জাতীয়
জামায়াতসহ ১২ দলের সঙ্গে ইসির বৈঠক সোমবার
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের তৃতীয় দিন সোমবার জামায়াতে ইসলামীসহ ১২টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক এ কথা জানিয়েছেন। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হবে সংলাপের প্রথম ভাগ। যা চলবে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত।
সকালে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসবে ছয়টি দল। সেগুলো হল-বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল।
দ্বিতীয় ধাপের দুই ঘণ্টার আলোচনাতেও অংশ নেবে ৬টি দল। এই ভাগে আছে-বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী,
আমার বাংলাদেশ পার্টি, এবি পাটি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পাটি-জাগপা।
এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ভোটের লক্ষ্যে অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে গেল সপ্তাহ থেকে।
বৃহস্পতিবার সংলাপের প্রথম দিনে ১২টি দলের সঙ্গে দুই পর্বে মতবিনিময় করেছে, রোববার আরও ১২ দলের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত দল রয়েছে বিএনপি, জামায়াতসহ ৫৩টি। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে; প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি), ফ্রিডম পার্টি ও ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলনের নিবন্ধন বাতিল রয়েছে।
নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-মার্কসবাদীর নিবন্ধন চূড়ান্ত করতে বিজ্ঞপ্তি হয়েছে, আপত্তি না থাকলে ১২ নভেম্বরের পর সনদ পাওয়ার কথা তাদের।
এদিকে বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ ও গণভোট এক দিনে একসঙ্গে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন।
জাতীয়
নির্বাচনে ৯ দিনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নামবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নির্বাচনের পাঁচ দিন আগ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে তৎপর থাকবে এবং বড় ধরনের কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে পটুয়াখালী সার্কিট হাউজের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
নির্বাচনের আগে বিশেষ কোনো অভিযান পরিচালনা করা হবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনে ৯ দিনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে নামবে। নির্বাচনের আগে পাঁচ দিন ও নির্বাচনের দিনসহ পরবর্তী আরও তিন দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকবে । ইলেকশনের আগের পাঁচ দিন বড় ধরনের কার্যক্রম চলবে। আমাদের বর্তমানে সেনাবাহিনী মাঠে আছে ৩০ হাজার। ওই সময় ১ লাখের মতো সেনাবাহিনী, ১ লাখ ৫০ হাজার পুলিশ, ৩৫ হাজারের মতো বিজিবি, ৫ হাজার নৌবাহিনী, ৪ হাজার কোস্টগার্ড, ৮ হাজার র্যাব এবং প্রায় সাড়ে ৫ লাখ আনসার মাঠে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সন্দেহের সুযোগ নেই। নির্বাচনে খুবই শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে’
এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পটুয়াখালী পুলিশ লাইন্স ও কোস্টগার্ড স্টেশন পরিদর্শন করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। এরপরে তিনি কুয়াকাটায় নৌপুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। সেখানে রাত্রিযাপন শেষে আগামীকাল সকালে বরিশাল গিয়ে সেখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন।
জাতীয়
হেফাজতে থাকা আসামির মিডিয়ায় বক্তব্য, আরএমপি কমিশনারকে আদালতে তলব
হত্যা মামলার আসামি লিমন মিয়া পুলিশি হেফাজতে থাকাবস্থায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে বক্তব্য প্রদান করার সুযোগ করে দেওয়ায় কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারকে তার কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। তাকে ১৯ নভেম্বর সশরীরে হাজির হয়ে এই ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজশাহীর রাজপাড়া থানার আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশিদ এই আদেশ দেন।
লিমন গত ১৩ নভেম্বর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজের বাসায় ঢুকে তার ১৭ বছর বয়সী ছেলেকে হত্যা করেন। একই সঙ্গে মহানগর দায়রা জজের স্ত্রীকে আহত করেন।
আরএমপি কমিশনারকে তলবের আদেশে বলা হয়েছে, মিডিয়ায় প্রচারিত বিভিন্ন সংবাদ হতে অত্র আদালতের গোচরীভূত হয়েছে যে, বিগত ১৩ নভেম্বর মোহাম্মদ আব্দুর রহমান, মহানগর দায়রা জজ, রাজশাহী-এর রাজপাড়া থানাধীন তেরখাদিয়া এলাকাস্থ ডাবতলা নামক স্থানের ১০ তলা বিশিষ্ট ‘স্পার্ক ভিউ’ অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের ৫ম তলার 5A নং ভাড়া ফ্ল্যাটে অভিযুক্ত লিমন মিয়া কৌশলে প্রবেশ করে তার নাবালক পুত্র তাওসিফ রহমানকে (১৭) ধারাল ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত ও শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং তার স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারাল ছুরি দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। তদপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল হতেই অভিযুক্ত লিমন মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে দেখা যায় উক্ত অভিযুক্ত লিমন মিয়া পুলিশি হেফাজতে থাকাবস্থায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে বক্তব্য প্রদান করে, যা আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বনাম রাষ্ট্র ৩৯ বিএলডি ৪৭০ সহ বিভিন্ন মামলায় প্রদত্ত মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এর নির্দেশনার সুস্পষ্ট লংঘন।
এমতাবস্থায়, পুলিশ হেফাজতে থাকাবস্থায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে মিডিয়ার সামনে বক্তব্য প্রদান করার সুযোগ প্রদান করায় কেন মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, পুলিশ কমিশনার, আরএমপি, রাজশাহী, আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে সশরীরে অত্র আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। আগামী ধার্য তারিখ ১৯ নভেম্বর।
জাতীয়
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকা মিনিবাসে আগুন
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মিনিবাসে আগুন লেগে ভস্মীভূত হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৬টার দিকে শিমরাইল এলাকায় সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম বলেন, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে নাফ পরিবহনের মিনিবাসটি মহাসড়কের ওপর রেখে চালক চলে যান। রাতভর বাসটি সেখানেই ছিল। ভোরে স্থানীয়রা বাস থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এর আগে বাসটির ভেতরের সব সিট ও কাঁচ পুড়ে যায় এবং ব্যাপক ক্ষতি হয়।
ওসি শাহীনুর আলম বলেন, অগ্নিকাণ্ডটি পরিকল্পিত ছিল, নাকি বাসের যান্ত্রিক ত্রুটি থেকে আগুন লেগেছে—এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
জাতীয়
প্রেমিকার ফাঁদে ফেলে ঢাকায় এনে বন্ধুকে খুন
রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১০ লাখ টাকা আদায় করতে চেয়েছিল বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার ওরফে কোহিনুর (৩৩)। এ জন্য এক মাস আগে আশরাফুলের সঙ্গে মিথ্যা প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন শামীমা। পরে তাকে ঢাকায় এনে খুন করে লাশ ২৬ টুকরো করেন জরেজ মিয়া ও শামীমা।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার শামীমার সঙ্গে ঘটনার প্রধান আসামি জরেজের প্রায় এক বছরের প্রেমের সম্পর্ক। জরেজ সম্প্রতি শামীমাকে বলেছিল, তার এক বন্ধুকে ‘প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্লাকমেইল করে’ ১০ লাখ টাকা আদায় করা যাবে। এরমধ্যে জরেজ ৭ লাখ টাকা এবং শামীমা ৩ লাখ টাকা ভাগ করে নিবে বলে আলোচনা হয়। শামীমা ভিকটিম আশরাফুলে সাথে একমাস আগে থেকে মোবাইলে যোগাযোগ শুরু করে তার প্রতি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। তাদের নিয়মিত অডিও এবং ভিডিও কলে কথা চলতে থাকে।
মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে আশরাফুলকে নিয়ে ঢাকায় রওনা দেন জরেজ। বুধবার তারা শামীমার সঙ্গে দেখা করেন এবং তিনজন মিলে শনির আখড়ার নূরপুর এলাকায় সাড়ে ৫ হাজার টাকার একটি ভাড়া বাসায় উঠেন। এর মধ্যে জরেজ ও তার প্রেমিকা শামীমার মধ্যে আলোচনা হয়, আশরাফুলের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে সেটি দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা আদায় করা হবে।
এটি অনেকটা ‘হানিট্র্যাপের’ মত মন্তব্য করে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, বুধবার দুপুরে ওই বাসায় ভিকটিম আশরাফুলকে মালটার শরবতের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হালকা অচেতন করে ফেলে জরেজ। আমরা সেদিনের ভিডিও শামীমার মোবাইলে পেয়েছি।
ভিডিও দেখিলে ‘ব্ল্যাকমেলিং’ করে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা থাকলেও দুপুরে পুরোপুরি অচেতন আশরাফুলের হাত দড়ি দিয়ে বেধে ফেলে এবং মুখ স্কচটেপ দিয়ে আটকে দেয় জরেজ। একপর্যায়ে আশরাফুলকে হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে।
র্যাব কর্মকর্তা ফায়েজুল আরেফীন আরও বলেন, অতিরিক্ত আঘাত এবং মুখ কসটেপ দিয়ে আটকানো থাকায় শ্বাস না নিতে পেরে ঘটনা স্থলেই আশরাফুল মারা যায়। লাশ একই ঘরে রেখে জরেজ ও শামীমা বুধবার রাত্রীযাপন করে। বৃহস্পতিবার সকালে জরেজ কাছের বাজার থেকে চাপাতি ও ড্রাম কিনে আনে। এরপর আশরাফুলের লাশ ২৬ টুকরা করে ড্রামে ভরে রাখে। দুপুর পৌনে তিনটার দিকে একটি সিএনজি ভাড়া করে ড্রাম দুটি সিএনজিতে নিয়ে তারা বেরিয়ে যায়। দুপুর সোয়া তিনটার দিকে তারা হাইকোট মাজার গেইটের কাছে লাশভর্তি ড্রাম রেখে দ্রুত চলে যায়, যেসব ‘মুভমেন্টের’ সিসিটিভি ভিডিও রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
এরপর সায়েদাবাদ গিয়ে শামীমাকে কুমিল্লায় বাড়িতে চলে যেতে বলে জরেজ এবং নিজে রংপুর চলে যাবে বলে জানায়।
পরে শামীমার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আশরাফুলের রক্তমাখা সাদা রংয়ের পায়জামা-পাঞ্জাবীসহ হত্যার ব্যবহৃত দড়ি, স্কচটেপ, একটি গোলগলা গেঞ্জি এবং একটি হাফ প্যান্ট নূরপুর এলাকা থেকে উদ্ধারের কথা বলেছে র্যাব।
এক প্রশ্নের জবাবে ফায়েজুল আরেফীন বলেন, শামীমার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ব্লাকমেইল করে টাকা উপার্জন করায় তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। তবে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনে পূর্ব শত্রুতা আছে কি না তা মূল আসামি জরেজকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসবে। একটু অপেক্ষা করলে আমরা মূল মোটিভটা জানতে পারব। কারণ যে নৃশংশতা হয়েছে, রিভেঞ্জ বা রাগ ছাড়া এভাবে মারাটা আমাদের কাছে স্বাভাবিক লাগেনি।
জাতীয়
নির্বাচনে ব্যাঘাত ঘটানোর মতো শক্তি আ. লীগের নেই: প্রেস সচিব
ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। সম্ভবত সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনও হতে পারে। তিনটি সাম্প্রতিক ঘটনা এমন বিশ্বাসকে আরও দৃঢ় করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূল ভেঙে গেছে বা প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোতে মিলিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে ব্যাঘাত ঘটানোর মতো শক্তি তাদের হাতে অবশিষ্ট নেই।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি যে তিনটি ঘটনার উল্লেখ করেন তা নিম্নরূপ-
১. নির্বিঘ্নে বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণা
বিএনপি সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করলে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে- এমন শঙ্কা ছিল সর্বত্র। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, শত শত বিদ্রোহী প্রত্যাশী প্রার্থী সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানাবেন, বিক্ষোভ করবেন, এমনকি দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষও বাঁধতে পারে। কিন্তু এক-দুটি ক্ষুদ্র ঘটনার বাইরে পুরো ঘোষণা প্রক্রিয়া আশ্চর্যজনকভাবে শান্তিপূর্ণ ছিল।
এতে প্রমাণিত হয় বিএনপি নেতৃত্ব যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছিল। মনোনয়ন নিয়ে দলের ভেতরে বিস্তৃত গ্রহণযোগ্যতা দেখায় যে, নির্বাচনি প্রচারণা ও ভোটের সময় দলীয় অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের সম্ভাবনা খুবই কম।
২. আওয়ামী লীগের সক্ষমতার সীমা এখন পরিষ্কার এবং তা খুবই নগন্য
আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে এসেছে যে, তাদের বিশাল তৃণমূল নেটওয়ার্ক আছে যা যে কোনো নির্বাচন ব্যাহত করতে সক্ষম। কিন্তু গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করেছে- তাদের বাস্তব মাঠ-সংগঠনের ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। দলটি এখন মূলত ভাড়াটে কিছু টোকাই-শ্রেণির সমস্যা সৃষ্টিকারীর ওপর নির্ভরশীল, যারা পরিত্যক্ত বাসে আগুন ধরানো, ৩০ সেকেন্ডের ঝটিকা মিছিল করা, কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এআই-ভিত্তিক বিভ্রান্তি ছড়ানোর মতো কাজ করতে পারে।
ফলে, দলটি কার্যত ফেসবুক-নির্ভর এক প্রতিবাদী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে- যার মাঠে কোনো উল্লেখযোগ্য সাংগঠনিক শক্তি নেই। আমার দীর্ঘদিনের পর্যবেক্ষণ এখনো যৌক্তিক যে, দলটির তৃণমূল ভেঙে গেছে বা প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোতে মিলিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে ব্যাঘাত ঘটানোর মতো শক্তি তাদের হাতে অবশিষ্ট নেই।
৩. পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন আরও সংগঠিত
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে দৃশ্যমানভাবে স্থিতিশীল হয়েছে, তা পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং মাঠ প্রশাসন- ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসিসহ সংশ্লিষ্ট সবার মাঝে নতুন আস্থা সঞ্চার করেছে। নির্বাচন প্রক্রিয়া তদারকির জন্য সবচেয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি নিশ্চিত- তারা জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হবেন।



