সারাদেশ
রংপুরে অ্যানথ্রাক্সে শতাধিক গরুর মৃত্যু, আক্রান্ত অর্ধশতাধিক মানুষ
রংপুরে গত দুই মাসে অ্যানথ্রাক্স রোগে মারা গেছে শতাধিক গরু। শুধু তাই নয়, এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। পশুবাহিত এই রোগ অনেকটা অসচেতনতার কারণেই ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের শরীরে। রংপুর ছাড়াও এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে মেহেরপুরসহ কয়েক জেলায়।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে যায় যায়, জেলায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ১১ জন। চলতি বছরের জুলাই ও সেপ্টেম্বরে রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে দুজন মারা যান। একই সময়ে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে অর্ধশত ব্যক্তির শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা যায়। ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ গরুর মাংসের নমুনা পরীক্ষা করে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করেছিল প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি প্রতিনিধিদল ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পীরগাছা সদর এবং পারুল ইউনিয়নের অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ থাকা ১২ জন নারী-পুরুষের নমুনা সংগ্রহ করেছিল। এর মধ্যে আটজনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পীরগাছা, মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অর্ধশতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। তবে আইইডিসিআরের তথ্যে যে ১১ জন বলা হচ্ছে, বাস্তবে সে চিত্র ভিন্ন। পশুর টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। আক্রান্তদের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকেরও সংকট আছে।
মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০ দিন আগে ইমাদপুর ইউনিয়নের আমাইপুর গ্রামে একটি গরু অসুস্থ হলে জবাই করা হয়। পরে ওই মাংস কাটাকাটি করার পর গ্রামের পাঁচ-ছয় জনের শরীরে ঘা হয় ও অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তারা চিকিৎসা নিতে আসলে সেখানে থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। এর মধ্যে একজনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়।
মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা (রোগনিয়ন্ত্রণ) এম এ হালিম লাবলু বলেন, এই উপজেলায় ১১ জনের শরীরে উপসর্গ পাওয়া গেছে। এ রোগ গবাদিপশু থেকে মানুষে ছড়ায়, তবে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। তাই মানুষকে সচেতন হতে হবে। অসুস্থ গরু জবাই করা বা মাংস খাওয়া যাবে না।
পীরগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. একরামুল হক বলেন, ‘শুধু পীরগাছাতেই অন্তত দেড় লাখ পশু অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৪০০টি টিকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আরও ৫০ হাজার টিকার চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। সেগুলো এখনও পাওয়া যায়নি।’
মিঠাপুকুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘এই রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। আক্রান্ত পশুদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে সংকট আছে।’
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল বলেন, আমরা আরও ৫০ হাজার টিকার চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। আপাতত অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আক্রান্তদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুরের সিভিল সার্জন শাহিন সুলতানা বলেন, ‘আক্রান্ত তিন উপজেলায় তিনটি মেডিক্যাল টিম গঠন করে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ওসব উপজেলার মানুষকে আক্রান্ত গরু জবাই না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু ছাইদ বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হওয়ার পরই গত আগস্ট থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু করেছি আমরা।
সারাদেশ
সখিপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭ দোকান ভস্মীভূত, ক্ষতি প্রায় ৫০ লাখ টাকা
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে হাবিবউল্লাহ কলেজের সামনের একটি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাতটি দোকান মুহূর্তেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আজ রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর আড়াই টার দিকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস।
স্থানীয় সাব্বির মাদবরের মালিকানাধীন মার্কেটটিতে আগুন লাগার পর দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে কনফেকশনারি, মুদি দোকান, টেইলার্স ও গোডাউনসহ সাতটি দোকানের মালামাল, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিকসসহ প্রায় সবকিছুই পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
দোকান মালিক সাব্বির মাদবর জানান, দুপুরে ফোনে খবর পাই। ছুটে এসে দেখি পুরো মার্কেট আগুনে পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস চেষ্টা করলেও কিছুই আর রক্ষা করা যায়নি। ভাড়াটিয়াদের সবকিছুই নষ্ট হয়ে গেছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হঠাৎ বৈদ্যুতিক শব্দের মতো কিছু শুনে দেখি ধোঁয়া বের হচ্ছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আগুন পুরো মার্কেটে ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ আমির হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত। ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এলাকায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা দ্রুত প্রশাসনের জরুরি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।
অর্থসংবাদ/তাহের/এসএম
সারাদেশ
খাগড়াছড়িতে দুই চীনা নাগরিকসহ আটক ৩
খাগড়াছড়ির রামগড়ে অবৈধ ভিওআইপি কার্যক্রমের সরঞ্জামসহ দুই চীনা নাগরিকসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন- চীনা নাগরিক জিয়াং চেংটং (৩৩), ট্যাং টংউ (৩২) এবং তাদের সহযোগী বাংলাদেশি নাগরিক মো. আসিফ উদ্দিন (২৫)।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাত থেকেই তাদের ওপর নজরদারি রাখা হয়। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে রামগড় পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের খান কমপ্লেক্সের চতুর্থতলার একটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভিওআইপি সরঞ্জামসহ তাদের আটক করা হয়।
এ অভিযানে উদ্ধারকৃত সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে— ভিওআইপি গেটওয়ে, রাউটার, সিমবক্স, বিপুল পরিমাণ সিমসহ প্রয়োজনীয় ডিভাইস।
ঘটনার পর বিটিআরসির এনফোর্সমেন্ট এন্ড ইন্সপেকশন ডিরেক্টরেটের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেন বলে নিশ্চিত করেছেন রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন। তিনি জানান, আটকদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সারাদেশ
ডক্টর’স পয়েন্ট তারাবুনিয়া শাখার উদ্বোধন
শরীয়তপুরের সখিপুর থানাধীন তারাবুনিয়ায় ডক্টর’স পয়েন্ট তারাবুনিয়া শাখার শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় চেয়ারম্যান বাজারে নতুন এ শাখার উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় মানুষের জন্য কম খরচে মানসম্মত ও বিশ্বাসযোগ্য চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন কুমার পোদ্দার। বিশেষ অতিথি ছিলেন সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফয়েজ আহম্মেদ, পীর সাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আবু ছালেহ, ডা. আব্দুর রাজ্জাক এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মান্নান মাঝি।
এছাড়াও, উপস্থিত ছিলেন আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইমরান সরকার, সদস্য আব্দুস ছামাদ আসামী, হোসেন সরকার, কলিমুল্লাহ মাঝি আলাউদ্দিন সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার অন্যান্য গুণীজন।
বক্তারা বলেন, সখিপুর, তারাবুনিয়া, রাজরাজেশ্বরসহ আশেপাশের মানুষের মানসম্মত চিকিৎসা সেবার ঘাটতি পূরণে ডক্টর’স পয়েন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাধারণ মানুষ যেন স্বল্প খরচে সঠিক ও মানসম্মত চিকিৎসা পায়—এটাই এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য।
দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে নতুন শাখার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। স্থানীয়রা জানান, গ্রামাঞ্চলে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এই ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং প্রশংসনীয়।
অর্থসংবাদ/তাহের/এসএম
সারাদেশ
পঞ্চগড়ে তীব্র হচ্ছে শীত, ১২ ডিগ্রিতে নামলো তাপমাত্রা
শীতের জেলা পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা আরও কমেছে। বেড়েছে শীতের অনুভূতি। কয়েকদিন ধরেই দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমাগত কমছে। বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কদিন ধরেই সন্ধ্যার পর থেকে হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। রাতভর ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে গোটা এলাকা। সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাসে শীত অনুভূত হয়। তবে ভোরের দিকে হালকা হতে থাকে কুয়াশা। সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায় ঠান্ডার অনুভূতি। সোমবার দিনের (সর্বোচ্চ) তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩১ দশমিক ২ ডিগ্রি। তবে সন্ধ্যার পর থেকে বেশ শীত অনুভূত হতে থাকে। স্থানীয়দের শীতের কাপড় পরতে দেখা গেছে।
সদর উপজেলার মাগুড়া এলাকার ময়নুদ্দীন বলেন, কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত ভালোই ঠান্ডা লাগে। ফজরের নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে বের হলে ঘনকুয়াশা দেখা যায়। তবে সূর্য ওঠার পর ঠান্ডার অনুভূতি কমে যায়।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, বুধবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৬৭ শতাংশ। সোমবার দিনের তাপমাত্রা ছিল ৩০ ডিগ্রি। চলতি মাসের শেষের দিকে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
সারাদেশ
পদ্মফুল তুলতে গিয়ে ডুবে মারা গেল ৪ স্কুলছাত্রী
মেহেরপুরে পদ্মফুল তুলতে গিয়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে চার স্কুলছাত্রী। রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার রাজনগর গ্রামে মশুরিভাজা বিলে ঘটে এ ঘটনা।
নিহতরা হলো রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল সামাদের দুই মেয়ে আফিয়া খাতুন (১২) ও ফাতেমা খাতুন (১৪); সামাদের বড় ভাই সাহারুল ইসলামের মেয়ে আলিয়া খাতুন (১২) ও সামাদের চাচাতো ভাই ইছহাক আলীর মেয়ে মিম আক্তার (১২)। তারা সবাই স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোববার দুপুরে মশুরিভাজা বিলে পদ্মফুল তুলতে যায় ওই চার স্কুলছাত্রী। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা বিলে খুঁজতে গিয়ে পানিতে ভাসতে দেখে মিম আক্তারকে। পরে আশপাশের লোকজন এসে বিলের পানিতে তলিয়ে যাওয়া দুই আপন বোন আফিয়া ও ফাতেমাকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে ডুবে যাওয়া আলিয়াকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। চার শিশুর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।



