অর্থনীতি
জরুরি ভিত্তিতে ৪ লাখ টন চাল আমদানি করছে সরকার

নিরাপদ খাদ্য মজুত ধরে রাখা, খোলাবাজারে (ওএমএস) সরবরাহ সচল রাখা এবং চালের বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার জরুরি ভিত্তিতে ৪ লাখ টন চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত এবং ডিসেম্বরের আগে নতুন ধান ওঠার সম্ভাবনা না থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান টিবিএসকে জানিয়েছেন, সরকারের লক্ষ্য হলো ১৩.৫০ লাখ টন চালের মজুতকে নিরাপদ হিসেবে ধরে রাখা। তিনি বলেন, “ডিসেম্বরের আগপর্যন্ত দেশে নতুন ধান ওঠার সুযোগ নেই। সার্বিক পরিস্থিতিতে যাতে দেশের মানুষ কষ্টের সম্মুখীন না হয়, সেজন্য জরুরি ভিত্তিতে চাল আমদানি করা হচ্ছে।”
জরুরি আমদানির জন্য সরকার দরপত্র প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে নিয়ম শিথিল করেছে। সাধারণত আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দর দাখিলের জন্য ৪২ দিন সময় দেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও, অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি সেই সময়সীমা কমিয়ে মাত্র ১৫ দিন নির্ধারণের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
৪ লাখ টন আমদানির উদ্যোগের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির দরপত্র চূড়ান্ত হয়েছে। ভারতের এম/এস বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি টন চাল ৩৫৯.৭৭ ডলারে সরবরাহ করবে।
বাকি চাল নভেম্বরের মধ্যে আমদানি সম্পন্ন করার লক্ষ্য রয়েছে।
চাল আমদানি করা হলেও, সরকার বর্তমানে নিরাপদ মজুত ধরে রাখতে ওএমএসে চালের বিতরণ প্রায় ৫০ হাজার টন কমিয়ে দিয়েছে। যদিও আটার বিতরণ বাড়ানো হয়েছে, তবুও দেশের মানুষ চাল বা ভাত বেশি পছন্দ করায় ওএমএস-এর দোকানে ভিড় বাড়ছে এবং অনেক ক্রেতা খালি হাতে ফিরছেন।
খাদ্য সচিব জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে নতুন করে ৫ লাখ পরিবার যুক্ত হওয়া, টিসিবির কার্ডের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ৪৯৫ উপজেলায় ওএমএস চালু হওয়ায় চালের সরবরাহ বাড়াতে হচ্ছে। এছাড়া জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে দাম বাড়ার প্রবণতা থাকায় বাজার স্থিতিশীল রাখাও একটি লক্ষ্য।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। মোটা চাল এখন ৫৫-৬০ টাকা, মাঝারি মানের চাল ৬০-৭০ টাকা এবং সরু চাল ৭২-৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।৮ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারের খাদ্য মজুতের পরিমাণ: চাল ১৫,৬৬,২৮৩ টন। গম ৬০,২০৪ টন। ধান ৬,০৮৩ টন। মোট খাদ্য (চালে রূপান্তরিত) ১৬,৩০,৪৬৬ টন।
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট মজুতের পরিমাণ ছিল ২২ লাখ ৪ হাজার ৪৭৮ টন। অর্থাৎ, মাত্র ৫০ দিনের ব্যবধানে সরকারের খাদ্য মজুত ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৩৭ টন কমেছে। চলতি অর্থবছরে সরকার মোট ৯ লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা নিয়েছে।

অর্থনীতি
অক্টোবরের ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো ৯৯ কোটি ডলার

চলতি মাসের প্রথম ১১ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৮ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। রবিবার (১২ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরিফ হোসেন খান বলেন, অক্টোবরের প্রথম ১১ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
আর গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ৯৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
এছাড়া গত ১১ অক্টোবর একদিনে প্রবাসীরা দেশে ১৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে এসেছে ৮৫৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। বছর ব্যবধানে যা বেড়েছে ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ।
অর্থনীতি
এলপিজির দাম ১ হাজার টাকার মধ্যে হওয়া উচিত: জ্বালানি উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফওজুল কাবির খান বলেছেন, দেশের স্বল্পমেয়াদি জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। বর্তমানে সিলিন্ডারের বাজার মূল্য ১২০০ টাকার বেশি হওয়ায় শিল্প ও গৃহস্থালি ব্যবহারকারীরা যথাযথ সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ এর দাম ১ হাজার টাকা মধ্যে হওয়া উচিত।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে দৈনিক বণিক বার্তা আয়োজিত ‘বাংলাদেশে এলপিজি : অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, এলপিজির প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো দাম। বর্তমানে ১২০০ টাকা দামের সিলিন্ডার কিছু ক্ষেত্রে বাজারে ১৪০০–১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই দামের নিয়ন্ত্রণ, লজিস্টিক উন্নয়ন এবং প্রাইভেট সেক্টরের কার্যকারিতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক মনোভাব ছাড়া দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রাথমিক জ্বালানির ঘাটতি কোনো স্বাভাবিক সংকট নয়। এটি একটি পরিকল্পিত অবস্থার ফল, যা ক্ষমতাসীন কিছু রাজনীতিবিদ ও তাদের সহযোগী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কারণে তৈরি হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্যাস লাইনের পরিকল্পনায় গ্যাস সরবরাহের চাহিদা উপেক্ষা করা হয়েছে, ফলে শিল্প ও গৃহস্থালিতে বিপুলসংখ্যক অবৈধ সংযোগও হয়েছে।
ফওজুল কাবির খান বলেন, স্থানীয় গ্যাস উৎপাদন প্রতিবছর কমছে। প্রতিবছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট উৎপাদন কমছে, কিন্তু আমরা মাত্র ৭০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট নতুন গ্যাস সংগ্রহ করতে পেরেছি। এজন্য এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে, যদিও এর উচ্চমূল্যের কারণে সমালোচনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, এলএনজি আমদানিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া প্রয়োজন, তাই স্বল্পমেয়াদে ঘাটতি মোকাবিলায় এলপিজি কার্যকর বিকল্প হতে পারে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান এবং সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ।
অর্থনীতি
কাঁচা মরিচের দাম কমেছে, নাগালের বাইরে সবজির দাম

টানা বৃষ্টির কারণে রাজধানী ঢাকায় কাঁচা মরিচের দাম হু হু করে বাড়ছিল। স্বস্তির খবর বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ায় কাঁচা মরিচের দাম কমেছে। বাজারে প্রতিকেজি মরিচ পাওয়া যাচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। তবে সব ধরনের সবজির দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। মুলা, কচুর লতি, চিচিঙা, গোল বেগুন, করলা, লম্বা বেগুন, পটল, ধনে পাতা, ঢ্যাঁড়স, বরবটিসহ সব ধরনের সবজির বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকায়।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সেগুনবাগিচা ও শান্তিনগর বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
কারওয়ান বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী বিকাশ সাহা বলেন, প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। গত সপ্তাহে তা ৩৫০ টাকার ওপরে ছিল। টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন জেলার মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়েছে, ফলে সরবরাহ কম ছিল। এখন আবার সরবরাহ বেড়েছে। অন্যদিকে, বেড়েছে ডালের দাম।
এদিকে, শীতের আগাম সবজি বাজারে এলেও দাম রীতিমতো আকাশছোঁয়া। এর মধ্যে শিম ২০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, খুচরা বাজারে এক কেজি মসুর ডালের দাম এখন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। এই দাম ছোট দানার; অর্থাৎ সরু মসুর ডালের। গত দেড় মাস আগে বাজার থেকে এই ডাল কেনা যেত ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়; অর্থাৎ দেড় মাসের ব্যবধানে ছোট দানার মসুর ডালের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। মসুর ডালের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে খুচরা বাজারে ছোলা ও অ্যাংকর ডালের দামও কিছুটা বেড়ে গেছে।
রামপুরা বাজারের ক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন, সবজির তেমন ঘাটতি না থাকলেও ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। দুই সপ্তাহ আগে তেলের দাম বেড়েছিল। এখন ডালের দাম বাড়ছে। এ কারণে সাধারণ মানুষের সংসার খরচে হিমশিম খাচ্ছে।
এদিকে, বাজারে মাছ-মাংসের দাম আগের মতো চড়া দামে আটকে আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা, সোনালি ৩০০-৩২০ টাকা, কক মুরগি ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৩০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলার

দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও দেখা দিয়েছে আশাব্যঞ্জক উত্থান। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলার (৩১.৯৪ বিলিয়ন)। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রোববার (৫ অক্টোবর) পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৬ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। সেখানে বর্তমানে আরও বাড়লো রিজার্ভ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনায় রিজার্ভ বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়ে ৩২ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি আর গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
চলতি অর্থবছরের তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৪টি নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ২ বিলিয়নের ওপর ডলার কিনেছে। সবশেষ বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ১০টি ব্যাংক থেকে মোট ১০ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার (১০৪ মিলিয়ন ডলার) কেনা হয়েছে। এসময় প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১.৮০ টাকার মধ্যে, যা মাল্টিপল প্রাইস নিলাম (Multiple Price Auction) পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
বাড়ছে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণও। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ৮৩৯ কোটি বা ৮.৩৯ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। য গত বছরের একই সময়ে ছিল ৭৩৩ কোটি বা ৭.৩৩ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে রেমিট্যান্স আসার প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৪.৪ শতাংশ। আর চলতি মাস অক্টোবরের প্রথম ৮ দিনে ৮০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
অর্থনীতি
বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী তুরস্কের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী

বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীগুলো। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা) আয়োজিত উচ্চপর্যায়ের বিনিয়োগ সেমিনার ‘গেটওয়ে টু গ্রোথ: ইনভেস্ট ইন বাংলাদেশ’-এ তারা এই আগ্রহের কথা জানান। বিডার জনসংযোগ দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইস্তাম্বুলের ডেল্টা হোটেলস বাই ম্যারিয়ট, লেভেন্ট-এ অনুষ্ঠিত সেমিনারে ৩০টিরও বেশি তুর্কি কোম্পানি অংশ নেয়—যারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে বা নতুন করে বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছে। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিডা, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের কারিগরি সহায়তায়, তুরস্কে বাংলাদেশের দূতাবাস এবং ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টস অ্যান্ড বিজনেসম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায়।
এতে বিডার ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এখনই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। রপ্তানি, মুদ্রার স্থিতিশীলতা ও মূল্যস্ফীতির মতো সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলো বর্তমানে অত্যন্ত অনুকূল। ব্যবসা সহজীকরণের জন্য সরকার ইতোমধ্যে ৩২টি সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও জানান, নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য বিডা তার ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিনিয়োগ পরামর্শ থেকে শুরু করে কারখানা স্থাপন পর্যন্ত পূর্ণ সহায়তা দেবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি তুর্কি শিল্পনেতাদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করেন এবং আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী তুর্কি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরাও তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। আরসেলিক কোম্পানির সিইও বারিশ আলপার্সলান বলেন, আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় সরবরাহ চেইন শক্তিশালী করতে, দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এছাড়া আয়গেজ কোম্পানির এজিএম এরজুমেন্ট পোলাত জানান, বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিসের সহায়তায় আমরা দ্রুত সম্প্রসারণ করতে পেরেছি। বর্তমানে বাংলাদেশে আমাদের দুই শতাধিক কর্মী কাজ করছেন এবং আমাদের বিতরণ নেটওয়ার্ক এখন প্রায় ৩০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন মুসাইএদ-এর বোর্ড সদস্য মুহাম্মেত হুজেইফে গুল্লুওগ্লু এবং ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তাঁরা দুই দেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর নেতৃত্বে সেমিনারে বিডা, বেজা, এনবিআর ও ব্যাংক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ৭–৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত গভর্নমেন্ট-টু-বিজনেস (জিটুজি) বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল তুরস্কের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে অগ্রাধিকার খাতে সম্ভাব্য বিনিয়োগ ও অংশীদারত্ব নিয়ে আলোচনা করেছে। পাশাপাশি বিডা তুরস্কের শীর্ষ শিল্প সংগঠন তুর্ক অন ফিড-এর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা গড়ে তুলছে, যা দুই দেশের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।