জাতীয়
শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত যেখান থেকে
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার পর এ ঘটনা ঘটে।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ জানান, কার্গো সেকশনের পাশে একটি অংশে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিস, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী এবং বিমানবন্দরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্য কর্মকর্তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। ফ্লাইট ওঠানামা সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাস্টমসের কুরিয়ার ইউনিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। কার্গো কমপ্লেক্সে কেমিক্যালসহ নানা ধরনের দাহ্য পদার্থ রয়েছে।
বিমানবন্দরের ভেতরে অবস্থানরত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কার্গো ভিলেজের কুরিয়ার গোডাউনের একটি অংশ থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন পাশের গুদামঘরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং তীব্র ধোঁয়ায় চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। এ সময় অনেকেই দৌড়ে বাইরে বের হয়ে আসেন। আগুন লাগার সময় বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকায় তীব্র ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়।
উপস্থিত অনেকেই জানান, আগুনের তীব্রতা এত বেশি যে দূর থেকেও তাপ অনুভূত হচ্ছিল।
জানা গেছে, বিভিন্ন কুরিয়ার কোম্পানি, এয়ারলাইনসের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং অফিস এবং বেসরকারি আমদানি-রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের পণ্য এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি বিমানবাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ইউনিট, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদ্ধার দল এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ এলাকায় প্রবেশাধিকার সীমিত করে দেওয়া হয়েছে, যাতে উদ্ধার ও নির্বাপণ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চলতে পারে।
জাতীয়
তফসিলের আগে আরপিওতে ফের সংশোধনী আসছে
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতির মধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এবং নির্বাচন আচরণবিধিতে আবারও সংশোধনী আনতে হচ্ছে। মূলত পোস্টাল ভোটিং যুক্ত হওয়ার পর গণভোট অধ্যাদেশের সঙ্গে আরপিও-তে সমন্বয় সাধনের জন্যই এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে ভোটের শেষ ধাপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি হয়েছিল ৩ নভেম্বর, এরপর ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ জারি হয় ১০ নভেম্বর এবং সবশেষ গত ২৫ নভেম্বর জারি হয় গণভোটের অধ্যাদেশ। এই পরিবর্তনের মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ, বিশেষ করে পোস্টার নিষিদ্ধ হওয়ার পর বিলবোর্ড ব্যবহার সীমিত করা নিয়ে সমালোচনা এবং আচরণবিধিতে করণিক ত্রুটি থাকার কারণে ইসি পুনরায় আরপিও সংশোধন করতে যাচ্ছে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, গণভোটের কারণে আরপিওতে আবার সংশোধনী আনতে হচ্ছে, যা বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উঠবে। আচরণবিধিতেও কিছু ভাষাগত সংশোধন আনা হচ্ছে। আরপিও সংশোধন ও আচরণবিধির অস্পষ্টতা দূর করতে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবনা গত সপ্তাহে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
যেসব বিষয়ে সংশোধন আনা হচ্ছে: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর অনুচ্ছেদ ২৭-এ প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, পোস্টাল ব্যালটে প্রতীকের বিপরীতে ক্রস বা টিক চিহ্ন না দিলে তা গণনা করা হবে না। এছাড়া আদালতের রায়ে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন এলে ওই আসনের জমা হওয়া পোস্টাল ব্যালটও গণনায় আসবে না। ঘোষণাপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর না থাকলে পোস্টাল ব্যালট গণনায় নেবে না ইসি।
তবে জোট করলেও স্ব স্ব দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার যে বিদ্যমান বিধান রয়েছে, তাতে নির্বাচন কমিশন কোনো সংশোধন আনছে না।
অন্যদিকে, আচরণ বিধিমালার করণিক ভুল ও নতুন প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে—দফা ৪-এর উপ-বিধি (৩), বিধি ৬ এর উপ-বিধি (ক), (খ), (গ), (ঘ), বিধি ৯-এর উপ-বিধি (গ) এবং বিধি ২৬-এর উপ-বিধি (৩) এর মতো বিভিন্ন স্থানে ভাষাগত ও করণিক ভুল (যেমন: ‘করিবে’ শব্দের স্থলে ‘করিতে পারে’) সংশোধন করা হচ্ছে। বিধিমালার ১৪(খ) তে নতুন সংশোধনী প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যেখানে সংসদীয় আসনের প্রতি ইউনিয়ন বা পৌরসভা বা মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রতি একটি অথবা নির্বাচনি এলাকায় ২০টি (যা বেশি হয়)-এর অধিক বিলবোর্ড ব্যবহার করা যাবে না। এর ফলে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে বিলবোর্ডে প্রচারের সুযোগ তৈরি হবে। বিধি ১৭-এর উপবিধি (১) সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারে মাইক ব্যবহারের সংখ্যা বাড়ানোরও প্রস্তাব রাখা হচ্ছে।
জাতীয়
খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি হাসপাতালে যান।
এদিকে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল টিম ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করেছে। দুপুরে দলটি হাসপাতালে এসে সরাসরি চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ নেয়। দলের নেতৃত্বে রয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ড. রিচার্ড বিল।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, চিকিৎসক দলটি প্রথমেই সিসিইউতে গিয়ে খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে। পরে তারা স্থানীয় মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে চিকিৎসা পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করে।
সূত্র জানায়, টিমটি প্রথমে করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) পরিদর্শন করে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার গভীর পর্যবেক্ষণ করেন। এরপর তারা স্থানীয় চিকিৎসক দলের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি রোগ ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকির মাত্রা, অর্গান সাপোর্ট এবং পরবর্তী চিকিৎসা পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বর্তমানে খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটজনক থাকলেও তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা স্থানীয় মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার অগ্রগতির মূল্যায়ন করবেন। প্রথম দিনের কাজ হিসেবে তারা রোগীর জটিলতার ক্লিনিক্যাল নোট, সর্বশেষ টেস্ট রিপোর্ট এবং ব্যবহৃত সাপোর্ট সিস্টেমের তথ্য পর্যালোচনা করেছেন।
দলটির মূল লক্ষ্য উন্নত ও সমন্বিত চিকিৎসা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা এবং খালেদা জিয়ার সুস্থতায় সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করা।
উল্লেখ্য, ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেদিন তার অনেক শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছিল। দ্রুত তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাৎক্ষণিকভাবে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার চিকিৎসা শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হলে দুই দিন আগে তাকে হাসপাতালের কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে মেডিকেল বোর্ডের দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দী ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন সরকার নির্বাহী আদেশে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। এরপর ছয় মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার। যদিও চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি।
৮ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এরপর গত ৮ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান তিনি। চার মাস পর ৬ মে দেশে ফেরেন খালেদা জিয়া।
জাতীয়
বিডিআর হত্যাকাণ্ড: স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়লো
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে গঠন করা জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়ানো হয়েছে। তদন্ত কমিশনের মেয়াদ আগামী ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমানকে সভাপতি করে স্বাধীনতা কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। প্রাথমিকভাবে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হয়। পরে সেই সময় দুই দফা আরও তিন মাস করে বাড়ানো হয়। শেষে বাড়ানো হয় দুই মাস। সেই সময় শেষ হয়েছে ৩০ নভেম্বর।
নতুন করে আরও সাত দিন সময় বাড়ানোর আদেশ ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
কমিশনকে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত ঘটনার প্রকৃতি ও স্বরূপ উদঘাটন করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া তদন্ত কমিশনকে ঘটনাকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধ সংঘটনকারী, সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী, ঘটনার আলামত ধব্বংসকারী, ইন্ধনদাতা এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট অপরাপর বিষয়সহ দেশি-বিদেশি সংশ্লিষ্ট অপরাধী ব্যক্তি, গোষ্ঠী, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, বিভাগ, সংগঠন ইত্যাদি চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
যদিও স্বাধীন তদন্ত কমিশন গত রোববার (৩০ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়।
জাতীয়
‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নিবন্ধন চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদেশ থেকে ভোট প্রদানের জন্য তৈরি ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন চলবে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সরকারি চাকরিজীবী যে সব ভোটার নিজ কেন্দ্রে ভোট দিতে পারবেন না, তারাও ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধন করতে পারবেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দেশ থেকে ভোট দেওয়ার জন্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে প্রবাসী নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৫ জন। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় ইসির ওয়েবসাইট থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
উল্লেখ্য, অ্যাপটি ১৮ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয়েছে। এখনো যারা এই অ্যাপে নিবন্ধন করেননি, তাদেরকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে, আর যারা দেশে আছেন, তাদেরকে প্রবাসে বসবাসরত তাদের নিকটজনকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে, ভোটে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালট পেতে হলে প্রবাসীদের স্ব স্ব দেশের সঠিক ঠিকানা প্রদান করতে হবে, প্রয়োজনে বন্ধু/আত্মীয়ের ঠিকানা অথবা নিকটস্থ সুপরিচিত কোনো প্রতিষ্ঠান/ভবনের ঠিকানা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এমকে
জাতীয়
প্রবাসীদের মোবাইল আনা ও ব্যবহার নিয়ে সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত
দেশে ছুটি কাটাতে আসা প্রবাসীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নতুন এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশে ছুটি কাটাতে এসে ৬০ দিন পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন ছাড়া স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন প্রবাসীরা। তবে, দেশে ৬০ দিনের বেশি থাকলেই মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সোমবার (১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ের অফিস কক্ষে বৈধভাবে মোবাইল ফোন আমদানির শুল্কহার কমানোর বিষয়ে এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়য়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসির মধ্যকার সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ডধারী প্রবাসীরা তিনটি ফোন আনতে পারবেন। এছাড়া স্মার্টফোনের বৈধ আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে সভায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবাসীদের যাদের বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড আছে, তারা মোট তিনটি ফোন সাথে আনতে পারবেন। অর্থাৎ নিজের ব্যবহারের হ্যান্ডসেটের অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন সাথে নিয়ে আসতে পারবেন। চতুর্থ ফোনের ক্ষেত্রে ট্যাক্স দিতে হবে। যাদের বিএমইটি কার্ড নেই তারা নিজের ব্যবহারের ফোনের পাশাপাশি অতিরিক্ত একটি ফোন ট্যাক্স ছাড়া আনতে পারবেন।
এক্ষেত্রে মোবাইল ক্রয়ের বৈধ কাগজটি নিজের সাথে রাখতে হবে। কেননা মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিমানবন্দরে চোরাচালানিরা সাধারণ প্রবাসীদের চাপাচাপি করে স্বর্ণ, দামি মোবাইল ফোন ইত্যাদির শুল্কহীন পাচারে লিপ্ত আছে। চোরাচালানিদের এই অপচেষ্টা রোধ করার জন্যই ক্রয়কৃত মোবাইলের কাগজ সাথে রাখতে হবে।
স্মার্টফোনের বৈধ আমদানি শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তও হয়েছে সভায়। এতে বৈধভাবে আমদানি করা মোবাইল ফোনের দাম কমে আসবে। বর্তমানে বৈধ পথে মোবাইল আমদানির শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। এটা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে সরকার কাজ শুরু করেছে।
আমদানি শুল্ক কমালেই বাংলাদেশের ১৩-১৪টি ফ্যাক্টরিতে উৎপাদনকৃত মোবাইলের শুল্ক ও ভ্যাট কমাতে হবে, অন্যথায় কোম্পানিগুলোর বিদেশি বিনিয়োগ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমদানি এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের শুল্ক কমানো এবং তা সমন্বয় নিয়ে বিটিআরসি এবং এনবিআর যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে একাধিকবার বসেছে এবং দ্রুততার সাথে কাজ শুরু করেছে। আলোচনার ফলাফল দেশের ডিভাইস ইন্ডাস্ট্রির অনুকূল আসবে বলে মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করে।
এছাড়া, আপনার অজান্তেই কেউ আপনার নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করছে কিনা সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এতে আরও বলা হয়, যে কোনো সাইবার অপরাধ, অনলাইন স্ক্যামিং, অনলাইন ও মোবাইল জুয়া, মোবাইল ব্যাংকিং জনিত অপরাধে আপনার নামে নিবন্ধিত সিমটি ব্যবহৃত হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। অপরাধ এবং রেজিস্ট্রেশন ঝামেলা এড়াতে সবসময় নিজের নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করুন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, দেশে বিদেশের পুরোনো ফোনের ডাম্পিং বন্ধ হবে। কেসিং পরিবর্তন করে এসব ইলেকট্রনিক বর্জ্য দেশে ঢুকিয়ে যে রমরমা ব্যবসা শুরু করা হয়েছে, সেটা বন্ধ করা হবে। বিমানবন্দর এবং স্থলবন্দরগুলোতে ভারত, থাইল্যান্ড, চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলো শনাক্ত করা হচ্ছে, দ্রুতই কাস্টমস থেকে অভিযান চালানো হবে।
এছাড়াও, প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ (সংশোধনী) ২০২৫-এ মোবাইল সিমের ইলেকট্রনিক নো ইউর কাস্টমার (ইকেওয়াইসি) এবং আন্তর্জাতিক মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি (আইএমইআই) রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ডেটা সুরক্ষার নিশ্চয়তা তৈরি করা হয়েছে। নতুন একটি ধারা যোগ করে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত উপাত্ত লঙ্ঘনকারীদের অপরাধের আওতায় আনা হয়েছে। সুতরাং অযথা ভয় বিস্তারের গুজবে কান না দিতে সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে।



