জাতীয়
হাসিনার স্বর্ণালঙ্কারের লকারে থাকা চিরকুটে মিললো যে তথ্য
দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী পুনঃযাচাইয়ের অংশ হিসেবে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ওয়াজেদের নামে থাকা দু’টি ব্যাংকের তিনটি লকার খুলে ৯ কেজি ৭০৭ গ্রাম বা ৮৩২ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
উদ্ধারকৃত স্বর্ণালঙ্কারসমূহের লকারে সংরক্ষিত বর্ণনা ও লিখিত চিরকুট অনুযায়ী, এগুলো শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের—শেখ রেহানা সিদ্দিকী, সাইমা ওয়াজেদ পুতুল, সজীব ওয়াজেদ জয় ও ববির—হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ইনভেন্টরি তালিকা প্রস্তুতের পর সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপকদের জিম্মায় মালামাল হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদক জানায়, দুদকের উপ-পরিচালক (বিশেষ অনু. ও তদন্ত-১) মো. মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত অনুসন্ধান দল ২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে লকার খোলার অনুমতির আবেদন করেন। আদালত একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ ব্যাংকের বুলিয়ন শাখার একজন স্বর্ণ বিশেষজ্ঞ, এনবিআরের একজন কর গোয়েন্দা ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইসি) মনোনীত দুই কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লকার খোলার নির্দেশ প্রদান করেন।
পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) পূবালী ব্যাংক পিএলসির মতিঝিল কর্পোরেট শাখা ও অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির প্রিন্সিপাল শাখায় থাকা মোট তিনটি লকার খোলা হয়। এর মধ্যে পূবালী ব্যাংকের লকার নম্বর ১২৮ গ্রাহক শেখ হাসিনার নামে- থেকে একটি খালি ছোট পাটের ব্যাগ পাওয়া যায়।
অপরদিকে গ্রাহক শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে থাকা অগ্রণী ব্যাংকের লকার (নম্বর ৭৫১/বড়/১৯৬) থেকে আনুমানিক ৪ হাজার ৯২৩ দশমিক ৬০ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। একই ব্যাংকের গ্রাহক শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সিদ্দিকীর নামে থাকা লকার (নম্বর ৭৫৩/বড়/২০০) থেকে পাওয়া যায় ৪ হাজার ৭৮৩ দশমিক ৫৬ গ্রাম স্বর্ণালঙ্কার।
দুদক বলেছে, ইনভেন্টরি তালিকা পর্যালোচনা, মালিকানা সুনির্দিষ্টকরণ ও স্বর্ণকারের মাধ্যমে স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণ শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মালিকানা ও আইনগত দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করা হবে। সূত্র: বাসস
এমকে
জাতীয়
১৬৬ উপজেলায় নতুন ইউএনও
জেলা প্রশাসকের (ডিসি) পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদে রদবদল আনলো সরকার। বুধবার (২৬ নভেম্বর) প্রথম ধাপে ১৬৬ উপজেলায় সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নতুন ইউএনও নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
আটটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ ইউএনওদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে ন্যস্ত করা কর্মকর্তাদের তাদের নিজ অধিক্ষেত্রে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮ এর সেকশন-১৪৪ এর ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।
নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলি করা কর্মস্থলে যোগদান করবেন, অন্যথায় আগামী ৩০ নভেম্বর বিকেলে বর্তমান কর্মস্থল (প্রশিক্ষণ/কর্মস্থল) থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) বলে গণ্য হবেন। বদলি করাকর্মকর্তার দপ্তর/কর্মস্থল ইতোমধ্যে পরিবর্তন হলে কর্মরত দপ্তরের নাম/ঠিকানা উল্লেখ করে তিনি যোগদানপত্র দাখিল করবেন বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
আট বিভাগের ১৬৬ উপজেলায় রদবদলের তালিকা দেখুন নিচে।
ঢাকা
চট্টগ্রাম
বরিশাল
খুলনা
ময়মনসিংহ
রাজশাহী
রংপুর
সিলেট
জাতীয়
শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) তাদের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ফলে শেখ হাসিনা ও কামালকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে।
গত ১৭ নভেম্বর দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দুই আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। আরেক আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) রাজসাক্ষী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে ৫ বছরের লঘুদণ্ড। রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি যারা ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে নিহত হয়েছেন, তাদের কনসিডারেবল অ্যামাউন্ট (উল্লেখযোগ্য পরিমাণ) আন্দোলনকারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া আহত আন্দোলনকারীদের আঘাতের মাত্রা ও ক্ষতি বিবেচনায় পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে রায়ে।
ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন জুলাই যোদ্ধাসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। তারা চৌধুরী মামুনের সাজা কম হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক থাকায় রায়ের বিরুদ্ধে তারা আপিলের সুযোগ পাচ্ছেন না। আপিল করতে হলে তাদের ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে হবে। শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবীও বলেছেন, আইনে না থাকায় তার আসামির আপিলের সুযোগ নেই।
জুলাই আন্দোলনে ১৪০০ ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে করা কোনো মামলায় এটিই প্রথম রায়। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
জনগণকে জিম্মি করে স্বৈরাচারী কায়দায় সাড়ে ১৫ বছর দেশে শাসনের নামে পরিবারতন্ত্র কায়েক করেছিলেন শেখ হাসিনা। তার আশপাশে গড়ে তোলেন চাটুকার বাহিনী। তাদের সবার স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা হয়ে ওঠেন জনগণের প্রতিপক্ষ। কিন্তু তার গুম-খুন বাহিনীর ভয়ে কেউ তার অপশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলতে পরত না। ২০২৪ সালের আমি আর ডামি নির্বচনের মধ্য দিয়ে একদলীয় শাসনের চূড়ান্ত নীলনকশা নতুন প্রজন্ম ও ছাত্রছাত্রীরা বুঝতে পেরে তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে মাঠে নামে। শেষ পর্যন্ত টানা ৩৬ দিনের আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তিনি কোনো মতে ভারতে পালিয়ে গিয়ে নিজের জীবন রক্ষা করেন। তার সঙ্গে ছোট বোন শেখ রেহানাও পালিয়ে যান। শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন বলে রাজনৈতিক দলগুলো অভিযোগ করে আসছে। তার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার রায় যত এগিয়ে আসছিল, তিনি ততই বেপরোয়া আচরণ শুরু করেন। তার নির্দেশে দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটির কিছু দুষ্কৃতকারী কর্মী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর অবস্থানে থাকায় তারা সুবিধা করতে পারেনি। এমন বাস্তবতায় সোমবার দেওয়া হলো ঐতিহাসিক সেই রায়। যার জন্য দেশবাসী ৫ আগস্টের পর থেকে দীর্ঘ প্রতীক্ষায় ছিলেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম সাবেক সরকারপ্রধান, যার মাথার ওপর এখন ঝুলছে মৃত্যুদণ্ডের রায়। এর আগে আর কোনো সরকারপ্রধানকে এভাবে গণহত্যার জন্য মৃত্যুদণ্ডের মুখে পড়তে হয়নি কোনো আদালত থেকেই। এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকেই শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজার রায় এলো, যে আদালত তার সরকার গঠন করেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে ভিন্নমতের রাজনীতির মুখ বন্ধ করার জন্য।
যে অভিযোগে শেখ হাসিনার সাজা: প্রথম অভিযোগের অধীন তিনটি ঘটনায় শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, প্রথম ঘটনা হচ্ছে উসকানি, দ্বিতীয়টি হত্যা করার আদেশ, তৃতীয়টি হচ্ছে নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধে নিষ্ক্রিয়তা এবং দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতা, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে শাস্তিযোগ্য। এ তিন ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় তিনটি ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ সম্বোধন করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। একই দিন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথন আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে তাদের ফাঁসি দেবে বলেন। যা উসকানি ও আদেশ দেন এবং অপরাধ সংঘটনে আসামিরা তার অধীন ব্যক্তিদের কোনো বাধা প্রদান করেননি। ফলে রংপুরে আবু সাঈদকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। এই তিনটি ঘটনায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, অনেক ঘটনা আছে। একটি হচ্ছে আন্দোলনকারীদের হত্যা করতে ড্রোন, হেলিকপ্টার ও লেথাল উইপন ব্যবহারের আদেশ দিয়েছেন, যার মাধ্যমে তিনি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটন করেছেন। শেখ হাসিনা একই ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছেন উল্লেখ করে রায়ে আরও বলা হয়, চানখাঁরপুলে ছয়জনকে হত্যা, যা সংঘটিত হয়েছে তার আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বলে বর্ণনায় এসেছে। একইভাবে অন্য একটি ঘটনায় তিনি একই অপরাধ করেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ। এ কারণে আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘এই তিনটি ঘটনায় তাকে (শেখ হাসিনা) একটি সাজা প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেটি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ডের সাজা।’
যে অভিযোগে আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড: রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আসাদুজ্জামান খান কামাল মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের জন্য দায়ী ঢাকার চানখাঁরপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনার জন্য। এ ঘটনার ক্ষেত্রে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনে দায়ী সহযোগিতার জন্য এবং নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ ও প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার জন্য।
উভয় (চানখাঁরপুল ও আশুলিয়া) ক্ষেত্রে ছয়জন করে হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবব্যুনাল আইনের সংশ্লিষ্ট বিধানের অধীন আসাদুজ্জামান খান কামাল দায়ী বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে, চানখাঁরপুল ও আশুলিয়ার ঘটনার ক্ষেত্রে অপরাধ সংঘটনে সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতা। এসব ঘটনায় তাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যে কারণে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–-মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড : চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল বলেন, এ মামলার বিচারের ক্ষেত্রে তিনি অবদান রেখেছেন পরিস্থিতি সম্পর্কে তার জানা সম্পূর্ণটা ও সত্য প্রকাশের মাধ্যমে। এমনকি তিনি স্বীকার করেছেন এবং তিনি ৩৬ দিনের আন্দোলনের সব ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন। তার অবদান, স্বীকার করার সঙ্গে বস্তুগত সাক্ষ্যপ্রমাণ বিবেচনায় তার সাজা প্রদানের ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে, যেখানে অপরাধের সম্পৃক্ততায় সর্বোচ্চ শাস্তি। কিন্তু তার অবদান বিবেচনায় নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রদানের।
চৌধুরী মামুন জবানবন্দিতে বলেছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরাসরি ‘লেথাল উইপন’ (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার ওই নির্দেশনা তিনি পেয়েছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের মাধ্যমে। সোমবার রায়ের সময় শেখ হাসিনাসহ আসামিদের অপরাধের প্রমাণ হিসাবে আমলে নেওয়া ফোনালাপের রেকর্ড শোনানো হয়। জুলাই সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘ প্রতিবেদনও উপস্থাপন করা হয়।
এছাড়া উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য শেখ হাসিনাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ প্রমাণিত হওয়ায় শেখ হাসিনার এ শাস্তি হয়েছে। এখানে রংপুরে আবু সাঈদ হত্যার অভিযোগও আনা হয়েছে।
ছাত্র-জনতাকে রাজাকার বলে সম্বোধন করেন শেখ হাসিনা: আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে রাজাকার বলে সম্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এটা একটি উসকানিমূলক বক্তব্য। শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে আদালত রায়ে বলেন, গত বছরের ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে রাজাকার বলে সম্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা একটি উসকানিমূলক বক্তব্য। এর পরিপ্রেক্ষিতে একই রাতে তিনি তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে ফোনে আন্দোলনকারী ছাত্রদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের আদেশ দেন। এমনকি হত্যারও আদেশ দেন। ১৮ জুলাই ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে ফোনে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে গুলি ও ড্রোনের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার অবস্থান নির্ণয়ের নির্দেশ দেন। রায় পাঠের সময় ঘুরেফিরে আসে শেখ হাসিনার র্বিভিন্ন ধরনের অডিও-ভিডিও ফোনালাপ। আসাদুজ্জামান কামালের বাসা থেকে কোর কমিটির মিটিংয়ের মাধ্যমে হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়ন হতো। তার বিরুদ্ধে সাক্ষীদের জবানবন্দি এবং আলামত ও হত্যাকাণ্ডের নির্দেশসংক্রান্ত দালিলিক প্রমাণ হিসাবে এগুলো সাব্যস্ত হয়েছে।
এমকে
জাতীয়
৫০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৫০তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই বিসিএসের এক হাজার ৭৫৫ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। ক্যাডার পদের মধ্যে স্বাস্থ্য ৬৫০কে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে ৩৯৫ জনকে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৫০তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ২০২৬ সালের ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া লিখিত পরীক্ষার শুরুর তারিখ ৯ এপ্রিল ও মৌখিক পরীক্ষা ১০ আগস্ট শুরু হবে বলে এতে বলা হয়।
এই বিসিএসে অংশ নিতে প্রার্থীরা আগামী ৪ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আর আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন ফি পরিশোধের সুযোগ পাবেন।
আইন-আদালত
একসঙ্গে ৮২৬ বিচারককে বদলি-পদোন্নতি
সারা দেশে একসঙ্গে ৮২৬ বিচারককে বদলি ও পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার (২৬ নভেম্বর) মন্ত্রণালয়ের উপসচিব এ এফ এম গোলজার রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তিনটি পদে মোট পদোন্নতি ও পদায়ন হয়েছেন ৮২৬ জন। এর মধ্যে অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ ২৫০ জন, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ ২৯৪ জন ও সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা জজ ২৮২ জন।
আরও বলা হয়, বদলি হওয়া কর্মকর্তারা ২৭ নভেম্বরের মধ্যে বর্তমান পদের দায়িত্ব মনোনীত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করবেন। নতুন কর্মস্থলে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে যোগদান করতে হবে।
জাতীয়
এসপি নিয়োগে মেধাবী কেউ বাদ পড়েননি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
লটারির মাধ্যমে এসপি নিয়োগে মেধাবী কেউ বাদ পড়েনি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সচিবালয়ে এডিপি পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
এসপি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় এ, বি ও সি হিসেবে তিনটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ৬৪ জেলার এসপির মধ্যে আগের ১৮ জন এসপিকে তুলে আনার পর সেখানে নতুন এসপি নিয়োগ হয়েছে এরপর বাকিদের বিভিন্ন জেলায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে লটারির মাধ্যমে। সেক্ষেত্রে মেধাবীরা কেউ বাদ পড়েননি।
তিনি বলেন, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি রয়েছে। সমাজ থেকে দুর্নীতি কমানো সম্ভব হয়নি। তবে সরকার কমাতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা যায়নি কিন্তু কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় লটারি করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য লটারির মাধ্যমে ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) চূড়ান্ত করেছে সরকার।
এমকে



