জাতীয়
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ৩-৪ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত: আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ঘোষণা করেছেন, ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী তিন থেকে চার দিনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীতে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান এবং আশা প্রকাশ করেন, সরকারের নেওয়া এই সিদ্ধান্ত সব রাজনৈতিক দল মেনে নেবে।
দেশের সংস্কারপ্রক্রিয়া নিয়ে চলমান বিতর্কের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, রাতারাতি সব সংস্কার শেষ করা সম্ভব নয়। বাস্তবে এত বড় ধরনের সংস্কার করা সহজসাধ্য নয় এবং ক্রমান্বয়ে সংস্কার করলে ভালো জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, সবাই মনে করেন সব সংস্কার এখনই করে ফেলতে হবে, কিন্তু বিষয়টি এত সহজ নয়। তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা যখন অ্যাকটিভিজম করেছি তখন ভেবেছি কত সহজ, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি কত কঠিন।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, সব সংস্কার যেন সংবিধানেই আটকে গেছে, অন্য কোনো সংস্কার কারো চোখেই পড়ে না।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সংবিধানকে কোনো ‘ম্যাজিক’ হিসেবে উল্লেখ না করে বলেন, শুধু লিখে দিলেই সমাধান হয়ে যায় না; রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং জনগণের অভ্যাস বাদ না দিলে কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না।
সাংবিধানিক ব্যর্থতার একটি উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সংবিধানে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনভাবে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেবেন বলে লেখা থাকলেও, কখনো কি তা হয়েছে?
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের দেওয়া বেশির ভাগ প্রস্তাবই ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে দাবি করে তিনি জোর দিয়ে বলেন, কমিশনের দেওয়া ৭০-৮০ ভাগ সংস্কার প্রস্তাব ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়ে গেছে, অথচ অপপ্রচার করে বলা হয়, “কোথায় সংস্কার, কোথায় সংস্কার?”
ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারের কাছে এই সংস্কারগুলো ধরে রাখার অনুরোধ রেখে আইন উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচিত সরকার এলে এই সংস্কারগুলো ধরে রাখবে কি না, তা নিয়ে একটি ভীতি কাজ করে। তিনি নতুন সরকারের প্রতি অনুরোধ করেন যেন তারা সংস্কারগুলো ধরে রাখেন এবং সেগুলোকে আরো শক্ত অবস্থানে নিয়ে যান।
জাতীয়
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের পাশে সমাহিত খালেদা জিয়া
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে জানাজা শেষে তাকে রাজধানীর জিয়া উদ্যানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও তার স্বামী জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।
খালেদা জিয়ার কবরে সবার আগে নামেন তার বড় ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নিজ হাতে তিনি তার মাকে কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত করেন। এদিন বিকেল সোয়া ৪টার জিয়া উদ্যানে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে খালেদা জিয়াকে শায়িত করার কাজ শুরু হয়। এসময় তারেক রহমানকে কবরে নেমে যেতে দেখা যায়। মাকে কবরে শায়িত করে সাড়ে ৪টার কিছুক্ষণ পর তিনি উঠে আসেন।
এর আগে বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।
জানাজা শেষে মরদেহ দাফনের জন্য নেওয়া হয় জিয়া উদ্যানে। এ সময় সড়কের দুপাশে অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে প্রিয় নেত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। সেসময় পুরো এলাকাজুড়ে শোক ও নীরবতার আবহ বিরাজ করে।
দাফন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার দাফনের মধ্য দিয়ে এক বর্ণাঢ্য ও ঘটনাবহুল রাজনৈতিক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটলো।
জাতীয়
মোদির ব্যক্তিগত চিঠি তারেক রহমানের কাছে পৌঁছে দিয়েছি: জয়শঙ্কর
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার দর্শন ও মূল্যবোধ আমাদের অংশীদারিত্বের উন্নয়নে দিকনির্দেশ করবে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে ফেসবুকে এক পোস্টে এ কথা বলেন জয়শঙ্কর।
জয়শঙ্কর ফেসবুকে লিখেছেন, ঢাকা পৌঁছানোর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি ব্যক্তিগত চিঠি তার কাছে পৌঁছে দিয়েছি। ভারত সরকার এবং জনগণের পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছি।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও লিখেছেন, আমার বিশ্বাস বেগম খালেদা জিয়ার দর্শন ও মূল্যবোধ আমাদের অংশীদারিত্বের উন্নয়নে দিকনির্দেশ করবে।
খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে কয়েক ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে আজ দুপুরে ঢাকায় আসেন জয়শঙ্কর। তিনি বিকালে ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জয়শঙ্করই প্রথম ভারতীয় মন্ত্রী, যিনি ঢাকায় এলেন।
এমকে
জাতীয়
নতুন বছর যে ৬ ধরনের দলিলে আর মিলবে না জমির মালিকানা
ভূমি ব্যবস্থাপনাকে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও জালিয়াতিমুক্ত করতে বড় পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে ছয় ধরনের দলিল সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, যেসব দলিলে প্রতারণা, জালিয়াতি বা আইনগত ত্রুটি পাওয়া যাবে, সেগুলো আর বৈধ হিসেবে গণ্য হবে না।
এরপর ২০২৬ সালের জুলাই থেকে সারাদেশে ‘ডিজিটাল ভূমিজরি বিডিএস (BDLand System)’ পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা হবে। এই প্ল্যাটফর্মে শুধুমাত্র যাচাইকৃত ও বৈধ দলিলগুলো অনলাইনে সংরক্ষিত থাকবে।
বাতিল হতে যাচ্ছে যেসব ৬ ধরনের দলিল
১️. হেবা দলিল: প্রতারণা, জালিয়াতি বা অসুস্থ/অক্ষম ব্যক্তিকে ব্যবহার করে নেওয়া টিপসসহীহযুক্ত হেবা দলিলগুলো বাতিল করা হবে।
২️. ওসিয়তনামা দলিল: আইন অনুযায়ী মোট সম্পত্তির সর্বোচ্চ এক-তৃতীয়াংশ ওয়ারিশের বাহিরে কাউকে ওসিয়ত করা যায়। এই সীমা লঙ্ঘন করে করা দলিলগুলো অবৈধ বলে গণ্য হবে।
৩️. রেজিস্ট্রেশনবিহীন দলিল: যেসব দলিলে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই মালিকানা দাবি করা হয়েছে, সেগুলো বাতিল করা হবে।
৪️. জাল দলিল: প্রতারণা বা নকল কাগজপত্রের মাধ্যমে তৈরি দলিল শনাক্ত করে বাতিল করা হবে, এবং এর মাধ্যমে অর্জিত মালিকানাও বাতিল করা হবে।
৫️. ক্ষমতার অপব্যবহারে অর্জিত দলিল: রাজনৈতিক প্রভাব বা পেশিশক্তি ব্যবহার করে জমি দখল বা মালিকানা অর্জনকারীদের দলিলও যাচাইয়ের পর বাতিল ঘোষণা করা হবে।
৬️. অংশের চেয়ে বেশি বিক্রিত দলিল: যৌথ বা পারিবারিক সম্পত্তিতে নিজ অংশের চেয়ে বেশি জমি বিক্রির ঘটনা প্রমাণিত হলে সেই দলিলও বাতিল হবে, এবং আদালতের মাধ্যমে প্রকৃত ওয়ারিশদের অংশ ফেরত দেওয়া হবে।
ভূমি বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে দেশে বহুল প্রচলিত ভূমি জালিয়াতি, দ্বৈত দলিল ও ওয়ারিশ সংক্রান্ত বিরোধ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পুরো প্রক্রিয়া ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে শেষ করা হবে, যাতে জুলাই থেকে পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক ভূমি রেকর্ড ও দলিল ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা চালু করা যায়।
জাতীয়
খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন, স্মরণকালের রেকর্ড মানুষের অংশগ্রহণ
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এতে স্মরণকালের রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ৩টা ৫ মিনিটে জানাজা শেষ হয়। জানাজায় ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
এতে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জাতীয় নেতারা।
এছাড়াও বন্ধুপ্রতিম বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও অংশগ্রহণ করেন।
এদিন দুপুর ২টায় জানাজা শুরুর কথা থাকলেও ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে মানুষের বিস্তৃতি আশপাশের এলাকা বিজয় সরণি, খামারবাড়ি মোড়, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, শেরে বাংলা নগর, কলেজগেট, আসাদগেট ও শাহবাগসহ অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ে।
ভবনের ছাদ ও ওভার ব্রিজসহ যে যেখানে সুযোগ পেয়েছেন সেখানেই দাঁড়িয়ে পড়েছেন। চাপ ঠেলে সময় মতো আসতে না পেরে অনেকে জানাজা পাননি।
ধারণা করা হচ্ছে, নিকট অতীতে এতো বড় জানাজা দেখেনি দেশবাসী।
পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানাজার পর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পাশে স্ত্রী খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে।
এসময় খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, বিদেশি অতিথি, রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত রাজনীতিবিদরা উপস্থিত থাকবেন। দাফনকাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্নের জন্য সেখানে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে জনসাধারণের চলাচল সীমিত থাকবে।
জাতীয়
জানাজাস্থলে খালেদা জিয়ার মরদেহ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জানাজাস্থলে নেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে লাল-সবুজ পতাকায় মোড়ানো ফ্রিজার ভ্যানে করে তার মরদেহ নেওয়া হয়।
এর আগে দুপুর ২টা ৫ মিনিটে জানাজাস্থলে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত হয়েছেন।
এদিকে, খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজায় ইমামতি করবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মুহাম্মাদ আবদুল মালেক। কিছুক্ষণের মধ্যেই খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা শুরু হবে।




