অর্থনীতি
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল
২০২৫-২৬ কর বছরে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়িয়ে আগামী ৩১ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আজ রবিবার (২৩ নভেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এনবিআর জানায়, ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিনীত অনুরোধ করছে এনবিআর।
এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮ লাখের অধিক ব্যক্তি করদাতা এ বছর অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করেছেন বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে এনবিআর।
এতে আরো বলা হয়েছে, ‘ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যার কারণে কোন করদাতা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে অসমর্থ হলে ১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের নিকট সুনির্দিষ্ট যৌক্তিকতাসহ আবেদন করা যাবে মর্মে আরো একটি আদেশ জারী করা হয়েছে’।
এ বছর ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা, মৃত করদাতার পক্ষে আইনগত প্রতিনিধি কর্তৃক রিটার্ন দাখিল এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী নাগরিকগণ ব্যতীত সকল ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
অর্থনীতি
সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের দাম বাড়লো
সার কারখানায় ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য প্রতি ইউনিট ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৯ দশমিক ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়লো প্রায় দ্বিগুণ।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নতুন এই দাম ঘোষণা করে।
এর আগে গত ৬ অক্টোবর গণশুনানিতে বিইআরসির কাছে পেট্রোবাংলা এবং গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানিগুলো প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম ১৬ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়। পরে কমিশনের কারিগরি কমিটি প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম বর্তমান হার নির্ধারণের কথা জানায়।
গণশুনানিতে বিইআরসি চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেছিলেন, গ্যাসের দাম প্রশ্নে সবদিক বিবেচনা করে ভারসাম্য রক্ষা করা হবে। দাম বেড়ে গেলে সারের উৎপাদন খরচের বিষয়ে জনগণ চিন্তিত। অবশ্যই কৃষিকে বিবেচনায় নিতে হবে। জিডিপিতে কৃষির অবদান কম হলেও খাদ্য নিরাপত্তা এবং বিশাল কর্মসংস্থানের বিষয়টি অবশ্যই ভাবনায় রাখতে হবে। আবার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির খরচের বিষয়গুলোও বিবেচনায় আনতে হবে।
অর্থনীতি
নিয়ন্ত্রকদের ব্যর্থতায় সংকটে অর্থনীতি: গভর্নর
বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সামগ্রিক উন্নয়নকে ‘হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচআহসান এইচ. মনসুর মনসুর। তিনি বলেন, এই হতাশার মূল কারণ হচ্ছে সুশাসনের ব্যর্থতা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সীমাবদ্ধতা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাব।
শনিবার (২২ নভেম্বর) রাতে হোটেল রেডিসনে মাস্টারকার্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, “আইনকানুন কঠোর হলেও অনেক অনিয়ম ভেতরে-ভেতরে ঘটে যায়, যা অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। এটা অনেকটা ‘বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো’র মতো অবস্থা। আমাদের আর্থিক খাতের আকার খুবই ছোট। ফলে আর্থিক খাত থেকে অর্থনীতিতে যে সুবিধা আসার কথা, তা আমরা পাচ্ছি না। দুর্নীতি, সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার ব্যর্থতা এ ক্ষেত্রে বড় বাধা।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের আর্থিক খাত বহু দিক থেকেই পিছিয়ে রয়েছে। তবে সামনে এগিয়ে যেতে হবে, এ নিয়ে কোনো দ্বিধা বা দোদুল্যমানতা থাকা উচিত নয়। কার্ড নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্যাক্স রিটার্ন, টিআইএন নম্বরসহ বিভিন্ন জটিলতা আমরা দূর করেছি। গত সপ্তাহেই আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের টিকিট ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনার যে সমস্যা ছিল, তা সমাধান করেছি। এভাবে আমরা ডিজিটাল লেনদেনের নানা বাধা দূর করছি।”
অনুষ্ঠানে মাস্টারকার্ড সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট গৌতম আগারওয়াল বলেন, বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রায় সামনে আরও অনেক সম্ভাবনাময় সময় অপেক্ষা করছে। ব্যাংক, ফিনটেক ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসহ সমগ্র ইকোসিস্টেমে অংশীদারিত্ব ও উদ্ভাবনের সমন্বয়ে ডিজিটাল পেমেন্টকে আরও সহজ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তোলাই এ অগ্রগতির মূল চালিকা শক্তি। মাস্টারকার্ড গ্লোবাল অভিজ্ঞতা ও স্থানীয় চাহিদার সমন্বয়ে এসব অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে গর্ববোধ করে। মাস্টারকার্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫ তাদেরই সম্মান জানায়, যারা এই ভবিষ্যৎকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে মাস্টারকার্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান করা হয় ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে। এ বছর ১৯টি ক্যাটাগরিতে মোট ১৮টি প্রতিষ্ঠান ৩৩টি পুরস্কার পেয়েছে।
অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: মার্কেন্টাইল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, এসএসএল কমার্জ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সাউথ ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, পাঠাও পে, এসিআই লজিস্টিকস ও বিকাশ লিমিটেড।
যেসব ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে: ডিজিটাল ইনোভেশন, ডিজিটাল বিজনেস, অনলাইন বিজনেস, ডেবিট (ডোমেস্টিক ও ক্রস-বর্ডার), ক্রেডিট (ডোমেস্টিক ও ক্রস-বর্ডার), প্রিপেইড (ডোমেস্টিক ও ক্রস-বর্ডার), পিওএস ও অনলাইন অ্যাকোয়ারিং, অ্যাগ্রেগেন্ট, লোকেশন-বেসড অ্যাকোয়ারিং, কো-ব্র্যান্ডস, ইনোভেশন অ্যান্ড ইনোভেশন ইন অ্যাকসেপ্ট্যান্স, ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন, ইমার্জিং বিজনেস এবং মাস্টারকার্ড বিজনেস গ্রোথ (ইস্যুয়িং)।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরী, মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, ডিরেক্টর জাকিয়া সুলতানা ও সোহেল আলিমসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা, দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক, ফিনটেক কোম্পানি, কূটনীতিক এবং বিভিন্ন বৃহৎ মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
এমকে
অর্থনীতি
বাজারে ভরপুর শীতের সবজি, তবুও বেড়েছে দাম
মাত্র তিন-চার সপ্তাহ আগেই শীতকালীন সবজির আগাম সরবরাহে দাম কমেছিল রাজধানী ঢাকার বাজারগুলোতে। এরপর অনেকটাই নাগালে চলে আসে সবজির দাম। এমনকি গত সপ্তাহেও দামে স্বস্তি ছিল। কিন্তু সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রায় সব ধরনের শীতের সবজির দাম বেড়েছে।
বাজারে এখন শিম, মুলা, শালগম, ফুলকপি ও বাঁধাকপি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে শীতের সবজি কিনতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন ভোক্তারা। হঠাৎ এভাবে দাম বাড়ার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না ক্রেতাদের অনেকে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সবজি বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গত প্রায় তিন-চার সপ্তাহ সবজির সরবরাহ বেড়েছিল। যে কারণে দামও কম ছিল। এরমধ্যে শেষ সপ্তাহে সরবরাহ ঘাটতির কারণে দাম আবারও বেড়েছে।
মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা সুমন রহমান বলেন, গত কয়েকদিন রাজনৈতিক কর্মসূচি, যানবাহনে আগুন ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় পণ্য পরিবহন ব্যাহত হয়েছে। যে কারণে পণ্য সরবরাহ কমে এবং দাম বেড়ে যায়।
বাজারে বড় আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি যখন আসতে শুরু করে তখন প্রথম তা ছিল ছোট আকারের। এক সপ্তাহের মধ্যেই বড় আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি বাজারে আসতে শুরু করে। তবে তখনো প্রতিটি কপির দাম ছিল ৪০-৫০ টাকা। এখনো কপির দাম কমেনি।
শীতের সবজির মধ্যে পরিচিত হচ্ছে শিম। প্রতি কেজি শিম সপ্তাহ দুই আগেও ৫০-৬০ টাকায় নেমে এসেছিল। কিন্তু এখন আবারও বেড়ে ১০০-১২০ টাকায় উঠেছে। প্রতি কেজি নতুন বেগুনের দাম খানিকটা কমলেও এখনো ভোক্তার সহনীহ পর্যায়ে আসেনি। বাজারে নতুন আসা বেগুন আকার ও মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকার মধ্যে।
প্রতি কেজি মুলার দাম এখনো ৪০-৫০ টাকা। এ সপ্তাহে বাজারে নতুন শালগম এসেছে, যা বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা দরে। এছাড়া শীতের জনপ্রিয় শাক পালংয়ের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে।
সেগুনবাগিচা বাজারের সবজি বিক্রেতা আবু আলী বলেন, শীতের সময় ভোক্তারা কম দামে সবজি কিনে অভ্যস্ত। সেই পরিস্থিতি তৈরি হতে আরও খানিকটা সময় লাগবে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে বরবটি, করলা ও কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। শীতের সবজির দাম বাড়ায় সেগুলোর দামও কিছুটা বেড়েছে। এসব সবজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকার মধ্যে। ঢ্যাঁড়স ও পটলের দামও খানিকটা বেড়েছে, ৪০-৬০ টাকা থেকে বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকার মধ্যে।
বাজারের কিছু কিছু দোকানে নতুন আলু এসেছে। দামও চড়া। প্রতি কেজি নতুন আলু কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। তবে পুরোনো আলুর দাম এখনো তলানিতে; বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে।
সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম এখনো কমেনি। প্রতি কেজি পেঁয়াজ এখনো ১২০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাকে।
তবে স্বস্তি রয়েছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের বাজারে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকার মধ্যে। সোনালি মুরগির দামও খানিকটা স্থিতিশীল। ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০-৩০০ টাকার মধ্যে।
ফার্মের ডিমের দাম আরও খানিকটা কমেছে। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।
অর্থনীতি
যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা হচ্ছে আরও ১০০ কোটি ডলারের সয়াবিন
২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাত লাখ মেট্রিক টনের বেশি সয়াবিন আমদানির পর মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ ও ডেল্টা অ্যাগ্রো আগামী বছর আরও ১০০ কোটি ডলারের সয়াবিন কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মার্কিন দূতাবাস গত বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে।
পোস্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের উৎপাদিত একটি বড় সয়াবিন চালান মেঘনা গ্রুপে পৌঁছালে সেটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি উচ্চমানের পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ, যা বাংলাদেশের মৎস্য ও পোলট্রি শিল্পকে আরও শক্তিশালী করছে।
দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে এ ধরনের দীর্ঘমেয়াদি ক্রয়চুক্তি দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ করবে। একই সঙ্গে স্থানীয় শিল্পখাতে কাঁচামালের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করতে মার্কিন সয়াবিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জ্যাকবসন আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যে কৃষিখাতের এই সহযোগিতা শুধু বাণিজ্যই নয়, খাদ্য নিরাপত্তা ও শিল্পোন্নয়নেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
অর্থনীতি
‘আনঅফিসিয়াল’ ফোন বন্ধের ঘোষণায় মোবাইলের বাজারে ধস
টেলিযোগাযোগ নিরাপত্তা জোরদার ও অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বন্ধ করতে সরকার ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালুর ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই দেশের মোবাইল ফোন বাজারে তীব্র অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ‘আনঅফিসিয়াল’ বা নিবন্ধনহীন ফোন বিক্রি প্রায় থমকে যাওয়ায় লক্ষাধিক ব্যবসায়ী ও বিক্রেতা চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই ব্যবস্থা আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর ইস্টার্ন প্লাজা, মোতালেব প্লাজাসহ বিভিন্ন মোবাইল মার্কেটে সরেজমিনে দেখা গেছে—আনঅফিসিয়াল ফোন বিক্রি ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে।
ইস্টার্ন প্লাজার ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন বলেন, সরকারের ঘোষণার পর ব্যবসায়ীদের করুণ অবস্থা। গত ১৫ দিন ধরে বিক্রি প্রায় শূন্য। যদি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়, তাহলে প্রায় ২০ লাখ ব্যবসায়ী বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারও ব্যাংক লোন আছে, কারও মার্কেটে ডিও—সব মিলিয়ে আমরা পথে বসব। তিনি সরকারের কাছে ব্যবসায়ীদের দুরবস্থার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আহ্বান জানান।
অন্যদিকে স্মার্টফোন ও গ্যাজেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি) জানিয়েছে, তারা এনইআইআর বাস্তবায়নে বাধা নন, তবে ব্যবসায়ীদের হাতে থাকা ফোন বিক্রির সুযোগ হিসেবে অন্তত এক বছর সময় চেয়েছেন।
সরকারের পদক্ষেপে ক্রেতাদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ বৈধতা ও নিরাপত্তার পক্ষে মত দিলেও অনেকেই চিন্তিত ফোনের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায়।
মগবাজারের বাসিন্দা নোমান সাকির নিশু আনঅফিসিয়াল ফোন কিনতে এসে দ্বিধায় পড়েছেন। তিনি একটি জনপ্রিয় মডেল আনঅফিসিয়াল দামে ১ লাখ ৭ হাজার টাকায় কেনার কথা ভাবছিলেন, যেখানে একই ফোন অফিসিয়াল কিনতে হলে গুনতে হবে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
নোমান বলেন, এত বেশি দামে অফিসিয়াল ফোন কেনা সাধারণ মানুষের পক্ষে কঠিন। এতে মানুষের পকেটে চাপ বাড়বে।
মোতালেব প্লাজায় সার্ভিসিং করাতে আসা এক ক্রেতা মনে করেন, হঠাৎ করে আনঅফিসিয়াল ফোনের বাজার বন্ধ করা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, অফিসিয়াল ফোনের বাজারের চেয়ে আনঅফিসিয়াল বাজার অনেক বড়। এত ব্যবসায়ী এই খাতে যুক্ত। সরকারের উচিত আগে তাদের সঙ্গে বসে একটি নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসা, যাতে তারা টিকে থাকতে পারেন। এতে বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে।
এনইআইআর শুরু হওয়ার আগে ব্যবসায়ী–ক্রেতা উভয়ের মাঝে উদ্বেগ বাড়তে থাকায় বাজার পরিস্থিতি আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে।



