অর্থনীতি
একনেকে ১ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় এক হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভয় প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। অসুস্থ থাকায় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেননি পরিকল্পনা উপদেষ্টা।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, একনেক সভায় মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
এর মধ্যে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ৫৩ কোটি ২ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে পাওয়া যাবে ৫০ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় করা হবে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৩টি, সংশোধিত প্রকল্প ৭টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ৩টি প্রকল্প রয়েছে।
অনুমোদিত ১৩টি প্রকল্প হলো–
কৃষি মন্ত্রণালয়: ‘পিআরও-অ্যাক্ট বাংলাদেশ: রেজিলিয়েন্স স্ট্রেন্থেনিং থ্রু এগ্রি-ফুড সিস্টেমস ট্রান্সফর্মেশন ইন কক্সেস বাজার’ প্রকল্প।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়: “গ্রামীণ মাটির রাস্তাসমূহ টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ (২য় পর্যায়) (প্রস্তাবিত ৩য় সংশোধন)”।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (৩টি):
“খুলনা বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (৩য় সংশোধন)”।
“জামালপুর শহরের নগর স্থাপত্যের পুনঃসংস্কার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্প (৩য় সংশোধিত)”।
“গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ০১ থেকে ০৫ নং জোনের অভ্যন্তরীণ রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ (৩য় সংশোধিত)”।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়: “উত্তরা লেক উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: “অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ” প্রকল্প।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়: “কিশোরগঞ্জ (বিন্নাটি)-পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর টোক জেলা মহাসড়ককে যথাযথমানে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প।
শিল্প মন্ত্রণালয়: “বিএসটিআই’র পদার্থ (ফিজিক্যাল) ও রসায়ন (কেমিক্যাল) পরীক্ষণ ল্যাবরেটরির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন” প্রকল্প।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়: “ঘোড়াশাল ৩য় ইউনিট রি-পাওয়ারিং প্রকল্প (২য় সংশোধিত)”।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়: “মানসিক হাসপাতাল, পাবনা-কে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রূপান্তর” প্রকল্প।
রেলপথ মন্ত্রণালয় (২টি):
“বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (৪র্থ সংশোধিত)” প্রকল্প।
“বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (৫ম সংশোধিত)” প্রকল্প।
একনেক সভায় অংশগ্রহণ করেন– পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় ও যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা।
অর্থনীতি
যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলো ৬১ হাজার মেট্রিক টন গম
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) আলোকে দেশটি থেকে ৬০ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন গমবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে।
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে সরকার টু সরকার (জি টু জি) ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি কার্যক্রম শুরু করছে। এই চুক্তির আওতায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে, যার প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম গত ২৫ অক্টোবর, দ্বিতীয় চালানে ৬০ হাজার ৮০২ মেট্রিক টন গম ৩ নভেম্বর তারিখে এবং তৃতীয় চালানে ৬০ হাজার ৮৭৫ মেট্রিক টন গম ১৫ নভেম্বর দেশে পৌঁছেছে।
এবারেরটি আমদানিকৃত গমের চতুর্থ চালান। চুক্তি মোতাবেক ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গমের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চারটি চালানে মোট ২ লাখ ৩৯ হাজার ৫৮৬ মেট্রিক টন গম দেশে পৌঁছেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাহাজে রাখা গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত তা খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অর্থনীতি
তেল-পেঁয়াজের বাজার চড়া, কিছুটা কমেছে সবজির দাম
সরকারের অনুমতি ছাড়াই প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে আমদানি হচ্ছে না বলে নতুন মৌসুম শুরুর শেষ মুহূর্তে পেঁয়াজের দামও বাড়িয়েছেন তারা। শেষ দুই-তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত। এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দামে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। পেঁয়াজের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ সংকটের কারণেই পুরনো পেঁয়াজের দাম চড়েছে।
তবে বাজারে মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। যদিও সেটা পরিমাণে খুব অল্প। আর পাতাসহ পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
অন্যদিকে, বাজারে কিছুটা কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। সরবরাহ বাড়তে থাকায় শীতের সবজির দাম কমতে শুরু করেছে বলেও জানান বিক্রেতারা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে লম্বা বেগুন ৮০-১০০ টাকায় এবং গোল বেগুন বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা পর্যন্ত দামে। এই দাম এখন কমে লম্বা বেগুন ৭০-৮০ টাকা এবং গোল বেগুন ৮০-৯০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। বাজারে এখন মোটামুটি দুই রকমের শিম পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে সবুজ শিমের দাম ৮০ টাকা থেকে কমে ৫৫-৬০ টাকায় নেমেছে। দাম কমেছে রঙিন শিমেরও। এই শিমের দাম ১০০-১২০ টাকা থেকে কমে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাঝারি আকারের প্রতিটি ফুলকপি এখন ৫০-৬০ টাকা থেকে কমে ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কমেছে বাঁধাকপির দামও। প্রতিটি বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহেও ছিল ৪০-৫০ টাকা। একইভাবে দাম কমে আসছে টমেটোর। প্রতি কেজি টমেটোর দাম ১২০-১৪০ টাকা থেকে কমে মান ও বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকার মধ্যে।
সবজি বিক্রেতা এনামুল হক বলেন, শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এই সরবরাহের কারণে দাম কমতে শুরু করেছে। এতে করে বিক্রিও বেড়েছে।
এদিকে, বাজারে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল ডিম-মুরগির দাম। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম একেবারেই কম। গত তিন-চারদিন ধরেই প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১১৫-১২০ টাকা দরে। যদিও বৃহষ্পতিবার ডিমের দাম আবারও খানিকটা বেড়েছে। পাইকারিতে বেড়ে যাওয়ার কারণে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন আবারও ১৩০ টাকায় উঠবে বলে ধারণা করছেন ভোক্তারা।
ব্রয়লার মুরগির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকার মধ্যে।
অন্যদিকে, দুদিন ধরেই সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে বেশ হইচই হচ্ছে বাজারে। কারণ ব্যবসায়ীরা সরকারের অনুমোদন ছাড়াই বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছেন ৯ টাকা। একইভাবে ৫ লিটারের বোতলের দাম ৪৩ টাকা এবং দুই লিটারের বোতলের দাম বাড়িয়েছেন ১৮ টাকা।
তবে, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন গত বুধবার সাংবাদিকদের জানান, সরকারের অনুমতি ছাড়াই ব্যবসায়ীরা তেলের দাম বাড়াতে পারেন না। এটা আইনের ব্যত্যয়। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
অর্থনীতি
ঋণ খেলাপি কমাতে আংশিক অবলোপনে ছাড়
খেলাপি ঋণ কমানো ও ব্যাংকের হিসাব বাস্তবসম্মতভাবে উপস্থাপনের লক্ষ্যে এবার আংশিক ঋণ অবলোপনের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে একটি ঋণ খেলাপি হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যেই তা অবলোপনের সুযোগ ছিল, যা আগে ছিল দুই বছর। তবে অবলোপনের কমপক্ষে ১০ কার্যদিবস আগে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতাকে নোটিশ দেওয়ার বাধ্যবাধকতা বজায় থাকবে। পূর্বের নীতিমালায় কোনো ঋণ আংশিক অবলোপনের সুযোগ ছিল না।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জারি করা নতুন প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, আংশিক অবলোপনের সুযোগ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিজনক ঋণগুলো স্থিতিপত্রে থেকে যেত, ফলে ব্যাংকের ব্যালান্স শিট অযথা স্ফীত দেখাত এবং সম্পদের প্রকৃত মান নির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়ত। নতুন নীতিমালার ফলে ভবিষ্যতে আদায়-অযোগ্য অংশ ঋণ হিসাব থেকে বাদ দেওয়া যাবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘মন্দ ও ক্ষতিজনক’ শ্রেণিভুক্ত এবং আদায়ের সম্ভাবনা কম এমন ঋণের অনাদায়ি অংশ আংশিক অবলোপন করা যাবে। তবে জামানত-সুরক্ষিত অংশকে অবশ্যই আদায়যোগ্য হিসেবে নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে পেশাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জামানতের বাজারমূল্য পুনর্মূল্যায়ন করা যাবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়, আংশিক অবলোপনের ক্ষেত্রে প্রথমে সুদের অংশ বাদ দিতে হবে। অনারোপিত সুদ আলাদা হিসাবে দেখাতে হবে। গ্রাহকের কাছ থেকে জামানত ছাড়া আদায় হওয়া অর্থ আগে অবলোপিত অংশে সমন্বয় হবে। পরে অতিরিক্ত টাকা থাকলে তা স্থিতিপত্রে থাকা বকেয়া ঋণে সমন্বয় হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, অবলোপনের পরও ঋণ আদায়ের প্রচেষ্টা চলবে এবং প্রয়োজনে পুনঃতফসিল বা এক্সিট সুবিধাও দেওয়া যেতে পারে। ব্যাসেল নির্দেশনা ও আইএফআরএস অনুসারে আংশিক ঋণ অবলোপন বিশ্বব্যাপী একটি প্রচলিত পদ্ধতি—ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাসহ বহু দেশেই এ ব্যবস্থা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আশা, নতুন নীতিমালা কার্যকর হওয়ায় ব্যাংকিং খাতের নন-পরফর্মিং ঋণের প্রকৃত চিত্র আরও স্বচ্ছ হবে, সম্পদের গুণগত মান উন্নত হবে এবং নীতি-নির্ধারণ সহজ হবে।
মন্দমানের ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন রেখে ব্যাংকগুলো অবলোপনের মাধ্যমে খেলাপির পরিমাণ কম দেখাতে পারে। ২০২৪ সালের শেষে অবলোপিত ঋণের স্থিতি ছিল ৬২,৩২৭ কোটি টাকা। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা নির্দেশনায় টানা দুই বছর মন্দ ও ক্ষতিজনক শ্রেণিতে থাকা ঋণ অবলোপনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী নির্দেশনায় দুই বছরের শর্ত তুলে নিয়ে ৩০ দিন খেলাপি থাকলেই নোটিশ দিয়ে অবলোপনের সুযোগ তৈরি করা হয়। নতুন নীতিমালায় সেই নোটিশের সময়ও কমিয়ে আনা হলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংক খাতে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৪৪.২৬ শতাংশ। এর মধ্যে পুনঃতফসিল করা অনাদায়ি ঋণ ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা, নিয়মিত খেলাপির পরিমাণ ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা এবং অবলোপিত ঋণ ৬২ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা।
অর্থনীতি
চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি কমে ৫ শতাংশে নামতে পারে: গভর্নর
চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এ আশা প্রকাশ করেন।
গভর্নর বলেন, ২০২৪ সালে মূল্যস্ফীতি ১২ শতাংশের বেশি হয়ে গিয়েছিল। তবে সম্প্রতি এটি ভালোর দিকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে এবং সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি এখন ৮ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে আমরা এটি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারব বলে আশা করছি।
মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নীতি সুদহার কমানো একটি পূর্বশর্ত।
এ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, সুদের প্রকৃত হার ইতিবাচক না থাকলে আমরা হার কমাতে পারি না। বৈদেশিক ঋণ কমানোর জন্য প্রথমেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি ব্যবস্থাপনা কার্যকরভাবে করতে পারলে বিনিময় হার স্থিতিশীল, বিনিয়োগকারীদের আস্থা জোরদার ও দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সুবিধা হবে।
তিনি বলেন, হঠাৎ প্রশাসনিক খরচ কমানো বিপরীত প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে এবং নতুন করে মুদ্রাবাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
অর্থনীতি
সিগারেট কোম্পানির ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ অভিযানে সিগারেট কোম্পানির প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণ উদঘাটন হয়েছে। তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে।
অভিযানকালে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোল যুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।
এছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজার পিস অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল/স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়। যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮.৫ কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০ পিস বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রয় করছিল।



