অর্থনীতি
ব্যাংক খাতের সংকটে ৭০ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন: গভর্নর
খেলাপি ঋণ আদায় করতে অর্থ ঋণ আইনের পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংক খাতের সংকট কাটাতে ৭০ হাজার কোটি টাকা দরকার। যেটা একসঙ্গে পাওয়া যাবে না। আগামী অর্থ বছরের বাজেট থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে দেশে বিনিয়োগ পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিডা এবং ইউএনডিপির যৌথ আয়োজিত সভায় তিনি এই কথা জানান।
গভর্নর বলেন, প্রতিষ্ঠান হচ্ছে জাতীয় সম্পদ। কোনো ব্যক্তির জন্য আমরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে পারি না। এগুলো মানুষের কর্মসংস্থান করেছে। তবে আইনগত প্রক্রিয়ায় ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনের প্রয়োগ হবে, ব্যক্তিকে আমরা ছাড়ব না। এই নীতি ছিল আমাদের। এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়নি।
দেশে প্রচুর ‘লিলিপুট’ ব্যাংক রয়েছে উল্লেখ করে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের একটি ব্যাংকও নেই। এটা আগামী ২০ বছরেও সম্ভব নয়। তবে চেষ্টা করলে ১০-১৫ বছরে ব্র্যাক ব্যাংক হয়তো সেখানে যেতে পারে।
এমকে
অর্থনীতি
আজ বাজারে আসছে নতুন ৫০০ টাকার নোট
বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন সিরিজের আরও একটি নোট বাজারে ছাড়ছে। দেশের ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্যকে থিম করে তৈরি “বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্য” শীর্ষক নতুন ডিজাইন ও সিরিজের ৫০০ টাকা মূল্যমানের নোট আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) প্রথমবারের মতো প্রচলনে আসছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের স্বাক্ষরযুক্ত এই নতুন নোটটি আজ প্রাথমিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে ইস্যু করা হবে। পরে ধাপে ধাপে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য অফিস থেকেও বাজারে ছাড়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন ৫০০ টাকার নোটে থাকছে শহীদ মিনার ও সুপ্রিম কোর্ট। ১৫২ মি.মি. × ৬৫ মি.মি. আকারের নতুন ৫০০ টাকার নোটের সম্মুখভাগে রয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি। পেছনের অংশে মুদ্রিত হয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ছবি।
নোটের মাঝখানে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে পাতা ও কলিসহ প্রস্ফুটিত জাতীয় ফুল শাপলা। নোটটিতে জলছাপ হিসেবে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মুখ এবং নিচে ইলেকট্রোটাইপ ‘৫০০’। সবুজ রঙের আধিক্য থাকলেও সামগ্রিকভাবে নোটের ডিজাইন আরও আধুনিক ও নিরাপদ।
নোটটিতে মোট ১০ ধরনের উন্নত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- ডানদিকে থাকা মূল্যমান ‘500’ উন্নত রং–পরিবর্তনশীল কালি দিয়ে ছাপা। নোট নাড়াচাড়া করলে রং সবুজ থেকে নীল হয় এবং ভেতরে কোণাকুনি ‘৫০০’ দেখা যায়।
বাম পাশে ৪ মি.মি. চওড়া লাল রঙের পেঁচানো নিরাপত্তা সুতা, যা আলোয় ধরলে ‘৫০০ টাকা’ লেখা স্পষ্ট দেখা যাবে। নাড়াচাড়া করলে লাল অংশ সবুজ হয় এবং সোনালি বার রংধনুর মতো নিচে–ওপরে চলমান দেখা যায়।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ডানদিকে নিচে পাঁচটি ছোট উঁচু বৃত্ত। ইন্টাগ্লিও কালি ব্যবহারে শহীদ মিনার, সুপ্রিম কোর্টসহ বিভিন্ন অংশে স্পর্শে উঁচু অনুভূতি পাওয়া যাবে।
নোটের বিভিন্ন স্থানে ‘BANGLADESH BANK’ মাইক্রোপ্রিন্ট। UV আলোর নিচে দৃশ্যমান বিশেষ নকশা, সংখ্যা ও রঙিন ফাইবার। উভয় পাশে UV curing varnish থাকায় নোট হবে কিছুটা চকচকে। See-through ইমেজ হিসেবে আলোর বিপরীতে ধরলে স্পষ্ট দেখা যাবে ‘500’।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, নতুন ডিজাইনের পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সব কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রা আগের মতোই চালু থাকবে। এছাড়া সংগ্রাহকদের জন্য ৫০০ টাকার নমুনা নোটও মুদ্রণ করা হয়েছে, যা টাকা জাদুঘর বিভাগ, মিরপুর থেকে সংগ্রহ করা যাবে। জাতীয় স্বার্থে সংবাদমাধ্যমগুলোকে এই তথ্য প্রচারের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এমকে
অর্থনীতি
জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো ২৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস্ কোম্পানী লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) আওতাধীন হবিগঞ্জ-৫নং কূপ থেকে দৈনিক প্রায় ২৬ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস জাতীয় গ্রীডে সরবরাহ করা হচ্ছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) এক বার্তায় এ তথ্য জানায় পেট্রোবাংলা।
এতে বলা হয়, পেট্রোবাংলার আওতাধীন বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস্ কোম্পানী লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) অধীনে তিতাস, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ ও মেঘনা ফিল্ডে ৭টি কূপ ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি এবং নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল (জিডিএফ) ও কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়নে তিতাস, হবিগঞ্জ, বাখরাবাদ এবং মেঘনা ফিল্ডে ৭টি কূপ ওয়ার্কওভার শীর্ষক প্রকল্পটি নেওয়া হয়।
আলোচ্য প্রকল্পের আওতায় হবিগঞ্জ-৫নং কূপের ওয়ার্কওভার কাজ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানী লিমিটেড (বাপেক্স) তাদের বিজয়-১১ রিগ দ্বারা সম্পাদন করেছে।
বার্তায় আরো বলা হয়, হবিগঞ্জ-৫ নং কূপটি ওয়ার্কওভার করার পূর্বে ১৫২১ পিএসআই চাপে দৈনিক ১৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন চলমান ছিল। কূপটি ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখা হচ্ছে। গত ২৪ অক্টোবর থেকে কূপটির ওয়ার্কওভার কাজ শুরু করা হয় এবং ২ ডিসেম্বর ওয়ার্কওভার কাজ শেষ হয়।
ওয়ার্কওভার শেষে ৩ ডিসেম্বর থেকে দৈনিক ২৬ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে দৈনিক অতিরিক্ত প্রায় ১২ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ করা সম্ভব হয়েছে, যা জাতীয় জ্বালানি চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
অর্থনীতি
দেশে-বিদেশে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেন বেড়েছে
দেশের ভেতরে এবং বিদেশে—দুই ক্ষেত্রেই ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার এবং দেশে মোট লেনদেন উভয়ই বেড়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশিরা বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে খরচ করেন ৪৪৩ কোটি ৩ লাখ টাকা।
সেপ্টেম্বরে এই খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯৪ কোটি ২ লাখ টাকা—এক মাসে ব্যয় বেড়েছে ৫১ কোটি ১ লাখ টাকা।
জুলাইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার শীর্ষ তিন দেশ— যুক্তরাষ্ট্র: ৭০ কোটি ৯ লাখ টাকা, থাইল্যান্ড: ৫৯ কোটি ৯ লাখ টাকা, যুক্তরাজ্য: ৫৪ কোটি ১ লাখ টাকা।
এ ছাড়া আরও খরচ— সিঙ্গাপুর ৪০ কোটি ৪ লাখ, মালয়েশিয়া ৩৪ কোটি, ভারত ৩২ কোটি ৩ লাখ, নেদারল্যান্ড ২৫ কোটি, সৌদি আরব ২৪ কোটি, কানাডা ২১ কোটি, অস্ট্রেলিয়া ১৭ কোটি, আয়ারল্যান্ড ১৬ কোটি, চীন ১৫ কোটি এবং অন্যান্য দেশে ৯২ কোটি টাকা।
তবে বাংলাদেশে বিদেশিদের ক্রেডিট কার্ড খরচ কমেছে। আগস্টে বিদেশিরা বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে খরচ করেছিলেন ১৮৩ কোটি ৫ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়ায় ১৭৫ কোটি ৯ লাখ টাকা—অর্থাৎ এক মাসে খরচ কমেছে ৮ কোটি টাকা।
বিদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ খরচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা— যুক্তরাষ্ট্র: ৩৮ কোটি ৬ লাখ টাকা, যুক্তরাজ্য: ১৭ কোটি টাকা, ভারত: ১৭ কোটি টাকা।
দেশের ভেতরে ক্রেডিট কার্ড লেনদেনেও উল্লম্ফন
দেশের অভ্যন্তরেও ক্রেডিট কার্ড লেনদেন বেড়েছে। ২০২৫ সালের আগস্টে লেনদেন ছিল ৩ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা।সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা—এক মাসে লেনদেন বেড়েছে ২৫১ কোটি টাকা।
অর্থনীতি
তেলের দাম বাড়ানো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা চাই: ক্যাব সভাপতি
আইন ভেঙে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
আজকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন নিয়ে মিটিং ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ আইন অনুযায়ী কিছু পণ্যের মূল্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করে দেয়। মূল্য নির্ধারণ কীভাবে করা হবে সেটার একটা ফর্মুলা আছে।’
ক্যাব সভাপতি বলেন, আমরা জানি মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) হঠাৎ করে ভোজ্যতেলের দাম নয় টাকার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন যদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ না করে তেলের দাম বাড়ায় আমি বলবো সেটা আইনের ব্যত্যয়।
‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া যদি তেলের দাম বাড়ানো হয়, তবে সেটি হবে ভোক্তার অধিকারের প্রশ্ন। আমি ক্যাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে যেটা বলতে চাই, যে মূল্যটা বেড়ে গেছে এটি অন্যায়ভাবে করা হয়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা যেটি বলেছেন যে কঠোর ব্যবস্থা, আমরা সেটি দেখার অপেক্ষায় আছি।’
রিফাইনারি বন্ধ করে দেওয়ার মতো বিধান আইনে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা আইন আছে, ভোক্তা অধিকার আইন, যদি কেউ মজুত করে দাম বাড়ায়, সেখানে বিশেষ বিধান আইন প্রয়োগের ব্যবস্থাও আছে। আমরা সেই আইনের প্রয়োগটা দেখতে চাই।
সফিকুজ্জামান আরও বলেন, আমাদের মিটিং থেকেই নির্দেশনা গেছে, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে তারা আজকে থেকেই অপারেশনে নামছে, কোথায় এই ব্যত্যয়টা হয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা একটু অপেক্ষা করি কি ব্যবস্থা সরকার নেয়।
এখানে সরকারের ব্যর্থতা আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তো সরকার বলতে পারবে। সরকার তো এ মুহূর্তে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জে আছে। নির্বাচন এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে। সেখানে আমার কাছে যেটা মনে হয় নিত্যপণ্যের বাজার ব্যবস্থাপনায় হয়তোবা আরেকটু বেশি ফোকাস করা উচিত।
ক্যাবের সভাপতি আরও বলেন, আমি লক্ষ্য করেছি ইদানীং মনিটরিংটা খুব বেশি দেখা যাচ্ছে না। সরকারের উচিত অন্য যে ইস্যুগুলো আছে, রাজনীতি ও আইনশৃঙ্খলা ইস্যুর পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য কিন্তু একটি বড় ইস্যু, আমি মনে করি ভোক্তাদের স্বার্থে বাজার মনিটরিংটা আরও জোরদার করা উচিত।
অর্থনীতি
শীঘ্রই দেশে আসছে পেপ্যাল: গভর্নর
আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে ‘পেপ্যাল’ শীঘ্রই বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করতে চাইছে এবং এর ফলে দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সাররা সহজেই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই আয়োজিত ‘অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এই তথ্য জানান।
গভর্নর বলেন, ‘পেপ্যাল বাংলাদেশে ব্যবসা করতে আগ্রহী। ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খোলার মাধ্যমে ছোট চালানে পণ্য রপ্তানি করা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য কঠিন হয়ে যায়। পেপ্যালের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম চালু হলে তারা সহজেই ইউরোপ, আমেরিকা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে পণ্য পাঠাতে পারবেন এবং দ্রুত পণ্যের দাম দেশে আনা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও করেন, ‘বর্তমানে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের অভাবে আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত অনেকে বিদেশ থেকে টাকা আনার সময় বিড়ম্বনায় পড়েন। অনেক সময় তারা তাদের পারিশ্রমিকও পান না। পেপ্যাল চালু হলে এই সমস্যার সমাধান হবে।’
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও চ্যানেল আই আয়োজিত ‘অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গভর্নর এই তথ্য জানান।
পেপ্যাল একটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা, যা ব্যবহারকারীরা অনলাইনে টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা, বিল পরিশোধ করা এবং আন্তর্জাতিক কেনাকাটা করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীর ব্যাংক বা কার্ডের সঙ্গে নিরাপদভাবে সংযুক্ত হয়ে দ্রুত লেনদেন সম্পন্ন করে।
পেপ্যাল ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য সুরক্ষা এবং রিফান্ডের সুবিধাও দেয়। বিশ্বের ২০০-এর বেশি দেশে ফ্রিল্যান্সার, অনলাইন ব্যবসা এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
নগদ লেনদেন কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘দেশের দুর্নীতির মূলেই রয়েছে নগদ টাকার লেনদেন। যেখানে যেখানে দুর্নীতি আছে, সেখানে সেখানে নগদ লেনদেন জড়িত।’ তিনি জানান, টাকা ছাপানো ও ব্যবস্থাপনায় বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধাপে ধাপে নগদ লেনদেন কমানোর পরিকল্পনা করছে।
কৃষি খাতের উন্নয়নে ঋণের প্রবাহ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘বর্তমানে মোট ঋণের মাত্র ২ শতাংশ কৃষি খাতে দেওয়া হয়। এটি বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করা প্রয়োজন। এছাড়া এসএমই ঋণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল থাকলেও ব্যাংকগুলোর সক্ষমতার অভাবে তা যথাযথভাবে বিতরণ করা যাচ্ছে না।’
খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশের সাফল্যের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ টন। এখন তা প্রায় ৪ কোটি টনে উন্নীত হয়েছে। জনসংখ্যা দ্বিগুণ হলেও উৎপাদন তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে, যা একটি বিশাল অর্জন।’
অনুষ্ঠানে কৃষিখাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৮ জন ব্যক্তি ও ৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। পাঁচ শতাধিক আবেদন যাচাই-বাছাই করে এই বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হয়েছে।
এমকে



