রাজনীতি
জনগণের আকাঙক্ষার বিপরীতে দাঁড়ালে হিতে বিপরীত হবে: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ক্ষমতার লোভে কোনো দল বা কোনো শক্তি যদি মনে করে তারা এককভাবে সবকিছু করবে। এই জাতীয় ঐক্য ভেঙে দেবে বা জনগণের আকাঙক্ষার বিপরীতে দাঁড়াবে, তাহলে কিন্তু হিতে বিপরীত হবে। তারা সংসদ টেকাতে পারবে না। সরকার টেকাতে তাদের কষ্ট হবে। জনগণের যে আস্থা সেই আস্থা তারা পাবে না।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী পর্যটন মোটেলে ‘সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই সনদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট করেছি। জুলাই সনদ যেদিন স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয় সেদিনই আমরা স্পষ্ট করেছি। আমরা বলেছি যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া কীভাবে হবে, সেইটা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠান কেবলই একটা আনুষ্ঠানিকতা। কেবলই কাগজে সাইন। যার মূল্য কেবলই কাগজে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা ৯০ এর গণঅভ্যুত্থ্যানের পরও ত্রিদলীয় জোটের রূপরেখা দেখেছিলাম। যেটা মূলত ছিল জনগণের সঙ্গে একটা প্রতারণা। ৯০ এর পুনরাবৃত্তি আমরা আর বাংলাদেশে হতে দেব না। এ কারণে আমরা সনদ অনুষ্ঠানে স্বাক্ষর করিনি। আমরা বলেছি আমরা স্বাক্ষর করতে চাই।
শাপলা প্রতীক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শাপলা না দেওয়ার বিষয়টা নির্বাচন কমিশনের একটা স্বেচ্ছাচারিতা। নির্বাচন কমিশন কোনো ধরনের ব্যাখ্যা ছাড়াই মনবাসনা চাপিয়ে দিতে চায়। আমরা ধরে নেব নির্বাচন কমিশন অন্য কোনো শক্তি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়। নির্বাচন কমিশন ন্যায় বিচার করতে সক্ষম নয়। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে না। গায়ের জোরে পরিচালতি হচ্ছে। ফলে এই ধরনের একটা নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা সেই বিষয়ে জনগণের মনে প্রশ্ন তৈরি হবে। আমাদের মনেও প্রশ্ন তৈরি হবে। কিন্তু আমরা বলছি- শাপলা নিয়ে আমাদের আইনি ও সাংবিধানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, তাহলে আমরা যে কোনো প্রতীক নিতে প্রস্তুত আছি।
নাহিদ বলেন, আমরা মনে করছি এখানে আইনি কোনো বাধা নেই। কিন্তু রাজনীতিকভাবে এটি আদায় করে নিতে হয়। যদি নির্বাচনে আমাদের অংশগ্রহণ করতে বাধা দেওয়ার একটা পরিকল্পনা বা ষড়যন্ত্র হিসেবে দেওয়া হয়। ফলে রাজপথই আমাদের একমাত্র জায়গা হবে। কিন্তু আমরা সেটা চাই না। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে ইলেকশনের মধ্য দিয়ে সামনের দিকে আগাতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেইনি। যদি আমাদের জোটে যেতে হয়, জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাহলে অবশ্যই একটা নীতিগত জায়গা থেকে আসবে। জুলাই সনদ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক জায়গা। জুলাই সনদ বা সংস্কার বিষয়ে আমরা দেখব কারা বাংলাদেশের পক্ষে, জনগণের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে এবং আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। সেই জায়গা থেকে জোটের বিষয়ে বা কোনো ধরনের নির্বাচনী সমঝোতার বিষয়ে আমরা চিন্তা করতে পারি। কিন্তু যদি সংস্কারের বিপক্ষে কেউ দাঁড়ায়, বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের যে রকম আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে তার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাহলে এই ধরনের কোনো শক্তির সঙ্গে জোটে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অনেকবার ভাবতে হবে।
আগামী নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেব্রুয়ারির যে টাইম লাইন ঘোষণা করা হয়েছে তার মধ্যে হোক। নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি না হয়। সেই জন্য সব পক্ষকে কাজ করতে হবে। ফ্যাসিবাদী যারা রয়েছে- যারা পতিত শক্তি রয়েছে, তারা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। নির্বাচনকে ঘিরে তাদের অনেক বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে। ক্ষমতার লোভে যদি কোনো দল বা কোনো শক্তি মনে করে তারা এককভাবে সবকিছু করবে, এই জাতীয় ঐক্য ভেঙে দেবে বা জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে দাঁড়াবে তাহলে হিতে বিপরীত হবে। তারা সংসদ টেকাতে পারবে না। সরকার টেকাতে তাদের কষ্ট হবে। জনগণের যে আস্থা সেই আস্থা তারা পাবে না।
রাজনীতি
জামায়াত ক্ষমতায় এলে শিক্ষকরা ন্যায্য অধিকার পাবেন: ড. হেলাল উদ্দিন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে শিক্ষকদের সব যৌক্তিক ন্যায্য দাবি পূরণ করবে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পল্টন থানার উদ্যোগে পুরানা পল্টন কলেজ অডিটোরিয়ামে শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষা নীতি সংস্কার করে আধুনিক যুগোপযোগী শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করা হবে এবং শিক্ষা খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাজেটে বরাদ্দ ভিত্তি করা হবে। শিক্ষাখাতে যা বরাদ্দ দেওয়া হবে তা খরচ নয় বরং আগামী প্রজন্মের জন্য বিনিয়োগ। অথচ আওয়ামী লীগ শিক্ষাখাতকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
এসময় তিনি আরও বলেন, অতীতের সব সরকার শিক্ষকদেরকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। তাঁরা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে নিজেরা-নিজেরা প্রহসনের ভোট করেছে। প্রহসনের নির্বাচনে তাদের জালিয়াতিতে জড়াতে বহু শিক্ষককে বাধ্য করেছে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন এবং তার পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের শাসনামলের ২০১৪ সালে এক দলীয় নির্বাচন, ২০১৮ সালের রাতের ভোট ও ২০২৪ সালের আমি-ডামি নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কিত। এসব নির্বাচনের মাধ্যমে বড় দল দাবি করা দেশের দুটি দল মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। শিক্ষকদের ব্যবহার করে শিক্ষক সমাজকে জাতির কাছে অপরাধী সাজিয়েছে। ক্ষমতায় বসে শিক্ষকদের অধিকার নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলেছে।
ড. হেলাল উদ্দিন শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষক কেবল জাতি গড়ার কারিগর নয় বরং শিক্ষক জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণেও ভূমিকা রাখে। নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়। সেই নির্বাচনে যদি ভোট গ্রহনের কাজে নিয়োজিত শিক্ষকগণ নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখে তবে জাতি নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নিজেদের সরকার গঠন করতে পারে। কিন্তু কোনো শিক্ষক যদি নিরপেক্ষতা হারিয়ে কোনো দলের পক্ষপাতিত্ব করে তবে বিতর্কিত নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে না। ফলে জনগণের সরকার গঠন করা যায় না।
আগামী নির্বাচনে শিক্ষকদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই ক্ষমতা লোভীদের ভোট চুরি করতে দেওয়া যাবে না, কেন্দ্র দখল করতে দেওয়া যাবে না, জাল ভোট ও ব্যালট বাক্স লুটের সুযোগ দেওয়া যাবে না। সাহসীকতার সঙ্গে যেকোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। কেউ যদি কেন্দ্র দখল করতে আসে, ভোট চুরি করতে আসে, ব্যালট বাক্স লুট করতে আসে তবে উপস্থিত জামায়াতে ইসলামীর পোলিং এজেন্টদের এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবহিত করতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খানের সভাপতিত্বে এবং মহানগরীর মজলিসে শুরা সদস্য ও পল্টন থানা সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর শুরা সদস্য ও পল্টন থানা নায়েবে আমীর এডভোকেট মারুফুল ইসলাম, সাবেক কমিশনার খন্দকার আব্দুর রব, পল্টন থানা সহকারী সেক্রেটারি মো. এনামুল হক, কর্মপরিষদ সদস্য আ ফ ম ইউসুফ, ওমর ফারুক, শামীম হাসনাইন, নুরুল আফসার, থানা শুরা সদস্য শরীয়ত উল্লাহ। এছাড়া পুরানা পল্টন কলেজের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি
রাজনীতি
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ থাকবে : তারেক রহমান
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের সুরক্ষায় উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা প্রয়োজন। প্রতিটি মানুষের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে। সেই প্রতিভা বের করে আনতে হবে।’
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা প্রস্তাবনার ওপর স্কুল-মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাষ্ট্রের সুরক্ষায় প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা। ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে বিএনপি সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেবে। পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে সাজিয়ে তুলতে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সময়ে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তোলার বিকল্প নেই।’
তারেক রহমান বলেন, ‘প্রতিটি মানুষের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে। আর এই প্রতিভা বের করে আনতে হবে এবং সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হবে। পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে সাজিয়ে তুলতে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সময়ে নিজেকে দক্ষ করে গোড়ে তোলার বিকল্প নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘ঘোষিত ৩১ দফায় অংশ হিসেবে দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাকে সময়োপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিএনপি বিশেষজ্ঞ টিম তৈরি করেছে, যারা এরই মধ্যে অনেক দূর এগিয়েছে।’
রাজনীতি
সব দলকে নির্বাচনে আসার আহ্বান মির্জা ফখরুলের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছোটখাটো সমস্যা দূরে রেখে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে সব রাজনৈতিক দলকে আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। তিনি বিশ্বাস করেন, যদি সঠিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলেই আমরা প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে পারব।
বিগত সরকারের আমলে ৬০ লাখ কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার পাশাপাশি ২০ হাজার কর্মীকে গুম-খুন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি মন্তব্য করেন, রাজনৈতিক সহিংসতা ও মতানৈক্যকে বড় পরিসরে বাড়তে না দিয়ে নির্বাচনি ট্রেনকেই দলগুলোর গন্তব্য মনে করা উচিত।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, শেখ হাসিনা ইউনিক ফর্মুলায় বাকশাল কায়েম করেন এবং তখনকার সব সংবাদমাধ্যম একসাথে তার দেওয়া বয়ান তৈরি করত।
এসময় চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানের পত্রিকাগুলো বিগত সরকারের ভয়ের সংস্কৃতি তুলে আনতে পারেনি, তাই এখন গণমাধ্যমের দায়িত্ব সেগুলোকে তুলে আনা।
রাজনীতি
ফ্যাসিস্ট আ.লীগের প্রত্যাবর্তনের সব দরজা বন্ধ করতে হবে: সালাহউদ্দিন
আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তনের সব দরজা বন্ধ করতে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) শিল্পকলা একাডেমিতে দৈনিক নয়া দিগন্তের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের সবাইকে এক থাকতে হবে। মতাদর্শে ভিন্নতা থাকলেও দেশের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তনের সব দরজা বন্ধ করতে হবে। যদি আমাদের অনৈক্যের কারণে ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন ঘটে, জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না। আমাদের সন্তানদের রক্তের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, দুই চার কলাম লেখার জন্য আমাকে প্রায় সাড়ে ৯ বছর নির্বাসনে থাকতে হয়েছে। আমাকে আয়নাঘরে আর কারাগারে নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু আমি কখনো সংগ্রামের পথ থেকে পিছিয়ে যায়নি।
তিনি বলেন, এক সময় আমি এবং আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ভাই পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেলে ছিলাম। করোনারি কেয়ার ইউনিটের একটি সেলে আমাদের রাখা হয়েছিল, যেখানে আমরা একে অপরকে দেখতে পেতাম। তিনি তখন অনশন করছিলেন। আমি তাকে অনুরোধ করেছিলাম, ‘আপনি যদি মারা যান, শেখ হাসিনা খুশি হবে—দয়া করে অনশন ভঙ্গ করুন।’ পরবর্তীতে কয়েকজন প্রবীণ নেতা গিয়ে ছয়-সাত দিন পর তার অনশন ভঙ্গ করান।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, আজ আমরা ছাত্র আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস স্মরণ করেছি, রক্তঝরা দিনগুলোর কথা মনে করেছি। সেই সংগ্রামী অতীতই আমাদের আগামীর বাংলাদেশ গড়ার প্রেরণা হবে। আমাদের সন্তানের জন্য একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই হবে আমাদের মূল দায়িত্ব।
রাজনীতি
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথরেখা পরিষ্কার করতে হবে: আখতার
জুলাই সনদের অর্জন পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই এই বাস্তবায়নের পথরেখা জাতির কাছে পরিষ্কার করতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, আমরা ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা চলমান রাখব।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
আখতার হোসেন বলেন, গত ১৭ তারিখের জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আমরা অংশগ্রহণ থেকে বিরত থেকেছি। আমরা মনে করি, জুলাই সনদ স্বাক্ষর শুধু আনুষ্ঠানিকতা। যদি বাস্তবায়ন ব্যতিরেকে জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়, তাহলে আমরা যতটুকু অর্জন করতে চেয়েছিলাম, সে অর্জন ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে। সে কারণে, জুলাই সনদ স্বাক্ষরকেই আমরা মূল বিষয়বস্তু মনে করি না। আমরা এটাকে আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে দেখি। বরং জুলাই সনদ বাস্তবায়নের যে আদেশ, সেই আদেশের বিষয়ে জনগণের কাছে পরিষ্কার বার্তা উপস্থাপন করে জুলাই সনদকে পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের কাছে আমাদের দাবিগুলো আবারও পুনর্ব্যক্ত করেছি। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশের ড্রাফট, বিষয়বস্তু, আদেশের পরিধি, প্রত্যেকটা জিনিস জাতির কাছে উপস্থাপন করতে হবে। এই জুলাই সনদ জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারপ্রধান হিসেবে জারি করবেন এবং সামনের সংসদে সংবিধানে পাওয়ার অ্যাপ্লাই করার মধ্য দিয়ে এটাকে একটা সংস্কারকৃত ২০২৬-এর সংবিধান হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। আমরা কমিশনের সঙ্গে এই সামগ্রিক আলোচনার জায়গায় কমিশন আমাদেরকে জানিয়েছেন যে, তারা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের একটি আদেশ তারা প্রস্তুত করছেন, যেটাকে আমরা একটা অগ্রগতি হিসেবে দেখি। তথাপিও সে আদেশের মধ্যকার বক্তব্য কী, সে বিষয়গুলো তারা আমাদের কাছে এখনো পর্যন্ত উপস্থাপন করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন, যেটা আমাদেরকে এখনো পর্যন্ত আশাবাদী হতে দেয় নাই।
এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে যে আন্তরিকতার জায়গা থেকে বাস্তবায়ন আদেশ প্রস্তুত করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, সেটাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু সেটাও যেন কোনোভাবেই জুলাই ঘোষণাপত্রের মতো করে কোনো দলের চাপে পড়ে একটা কাগজে-দলিলে পরিণত না হয়, বাস্তবায়ন পরিপন্থিভাবে উপস্থাপিত না হয়, সে ব্যাপারে আমরা ঐকমত্য কমিশনকে সর্বাধিক খেয়াল রাখার জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি। আমরা এটা প্রত্যাশা করি, কমিশন যে ড্রাফট প্রস্তুত করছে, সেটা আমাদের সঙ্গে তারা শেয়ার করবেন এবং আমরা পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত হয়েই তারপরে জুলাই সনদে স্বাক্ষরের দিকে আমরা অগ্রসর হতে পারি।




