ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ১৭২ জাল সনদধারী শিক্ষক শনাক্ত
দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন করে এক হাজার ১৭২ জন জাল সনদধারী শিক্ষককে শনাক্ত করেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। সবচেয়ে বেশি জাল সনদধারী শিক্ষক পাওয়া গেছে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে। এ বিভাগে ৭৭৯ জন জাল সনদধারী শিক্ষক শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে, জাল সনদধারী হিসেবে শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে প্রথম ধাপে ৪০০ শিক্ষকের একটি তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে ডিআইএ। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেও প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হচ্ছে।
একই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেহাত হওয়া ৭৯৩ একর জমি উদ্ধার, ভুয়া নিয়োগ, অর্থ আত্মসাৎ এবং ভ্যাট ও আইটিসহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অনিয়মের কারণে প্রায় ২৫৩ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরতের সুপারিশ করবে ডিআইএ।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এক হাজার ১৭২ জন জাল সনদধারী শিক্ষক শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪০০ জনের সনদ সম্পূর্ণ ভুয়া। এরমধ্যে প্রায় ৩০০ জনের সনদ অগ্রহণযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডিআইএর নথির তথ্যানুযায়ী, সবচেয়ে বেশি জাল সনদধারী শনাক্ত হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। এ বিভাগের ৭৭৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর সনদ জাল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ১২০ জন, ঢাকা বিভাগে ৭০ জন, খুলনা বিভাগে ১৭৯, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪ জনের সনদ জাল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডিআইএ জানিয়েছে, এনটিআরসিএর শিক্ষক নিবন্ধন সনদ, জাতীয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, রয়েল, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সনদ জাল করা হয়েছে।
জানতে চাইলে ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক এম এম সহিদুল ইসলাম বলেন, জাল সনদধারীদের একটি তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হবে।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা
শিক্ষার্থীদের স্বার্থে চলমান কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করেছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। একইসঙ্গে বুধবার থেকে সাত শতাধিক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস)। এর আগে, নবম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, দ্রুত স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠনসহ চার দাবিতে কর্মবিরতির কর্মসূচি চালিয়ে যান তারা।
কর্মবিরতি সাময়িক স্থগিত ও বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল বুধবার (৩ ডিসেম্বর) থেকে বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষায় ফিরছেন তারা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয়-এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা বাসমাশিস ঘোষিত কর্মবিরতি সাময়িক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বার্ষিক পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার অনিশ্চয়তায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যে মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন, তা অনুধাবন করে দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, আমরা বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা ও তাদের শিক্ষাজীবনকে স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। তাই আগামীকাল (৩ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একই সঙ্গে আমাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া সমাধানের পথে এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ কামনা করছি, ভবিষ্যতে শিক্ষা কার্যক্রম যাতে আর বাধাগ্রস্ত না হয়। যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর্মসূচি পালন করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এর আগে, সোমবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকেরা থেকে চার দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেন। এর ফলে দুইদিন (১ ও ২ ডিসেম্বর) ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
তাদের চারটি দাবি হলো-
১. সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত করে ‘মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের’ গেজেট প্রকাশ।
২. বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখায় কর্মরত শিক্ষকদের বিভিন্ন শূন্য পদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন দ্রুত কার্যকর করা।
৩. সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আলোকে বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের মঞ্জুরি আদেশ দেওয়া।
৪. ২০১৫ সালের আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের দুই থেকে তিনটি ইনক্রিমেন্টসহ অগ্রিম বর্ধিত বেতন-সুবিধা বহাল করে গেজেট প্রকাশ।
এমকে
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
চবিতে বাংলা মদ তৈরির গোপন আস্তানার সন্ধান
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মাদকবিরোধী অভিযানে বাংলা মদের আস্তানার সন্ধান পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি। এ ঘটনায় নারীসহ দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে প্রক্টরিয়াল বডি, শিক্ষক ও নিরাপত্তাকর্মীদের সমন্বয়ে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
আটককৃতরা হলেন—সুমন চাকমা ও তার স্ত্রী পরিচয়ে এক নারী। অভিযানে প্রায় ৪০ লিটার বাংলা মদ জব্দ করেছে প্রক্টরিয়াল বডি।
অভিযান সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিভাগের দক্ষিণ পাশে পাহাড়ঘেঁষা লিজ নেওয়া জমিতে একটি ছোট ঘর ছিল। সেখানে সুমন চাকমা নামে একজন মদ তৈরি করতেন। খবর পেয়ে সোমবার প্রক্টরিয়াল টিম তাকে বাংলা মদসহ আটক করে। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করে।
এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে সুমন বন্য শূকর, হরিণসহ বিভিন্ন প্রাণী শিকারের কথাও স্বীকার করেন বলে জানিয়েছেন সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, মাদকদ্রব্য আইন, বন্যপ্রাণী হত্যা, অসামাজিক কার্যকলাপে অভিযোগে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে চালান দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিজ নেওয়া জমিতে অবৈধভাবে এই ব্যবসা করায় লিজ বাতিল হবে, লিজ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি থেকে অনুমতিহীন গাছ কাটার অপরাধে অর্থদণ্ড করা হবে।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
৪৬তম বিসিএস: কারিগরি ত্রুটিতে বাদ পড়া ৮ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা
কারিগরি ত্রুটির কারণে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফলে বাদ পড়ে যাওয়া ৮ জন পরীক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
কমিশন জানায়, গত ২৭ নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের উত্তীর্ণদের তালিকা প্রস্তুতের সময় কারিগরি ত্রুটির কারণে এই আটটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) কমিশনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) মাসুমা আফরীনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, ফল প্রকাশের পর বিষয়টি কমিশনের নজরে এলে যাচাই-বাছাই শেষে তাদের উত্তীর্ণ হিসেবে নিশ্চিত করা হয়। বাদ পড়া পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর হলো– ১১০৪৭৩৭৫, ১১০৫৭৫৩০, ১১১৬০২৯২, ১৪০২৪৭৫৬, ১৫০০৩৭৬৫, ১৮০০৩৫৮৪, ১৮০০৭৩৯১ ও ১৮০১০২৮২। এদেরকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য যোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রকাশিত ফলে যুক্তিসংগত কারণে সংশোধনের প্রয়োজন হলে কমিশন তা সংশোধনের অধিকার সংরক্ষণ করে।
এর আগে, গত ২৭ নভেম্বর ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে উত্তীর্ণ হয়েছিল ৪ হাজার ৪২ জন প্রার্থী। এখন আরও ৮ জন নতুন করে যুক্ত হওয়ার মোট উত্তীর্ণ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫০ জনে।
পিএসসি জানিয়েছে, চলতি ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে এ বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হতে পারে। মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি যথাসময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
জকসু নির্বাচন: শিবিরের প্যানেলের ভিপি-জিএস প্রার্থীকে শোকজ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্র শিবির–সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম ও জিএস পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম আরিফকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও ভুল তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কিত করার অভিযোগে তাদের এ নোটিশ প্রদান করা হয়
মঙ্গলবার (০২ ডিসেম্বর) জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান স্বাক্ষরিত নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৭ নভেম্বর ক্যাম্পাসে প্যানেলটির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কয়েকজন প্রার্থী প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার এবং জবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর’ বক্তব্য প্রদান করেছেন। যা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ও হল শিক্ষার্থী সংসদসমূহের গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা ২০২৫ এবং জকসু নির্বাচনী আচরণবিধি ২০২৫–এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
এ ধরনের কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশে বলা হয়েছে।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইবি অধ্যাপকের স্পর্শকাতর মন্তব্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফোকলোর স্টাডিজ ও চারুকলা বিভাগ নিয়ে স্পর্শকাতর মন্তব্য করার অভিযোগে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (০১ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা মৌন অবস্থান ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ’র কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন পাবলিক মঞ্চে (সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ) ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগকে নাস্তিকতা বা ইসলাম পরিপন্থী স্পর্শকাতর বিষয়ে জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন মন্তব্য প্রচারের ঘটনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ধরনের বক্তব্য কেবল বিভাগের মর্যাদাকেই ক্ষুন্ন করছে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক শিক্ষাবান্ধব পরিবেশকেও নষ্ট করছে।
এই প্রেক্ষিতে সুস্পষ্ট দাবিসমূহ- বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী বা শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে কোনো পাবলিক মঞ্চে (সামাজিক মাধ্যমসহ) ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগকে স্পর্শকাতর বিষয়ের (যেমন: নাস্তিকতার সাবজেক্ট, ইসলাম পরিপন্থী সাবজেক্ট) সাথে যুক্ত করে কোনো ধরনের মন্তব্য বা অভিব্যক্তি প্রচার করতে পারবে না। দ্বিতীয়ত, এ বিষয়ে সকল দায়-দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করবেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও বিধি-নিষেধ আরোপ করবে। সর্বশেষ, ভবিষ্যতে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ বা বিভাগের কোনো সদস্য এ ধরনের আক্রমণ, অপপ্রচার বা হয়রানির শিকার হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজ উদ্যোগে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এসময় মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ফোকলোর স্টাডিজ ও চারুকলা বিভাগ নিয়ে একজন সিনিয়র অধ্যাপকের কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এর আগে আমরা উপাচার্য স্যারের কাছে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের নাম পরিবর্তনের জন্য গেলে তিনি আমাদের বিভাগের প্রশংসা করেন। কিন্তু একজন সিনিয়র অধ্যাপক কেন এটিকে ইসলাম বিদ্বেষী বিভাগ বললো তা আমাদের অজানা। যদি আমাদের বিভাগে ইসলাম বিদ্বেষের মত কোনো পড়াশুনা হয়ে থাকে তাহলে তিনি সেটি পরিবর্তন করে দিক।
এদিকে মৌন অবস্থান শেষে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী জানান, নির্দিষ্ট দুইটি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রবীণ অধ্যাপকের এমন নেতিবাচক মন্তব্যে আমরা খুবই ব্যাথিত হয়েছি। তার কাছ থেকেম এমন বক্তব্য আমরা প্রত্যাশা করি না। আমরা এই বক্তব্যের প্রতিবাদে নিরব প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি এইসকল ক্ষেত্রে নীরব প্রতিবাদ সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিবাদ।
ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও এস এম সুইট বলেন, “গতকাল স্যারের এ বক্তব্য প্রদানের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন কিন্তু তারা তখন কোনো প্রতিবাদ করেননি। এমনকি তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রেস রিলিজ দিয়ে প্রতিবাদ করে কিন্তু তারা এ পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো প্রতিবাদ জানায়নি।”
তিনি আরও বলেন, ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ একাই একশ। পরবর্তীতে কেউ এ বিভাগ নিয়ে কিছু বললে আপনারা তার টুটি চেপে ধরবেন। উপাচার্য স্যার যদি সকল বিভাগের শিক্ষার্থীদের সন্তান মনে করেন তবে ফোকলোর স্টাডিজ ও চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সৎ সন্তান মনে করেন কিনা আমাদের জানার বিষয়।
ছাত্রদলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, গতকালের অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের নেতারা থাকার পরেও কোনো প্রতিবাদ করেননি এবং এখন পর্যন্ত কোনো সংহতি জানায়নি। কথায় কথায় প্রতিবাদ জানিয়ে প্রেস রিলিজ জানান কিন্তু এখন আপনারা চুপ কেন? আপনারা নির্যাতিত বিভাগের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আমাদের পক্ষে কথা বলার মতো সাহস আপনাদের নেই।
এদিকে মন্তব্য প্রদানকারী অধ্যাপক ড. আশ্রাফী ব্যাখ্যা করে বলেন, সত্যিকার অর্থে আমি কাউকে আঘাত করার জন্য বা দুই সাবজেক্টের ছেলেমেয়েদেরকে আঘাত করার জন্য বক্তব্য দেই নাই। বিগত ১৬ বছর অথবা এর আগেও (শুধু এখানে কালটাকে সুনির্দিষ্ট করছি না) এখানে অনেক ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়রা আসছেন, তারা কিন্তু এই উদ্যোগটা কেউ গ্রহণ করেন নাই। আমি বুঝাতে চেয়েছি যে ওইসময় ইসলামিক সাবজেক্টগুলোকে মাইনোরিটি হিসেবে ধরে নিয়ে অন্যান্য সাবজেক্টগুলো করা হয়েছে। এই সাবজেক্টগুলো এখন যাতে করে ইসলাম ব্রান্ডিং নিয়ে করতে হবে। ওই ধরনের সাবজেক্টগুলো খুলে ইসলামী মূল্যবোধটাকে এবং ইসলামটাকে সারা পৃথিবীতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তুলে ধরতে হবে। আমি আমার বক্তব্যে এ কথাটা বলেছি। কিন্তু এই বক্তব্যটা কিন্তু আসে নাই। আসলেই সত্যিকার অর্থে আমি একজন এলামনাই হিসেবে কাউকে আঘাত করে এই জাতীয় বক্তব্য দেওয়া আমার কোনো উদ্দেশ্যই ছিল না।
প্রসঙ্গত, গতকাল রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আয়োজন করা আলোচনা সভায় অধ্যাপক ড. আ. ব. ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী ফোকলোর স্টাডিজ ও চারুকলা বিভাগ ইসলামী মূল্যবোধের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেন।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম



