জাতীয়
ক্ষমতার পালাবদল যেন দুর্নীতির পালাবদল না হয়: বদিউল আলম

ক্ষমতার পালাবদল যেন কেবল দুর্নীতির পালাবদল না হয়, বরং নির্বাচিত সরকারকে অবশ্যই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘গণতন্ত্র সুরক্ষায় আগামী নির্বাচনের গুরুত্ব’ শীর্ষক ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. মজুমদার তার বক্তব্যে গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে নির্বাচিত সরকারের ওপর বেশ কিছু দায়িত্বের কথা তুলে ধরেন। তার মতে, গণতন্ত্র তখনই সুরক্ষিত থাকবে, যখন নির্বাচিত সরকার পরবর্তী নির্বাচন সুষ্ঠু করার ব্যবস্থা করবে, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বৃত্তায়নমুক্ত করবে এবং গণমাধ্যমকে স্বাধীনতা দেবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকেও দুর্বৃত্তায়নমুক্ত হতে হবে এবং কাঠামোর পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি বলেন, কতগুলো আইনি, কাঠামোগত ও পদ্ধতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে হবে। তবেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে ও সুরক্ষিত থাকবে। তা না হলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না।
গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে তিনি গণভোটের গুরুত্বারোপ করেন। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি গণভোট হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ যে সিদ্ধান্ত দেবে, তা-ই হবে চূড়ান্ত। একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গণভোটের সফলতার ওপর নির্ভর করছে।
সংস্কারের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে ড. মজুমদার আরও বলেন, ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংস্কার প্রক্রিয়া অনেক এগিয়ে যাবে। যেসব বিষয়ে বিএনপি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছিল, সেসব বিষয় জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তিনি বিশ্বাস করেন যে জনগণের মতামত নিয়েই সবকিছু বাস্তবায়িত হবে এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়িত হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের আগেই অন্তর্বর্তী সরকার কমিশন গঠন করেছে, এবং তিনি বিশ্বাস করতে চান যে তারা নিরপেক্ষভাবে এই কমিশন গঠন করেছেন।

জাতীয়
১৫ সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, খোঁজ নেই একজনের: সেনা সদর

মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা সদর।
আজ শনিবার বিকেলে সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক বছর সিলেকশন বোর্ড হয়। এটার শিডিউল ছিল ৫-১১ অক্টোবর পর্যন্ত। আমাদের প্রতিটি পদ প্রেসক্রাইব। আমাদের বোর্ড শেষ হয় ৮ অক্টোবর। এরপর হয় জেনারেলের কনফারেন্স।’
তিনি বলেন, ‘৮ তারিখে নামাজের এবং লাঞ্চ ব্রেকে জানতে পারি, ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। আজ পর্যন্ত কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আমাদের হস্তগত হয়নি। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো অনুলিপি পাইনি। ৮ তারিখে যাদের নাম এসেছে, তাদের মধ্যে অনেকে সাবেক ও অনেকে কর্মরত। তাদের ৯ তারিখের মধ্যে ঢাকা ক্যান্টমেন্টে সেনা হেফাজতে আনার জন্য বলা হয়। এটা সেনাবাহিনীর প্র্যাকটিস, যাদের নামে অভিযোগ ওঠে তাদের আমরা হেফাজতে নিই। এরপর বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। একজন ৯ তারিখ সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ডিজিএফআই, এনএসআই, বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলা হয়েছে, ওই কর্মকর্তা যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘গুম কমিশন করা হয়েছে। …আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি, এখনো করে যাচ্ছি। সেনাবাহিনী বিচারের পক্ষে। ইনসাফের সঙ্গে কোনো কপ্রোমাইজ হবে না।’
হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের আগামী ২২ তারিখে আদালতে হাজির করা হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এটার একটা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
গুমের দায় সেনাবাহিনী নেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডিজিএফআই অফিসে ২০০৭, ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে কী ঘটেছিল, সেটা আর্মি কীভাবে জানবে? আমরা কীভাবে জানবো?’
অবসরপ্রাপ্ত যারা আছেন, তাদের কীভাবে গ্রেপ্তার করা হবে, এমন প্রশ্নে মো. হাকিমুজ্জামান বলেন, ‘তারা চাইলে আমাদের হেফাজতে আসতে পারে। অথবা পুলিশের কাছে, অথবা আদালতে যেতে পারে।’
জাতীয়
‘নির্বাচনে কোন দল এলো, না এলো তা দেখার দায়িত্ব সরকারের নয়’

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে, আর কোন দল করবে না, তা দেখার দায়িত্ব সরকারের নয়।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত এক সভায় অংশ নিয়ে তিনি কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একটা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন পেতে চাই, সেটা বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার। আমরা মানুষকে বলতে চাই, বাংলাদেশে একটা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার সমাজের সূচনা হবে একটা ভালো নির্বাচন দিয়ে। এ নির্বাচনে কোন পার্টি এলো, না এলো ওটা আমাদের দেখার ব্যাপার না, সেটা নির্বাচন কমিশন দেখবে আর পলিটিক্যাল চিন্তাভাবনা করেন তারা। তবে আমরা বদ্ধপরিকর একটা ভালো নির্বাচন দিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে চাই।’
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করব, যেইভাবে যা সহায়তা চাইবে সেভাবেই সরকারকে সহায়তা করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, অনেকের বয়স ত্রিশ হয়ে গেছে কিন্তু তারা ভোট দিতে পারেননি। অনেক তরুণরা জানেন না ভোটকেন্দ্র কেমন। কারণ তারা ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। এটা দুঃখজনক। আপনি মেজরিটিসংখ্যক ভোটারকে বাইরে রেখে আপনি দেশ পরিচালনার ব্যবস্থা করেছেন আর সেটাকে আমরা সবাই সহযোগিতা করেছি। শুধু ওই সময়ের সরকারকে দোষ দিয়ে তো হবে না, আমরা সবাই এদিক-ওদিক কথা বলেছি।
অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে নির্বাচন কমিশনকে সংবাদমাধ্যম কর্মীদের সহায়তা নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেছেন উপদেষ্টা।
জাতীয়
‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর ৩ মাস বাকি। প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলে আসছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। ফলে রাজনীতির মাঠ এখন সম্পূর্ণ নির্বাচনমুখী। আসনভিত্তিক সমাবেশ ও গণসংযোগে ব্যস্ত দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ঠিক এমন সময় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে দেওয়া সাবেক এক উপদেষ্টার বক্তব্য ঘিরে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যেই এই আলোচনার সূত্রপাত। তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা এখন নিজেদের সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে ভাবছেন।’
তার এই বক্তব্য মুহূর্তেই রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় ফেলে দেয়। টেলিভিশনের টকশো থেকে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। অনেক রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এমনকি সরকারের ভেতরেও এ মন্তব্যকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, নাহিদ ইসলাম একসময় সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এখন বিরোধী অবস্থানে গেলেও ক্ষমতাসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তার যোগাযোগ আছে। ফলে তার মুখ থেকে এমন মন্তব্য আসা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
এবার ‘সেফ এক্সিট নিয়ে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, বর্তমানে ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে নানা রকম কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু উপদেষ্টারা ভালোভাবেই জানেন যে তাদের কোনো প্রকার ‘সেফ এক্সিট’-এর প্রয়োজন নেই।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের বলরুমে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়া বিষয়ক জাতীয় আলোচনা সভায় আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা উপদেষ্টারা খুব নিশ্চিতভাবে জানি আমাদের কারো কোনো ‘সেফ এক্সিট’-এর প্রয়োজন নেই, বরং জাতি হিসেবে দেশের মানুষের বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সৃষ্ট বিধ্বংসী রাষ্ট্র কাঠামো থেকে ‘সেফ এক্সিট’-এর প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, গত ৫৫ বছর আমরা যে দুঃশাসন, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখলাম, দেখলাম ব্যাংক থেকে সাধারণ মানুষের আমানতের টাকা লুট হচ্ছে- এ ধরনের একটি ভয়াবহ ও আত্মবিধ্বংসী রাষ্ট্র কাঠামো থেকে আমাদের এ জাতির ‘সেফ এক্সিট’-এর প্রয়োজন আছে।
আসিফ নজরুল বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানে বলা হয়েছিল যে রাষ্ট্রপতি বিচারপতিকে স্বাধীনভাবে নিয়োগ করবেন যেন এতে রাজনৈতিক প্রভাব না থাকে। কিন্তু সবাই জানেন রাষ্ট্রপতি কখনই স্বাধীনভাবে বিচারপতিকে নিয়োগ করতে পারেননি। এদেশে সবসময় বিচারপতি নিয়োগ পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এমন প্রধান বিচারপতিও পেয়েছি যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্র ধ্বংস করার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যারা নিজের চোখে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেখেও তা উপেক্ষা করেছেন। যেসব বিচারক মানবাধিকার লঙ্ঘনে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছে তাদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে এমন কেউ কেউ এখনো বিচার বিভাগে রয়ে গেছে। আমরা ইনস্টিটিউশনাল রিফর্মের পথে কিছুটা অগ্রসর হয়েছি, পুরোটা করতে পারি নাই।পরে যারা নির্বাচিত সরকার হবেন, তাদের কাছে এই দায়িত্বটা থাকল।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা হয়তো ভালো ভালো কিছু আইন করে যাচ্ছি। কিন্তু ভালো আইন করা মানেই পুরো দেশটা বদলে যাবে সেরকম নয়। দেখা গেছে অনেক ভালো ভালো আইন করা হলেও সে আইন যে প্রতিষ্ঠানের জন্য করা হয়েছে সে প্রতিষ্ঠানই দাঁড়ায় না। আইন করার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ব্যর্থতার ইতিহাস নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠান করার ক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতা সীমাহীন।’
ভালো প্রতিষ্ঠান গড়া একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, আশা করব এই আইনটি দ্বারা সত্যিকার অর্থে একটি শক্তিশালী মানবাধিকার কমিশন আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
ভয়াবহ এ রাষ্ট্র কাঠামো থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার প্রয়োজন আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে উচ্চ আদালত ও সংসদীয় কমিটি। সেই সঙ্গে আরও কিছু জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানকে আমাদের শক্তভাবে দাঁড় করাতে হবে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মানবাধিকার কমিশন। এটি করতে ব্যর্থ হলে দেশের যে কোনো মানুষ যে কোনো সময় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হতে পারেন।’
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী করা সম্পর্কে আইন উপদেষ্টা বলেন, এটি সরকার বা কোনো একক ব্যক্তির নয় বরং আমাদের সবার দায়িত্ব।
সংশোধিত আইনটি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং স্বাধীনতাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান; পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান; আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী; বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো সিগফ্রেড রেংগলি; ড্যানিশ দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন এন্ডার্স বি. কার্লসেন; ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (ইউএনডিপি) রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আইন, বিচার এবং নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা রোমানা শোয়েগার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, বিভিন্ন মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন ও সংস্থার প্রতিনিধি এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রমুখ।
জাতীয়
ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামে যোগ দিতে রোম যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্টে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল ইতালির রোম সফরে যাচ্ছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রোমের উদ্দেশে যাত্রা করবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সফরসূচি অনুযায়ী, অধ্যাপক ইউনূস ফোরামের মূল অধিবেশনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন।
পাশাপাশি, তিনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসব বৈঠকে খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য নিরসন ও টেকসই উন্নয়নসহ বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।
ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরাম মূলত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে বিশ্বব্যাপী নীতিনির্ধারক, গবেষক ও উদ্যোক্তারা একত্রিত হয়ে খাদ্য ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে মতবিনিময় করেন।
এবারের ইভেন্ট ১০ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে রোমে এফএওর সদর দপ্তরে। প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সক্রিয় কূটনৈতিক ভূমিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আগামী ১৫ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। সূত্র: বাসস।
কাফি
জাতীয়
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ, চরম ভোগান্তি

ময়মনসিংহে গেজেটভুক্ত জুলাইযোদ্ধা আবু রায়হানকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে লাঞ্ছিত ও আহত করার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো জেলা। এই ঘটনার প্রতিবাদে ইউনাইটেড সার্ভিসের সব বাস বন্ধের দাবিতে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাত থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বৈষম্যবিরোধীরা।
অভিযোগ উঠেছে, ঢাকাগামী একটি বাসে ওঠার সময় বাস স্টাফ ঝন্টুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে আবু রায়হানের। একাধিকবার ক্ষমা চাওয়ার পরও ঝন্টু তাকে কটূক্তি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বাস থেকে নামিয়ে দেয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার রাত ৯টা থেকে ময়মনসিংহ নগরীর মাসকান্দা ইউনাইটেড বাস কাউন্টারের সামনে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী সংগঠনের সদস্যরা। তারা অভিযুক্ত শ্রমিকসহ বাস মালিক ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হক শামীমকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
জানা গেছে, শহীদ সাগর হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আমিনুল হক শামীমের মালিকানাধীন ইউনাইটেড সার্ভিসের ১৬টি বাস ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী তার মালিকানাধীন সব পরিবহন বন্ধের দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছে আন্দোলনকারীরা।
এদিকে, অবস্থান কর্মসূচির প্রভাব পড়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে। শনিবার দুপুর ১২টার পর থেকে ঢাকাগামী সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত শ্রমিক ঝন্টুকে আটক করা হয়েছে। সারারাত ধরে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা অনড় অবস্থানে থাকায় পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুক্রবার রাতেই জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা মাসকান্দা বাস টার্মিনালে উপস্থিত হন। তবে উত্তেজনা এখনো পুরোপুরি কাটেনি।
ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি এবং জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম জানান, জুলাইযোদ্ধারা আমাদের বাস কাউন্টার বন্ধ করে শ্রমিকদের আটকে রাখে। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এখন ছাত্ররা বাস চলতে দিচ্ছে না, এতে শ্রমিকরাও বিক্ষোভ করছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর পরিবহন মাফিয়া ডন আমিনুল হক শামীমকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। তার মালিকানাধীন ইউনাইটেড পরিবহনের সব বাস নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে।