর, রিকশাচালক ও নিম্নআয়ের মানুষদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি।
জানা গেছে, জেলা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক রোগীদের মধ্যে সর্দি, কাশি, জ্বরের উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে সব থেকে বেশি কষ্টে আছেন চরাঞ্চলের মানুষরা। খোলা পরিবেশে হিমেল বাতাসে রাত কাটানো কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের।
ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাডোবা চরের আবেদ আলী ও মুনছুর আলী জানান, সন্ধ্যা শুরু হওয়ার পর বাতাসের সঙ্গে কুয়াশা পড়তে থাকে। চরাঞ্চলে গাছপালা না থাকায় শীতের প্রকোপটা খুবই বেশি। সব থেকে বেশি কষ্ট দেয় বাতাস। ছোট শিশু এবং বয়স্ক মানুষকে নিয়ে বিপাকে পড়েছি।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কম্বল কেনার জন্য ৯ উপজেলাতে ৬ লাখ করে মোট ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আরও কয়েকদিন কুড়িগ্রামে শীত ও কুয়াশা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিনই কুয়াশার ঘনত্ব বাড়ছে। সামনে শীত ও কুয়াশা আরও বৃদ্ধি পাবে।
এমকে
সারাদেশ
রূপালী ব্যাংকে থেকে গ্রাহকের ১৯ লাখ টাকা উধাও, ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ
ফেনীর সোনাগাজীতে রূপালী ব্যাংকের একই পরিবারের তিন গ্রাহকের হিসাব থেকে তাদের অজান্তে ১৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ওই টাকা ভিন্ন কয়েকটি ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়। রূপালী ব্যাংকের সোনাগাজীর আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখা থেকে এ টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনার দুই সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহককে টাকা ফেরত দিতে পারেনি। ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা ব্যাংকের ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। মঙ্গলবার সকালে রূপালী ব্যাংকের আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখার গেটে তালা লাগিয়ে সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও তাদের স্বজনরা। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দ্রুত তালা খুলে নেওয়া হয়।
এসময় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে, রূপালী ব্যাংকের সোনাগাজীর আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখার গ্রাহক আবুল বশরের হিসাব থেকে ৩৩ হাজার টাকা, তার বড় ছেলে মনসুর আলমের হিসাব থেকে ১৮ লাখ ৫ হাজার টাকা ও ছোট ছেলে ইফতেখার আলমের হিসাব থেকে ৯৫ হাজার টাকা ইসলামী ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংকের কয়েকটি শাখার বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর (ট্রান্সফার) করা হয়।
গত ১২ নভেম্বর অস্বাভাবিক টাকা ট্রান্সফারের বিষয়টি প্রথমে টের পান ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এরপর হিসাবধারী আবুল বশরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনও টাকা লেনদেন করেননি বলে জানান। বিষয়টি শাখা ব্যবস্থাপক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। ইতিমধ্যে প্রধান কার্যালয়ের একটি দল ওই শাখা পরিদর্শন করেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক আবুল বশর বলেন, আমার চার ছেলে মালয়েশিয়াপ্রবাসী। আমার একটি ও আমার দুই ছেলের আরও দুটি অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরানোর ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের যোগসাজশ থাকতে পারে। ব্যাংক ম্যানেজার আমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছেন, লুট হওয়া ছয় লাখ টাকা ফেরত আনা হয়েছে, যা আদৌ সত্য নয়। আমাকে বিগত এক মাস টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে হয়রানি করা হচ্ছে।
এবিষয়ে আবুল বশর আরও বলেন, আমাদের হিসাবের টাকার পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল ব্যাংকের। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাকে সহযোগিতা না করে থানায় মামলা করার জন্য পরামর্শ দিয়ে দায় মুক্ত হতে চাইছে। আমি সহায়তা চেয়ে ব্যাংকে ও থানায় গেলে দফায় দফায় আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে মামলা না করে উল্টো গ্রাহককে মামলা করতে বলছে। আমি গতকাল মঙ্গলবার রাতে সোনাগাজী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমি এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত চাই, দোষীদের বিচার চাই এবং আমাদের আত্মসাৎ করা সব টাকা ফেরত চাই।
রূপালী ব্যাংক আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) দিদারুল আলম বলেন, তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে ট্রান্সফার হওয়া টাকাগুলো অ্যাপসের মাধ্যমে ট্রান্সফার করা হয়েছে। অ্যাপসের লেনদেন হেড অফিস সরাসরি তদারকি করে। এই লেনদেনে আমি বা আমার শাখার কারও দায় নেই। বিষয়টি তদন্তের পর্যায়ে আছে। আমরা থানা-পুলিশকেও এ বিষয়ে সহযোগিতা করছি। তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে ২৭ বার টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। প্রতিবার টাকা ট্রান্সফারের আগে গ্রাহক আবুল বাশরের মোবাইল ওটিপি নম্বর যায়। তিনি ওটিপি কনফার্ম করার পরে টাকাগুলো উত্তোলন হয়। এখন তিনি ওটিপি ব্যবহার করেছেন, না তার পরিবারের কেউ ওটিপি ব্যবহার করেছেন এটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
ব্যাংকার্স ফোরাম সোনাগাজী উপজেলা শাখার সভাপতি ও ইসলামী ব্যাংক পিএলসি সোনাগাজী শাখার ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মনসুরুল আলম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার করে একটি প্রতারক চক্র এসব কাজ করে থাকে। ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. সাইফুল আলম বলেন, রূপালী ব্যাংক আমির উদ্দিন মুন্সিরহাট শাখায় গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক থানায় অভিযোগ দিতে এসেছিলেন। তাকে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও তিনি জমা দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



