জাতীয়
ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে।
চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি গঠিত এই কমিশন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি এবং বিভিন্ন সংস্কার বিষয়ে সুপারিশ প্রস্তাবনার কাজ করেছে।
এই কমিশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছিলেন এই কমিশনের সহসভাপতি।
ঐকমত্য কমিশনের সদস্য হিসেবে আরও যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তারা হলেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফররাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিশনকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে গত ১৫ আগস্ট এই কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কমিশনের কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় এর আগে দুই দফায় এর মেয়াদ এক মাস করে বাড়ানো হয়। সর্বশেষ তৃতীয় দফায় কমিশনের মেয়াদ ১৫ দিন বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত মেয়াদ করে সরকার।
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন- এই ছয়টি বিষয়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ আমলে নিয়ে একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে।
এই ঐকমত্য কমিশনের নেতৃত্বে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ প্রস্তুত করে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
জাতীয়
নিশ্চয়ই আসমানে এর চেয়ে বড় রাজকীয় অভ্যর্থনার আয়োজন চলছে: আজহারী
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে ন্যায় ও ইনসাফের বলিষ্ঠ কণ্ঠ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন আলোচিত ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী।
তিনি বলেন, ‘দ্রোহের প্রতীক শহীদ ওসমান হাদির রাজকীয় বিদায়। নিশ্চয়ই আসমানে আমার ভাইকে এর চাইতেও বড় রাজকীয় অভ্যর্থনা জানানোর আয়োজন চলছে।’
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব লেখেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে মিজানুর রহমান আজহারী লেখেন, ‘দ্রোহের প্রতীক- শহীদ ওসমান হাদির রাজকীয় বিদায়। ধূমকেতুর মতো এলেন, ন্যায় ও ইনসাফের বলিষ্ঠ কণ্ঠ হিসেবে গোটা জনপদে বিপ্লবের দাবানল ছড়িয়ে হঠাৎ রবের সান্নিধ্যে চলে গেলেন। নিশ্চয়ই আসমানে আমার ভাইকে এর চাইতেও বড় রাজকীয় অভ্যর্থনা জানানোর আয়োজন চলছে।’
‘জুমার নামাজের পরপরই গুলিবিদ্ধ, আবার পরের জুমার রাতেই শাহাদতবরণ! পেয়েছেন কোটি মানুষের কান্না মিশ্রিত দোয়া। সুবহানাল্লাহ! এ এক পরম সৌভাগ্য।’
তিনি আরও লেখেন, ‘হাদির মতো এমন দেশপ্রেমিক, আধিপত্যবাদবিরোধী ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পন্ন তরুণরাই আগামীর বাংলাদেশ। শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ইনশাআল্লাহ ওসমান হাদি বেঁচে থাকবেন সহস্র মুক্তিকামী মানুষের ভালোবাসায়। অনুপ্রেরণা জোগাবেন প্রজন্ম হতে প্রজন্ম। সাহসের বাতিঘর হয়ে থাকবেন অগণন মানুষের হৃদয়ে।’
এদিন দুপুর আড়াইটায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ওসমান হাদির নামাজে জানাজা হয়। প্রধান উপদেষ্টাসহ লাখো মানুষ এতে অংশ নেয়। পরে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
জাতীয়
কবি নজরুলের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত ওসমান হাদি
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
এর আগে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ, ইনকিলাব মঞ্চের নেতা-কর্মী এবং পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লাখো শোকাহত মানুষ জানাজায় শরিক হন।
দুপুর আড়াইটার দিকে জানাজা শেষ হওয়ার পর মরদেহ দাফনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে নেওয়া হয়।
শনিবার সকাল থেকেই জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মানুষের ঢল নামে। সকাল ১০টার দিকে মানিক মিয়া এভিনিউতে অপেক্ষমাণ ছাত্র-জনতাকে দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। চীন থেকে আনা আটটি আর্চওয়ে গেট দিয়ে সারিবদ্ধভাবে হাজারো মানুষ প্লাজায় প্রবেশ করেন। দুপুর ২টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকায় সকাল থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ মিছিল নিয়ে সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে জড়ো হন।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শরিফ ওসমান হাদির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে মরদেহ মর্গে নেওয়া হয়। এ সময় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মরদেহের সঙ্গে ছিলেন হাদির স্বজন, সহযোদ্ধা ও সহকর্মীরা।
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।
জাতীয়
দাফনের জন্য ঢাবি ক্যাম্পাসে হাদির মরদেহ
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে পৌঁছেছে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাবির কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিস্থলে এসে পৌঁছায়। সেখানে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশেই সমাহিত করা হবে হাদিকে।
জাতীয়
৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর জানাজা রবিবার, হবে সামরিক মর্যাদায় দাফন
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর জানাজা রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাদের নিজ নিজ ঠিকানায় হেলিকপ্টার যোগে প্রেরণ করে যথাযথ সামরিক মর্যাদায় তাদের দাফন সম্পন্ন হবে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, আজ ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মরদেহ দেশে আনা হয়েছে। বেলা ১১টা ৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের মরদেহবাহী ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম বিমানবন্দরে শান্তিরক্ষীদের মরদেহ গ্রহণ করেন।
এসময় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান; বাংলাদেশে জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি; আবেইতে মোতায়েনরত জাতিসংঘ মিশন ইউনিসফার ফোর্স কমান্ডারের প্রতিনিধি, চিফ কমিউনিটি লিয়াজো অফিসার; পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি (ইউএন); ওভারসিজ অপারেশন পরিদপ্তরের পরিচালক; ঊর্ধ্বতন সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমের ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। মরদেহ গ্রহণকালে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন এবং সব সামরিক ব্যক্তিরা শাহাদাতবরণকারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে স্যালুট প্রদান করেন।
এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রসীদের বর্বরোচিত ড্রোন হামলায় ওই ছয় বাংলাদেশি নিহত হন। এছাড়াও ৯ জন শান্তিরক্ষী আহত হন, যাদের মধ্যে ৮ জন কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অবস্থিত আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে (লেভেল–৩ হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন। বর্তমানে সবাই শঙ্কামুক্ত।
জাতীয়
হাদি তুমি আমাদের বুকের মধ্যে আছো: প্রধান উপদেষ্টা
‘প্রিয় ওসামান হাদি তোমাকে বিদায় দিতে আসি নাই। তুমি আমাদের বুকের ভেতর আছো। বাংলাদেশ যতদিন আছে, তুমি বাংলাদেশের মানুষের বুকের মধ্যে আছো।’
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শহীদ ওসমান হাদির জানায়ায় অংশ নিয়ে হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে একথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, লাখ লাখ লোক আজ এখানে হাজির হয়েছে। পথে ঢেউয়ের মতো লোক আসছে। সারা বাংলাদেশ জুড়ে কোটি কোটি মানুষ এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছে। বিদেশিরাও হাদির কথা জানতে চায়। প্রিয় ওসামান হাদি তোমাকে বিদায় দিতে আসি নাই। তুমি আমাদের বুকের ভেতর আছো। বাংলাদেশ যতদিন আছে, তুমি সব বাংলাদেশির বুকের মধ্যে আছো।
তিনি বলেন, তোমার কাছে ওয়াদা করতে আসছি, তুমি যা বলে গেছো, সেটা যেন পূরণ করতে পারি। শুধু আমরা নয়, বংশানুক্রমে বাংলাদেশের সব মানুষ পূরণ করবে। তোমার মানবপ্রেম, ভঙ্গি মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সবাই গ্রহণ করেছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘তুমি এমন মন্ত্র আমাদের দিয়ে গেছো, সেটা চিরদিন আমাদের কানে বাজবে। তোমার মন্ত্র ছিল- বল বীর চির উন্নত মম শির। আমাদের শির কখনো নত হবে না। আমাদের সব কাজে সেটা প্রমাণ করবো, পূরণ করবো।’
‘প্রিয় হাদি, তুমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিলে, কীভাবে নির্বাচন করতে হয়, কীভাবে প্রচারণা চালাতে হয়, কীভাবে কষ্ট না দিয়ে মানুষের কাছে যাওয়া যায়, আমরা সেই শিক্ষা গ্রহণ করলাম। আমরা এভাবেই করতে চাই।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘প্রিয় হাদি, তুমি যুগ যুগ ধরে আমাদের সঙ্গে থাকবে। বল বীর উন্নত মম শির, এই মন্ত্র নিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো। সবার পক্ষ থেকে ওয়াদা করলাম। তোমাকে আল্লাহর হাতে আমানত রেখে গেলোম। সব সময় তোমার কথা স্মরণ করে জাতির অগ্রগতির পথে চলতে থাকবো।’




